নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে। যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের চেষ্টাতেও রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত আগুন পুরো নেভেনি। আহত হয়েছেন ২২ জন। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। আমদানিকারকেরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। বিমানবন্দরের ভেতরে নজিরবিহীন এই অগ্নিকাণ্ডকে অনেকে রহস্যজনক বলছেন। অনেকে বলছেন, বিমানবন্দরে সার্বক্ষণিক ফায়ার ইউনিট থাকার পরও আগুন এভাবে ছড়িয়ে পড়ায় প্রশ্ন উঠেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। ঘটনা তদন্তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সাত সদস্যের ও কাস্টমস পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে গত মঙ্গলবার রাসায়নিকের গুদাম ও পোশাক কারখানা, চট্টগ্রামের ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানায় বৃহস্পতিবার অগ্নিকাণ্ডের পর গতকাল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন লাগল। প্রত্যক্ষদর্শী, ফায়ার সার্ভিস ও বিমানবন্দরের সূত্র জানায়, বেলা সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে আগুনের সূত্রপাত হয়। এটি বিমানবন্দরের ডাকঘর ও হ্যাঙ্গারের মাঝামাঝি স্থানে এবং ৮ নম্বর গেটের পাশে অবস্থিত। সামনে খোলা জায়গা থাকায় বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের এলাকা থেকেও ঘন কালো ধোঁয়া দেখা যায়।
আগুনের কারণে বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিমানবন্দরে থাকা উড়োজাহাজগুলো নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে সাধারণত তুলনামূলক কম ওজনের যন্ত্রপাতি, পচনশীল পণ্য ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী আমদানি হয়। এ ছাড়া পোশাক খাতসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহারের জন্য নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থও আসে। বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটটি হ্যাঙ্গার গেট নামে পরিচিত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আগুনের সূত্রপাত আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনের তিনটি গেটের মধ্যে ২ নম্বর গেটের কুরিয়ার শাখা থেকে হয়েছে।
বিমানবন্দরে উপস্থিত বিমান বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানান, বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে অ্যালার্ম (সংকেত) বেজে ওঠে। এতে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স থেকে সব কর্মী দ্রুত বেরিয়ে আসেন। কর্মীদের অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো অনুমতিজনিত জটিলতার কারণে ৮ নম্বর ফটকে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। এই সময়েই আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। তখন ওই কমপ্লেক্সের সামনে উড়োজাহাজ পার্কিংয়ে থাকা উড়োজাহাজগুলো সরিয়ে ফাঁকা করা হয়।
খবর ছড়িয়ে পড়লে কার্গো ভিলেজের বাইরে উৎসুক জনতা ভিড় করে। মাইকিং করে বিমানবাহিনী সবাইকে সরে যেতে অনুরোধ জানায়। বিমানবন্দরে প্রবেশের পথগুলো বন্ধ রাখা হয়। এতে উত্তরামুখী সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্য সংরক্ষণ করা হয়। ১ নম্বর গেট বা গেট ‘এ’ কমার্শিয়াল গেট নামে পরিচিত, যেখানে কেমিক্যাল, কসমেটিকস ও ব্যাগেজ রাখা হয়। গেট ‘বি’-তে গার্মেন্টস পণ্য এবং গেট ‘সি’-তে ইলেকট্রনিকস ও শিল্প মেশিন রাখা হয়। এসব পণ্য সাধারণত ২৪ থেকে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ভবনে থাকে। এরপর আমদানিকারকেরা ছাড়িয়ে নেন।
বিমানবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম ভূঁইয়া মিঠু সাংবাদিকদের জানান, শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বেলা ২টা পর্যন্ত কার্গো ভিলেজে নিয়মিত কাজ চলে। অনেক পণ্য জমে ছিল, যেগুলো রোববার ছাড়িয়ে নেওয়ার কথা ছিল। তাই দুপুরেও শ্রমিক, আনসারসহ অনেকে ছিলেন। আগুন লাগার পর সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, কুরিয়ার গুদামের পাশেই রাসায়নিকের গুদাম রয়েছে। পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্পের জন্য আমদানি করা রাসায়নিক সেখানে মজুত ছিল।
ওই কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে আসা বিমানের কর্মীরা বলেন, কুরিয়ার শাখার শেডের বাইরেও উড়োজাহাজ থেকে নামানো অনেক পণ্য ছিল।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া অফিসার তালহা বিন জসিম জানান, বেলা সোয়া ২টার দিকে তাঁরা আগুন লাগার খবর পান। ১৩টি ফায়ার স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাত ৯টা ১৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভাতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিট এবং নৌবাহিনীও কাজ করে। দুই প্লাটুন বিজিবিও মাঠে ছিল। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুজন ও আনসারের ২২ জন সদস্য আহত হয়েছেন।
সন্ধ্যার পর ৮ নম্বর ফটক দিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স বের হতে দেখা যায়। ফটকের সামনে থেকে সংবাদমাধ্যমকর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। মাইকে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে দূরে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
সন্ধ্যার পর কার্গো ভিলেজ এলাকায় যান অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে। আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে বিমানবন্দর চালু করা। বিমানবন্দরের চলমান কার্যক্রম কীভাবে বজায় রাখা যাবে, সে বিষয়ে আমরা পদ্ধতিগতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি।’ তিনি জানান, আগুন লেগেছে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে, তবে রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্স নিরাপদ রয়েছে। আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে তদন্ত করা হবে এবং তথ্যের জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। তদন্তের জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার রাত পৌনে ৯টার দিকে বিবৃতিতে বলেছে, ঢাকার বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজসহ অন্যান্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার সুযোগ দেওয়া হবে না।
উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা
আগুন লাগার পর বেলা সাড়ে ৩টা থেকে টানা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব উড়োজাহাজ ওঠানামা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। এ সময় নয়টি ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করতে না পেরে বিকল্প হিসেবে আটটি ফ্লাইট চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এবং একটি ফ্লাইট সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিকেলে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ বলেন, কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার পর উড়োজাহাজ ওঠানামা স্থগিত রাখা হয়েছে।
রাত ৯টা থেকে শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট কার্যক্রম আবার চালু করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের তদন্ত কমিটি
এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। সংস্থার প্রশাসন ও মানবসম্পদ পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. নওসাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট সেফটির প্রধানকে। কমিটিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন এবং বিমানের আরও পাঁচজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।
কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) কাছে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ক্ষতি নিরূপণের জন্য কাস্টমস আইআরডির যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা করছে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো
কার্গো ভিলেজে আগুনে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো কাজ শুরু করেছে। তারা সদস্য কারখানাগুলোর কাছে নির্ধারিত ফরমে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের তালিকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে। সংগঠনগুলো বলছে, এক–দুদিনের মধ্যেই কার্গো ভিলেজে থাকা পণ্যের সঠিক তথ্য জানা যাবে।
রপ্তানিকারক প্রতিনিধিরা বলেন, কার্গো ভিলেজের মতো স্পর্শকাতর স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রমাণ করে এটি কতটা অনিরাপদ ছিল। বছরের পর বছর ধরে খোলা জায়গায় পণ্য রাখার বিষয়ে অভিযোগ করেও সমাধান হয়নি। তাঁরা বলছেন, এটি কেবল দুর্ঘটনা নাকি কোনো ষড়যন্ত্র—তা দ্রুত তদন্তে বের করা উচিত।
আকাশপথে পণ্য পরিবহনকারী আরএমকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান ইবনে আমিন সোহাইল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই ঘটনায় আমদানিকারকদের বড় ক্ষতি হলো।’
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ক্ষতির নির্ভরযোগ্য তথ্য এখনো হাতে নেই। প্রতিদিন গড়ে ২০০–২৫০টি কারখানার পণ্য উড়োজাহাজে রপ্তানি হয়। সে হিসাবে সমপরিমাণ কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
রাজনৈতিক নেতাদের উদ্বেগ
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ উদ্বেগ জানান এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানান।
সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এবং বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন লাগার ঘটনা একই সূত্রে গাথা। এসব অগ্নিকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত—এমনটাই জনগণ বিশ্বাস করে।’
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিঃসন্দেহে প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, অবহেলা ও নিরাপত্তা ঘাটতির এক স্পষ্ট প্রমাণ।
মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে মঙ্গলবার রাসায়নিকের একটি গুদাম ও পাশের পোশাক কারখানায় আগুনে ১৬ জন নিহত হন। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের ইপিজেডে অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইলস লিমিটেডের কারখানায় আগুন লাগে। প্রায় সাড়ে ১৭ ঘণ্টা পর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে। যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের চেষ্টাতেও রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত আগুন পুরো নেভেনি। আহত হয়েছেন ২২ জন। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। আমদানিকারকেরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। বিমানবন্দরের ভেতরে নজিরবিহীন এই অগ্নিকাণ্ডকে অনেকে রহস্যজনক বলছেন। অনেকে বলছেন, বিমানবন্দরে সার্বক্ষণিক ফায়ার ইউনিট থাকার পরও আগুন এভাবে ছড়িয়ে পড়ায় প্রশ্ন উঠেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। ঘটনা তদন্তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সাত সদস্যের ও কাস্টমস পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে গত মঙ্গলবার রাসায়নিকের গুদাম ও পোশাক কারখানা, চট্টগ্রামের ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানায় বৃহস্পতিবার অগ্নিকাণ্ডের পর গতকাল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন লাগল। প্রত্যক্ষদর্শী, ফায়ার সার্ভিস ও বিমানবন্দরের সূত্র জানায়, বেলা সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে আগুনের সূত্রপাত হয়। এটি বিমানবন্দরের ডাকঘর ও হ্যাঙ্গারের মাঝামাঝি স্থানে এবং ৮ নম্বর গেটের পাশে অবস্থিত। সামনে খোলা জায়গা থাকায় বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের এলাকা থেকেও ঘন কালো ধোঁয়া দেখা যায়।
আগুনের কারণে বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিমানবন্দরে থাকা উড়োজাহাজগুলো নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে সাধারণত তুলনামূলক কম ওজনের যন্ত্রপাতি, পচনশীল পণ্য ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী আমদানি হয়। এ ছাড়া পোশাক খাতসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহারের জন্য নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থও আসে। বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটটি হ্যাঙ্গার গেট নামে পরিচিত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আগুনের সূত্রপাত আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনের তিনটি গেটের মধ্যে ২ নম্বর গেটের কুরিয়ার শাখা থেকে হয়েছে।
বিমানবন্দরে উপস্থিত বিমান বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানান, বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে অ্যালার্ম (সংকেত) বেজে ওঠে। এতে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স থেকে সব কর্মী দ্রুত বেরিয়ে আসেন। কর্মীদের অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো অনুমতিজনিত জটিলতার কারণে ৮ নম্বর ফটকে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। এই সময়েই আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। তখন ওই কমপ্লেক্সের সামনে উড়োজাহাজ পার্কিংয়ে থাকা উড়োজাহাজগুলো সরিয়ে ফাঁকা করা হয়।
খবর ছড়িয়ে পড়লে কার্গো ভিলেজের বাইরে উৎসুক জনতা ভিড় করে। মাইকিং করে বিমানবাহিনী সবাইকে সরে যেতে অনুরোধ জানায়। বিমানবন্দরে প্রবেশের পথগুলো বন্ধ রাখা হয়। এতে উত্তরামুখী সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্য সংরক্ষণ করা হয়। ১ নম্বর গেট বা গেট ‘এ’ কমার্শিয়াল গেট নামে পরিচিত, যেখানে কেমিক্যাল, কসমেটিকস ও ব্যাগেজ রাখা হয়। গেট ‘বি’-তে গার্মেন্টস পণ্য এবং গেট ‘সি’-তে ইলেকট্রনিকস ও শিল্প মেশিন রাখা হয়। এসব পণ্য সাধারণত ২৪ থেকে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ভবনে থাকে। এরপর আমদানিকারকেরা ছাড়িয়ে নেন।
বিমানবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম ভূঁইয়া মিঠু সাংবাদিকদের জানান, শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বেলা ২টা পর্যন্ত কার্গো ভিলেজে নিয়মিত কাজ চলে। অনেক পণ্য জমে ছিল, যেগুলো রোববার ছাড়িয়ে নেওয়ার কথা ছিল। তাই দুপুরেও শ্রমিক, আনসারসহ অনেকে ছিলেন। আগুন লাগার পর সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, কুরিয়ার গুদামের পাশেই রাসায়নিকের গুদাম রয়েছে। পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্পের জন্য আমদানি করা রাসায়নিক সেখানে মজুত ছিল।
ওই কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে আসা বিমানের কর্মীরা বলেন, কুরিয়ার শাখার শেডের বাইরেও উড়োজাহাজ থেকে নামানো অনেক পণ্য ছিল।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া অফিসার তালহা বিন জসিম জানান, বেলা সোয়া ২টার দিকে তাঁরা আগুন লাগার খবর পান। ১৩টি ফায়ার স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাত ৯টা ১৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভাতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিট এবং নৌবাহিনীও কাজ করে। দুই প্লাটুন বিজিবিও মাঠে ছিল। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুজন ও আনসারের ২২ জন সদস্য আহত হয়েছেন।
