Ajker Patrika

বিচারপতি খায়রুলের জামিন শুনানি পেছানোর অনুরোধের পর আইনজীবীদের হাতাহাতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
এ বি এম খায়রুল হক। ছবি: সংগৃহীত
এ বি এম খায়রুল হক। ছবি: সংগৃহীত

কারাগারে থাকা সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের জামিন ও মামলার কার্যক্রম বাতিল আবেদনের শুনানিতে আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার বিচারপতি জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার বেঞ্চে এ ঘটনা ঘটে। পরে আদালত এই বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ১৭ আগস্ট দিন ধার্য করে দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আহম্মেদ ও ইমরান খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল উজ্জ্বল হোসেন, মুহাম্মদ সাফওয়ান ও জসিম উদ্দিন। আর খায়রুল হকের পক্ষে শুনানি করতে আদালতে হাজির হন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান, কামরুল হক সিদ্দিকী, জেড আই খান পান্না, মোহসীন রশিদ, কামরুল হক সিদ্দিকী, মনসরুল হক চৌধুরী, এবিএম সিদ্দিকুর রহমান, আওসাফুর রহমান বুলু, মোতাহার হোসেন সাজু, সৈয়দ মামুন মাহবুবসহ আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা।

বিকেল ৩টার দিকে এমকে রহমান শুনানি করতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আহম্মেদ বলেন, ‘এটি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অ্যাটর্নি জেনারেল এই মামলায় শুনানি করবেন।’ পরে তিনি অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলতে বাইরে যান। কিছুক্ষণ পর এসে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল এক সপ্তাহ সময় নিতে বলেছেন। এক সপ্তাহ পর এটা শুনানির জন্য রাখেন।’

আইনজীবী মোহসিন রশিদ ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি আদালতকে এভাবে নির্দেশনা দিতে পারেন না। এবিএম খায়রুল হক সাবেক প্রধান বিচারপতি। তিনি ১০–১২ বছর আগে অবসরে গেছেন। তাকে এক বছর আগে দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় চলতি বছরের ২৪ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা দেখেছি তাকে তার পেছনে হাতকড়া পরিয়ে আদালতে তোলা হয়েছে। কিন্তু বিচার বিভাগ তাঁর বিষয়ে নীরব। তাকে হাতকড়া পরানো মানে পুরো বিচার বিভাগকে হাতকড়া পরানো। আমরা বিচার বিভাগের জন্য এখানে এসেছি। বিশ্বের কোথাও এরকম নজির নেই। হাইকোর্ট এই বিষয়ে রুল জারি করার পরে অ্যাটর্নি জেনারেল যুক্তি উপস্থাপন করতে পারবেন।’

তবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আবারও হাইকোর্টকে এই সপ্তাহে বিষয়টি শুনানি না করার জন্য অনুরোধ করেন।

আইনজীবী মোহসীন রশিদ বলেন, ‘বিচারপতি খায়রুল হককে আদালত প্রাঙ্গণে অপমান করা হয়েছে। বিচারকদের অপমান করা দক্ষিণ এশিয়ায় একটি প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের একজন আইনজীবী আদালতকে বলেন, ‘খায়রুল হক বিচার বিভাগের জন্য বাধা সৃষ্টি করছেন। তিনি বিচার বিভাগ ধ্বংস এবং প্রায় ১ হাজার ৫০০ জনকে হত্যার জন্য দায়ী।’ এ সময় খায়রুল হকের সমর্থক কয়েকজন আইনজীবী চিৎকার করে সরকার-সমর্থিত আইনজীবীর বক্তব্যের বিরোধিতা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা খায়রুল হকের আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে যখন দেশ ছাড়া করা হলো তখন আপনারা কোথায় ছিলেন? খায়রুল হকের মতো গণতন্ত্র ধ্বংসকারী, কুলাঙ্গারের জামিন চাইতে এসেছেন।’

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আরেক আইনজীবী বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আমার বিরুদ্ধে বিগত সময়ে আটটি মামলা হয়েছে। তখন আপনারা কোথায় ছিলেন?’