সন্ধ্যার পর ৮ নম্বর ফটক দিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স বের হতে দেখা যায়। ফটকের সামনে থেকে সংবাদমাধ্যমকর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। মাইকে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে দূরে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
সন্ধ্যার পর কার্গো ভিলেজ এলাকায় যান অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে। আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে বিমানবন্দর চালু করা। বিমানবন্দরের চলমান কার্যক্রম কীভাবে বজায় রাখা যাবে, সে বিষয়ে আমরা পদ্ধতিগতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি।’ তিনি জানান, আগুন লেগেছে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে, তবে রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্স নিরাপদ রয়েছে। আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে তদন্ত করা হবে এবং তথ্যের জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। তদন্তের জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার রাত পৌনে ৯টার দিকে বিবৃতিতে বলেছে, ঢাকার বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজসহ অন্যান্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার সুযোগ দেওয়া হবে না।
উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা
আগুন লাগার পর বেলা সাড়ে ৩টা থেকে টানা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব উড়োজাহাজ ওঠানামা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। এ সময় নয়টি ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করতে না পেরে বিকল্প হিসেবে আটটি ফ্লাইট চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এবং একটি ফ্লাইট সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিকেলে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ বলেন, কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার পর উড়োজাহাজ ওঠানামা স্থগিত রাখা হয়েছে।
রাত ৯টা থেকে শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট কার্যক্রম আবার চালু করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের তদন্ত কমিটি
এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। সংস্থার প্রশাসন ও মানবসম্পদ পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. নওসাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট সেফটির প্রধানকে। কমিটিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন এবং বিমানের আরও পাঁচজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।
কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) কাছে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ক্ষতি নিরূপণের জন্য কাস্টমস আইআরডির যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা করছে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো
কার্গো ভিলেজে আগুনে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো কাজ শুরু করেছে। তারা সদস্য কারখানাগুলোর কাছে নির্ধারিত ফরমে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের তালিকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে। সংগঠনগুলো বলছে, এক–দুদিনের মধ্যেই কার্গো ভিলেজে থাকা পণ্যের সঠিক তথ্য জানা যাবে।
রপ্তানিকারক প্রতিনিধিরা বলেন, কার্গো ভিলেজের মতো স্পর্শকাতর স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রমাণ করে এটি কতটা অনিরাপদ ছিল। বছরের পর বছর ধরে খোলা জায়গায় পণ্য রাখার বিষয়ে অভিযোগ করেও সমাধান হয়নি। তাঁরা বলছেন, এটি কেবল দুর্ঘটনা নাকি কোনো ষড়যন্ত্র—তা দ্রুত তদন্তে বের করা উচিত।
আকাশপথে পণ্য পরিবহনকারী আরএমকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান ইবনে আমিন সোহাইল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই ঘটনায় আমদানিকারকদের বড় ক্ষতি হলো।’
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ক্ষতির নির্ভরযোগ্য তথ্য এখনো হাতে নেই। প্রতিদিন গড়ে ২০০–২৫০টি কারখানার পণ্য উড়োজাহাজে রপ্তানি হয়। সে হিসাবে সমপরিমাণ কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
রাজনৈতিক নেতাদের উদ্বেগ
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ উদ্বেগ জানান এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানান।
সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এবং বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন লাগার ঘটনা একই সূত্রে গাথা। এসব অগ্নিকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত—এমনটাই জনগণ বিশ্বাস করে।’
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিঃসন্দেহে প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, অবহেলা ও নিরাপত্তা ঘাটতির এক স্পষ্ট প্রমাণ।
মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে মঙ্গলবার রাসায়নিকের একটি গুদাম ও পাশের পোশাক কারখানায় আগুনে ১৬ জন নিহত হন। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের ইপিজেডে অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইলস লিমিটেডের কারখানায় আগুন লাগে। প্রায় সাড়ে ১৭ ঘণ্টা পর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে। যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের চেষ্টাতেও রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত আগুন পুরো নেভেনি। আহত হয়েছেন ২২ জন। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। আমদানিকারকেরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। বিমানবন্দরের ভেতরে নজিরবিহীন এই অগ্নিকাণ্ডকে অনেকে রহস্যজনক বলছেন। অনেকে বলছেন, বিমানবন্দরে সার্বক্ষণিক ফায়ার ইউনিট থাকার পরও আগুন এভাবে ছড়িয়ে পড়ায় প্রশ্ন উঠেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। ঘটনা তদন্তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সাত সদস্যের ও কাস্টমস পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে গত মঙ্গলবার রাসায়নিকের গুদাম ও পোশাক কারখানা, চট্টগ্রামের ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানায় বৃহস্পতিবার অগ্নিকাণ্ডের পর গতকাল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন লাগল। প্রত্যক্ষদর্শী, ফায়ার সার্ভিস ও বিমানবন্দরের সূত্র জানায়, বেলা সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে আগুনের সূত্রপাত হয়। এটি বিমানবন্দরের ডাকঘর ও হ্যাঙ্গারের মাঝামাঝি স্থানে এবং ৮ নম্বর গেটের পাশে অবস্থিত। সামনে খোলা জায়গা থাকায় বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের এলাকা থেকেও ঘন কালো ধোঁয়া দেখা যায়।
আগুনের কারণে বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিমানবন্দরে থাকা উড়োজাহাজগুলো নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে সাধারণত তুলনামূলক কম ওজনের যন্ত্রপাতি, পচনশীল পণ্য ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী আমদানি হয়। এ ছাড়া পোশাক খাতসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহারের জন্য নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থও আসে। বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটটি হ্যাঙ্গার গেট নামে পরিচিত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আগুনের সূত্রপাত আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনের তিনটি গেটের মধ্যে ২ নম্বর গেটের কুরিয়ার শাখা থেকে হয়েছে।