এক পর্যায়ে আইনজীবীদের কয়েকজন আদালত কক্ষে চিৎকার, বিশৃঙ্খলা এবং হাতাহাতি শুরু করেন। যদিও আদালত বারবার তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। এরপর আদালত আইনজীবীদের নিবৃত্ত করে শুনানি মুলতবি করে আগামী রোববার ১১টায় সময় নির্ধারণ করে দেন। পরে আইনজীবীরা বের হয়ে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

গাজায় ৮ জনকে প্রকাশ্যে গুলি করে মারল হামাস

ভল্ট থেকে উইন্ডো গ্রুপের কোটি টাকা চুরি, ডেপুটি ম্যানেজারসহ গ্রেপ্তার ২

গণভোট আর নির্বাচন এক দিনে করার প্রস্তাব উদ্ভট: জামায়াত নেতা তাহের

সব ‘নোট অব ডিসেন্ট’ স্পষ্ট থাকবে জুলাই সনদে, সেটাই যাবে গণভোটে: সালাহউদ্দিন আহমদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ক্ষেতলালে ‘পাখি কলোনি’: ইউএনওর উদ্যোগে ফিরছে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য

ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
ক্ষেতলাল উপজেলা চত্বরে ‘পাখি কলোনি’। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গাছে গাছে ঝোলানো হয়েছে মাটির হাঁড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
ক্ষেতলাল উপজেলা চত্বরে ‘পাখি কলোনি’। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গাছে গাছে ঝোলানো হয়েছে মাটির হাঁড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা চত্বরে গড়ে উঠেছে এক অভিনব পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ ‘পাখি কলোনি’। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গাছে গাছে ঝুলছে মাটির হাঁড়ি, আর পুকুরে বসানো হয়েছে আড়ানি। উদ্দেশ্য হলো, পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়, খাদ্যের নিশ্চয়তা ও প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করা।

শরতের হিমেল হাওয়া ও নরম আলোয় বর্তমানে উপজেলা চত্বর মুখর পাখির কূজনে। এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যেন দীর্ঘদিন পর ফিরে এসেছে প্রকৃতির নিজস্ব ছন্দ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আল জিনাত বলেন, ‘পাখি প্রকৃতির প্রাণ, আর প্রকৃতি মানেই জীবন। আমরা এমন এক পরিবেশ গড়ে তুলতে চাই, যেখানে মানুষ, গাছ ও পাখি একসঙ্গে টিকে থাকবে। ক্ষেতলালের এই উদ্যোগ কেবল আশ্রয় নয়, এটি প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতি আমাদের নৈতিক দায়বদ্ধতার প্রতীক।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান যোগ করেন, ‘পাখি কৃষির নীরব সহযোগী। তারা মাঠের ক্ষতিকর পোকার শত্রু। এই উদ্যোগ কৃষি ও জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পলাশ চন্দ্র মনে করেন, পাখি পরিবেশের অদৃশ্য রক্ষাকবচ। ক্ষেতলালের এই উদ্যোগ প্রকৃতি সংরক্ষণে নতুন এক অধ্যায় যুক্ত করবে।

স্থানীয় পরিবেশকর্মী এম রাসেল আহমেদ বলেন, যেখানে মানুষ পাখি তাড়ায়, সেখানে তাদের জন্য ঘর বানানো হচ্ছে—এটি শুধু পরিবেশ প্রকল্প নয়, এটি সহানুভূতির প্রতীক। পাখি বাঁচলে প্রকৃতি বাঁচবে, আর প্রকৃতি বাঁচলেই মানুষ টিকে থাকবে।

বর্তমানে ক্ষেতলাল উপজেলা চত্বরে মাটির হাঁড়িতে বাসা বাঁধছে শালিক, দোয়েল, বাবুই ও টুনটুনি। পুকুরের আড়ানিতে লেখা কবিতার পঙ্‌ক্তি যেন পাখিদের নীরব আহ্বান জানাচ্ছে—‘এসো হে পাখি, খাও রে মাছ, রোদে ঝিলমিল জলের হাসি।’