বিমানবন্দরে উপস্থিত বিমান বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানান, বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে অ্যালার্ম (সংকেত) বেজে ওঠে। এতে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স থেকে সব কর্মী দ্রুত বেরিয়ে আসেন। কর্মীদের অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো অনুমতিজনিত জটিলতার কারণে ৮ নম্বর ফটকে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। এই সময়েই আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। তখন ওই কমপ্লেক্সের সামনে উড়োজাহাজ পার্কিংয়ে থাকা উড়োজাহাজগুলো সরিয়ে ফাঁকা করা হয়।
খবর ছড়িয়ে পড়লে কার্গো ভিলেজের বাইরে উৎসুক জনতা ভিড় করে। মাইকিং করে বিমানবাহিনী সবাইকে সরে যেতে অনুরোধ জানায়। বিমানবন্দরে প্রবেশের পথগুলো বন্ধ রাখা হয়। এতে উত্তরামুখী সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্য সংরক্ষণ করা হয়। ১ নম্বর গেট বা গেট ‘এ’ কমার্শিয়াল গেট নামে পরিচিত, যেখানে কেমিক্যাল, কসমেটিকস ও ব্যাগেজ রাখা হয়। গেট ‘বি’-তে গার্মেন্টস পণ্য এবং গেট ‘সি’-তে ইলেকট্রনিকস ও শিল্প মেশিন রাখা হয়। এসব পণ্য সাধারণত ২৪ থেকে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ভবনে থাকে। এরপর আমদানিকারকেরা ছাড়িয়ে নেন।
বিমানবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম ভূঁইয়া মিঠু সাংবাদিকদের জানান, শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বেলা ২টা পর্যন্ত কার্গো ভিলেজে নিয়মিত কাজ চলে। অনেক পণ্য জমে ছিল, যেগুলো রোববার ছাড়িয়ে নেওয়ার কথা ছিল। তাই দুপুরেও শ্রমিক, আনসারসহ অনেকে ছিলেন। আগুন লাগার পর সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, কুরিয়ার গুদামের পাশেই রাসায়নিকের গুদাম রয়েছে। পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্পের জন্য আমদানি করা রাসায়নিক সেখানে মজুত ছিল।
ওই কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে আসা বিমানের কর্মীরা বলেন, কুরিয়ার শাখার শেডের বাইরেও উড়োজাহাজ থেকে নামানো অনেক পণ্য ছিল।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া অফিসার তালহা বিন জসিম জানান, বেলা সোয়া ২টার দিকে তাঁরা আগুন লাগার খবর পান। ১৩টি ফায়ার স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাত ৯টা ১৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভাতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিট এবং নৌবাহিনীও কাজ করে। দুই প্লাটুন বিজিবিও মাঠে ছিল। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুজন ও আনসারের ২২ জন সদস্য আহত হয়েছেন।
সন্ধ্যার পর ৮ নম্বর ফটক দিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স বের হতে দেখা যায়। ফটকের সামনে থেকে সংবাদমাধ্যমকর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। মাইকে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে দূরে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
সন্ধ্যার পর কার্গো ভিলেজ এলাকায় যান অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে। আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে বিমানবন্দর চালু করা। বিমানবন্দরের চলমান কার্যক্রম কীভাবে বজায় রাখা যাবে, সে বিষয়ে আমরা পদ্ধতিগতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি।’ তিনি জানান, আগুন লেগেছে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে, তবে রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্স নিরাপদ রয়েছে। আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে তদন্ত করা হবে এবং তথ্যের জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। তদন্তের জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার রাত পৌনে ৯টার দিকে বিবৃতিতে বলেছে, ঢাকার বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজসহ অন্যান্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার সুযোগ দেওয়া হবে না।
উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা
আগুন লাগার পর বেলা সাড়ে ৩টা থেকে টানা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব উড়োজাহাজ ওঠানামা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। এ সময় নয়টি ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করতে না পেরে বিকল্প হিসেবে আটটি ফ্লাইট চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এবং একটি ফ্লাইট সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিকেলে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ বলেন, কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার পর উড়োজাহাজ ওঠানামা স্থগিত রাখা হয়েছে।
রাত ৯টা থেকে শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট কার্যক্রম আবার চালু করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের তদন্ত কমিটি
এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। সংস্থার প্রশাসন ও মানবসম্পদ পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. নওসাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট সেফটির প্রধানকে। কমিটিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন এবং বিমানের আরও পাঁচজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।
কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) কাছে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ক্ষতি নিরূপণের জন্য কাস্টমস আইআরডির যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা করছে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো
কার্গো ভিলেজে আগুনে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো কাজ শুরু করেছে। তারা সদস্য কারখানাগুলোর কাছে নির্ধারিত ফরমে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের তালিকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে। সংগঠনগুলো বলছে, এক–দুদিনের মধ্যেই কার্গো ভিলেজে থাকা পণ্যের সঠিক তথ্য জানা যাবে।
রপ্তানিকারক প্রতিনিধিরা বলেন, কার্গো ভিলেজের মতো স্পর্শকাতর স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রমাণ করে এটি কতটা অনিরাপদ ছিল। বছরের পর বছর ধরে খোলা জায়গায় পণ্য রাখার বিষয়ে অভিযোগ করেও সমাধান হয়নি। তাঁরা বলছেন, এটি কেবল দুর্ঘটনা নাকি কোনো ষড়যন্ত্র—তা দ্রুত তদন্তে বের করা উচিত।
আকাশপথে পণ্য পরিবহনকারী আরএমকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান ইবনে আমিন সোহাইল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই ঘটনায় আমদানিকারকদের বড় ক্ষতি হলো।’
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ক্ষতির নির্ভরযোগ্য তথ্য এখনো হাতে নেই। প্রতিদিন গড়ে ২০০–২৫০টি কারখানার পণ্য উড়োজাহাজে রপ্তানি হয়। সে হিসাবে সমপরিমাণ কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
রাজনৈতিক নেতাদের উদ্বেগ
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ উদ্বেগ জানান এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানান।
সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এবং বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন লাগার ঘটনা একই সূত্রে গাথা। এসব অগ্নিকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত—এমনটাই জনগণ বিশ্বাস করে।’
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিঃসন্দেহে প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, অবহেলা ও নিরাপত্তা ঘাটতির এক স্পষ্ট প্রমাণ।
মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে মঙ্গলবার রাসায়নিকের একটি গুদাম ও পাশের পোশাক কারখানায় আগুনে ১৬ জন নিহত হন। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের ইপিজেডে অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইলস লিমিটেডের কারখানায় আগুন লাগে। প্রায় সাড়ে ১৭ ঘণ্টা পর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে। যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের চেষ্টাতেও রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত আগুন পুরো নেভেনি। আহত হয়েছেন ২২ জন। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। আমদানিকারকেরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। বিমানবন্দরের ভেতরে নজিরবিহীন এই অগ্নিকাণ্ডকে অনেকে রহস্যজনক বলছেন। অনেকে বলছেন, বিমানবন্দরে সার্বক্ষণিক ফায়ার ইউনিট থাকার পরও আগুন এভাবে ছড়িয়ে পড়ায় প্রশ্ন উঠেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। ঘটনা তদন্তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সাত সদস্যের ও কাস্টমস পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে গত মঙ্গলবার রাসায়নিকের গুদাম ও পোশাক কারখানা, চট্টগ্রামের ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানায় বৃহস্পতিবার অগ্নিকাণ্ডের পর গতকাল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন লাগল। প্রত্যক্ষদর্শী, ফায়ার সার্ভিস ও বিমানবন্দরের সূত্র জানায়, বেলা সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে আগুনের সূত্রপাত হয়। এটি বিমানবন্দরের ডাকঘর ও হ্যাঙ্গারের মাঝামাঝি স্থানে এবং ৮ নম্বর গেটের পাশে অবস্থিত। সামনে খোলা জায়গা থাকায় বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের এলাকা থেকেও ঘন কালো ধোঁয়া দেখা যায়।
আগুনের কারণে বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিমানবন্দরে থাকা উড়োজাহাজগুলো নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে সাধারণত তুলনামূলক কম ওজনের যন্ত্রপাতি, পচনশীল পণ্য ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী আমদানি হয়। এ ছাড়া পোশাক খাতসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহারের জন্য নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থও আসে। বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটটি হ্যাঙ্গার গেট নামে পরিচিত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আগুনের সূত্রপাত আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনের তিনটি গেটের মধ্যে ২ নম্বর গেটের কুরিয়ার শাখা থেকে হয়েছে।
বিমানবন্দরে উপস্থিত বিমান বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানান, বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে অ্যালার্ম (সংকেত) বেজে ওঠে। এতে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স থেকে সব কর্মী দ্রুত বেরিয়ে আসেন। কর্মীদের অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো অনুমতিজনিত জটিলতার কারণে ৮ নম্বর ফটকে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। এই সময়েই আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। তখন ওই কমপ্লেক্সের সামনে উড়োজাহাজ পার্কিংয়ে থাকা উড়োজাহাজগুলো সরিয়ে ফাঁকা করা হয়।
খবর ছড়িয়ে পড়লে কার্গো ভিলেজের বাইরে উৎসুক জনতা ভিড় করে। মাইকিং করে বিমানবাহিনী সবাইকে সরে যেতে অনুরোধ জানায়। বিমানবন্দরে প্রবেশের পথগুলো বন্ধ রাখা হয়। এতে উত্তরামুখী সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্য সংরক্ষণ করা হয়। ১ নম্বর গেট বা গেট ‘এ’ কমার্শিয়াল গেট নামে পরিচিত, যেখানে কেমিক্যাল, কসমেটিকস ও ব্যাগেজ রাখা হয়। গেট ‘বি’-তে গার্মেন্টস পণ্য এবং গেট ‘সি’-তে ইলেকট্রনিকস ও শিল্প মেশিন রাখা হয়। এসব পণ্য সাধারণত ২৪ থেকে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ভবনে থাকে। এরপর আমদানিকারকেরা ছাড়িয়ে নেন।
বিমানবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম ভূঁইয়া মিঠু সাংবাদিকদের জানান, শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বেলা ২টা পর্যন্ত কার্গো ভিলেজে নিয়মিত কাজ চলে। অনেক পণ্য জমে ছিল, যেগুলো রোববার ছাড়িয়ে নেওয়ার কথা ছিল। তাই দুপুরেও শ্রমিক, আনসারসহ অনেকে ছিলেন। আগুন লাগার পর সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, কুরিয়ার গুদামের পাশেই রাসায়নিকের গুদাম রয়েছে। পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্পের জন্য আমদানি করা রাসায়নিক সেখানে মজুত ছিল।
ওই কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে আসা বিমানের কর্মীরা বলেন, কুরিয়ার শাখার শেডের বাইরেও উড়োজাহাজ থেকে নামানো অনেক পণ্য ছিল।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া অফিসার তালহা বিন জসিম জানান, বেলা সোয়া ২টার দিকে তাঁরা আগুন লাগার খবর পান। ১৩টি ফায়ার স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাত ৯টা ১৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভাতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিট এবং নৌবাহিনীও কাজ করে। দুই প্লাটুন বিজিবিও মাঠে ছিল। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুজন ও আনসারের ২২ জন সদস্য আহত হয়েছেন।
সন্ধ্যার পর ৮ নম্বর ফটক দিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স বের হতে দেখা যায়। ফটকের সামনে থেকে সংবাদমাধ্যমকর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। মাইকে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে দূরে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
সন্ধ্যার পর কার্গো ভিলেজ এলাকায় যান অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখনো যথেষ্ট আগুন রয়েছে। আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে বিমানবন্দর চালু করা। বিমানবন্দরের চলমান কার্যক্রম কীভাবে বজায় রাখা যাবে, সে বিষয়ে আমরা পদ্ধতিগতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি।’ তিনি জানান, আগুন লেগেছে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে, তবে রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্স নিরাপদ রয়েছে। আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে তদন্ত করা হবে এবং তথ্যের জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। তদন্তের জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার রাত পৌনে ৯টার দিকে বিবৃতিতে বলেছে, ঢাকার বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজসহ অন্যান্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার সুযোগ দেওয়া হবে না।
উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা
আগুন লাগার পর বেলা সাড়ে ৩টা থেকে টানা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব উড়োজাহাজ ওঠানামা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। এ সময় নয়টি ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করতে না পেরে বিকল্প হিসেবে আটটি ফ্লাইট চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এবং একটি ফ্লাইট সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিকেলে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ বলেন, কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার পর উড়োজাহাজ ওঠানামা স্থগিত রাখা হয়েছে।
রাত ৯টা থেকে শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট কার্যক্রম আবার চালু করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের তদন্ত কমিটি
এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। সংস্থার প্রশাসন ও মানবসম্পদ পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. নওসাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট সেফটির প্রধানকে। কমিটিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন এবং বিমানের আরও পাঁচজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।
কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) কাছে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ক্ষতি নিরূপণের জন্য কাস্টমস আইআরডির যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা করছে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো
কার্গো ভিলেজে আগুনে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো কাজ শুরু করেছে। তারা সদস্য কারখানাগুলোর কাছে নির্ধারিত ফরমে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের তালিকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে। সংগঠনগুলো বলছে, এক–দুদিনের মধ্যেই কার্গো ভিলেজে থাকা পণ্যের সঠিক তথ্য জানা যাবে।
রপ্তানিকারক প্রতিনিধিরা বলেন, কার্গো ভিলেজের মতো স্পর্শকাতর স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রমাণ করে এটি কতটা অনিরাপদ ছিল। বছরের পর বছর ধরে খোলা জায়গায় পণ্য রাখার বিষয়ে অভিযোগ করেও সমাধান হয়নি। তাঁরা বলছেন, এটি কেবল দুর্ঘটনা নাকি কোনো ষড়যন্ত্র—তা দ্রুত তদন্তে বের করা উচিত।
আকাশপথে পণ্য পরিবহনকারী আরএমকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান ইবনে আমিন সোহাইল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই ঘটনায় আমদানিকারকদের বড় ক্ষতি হলো।’
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ক্ষতির নির্ভরযোগ্য তথ্য এখনো হাতে নেই। প্রতিদিন গড়ে ২০০–২৫০টি কারখানার পণ্য উড়োজাহাজে রপ্তানি হয়। সে হিসাবে সমপরিমাণ কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
রাজনৈতিক নেতাদের উদ্বেগ
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ উদ্বেগ জানান এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানান।
সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এবং বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন লাগার ঘটনা একই সূত্রে গাথা। এসব অগ্নিকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত—এমনটাই জনগণ বিশ্বাস করে।’
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিঃসন্দেহে প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, অবহেলা ও নিরাপত্তা ঘাটতির এক স্পষ্ট প্রমাণ।
মিরপুরের শিয়ালবাড়ীতে মঙ্গলবার রাসায়নিকের একটি গুদাম ও পাশের পোশাক কারখানায় আগুনে ১৬ জন নিহত হন। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের ইপিজেডে অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইলস লিমিটেডের কারখানায় আগুন লাগে। প্রায় সাড়ে ১৭ ঘণ্টা পর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনা
৩৪ মিনিট আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজার সময় পিছিয়ে আগামীকাল শনিবার বেলা দুইটায় নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ছায়ানট ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের প্রতি সংগঠনটি এই আহ্বান জানায়।
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির লাশ ঢাকায় পৌঁছানোকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরজুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা।
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনাকে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ভিত্তি, নাগরিক নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার চেতনার বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক লিখিত বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টার্গেটেড শুটিংয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থতা এবং পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অদূরদর্শিতা ও অদক্ষতারই প্রতিফলন। এর ফলে গণরোষ থেকে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি আরও বেড়েছে, যার দায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতনের পর বিজয়ের দাবিদার কিছু শক্তির আক্রোশপূর্ণ ও প্রতিশোধপ্রবণ আচরণ রাষ্ট্র ও সমাজে নতুন ধরনের দমনমূলক প্রবণতা তৈরি করছে। এর সরাসরি শিকার হচ্ছে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার কার্যকর অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছে; বরং অতীতে অনুরূপ সংকটে নতজানু অবস্থান গ্রহণ করে রাষ্ট্র নিজেই অসহিষ্ণুতা ও সহিংসতার ক্ষেত্র প্রসারিত করেছে।
টিআইবি জানায়, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের মতো শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলা, সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটে আক্রমণ এবং কথিত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাসকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন নয়। বরং এসবই মুক্তচিন্তা, ভিন্নমত ও স্বাধীন মতপ্রকাশকে পরিকল্পিতভাবে দমনের জ্বলন্ত উদাহরণ।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে যেভাবে মানবিক মূল্যবোধ ও মৌলিক মানবাধিকার পদদলিত হয়েছিল, আজ সেই একই দমনমূলক বাস্তবতা নতুন রূপে ফিরে আসছে। যারা বিগত ১৬ বছর অধিকার হরণের শিকার হয়েছেন এবং জুলাই আন্দোলনের বিজয়ী হিসেবে নিজেদের দাবি করছেন, তাঁদেরই একাংশের হাতে আজ মুক্ত গণমাধ্যম ও ভিন্নমতের অধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান সতর্ক করে বলেন, এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ও মূল্যবোধ চরম হুমকির মুখে পড়ছে। বৈষম্যমুক্ত সমাজ, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্প্রীতি ও বহু সংস্কৃতির সহাবস্থানের যে স্বপ্ন একাত্তর ও জুলাই ধারণ করেছিল, তা আজ গভীর সংকটে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট আবেগকে কাজে লাগিয়ে মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের বিরোধী স্বার্থান্বেষী মহল পতিত শক্তির ইন্ধনে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে। তিনি হত্যাকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি এবং মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে কার্যকর, সমন্বিত ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
ড. ইফতেখারুজ্জামান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এসব পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রত্যাশা, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং একাত্তর ও জুলাইয়ের মৌলিক আদর্শ আরও গভীর সংকটে পড়বে, যার দায় সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারবে না।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনাকে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ভিত্তি, নাগরিক নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার চেতনার বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক লিখিত বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টার্গেটেড শুটিংয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থতা এবং পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অদূরদর্শিতা ও অদক্ষতারই প্রতিফলন। এর ফলে গণরোষ থেকে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি আরও বেড়েছে, যার দায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতনের পর বিজয়ের দাবিদার কিছু শক্তির আক্রোশপূর্ণ ও প্রতিশোধপ্রবণ আচরণ রাষ্ট্র ও সমাজে নতুন ধরনের দমনমূলক প্রবণতা তৈরি করছে। এর সরাসরি শিকার হচ্ছে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার কার্যকর অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছে; বরং অতীতে অনুরূপ সংকটে নতজানু অবস্থান গ্রহণ করে রাষ্ট্র নিজেই অসহিষ্ণুতা ও সহিংসতার ক্ষেত্র প্রসারিত করেছে।
টিআইবি জানায়, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের মতো শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলা, সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটে আক্রমণ এবং কথিত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাসকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন নয়। বরং এসবই মুক্তচিন্তা, ভিন্নমত ও স্বাধীন মতপ্রকাশকে পরিকল্পিতভাবে দমনের জ্বলন্ত উদাহরণ।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে যেভাবে মানবিক মূল্যবোধ ও মৌলিক মানবাধিকার পদদলিত হয়েছিল, আজ সেই একই দমনমূলক বাস্তবতা নতুন রূপে ফিরে আসছে। যারা বিগত ১৬ বছর অধিকার হরণের শিকার হয়েছেন এবং জুলাই আন্দোলনের বিজয়ী হিসেবে নিজেদের দাবি করছেন, তাঁদেরই একাংশের হাতে আজ মুক্ত গণমাধ্যম ও ভিন্নমতের অধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান সতর্ক করে বলেন, এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ও মূল্যবোধ চরম হুমকির মুখে পড়ছে। বৈষম্যমুক্ত সমাজ, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্প্রীতি ও বহু সংস্কৃতির সহাবস্থানের যে স্বপ্ন একাত্তর ও জুলাই ধারণ করেছিল, তা আজ গভীর সংকটে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট আবেগকে কাজে লাগিয়ে মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের বিরোধী স্বার্থান্বেষী মহল পতিত শক্তির ইন্ধনে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে। তিনি হত্যাকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি এবং মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে কার্যকর, সমন্বিত ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
ড. ইফতেখারুজ্জামান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এসব পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রত্যাশা, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং একাত্তর ও জুলাইয়ের মৌলিক আদর্শ আরও গভীর সংকটে পড়বে, যার দায় সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারবে না।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে।
১৯ অক্টোবর ২০২৫
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজার সময় পিছিয়ে আগামীকাল শনিবার বেলা দুইটায় নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ছায়ানট ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের প্রতি সংগঠনটি এই আহ্বান জানায়।
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির লাশ ঢাকায় পৌঁছানোকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরজুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা।
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজার সময় এগিয়ে এনে আগামীকাল শনিবার বেলা দুইটায় নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামীকাল বেলা দুইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শহিদ ওসমান হাদির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে নামাজে জানাজা বেলা আড়াইটায় অনুষ্ঠিত হবার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
শহিদ ওসমান হাদির নামাজে জানাজায় যারা অংশ নিতে আসবেন তারা কোনো প্রকার ব্যাগ বা ভারী বস্তু বহন না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সংসদ ভবন ও এর আশপাশের এলাকায় ড্রোন উড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজার সময় এগিয়ে এনে আগামীকাল শনিবার বেলা দুইটায় নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামীকাল বেলা দুইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শহিদ ওসমান হাদির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে নামাজে জানাজা বেলা আড়াইটায় অনুষ্ঠিত হবার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
শহিদ ওসমান হাদির নামাজে জানাজায় যারা অংশ নিতে আসবেন তারা কোনো প্রকার ব্যাগ বা ভারী বস্তু বহন না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সংসদ ভবন ও এর আশপাশের এলাকায় ড্রোন উড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে।
১৯ অক্টোবর ২০২৫
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনা
৩৪ মিনিট আগে
ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ছায়ানট ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের প্রতি সংগঠনটি এই আহ্বান জানায়।
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির লাশ ঢাকায় পৌঁছানোকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরজুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা।
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ছায়ানট ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের প্রতি সংগঠনটি এই আহ্বান জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১২টার পর ওসমান হাদির মর্মান্তিক মৃত্যুকে উপলক্ষ করে একজোট লোক ছায়ানট-সংস্কৃতি ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজ চালায় এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। তারা ছয়তলা ভবনের সব সিসি ক্যামেরাসহ অধিকাংশ কক্ষ, প্রক্ষালণ কক্ষ এবং বহু বাদ্যযন্ত্র, মিলনায়তন, কম্পিউটার ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে। সার্ভারসহ ছায়ানটের কিছু বাদ্যযন্ত্র ও আসবাবপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে। অন্তত সাতটি ল্যাপটপসহ গোটা চারেক ফোন ও কিছু হার্ডডিস্ক লুট করেছে। তাদের ভাঙচুরে বৈদ্যুতিক সংযোগ ও সরঞ্জামও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
‘ছায়ানট একটি স্বেচ্ছাসেবী ও স্বনির্ভর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। ছায়ানট কোনো সরকার, বিদেশি সংস্থা বা করপোরেট অনুদান নেয় না। সুতরাং, ছায়ানট আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে এই ক্ষতি পূরণ করবে এবং সংগীত ও শিশুদের সাধারণ শিক্ষায় এই সাময়িক বিঘ্নের দ্রুত প্রতিকার করতে বদ্ধপরিকর।’
এতে আরও বলা হয়, ‘ছায়ানটের কাজের ক্ষেত্র রাজনীতি নয়, সংগীত-সংস্কৃতিচর্চার মাধ্যমে বাঙালি জাতিসত্তাকে ধারণ করে ছায়ানট। ছায়ানট সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের সমাজ গড়তে প্রয়াসী। আমরা ওসমান হাদির মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে গভীরভাবে শোকাহত। কিন্তু ওই সূত্র ধরে ছায়ানট-সংস্কৃতি ভবনে কেন হামলা সংঘটিত হলো, তা মোটেই বোধগম্য নয়। হয়তো পরিস্থিতির সুযোগ গ্রহণ করেছে সংস্কৃতিচর্চার বিরোধী গোষ্ঠী।’
সংগীতশিক্ষার প্রতিষ্ঠানটি আরও বলে, ছায়ানট এই উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ অনানুষ্ঠানিক সংগীতশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীরা দেশে ও বিদেশে সমাদৃত। বাংলা গানের চর্চা বিস্তৃতির পাশাপাশি স্বাধীনতা-সংগ্রামে ছায়ানটের ভূমিকাও সারা বিশ্বে স্বীকৃত। তাই ছায়ানট-সংস্কৃতি ভবনে এই নিন্দনীয় হামলা মাতৃভূমি সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিতে পারে বিশ্বে।
দেশ ও বিদেশ থেকে যে অগণিত শুভাকাঙ্ক্ষী তাঁদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা জানিয়েছেন, তাঁদের সবার কাছে ছায়ানট কৃতজ্ঞ।
বাঙালির আবহমান সংগীতসংস্কৃতির সাধনা ও প্রসারে ছায়ানট তার স্থির প্রত্যয় যাত্রায় অবিচল থাকবে।

ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ছায়ানট ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের প্রতি সংগঠনটি এই আহ্বান জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১২টার পর ওসমান হাদির মর্মান্তিক মৃত্যুকে উপলক্ষ করে একজোট লোক ছায়ানট-সংস্কৃতি ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজ চালায় এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। তারা ছয়তলা ভবনের সব সিসি ক্যামেরাসহ অধিকাংশ কক্ষ, প্রক্ষালণ কক্ষ এবং বহু বাদ্যযন্ত্র, মিলনায়তন, কম্পিউটার ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে। সার্ভারসহ ছায়ানটের কিছু বাদ্যযন্ত্র ও আসবাবপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে। অন্তত সাতটি ল্যাপটপসহ গোটা চারেক ফোন ও কিছু হার্ডডিস্ক লুট করেছে। তাদের ভাঙচুরে বৈদ্যুতিক সংযোগ ও সরঞ্জামও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
‘ছায়ানট একটি স্বেচ্ছাসেবী ও স্বনির্ভর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। ছায়ানট কোনো সরকার, বিদেশি সংস্থা বা করপোরেট অনুদান নেয় না। সুতরাং, ছায়ানট আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে এই ক্ষতি পূরণ করবে এবং সংগীত ও শিশুদের সাধারণ শিক্ষায় এই সাময়িক বিঘ্নের দ্রুত প্রতিকার করতে বদ্ধপরিকর।’
এতে আরও বলা হয়, ‘ছায়ানটের কাজের ক্ষেত্র রাজনীতি নয়, সংগীত-সংস্কৃতিচর্চার মাধ্যমে বাঙালি জাতিসত্তাকে ধারণ করে ছায়ানট। ছায়ানট সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের সমাজ গড়তে প্রয়াসী। আমরা ওসমান হাদির মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে গভীরভাবে শোকাহত। কিন্তু ওই সূত্র ধরে ছায়ানট-সংস্কৃতি ভবনে কেন হামলা সংঘটিত হলো, তা মোটেই বোধগম্য নয়। হয়তো পরিস্থিতির সুযোগ গ্রহণ করেছে সংস্কৃতিচর্চার বিরোধী গোষ্ঠী।’
সংগীতশিক্ষার প্রতিষ্ঠানটি আরও বলে, ছায়ানট এই উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ অনানুষ্ঠানিক সংগীতশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীরা দেশে ও বিদেশে সমাদৃত। বাংলা গানের চর্চা বিস্তৃতির পাশাপাশি স্বাধীনতা-সংগ্রামে ছায়ানটের ভূমিকাও সারা বিশ্বে স্বীকৃত। তাই ছায়ানট-সংস্কৃতি ভবনে এই নিন্দনীয় হামলা মাতৃভূমি সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিতে পারে বিশ্বে।
দেশ ও বিদেশ থেকে যে অগণিত শুভাকাঙ্ক্ষী তাঁদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা জানিয়েছেন, তাঁদের সবার কাছে ছায়ানট কৃতজ্ঞ।
বাঙালির আবহমান সংগীতসংস্কৃতির সাধনা ও প্রসারে ছায়ানট তার স্থির প্রত্যয় যাত্রায় অবিচল থাকবে।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে।
১৯ অক্টোবর ২০২৫
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনা
৩৪ মিনিট আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজার সময় পিছিয়ে আগামীকাল শনিবার বেলা দুইটায় নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির লাশ ঢাকায় পৌঁছানোকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরজুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা।
১ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির লাশ ঢাকায় পৌঁছানোকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরজুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা।
আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে বিমানবন্দর এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে ডোমেস্টিক ও আন্তর্জাতিক টার্মিনালের প্রতিটি প্রবেশপথে সেনাবাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। পুরো বিমানবন্দর এলাকার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতেও নিরাপত্তা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ভিআইপি গেটে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও আর্মড ফোর্স ব্যাটালিয়নের (এএফবি) সদস্যদের কঠোর দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে বিমানবন্দরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত নজরদারি রাখা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ওসমান হাদির লাশের বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট দিয়ে বের করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। ওই গেট এলাকাতেও সেনাবাহিনী, আর্মড ফোর্স ব্যাটালিয়ন ও পুলিশের সদস্যদের কড়া অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি ৫৮৫ ফ্লাইটে করে সিঙ্গাপুর থেকে আনা হয় ওসমান হাদির লাশ। ফ্লাইটটি সন্ধ্যা ৫টা ৪৯ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির লাশ ঢাকায় পৌঁছানোকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরজুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা।
আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে বিমানবন্দর এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে ডোমেস্টিক ও আন্তর্জাতিক টার্মিনালের প্রতিটি প্রবেশপথে সেনাবাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। পুরো বিমানবন্দর এলাকার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতেও নিরাপত্তা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ভিআইপি গেটে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও আর্মড ফোর্স ব্যাটালিয়নের (এএফবি) সদস্যদের কঠোর দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে বিমানবন্দরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত নজরদারি রাখা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ওসমান হাদির লাশের বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট দিয়ে বের করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। ওই গেট এলাকাতেও সেনাবাহিনী, আর্মড ফোর্স ব্যাটালিয়ন ও পুলিশের সদস্যদের কড়া অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি ৫৮৫ ফ্লাইটে করে সিঙ্গাপুর থেকে আনা হয় ওসমান হাদির লাশ। ফ্লাইটটি সন্ধ্যা ৫টা ৪৯ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে।
১৯ অক্টোবর ২০২৫
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনা
৩৪ মিনিট আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজার সময় পিছিয়ে আগামীকাল শনিবার বেলা দুইটায় নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ছায়ানট ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের প্রতি সংগঠনটি এই আহ্বান জানায়।
১ ঘণ্টা আগে