ক্ষেতলাল উপজেলা প্রশাসনের এই ‘পাখি কলোনি’ এখন শুধু একটি প্রকল্প নয়, এটি মানুষ, পাখি ও প্রকৃতির সহাবস্থানের এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি, যা পাখির কূজনেই ফিরিয়ে আনছে প্রকৃতির হারানো হাসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

গাজায় ৮ জনকে প্রকাশ্যে গুলি করে মারল হামাস

ভল্ট থেকে উইন্ডো গ্রুপের কোটি টাকা চুরি, ডেপুটি ম্যানেজারসহ গ্রেপ্তার ২

গণভোট আর নির্বাচন এক দিনে করার প্রস্তাব উদ্ভট: জামায়াত নেতা তাহের

সব ‘নোট অব ডিসেন্ট’ স্পষ্ট থাকবে জুলাই সনদে, সেটাই যাবে গণভোটে: সালাহউদ্দিন আহমদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাকসুতে ভিপি-জিএসসহ ২৪টি পদে ছাত্রশিবিরের জয়, এজিএস ছাত্রদলের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৭: ০৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ভিপি (সহসভাপতি) ও জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে জয় পেয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা। অন্যদিকে এজিএস (সহ-সাধারণ সম্পাদক) পদে জয়ী হয়েছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত 'সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট' প্যানেলের ভিপি পদে ইব্রাহিম হোসেন রনি ও জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে এজিএস নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান তৌফিক।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাত চারটার দিকে ১৪টি হল ও একটি হোস্টেলের অনানুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

চাকসুর ১৪টি হলের ফলাফল অনুযায়ী, ভিপি পদে ইব্রাহিম হোসেন রনি ভোট পেয়েছেন ৭ হাজার ২২১টি আর জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব ভোট পেয়েছেন ৭ হাজার ২৯৫টি। অন্যদিকে এজিএস পদে আইয়ুবুর রহমান তৌফিক ভোট পেয়েছেন ৬ হাজার ৪৪১টি।

বুধবার সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল ৪টায়। চাকসুর ২৬টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদের জন্য লড়েছেন ৪৯৩ জন।

চাকসু নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও ফলাফল প্রকাশের আগে বেশ কিছু জায়গায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বুধবার রাত একটার পর দুই হলের ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিনকে অবরুদ্ধ করে রাখে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে অধ্যাপক কামাল মুক্ত হন।

এর আগে দিনভর সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হলেও ফলাফল প্রকাশের আগে বিভিন্ন জায়গায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেটের বাইরে ছাত্রদলের সমর্থনে বিএনপি ও ছাত্রশিবিরের সমর্থনে জামায়াতের নেতাকর্মীরা আশেপাশে অবস্থান নেন। এ সময় উভয় পক্ষই শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তার পাশে থাকলেও অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। রাত একটা পর্যন্ত তাদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে রাতেই ক্যাম্পাসে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

গাজায় ৮ জনকে প্রকাশ্যে গুলি করে মারল হামাস

ভল্ট থেকে উইন্ডো গ্রুপের কোটি টাকা চুরি, ডেপুটি ম্যানেজারসহ গ্রেপ্তার ২

গণভোট আর নির্বাচন এক দিনে করার প্রস্তাব উদ্ভট: জামায়াত নেতা তাহের

সব ‘নোট অব ডিসেন্ট’ স্পষ্ট থাকবে জুলাই সনদে, সেটাই যাবে গণভোটে: সালাহউদ্দিন আহমদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাকসুর ফল ঘোষণা নিয়ে ছাত্রদল-শিবির হট্টগোল, সহ-উপাচার্য অবরুদ্ধ

চবি প্রতিনিধি 
বুধবার দিবাগত রাতে প্রকৌশল অনুষদ ভবনের সামনে এ হট্টগোল শুরু হয়। ছবি: সংগৃহীত
বুধবার দিবাগত রাতে প্রকৌশল অনুষদ ভবনের সামনে এ হট্টগোল শুরু হয়। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) হল সংসদ নির্বাচনের ফল ঘোষণা নিয়ে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে প্রকৌশল অনুষদ ভবনের সামনে এ হট্টগোল শুরু হয়। দিবাগত রাত ১টা ১০ মিনিটেও দুই পক্ষ সেখানে অবস্থান নিচ্ছিল। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিনকে প্রকৌশল অনুষদ ভবনে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।

ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সোহরাওয়ার্দী হলে ভিপি পদে জমাদিউল আওয়ালকে কারচুপির মাধ্যমে ফেল করানো হয়েছে। তাঁকে ১ হাজার ২০৩ ভোট দেওয়া হয়েছে, এই পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত নেয়ামত উল্লাহ ১ হাজার ২০৬ ভোট পেয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঘটনাস্থলে ছাত্রদলের এক কর্মী দাবি করেন, প্রকৌশল অনুষদের ৩১২ নম্বর কক্ষে দর্শন ও সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থীরা ভোট দিয়েছে। অথচ এই কক্ষে জমাদিউল আওয়াল পেয়েছেন ৩ ভোট। এমনটি হওয়ার কথা নয়। আর দর্শন বিভাগের অনেকের সঙ্গে জমাদিউল আওয়ালের সুসম্পর্ক রয়েছে। তাঁকে কারচুপির মাধ্যমে ৩ ভোট দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি ফলাফল ঘোষণা শেষে চলে যাচ্ছিলেন। এরপর একদল শিক্ষার্থী তাঁর পথ আটকে সোহরাওয়ার্দী হল সংসদে এই ভবনের ৩১২ নম্বর কক্ষের ভোট আবার গণনার দাবি করেছেন। এ সময় তিনি এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। তবে তাঁরা মানেননি। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

গাজায় ৮ জনকে প্রকাশ্যে গুলি করে মারল হামাস

ভল্ট থেকে উইন্ডো গ্রুপের কোটি টাকা চুরি, ডেপুটি ম্যানেজারসহ গ্রেপ্তার ২

গণভোট আর নির্বাচন এক দিনে করার প্রস্তাব উদ্ভট: জামায়াত নেতা তাহের

সব ‘নোট অব ডিসেন্ট’ স্পষ্ট থাকবে জুলাই সনদে, সেটাই যাবে গণভোটে: সালাহউদ্দিন আহমদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে কেমিক্যাল পার্ক: রাসায়নিকের গুদাম সরছে না

  • প্রকল্প শুরু হয় ৭ বছর আগে।
  • অধিগ্রহণ করা হয় ৩০৮ একর জমি।
  • মেয়াদ শেষ হওয়ার বাকি ২ মাস।
  • সম্পন্ন হয়নি সড়ক, ডাম্পিং ইয়ার্ডের নির্মাণকাজ।
  • প্লট হস্তান্তর না হওয়ায় সরছেন না ব্যবসায়ীরা।
আয়নাল হোসেন, ঢাকা 
রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে আবাসিক এলাকায় রাসায়নিকের গুদাম ও পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পরদিন গতকাল ঘটনাস্থলে স্বজন ও সহকর্মীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে আবাসিক এলাকায় রাসায়নিকের গুদাম ও পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পরদিন গতকাল ঘটনাস্থলে স্বজন ও সহকর্মীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল ব্যবসা সরাতে সাত বছর আগে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের কাজ শুরু করে সরকার। এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার বাকি আর মাত্র দুই মাস, অথচ এখনো সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজও শেষ হয়নি।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৭৮ শতাংশ। কিন্তু বাস্তবে সেখানে এখনো ঝোপঝাড়ে ভরা মাঠ। কয়েকটি ভবনের নির্মাণকাজ চলছে, বিদ্যুতের খুঁটি বসানো হয়েছে। কিন্তু রাস্তা, ড্রেন, ডাম্পিং ইয়ার্ড কিছুই এখনো সম্পন্ন হয়নি। প্লট হস্তান্তর হয়নি, তাই ব্যবসায়ীরাও সরছেন না।

প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। পরে খুদে বার্তা পাঠানো হলে ফিরতি বার্তায় জানান, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭৮ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। আগামী বছর প্লট হস্তান্তর করা হবে।

বিসিক চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানোর জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে অনুমোদন এখনো পাওয়া যায়নি। অনুমোদন পাওয়া গেলে ২০২৭ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।

এই রাসায়নিক পল্লির জন্য ৩০৮ দশমিক ৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ করেছে সরকার। পরিকল্পনা অনুযায়ী এখানে হবে ১ হাজার ৮৪৩টি প্লট, থাকবে রাস্তা, ড্রেন, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ফাঁড়ি, পানি সরবরাহব্যবস্থা, ইনসিনেরেটর ও জেটি। কিন্তু কাজের গতি বলছে, এসবের বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিরাপদ শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা এখনো বহু দূর।

কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক প্রকল্পের কাজের এমন দশায় পুরান ঢাকায় আগের মতোই চলছে কেমিক্যাল ব্যবসা।

২০১০ সালের নিমতলী ও ২০১৯ সালের চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। তারপরও নিরাপত্তাব্যবস্থায় তেমন অগ্রগতি হয়নি। বরং ব্যবসা ছড়িয়ে পড়েছে মিরপুর, সাভার, আশুলিয়া, টঙ্গী ও নারায়ণগঞ্জের মতো শহরগুলোয়। কিন্তু দ্রুত যেকোনো বিপর্যয় সামাল দিতে ফায়ার সার্ভিসেরও পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই। কেমিক্যালের আগুন নেভাতে তাদের সক্ষমতা সীমিত। ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে।

পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাঁরা সরতে চান, কিন্তু শর্ত পূরণ না হলে তা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ কেমিক্যাল অ্যান্ড পারফিউমারি মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিলন বলেন, গুদামঘর স্থানান্তরের জন্য তাঁরা প্রস্তুত। তবে প্লট বুঝে না পেলে তাঁরা কীভাবে যাবেন। তাঁরা শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহ করে থাকেন। সঠিকভাবে এসব মালামাল সংরক্ষণের জন্য রাসায়নিক পল্লিতে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠতে সময় লাগবে। বিষয়গুলো নিয়ে তাদের পক্ষ থেকে বিসিককে বারবার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে হস্তান্তর করা না হলে ব্যবসায়ীদের কী করণীয় থাকতে পারে?

প্রকল্পের ধীরগতি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে পরিবেশবিদদেরও। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য জাভেদ জাহান বলেন, তখন জোরজবরদস্তি করে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। এটি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে ঢাকার কাছাকাছি হাজারীবাগ বা আশপাশে অল্প পরিমাণ জমিতে নির্মাণ হলে এত দিনে স্থানান্তর হয়ে যেত। কিন্তু পল্লি দূরে তৈরি হওয়ায় ব্যবসায়ীদের সেখানে যেতে আগ্রহ কম। সরকারও ঢিলেতালে হাঁটছে।

রসায়নবিদেরা বলছেন, কেমিক্যাল ব্যবসা জটিল ও সংবেদনশীল। এ কাজে দক্ষতা জরুরি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের একজন অধ্যাপক বলেন, কেমিক্যাল কেনাবেচা কিংবা এগুলো নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে হলে এসব সম্পর্কে বিশদ ধারণা থাকা প্রয়োজন। একেকটি কেমিক্যালের একেক রকম চরিত্র। কেমিস্ট, রিসার্সার, সায়েন্টিফিকদের এসব সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা থাকে। এসব কেমিক্যালের ডিলিংস সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকলে সেটি অন্ধকারে ঢিল মারার মতো অবস্থা হবে। এতে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

গাজায় ৮ জনকে প্রকাশ্যে গুলি করে মারল হামাস

ভল্ট থেকে উইন্ডো গ্রুপের কোটি টাকা চুরি, ডেপুটি ম্যানেজারসহ গ্রেপ্তার ২

গণভোট আর নির্বাচন এক দিনে করার প্রস্তাব উদ্ভট: জামায়াত নেতা তাহের

সব ‘নোট অব ডিসেন্ট’ স্পষ্ট থাকবে জুলাই সনদে, সেটাই যাবে গণভোটে: সালাহউদ্দিন আহমদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত