মেহেরাব্বিন সানভী, চুয়াডাঙ্গা

মনিরুজ্জামান মনির শিক্ষা অফিসের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। অথচ তাঁর বিলাসী জীবন। বর্তমান কর্মস্থল বাগেরহাট হলেও তাঁর ‘ঘুষের যোগাযোগ’ খুলনা বিভাগের ১০ জেলায়। এমপিওভুক্তি, বদলি, গ্রেড পাইয়ে দেওয়া—সব কাজই তিনি করে দেন। এই ঘুষ-দুর্নীতির টাকায় তিনি দুই স্ত্রী, স্বজনের নামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
যত সম্পত্তি ঢাকায়
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকায় মনিরের কেনা বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে আয়েশি জীবন কাটাচ্ছেন তাঁর প্রথম স্ত্রী মোসা. রিমা খাতুন। মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদসংলগ্ন এলাকায় ১ হাজার ৭৮০ বর্গফুটের ওই ফ্ল্যাটের দাম কোটি টাকার বেশি। অভিযোগ রয়েছে, রাজধানীর বিভিন্ন ব্যাংকে রিমার নামে রয়েছে লাখ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানত (এফডিআর)।
ঢাকার কালশীতে বহুতল ভবন করছেন মনিরুজ্জামান মনির। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাউশির সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে এই বাড়িতে বিনিয়োগ করেছেন মনির। নিজেই করেন সবকিছুর তদারকি। অনুসন্ধানের একপর্যায়ে এই প্রতিবেদক ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের ছদ্মবেশে যোগাযোগ করলে বাড়িটিতে মনিরের অংশীদারত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আব্বাস নামের কেয়ারটেকার।
গুঞ্জন রয়েছে, ছোট স্ত্রী সোনিয়া খাতুনের বোনের মেয়ের নামে ঢাকার বারিধারা ডিওএইচএসে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছেন মনিরুজ্জামান মনির (৪৫)।
চুয়াডাঙ্গায় সম্পদের পাহাড়
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মুসলিমপাড়ায় হোমিওপ্যাথি কলেজের পাশে ১৬ কাঠা জমির ওপর মনিরের রয়েছে নিজস্ব একটি বাগানবাড়ি। এই বাগানবাড়িতে রাখা আছে একজন কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক)। স্থানীয়রা জানান, জমিসহ এ বাড়ির আনুমানিক মূল্য ৮০ লাখ টাকা। ওই জমির ১০ কাঠার মালিকানা প্রথম স্ত্রীর বাবার নামে। বাকি ৬ কাঠা মনিরের নিজের নামে আছে। এই বাগানবাড়ির দক্ষিণ পাশে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা আছে আরও দুটি প্লট। তার দামও অর্ধকোটির ওপরে। এই বাগানবাড়ির পূর্ব পাশে খানিকটা দূরে আছে আরেকটি বাড়িসহ প্লট। এই বাড়িসহ জমিরও আনুমানিক মূল্য ৪০ লাখ টাকা।
মনিরের ছোট স্ত্রী সোনিয়া খাতুন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে সহকারী হিসাবরক্ষক। চুয়াডাঙ্গা শহরের জোলের ধারে চারতলার বাড়িতে তিনি বসবাস করেন। প্রায় ৭০ লাখ টাকা দামের ওই চারতলা বাড়িটি সোনিয়ার নামে। এই বাড়িটির পশ্চিম পাশে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা প্রায় ১০ কাঠার একটি প্লট আছে। সেখানে তিনি সবজি চাষ করেন। শহরের বেলগাছি মুসলিমপাড়ায় আছে ৫ কাঠার একটি বাগান। এই বাগানে কাঠ ও ফলের গাছ আছে। মুসলিমপাড়া মাজারের পাশেই আছে আরেকটি বাগান। শহরের নীলার মোড়েও রয়েছে ৫০ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের জমি। এ ছাড়া নীলার মোড়ের পাশেই দুটি দোকানসহ আরেকটি প্লট আছে। সুমিরদিয়া মাঠে রাস্তার পাশেই রয়েছে ১০ কাঠার একটি বাগান। নাম প্রকাশ না করার শর্ত দিয়ে মুসলিমপাড়া ও নীলার মোড় এলাকার কয়েকজন বলেন, মনির মাঝেমধ্যে সম্পত্তির খোঁজখবর নিতে আসেন।
দর্শনার পুরোনো বাজারপাড়ায় ৫ কাঠা জমির ওপরে দুই ইউনিটের একটি বাড়ি আছে। সেই বাড়ির আনুমানিক মূল্য অর্ধকোটি টাকা। দর্শনা পৌরসভায় ওই বাড়িটির হোল্ডিং নম্বর মনিরুজ্জামান মনিরের নামেই।
‘কপাল খোলে’ মাউশিতে
২০০৫ সালে দর্শনা সরকারি কলেজে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের (তৃতীয় শ্রেণি) চাকরি হয় মনিরের। পরে তিনি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে বদলি হয়ে আসেন। এক-এগারোর সময় সারা দেশে সরকারি চাকরিজীবী সংস্কার হলে তিনি ঢাকা শিক্ষা ভবনে মাউশির প্রধান কার্যালয়ে স্কুল শাখায় বদলি হন। সেখান থেকেই তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে। ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন বড় নেটওয়ার্ক।
মনির ২০১৪ সাল পর্যন্ত রাজধানীর শিক্ষা ভবনে মাউশির প্রধান কার্যালয়ে স্কুল শাখায় চাকরি করেছেন। তখন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির কাজ কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষা ভবন থেকেই হতো। ২০১৪ সালে তা বিকেন্দ্রীকরণ করে মাউশির ৯টি অঞ্চলে ভাগ করে দেওয়া হয়। মনির সে সময় তাঁর নিজের বিভাগ খুলনা আঞ্চলিক অফিসে পদায়ন নেন। প্রথমে কুষ্টিয়া তারপর খুলনা উপপরিচালকের কার্যালয়ে বদলি হন মনির। খুলনা উপপরিচালকের কার্যালয়ে থাকাকালে মনির খুলনা বিভাগের ১০ জেলার শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি, বদলি ও গ্রেড পাইয়ে দেওয়ার তদবিরে জড়ান বলেও অভিযোগ উঠেছে।
দুর্নীতি ঢাকতে নানা কৌশল
অবৈধ আয় লুকাতে মনিরের কৌশলের শেষ নেই। সরোজগঞ্জে বাড়ি, দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় থাকেন বিদেশে। তিনি টাকা পাঠান মনিরের অ্যাকাউন্টে। নির্ধারিত দিনে আত্মীয়ের বাড়ির লোকজন টাকা তুলে নেন। আর মনির তদন্তে দেখান স্বজনের রেমিট্যান্সের আয়। নিজে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে স্বজনদের নামেও কিনেছেন সম্পত্তি। গোপনে একাধিক ব্যবসা পরিচালনা করছেন ঘনিষ্ঠজনদের দিয়ে।
বর্তমানে এই মনির বাগেরহাট জেলা শিক্ষা অফিসে হিসাবরক্ষক কাম ক্লার্ক হিসেবে কর্মরত। প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার দুপুরেই বের হয়ে যান অফিস থেকে। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে আসেন চুয়াডাঙ্গা শহরে। এরপর চলে তাঁর লেনদেনের দেখা-সাক্ষাৎ। রাত ৯টার পর বাগানবাড়িতে বসে ‘মদের আসর’। একা নন, ঘুষে সহযোগিতাকারীরাও থাকেন এই ফুর্তিতে—জানান এলাকার কয়েকজন।
বাগেরহাটে যাওয়ার আগে মনির ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের উপপরিচালকের কার্যালয়ে। মনিরের পদ উচ্চমান সহকারী হলেও ক্যাশিয়ারগিরি তাঁর অত্যন্ত পছন্দের। কর্মস্থলে তিনি রীতিমতো ‘ঘুষযন্ত্র’। ‘তাঁর বাঁ হাতে টাকা উঠলে ডান হাত নিমেষেই কাজ করে’—মন্তব্য একজন শিক্ষকের। আবার মনিরকে টাকা দিলেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ করেন কয়েকজন শিক্ষক।
দুদকের জালে মনির
খুলনায় চাকরিকালে সপ্তাহের ছুটির দিন মনির বিভিন্ন জেলায় ঘুষ কালেকশনে বের হতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষকদের বিভিন্ন কাজ কৌশলে আটকে রেখে তিনি ঘুষ দাবি করতেন। সে সময় বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী শিক্ষক মনিরের বিরুদ্ধে মাউশি ও দুদকে অভিযোগ করেছিলেন।
এই খুলনা অফিসে থাকাকালেই মনিরের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে মাউশি। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীদের মাধ্যমে সেই অভিযোগটিও খালাস করতে চেয়েছিলেন, তবে তিনি ব্যর্থ হন। বিষয়টি যায় দুদকের নজরে। দুদক এখনো তদন্ত কার্যক্রম চালু রেখেছে বলে জানা গেছে।
মাউশির খুলনা অঞ্চলের তৎকালীন উপপরিচালক এস এম আবদুল খালেক বলেন, ‘মনিরের কোথায় কী সম্পদ আছে, তা জানি না। মনির এতই ক্ষমতাবান, খুলনায় থাকাকালে সে আমাকেই নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করত।’
মনিরের বর্তমান কর্মস্থল বাগেরহাট জেলা শিক্ষা অফিসের প্রধান তথা জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘আমি শুনেছি মনিরের বিরুদ্ধে দুদকে একটি তদন্ত চলছে। তবে সেটার অগ্রগতির বিষয়ে জানি না। আমার এখানে আসার পর আমি নজরে রেখেছি। এখানে কোনো বাজে কাজ করার সুযোগ নেই। তবে বাড়ি দূরে হওয়ায় সপ্তাহে বৃহস্পতিবার একটু আগে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
এ বিষয়ে মনিরুজ্জামান মনিরের বক্তব্য নেওয়ার জন্য তাঁর মোবাইল ফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে মনিরের দ্বিতীয় স্ত্রী সোনিয়া খাতুন বলেন, ‘আমি মেয়েমানুষ, এত কিছু জানি না। আর জানার চেষ্টাও করিনি। আমার স্বামীর নামে কোথায় কোথায় সম্পত্তি আছে, আমি জানি না। আপনারা সাংবাদিক, ভালো করে খোঁজ নিয়ে বের করেন।’

মনিরুজ্জামান মনির শিক্ষা অফিসের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। অথচ তাঁর বিলাসী জীবন। বর্তমান কর্মস্থল বাগেরহাট হলেও তাঁর ‘ঘুষের যোগাযোগ’ খুলনা বিভাগের ১০ জেলায়। এমপিওভুক্তি, বদলি, গ্রেড পাইয়ে দেওয়া—সব কাজই তিনি করে দেন। এই ঘুষ-দুর্নীতির টাকায় তিনি দুই স্ত্রী, স্বজনের নামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
যত সম্পত্তি ঢাকায়
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকায় মনিরের কেনা বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে আয়েশি জীবন কাটাচ্ছেন তাঁর প্রথম স্ত্রী মোসা. রিমা খাতুন। মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদসংলগ্ন এলাকায় ১ হাজার ৭৮০ বর্গফুটের ওই ফ্ল্যাটের দাম কোটি টাকার বেশি। অভিযোগ রয়েছে, রাজধানীর বিভিন্ন ব্যাংকে রিমার নামে রয়েছে লাখ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানত (এফডিআর)।
ঢাকার কালশীতে বহুতল ভবন করছেন মনিরুজ্জামান মনির। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাউশির সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে এই বাড়িতে বিনিয়োগ করেছেন মনির। নিজেই করেন সবকিছুর তদারকি। অনুসন্ধানের একপর্যায়ে এই প্রতিবেদক ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের ছদ্মবেশে যোগাযোগ করলে বাড়িটিতে মনিরের অংশীদারত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আব্বাস নামের কেয়ারটেকার।
গুঞ্জন রয়েছে, ছোট স্ত্রী সোনিয়া খাতুনের বোনের মেয়ের নামে ঢাকার বারিধারা ডিওএইচএসে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছেন মনিরুজ্জামান মনির (৪৫)।
চুয়াডাঙ্গায় সম্পদের পাহাড়
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মুসলিমপাড়ায় হোমিওপ্যাথি কলেজের পাশে ১৬ কাঠা জমির ওপর মনিরের রয়েছে নিজস্ব একটি বাগানবাড়ি। এই বাগানবাড়িতে রাখা আছে একজন কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক)। স্থানীয়রা জানান, জমিসহ এ বাড়ির আনুমানিক মূল্য ৮০ লাখ টাকা। ওই জমির ১০ কাঠার মালিকানা প্রথম স্ত্রীর বাবার নামে। বাকি ৬ কাঠা মনিরের নিজের নামে আছে। এই বাগানবাড়ির দক্ষিণ পাশে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা আছে আরও দুটি প্লট। তার দামও অর্ধকোটির ওপরে। এই বাগানবাড়ির পূর্ব পাশে খানিকটা দূরে আছে আরেকটি বাড়িসহ প্লট। এই বাড়িসহ জমিরও আনুমানিক মূল্য ৪০ লাখ টাকা।
মনিরের ছোট স্ত্রী সোনিয়া খাতুন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে সহকারী হিসাবরক্ষক। চুয়াডাঙ্গা শহরের জোলের ধারে চারতলার বাড়িতে তিনি বসবাস করেন। প্রায় ৭০ লাখ টাকা দামের ওই চারতলা বাড়িটি সোনিয়ার নামে। এই বাড়িটির পশ্চিম পাশে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা প্রায় ১০ কাঠার একটি প্লট আছে। সেখানে তিনি সবজি চাষ করেন। শহরের বেলগাছি মুসলিমপাড়ায় আছে ৫ কাঠার একটি বাগান। এই বাগানে কাঠ ও ফলের গাছ আছে। মুসলিমপাড়া মাজারের পাশেই আছে আরেকটি বাগান। শহরের নীলার মোড়েও রয়েছে ৫০ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের জমি। এ ছাড়া নীলার মোড়ের পাশেই দুটি দোকানসহ আরেকটি প্লট আছে। সুমিরদিয়া মাঠে রাস্তার পাশেই রয়েছে ১০ কাঠার একটি বাগান। নাম প্রকাশ না করার শর্ত দিয়ে মুসলিমপাড়া ও নীলার মোড় এলাকার কয়েকজন বলেন, মনির মাঝেমধ্যে সম্পত্তির খোঁজখবর নিতে আসেন।
দর্শনার পুরোনো বাজারপাড়ায় ৫ কাঠা জমির ওপরে দুই ইউনিটের একটি বাড়ি আছে। সেই বাড়ির আনুমানিক মূল্য অর্ধকোটি টাকা। দর্শনা পৌরসভায় ওই বাড়িটির হোল্ডিং নম্বর মনিরুজ্জামান মনিরের নামেই।
‘কপাল খোলে’ মাউশিতে
২০০৫ সালে দর্শনা সরকারি কলেজে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের (তৃতীয় শ্রেণি) চাকরি হয় মনিরের। পরে তিনি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে বদলি হয়ে আসেন। এক-এগারোর সময় সারা দেশে সরকারি চাকরিজীবী সংস্কার হলে তিনি ঢাকা শিক্ষা ভবনে মাউশির প্রধান কার্যালয়ে স্কুল শাখায় বদলি হন। সেখান থেকেই তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে। ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন বড় নেটওয়ার্ক।
মনির ২০১৪ সাল পর্যন্ত রাজধানীর শিক্ষা ভবনে মাউশির প্রধান কার্যালয়ে স্কুল শাখায় চাকরি করেছেন। তখন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির কাজ কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষা ভবন থেকেই হতো। ২০১৪ সালে তা বিকেন্দ্রীকরণ করে মাউশির ৯টি অঞ্চলে ভাগ করে দেওয়া হয়। মনির সে সময় তাঁর নিজের বিভাগ খুলনা আঞ্চলিক অফিসে পদায়ন নেন। প্রথমে কুষ্টিয়া তারপর খুলনা উপপরিচালকের কার্যালয়ে বদলি হন মনির। খুলনা উপপরিচালকের কার্যালয়ে থাকাকালে মনির খুলনা বিভাগের ১০ জেলার শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি, বদলি ও গ্রেড পাইয়ে দেওয়ার তদবিরে জড়ান বলেও অভিযোগ উঠেছে।
দুর্নীতি ঢাকতে নানা কৌশল
অবৈধ আয় লুকাতে মনিরের কৌশলের শেষ নেই। সরোজগঞ্জে বাড়ি, দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় থাকেন বিদেশে। তিনি টাকা পাঠান মনিরের অ্যাকাউন্টে। নির্ধারিত দিনে আত্মীয়ের বাড়ির লোকজন টাকা তুলে নেন। আর মনির তদন্তে দেখান স্বজনের রেমিট্যান্সের আয়। নিজে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে স্বজনদের নামেও কিনেছেন সম্পত্তি। গোপনে একাধিক ব্যবসা পরিচালনা করছেন ঘনিষ্ঠজনদের দিয়ে।
বর্তমানে এই মনির বাগেরহাট জেলা শিক্ষা অফিসে হিসাবরক্ষক কাম ক্লার্ক হিসেবে কর্মরত। প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার দুপুরেই বের হয়ে যান অফিস থেকে। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে আসেন চুয়াডাঙ্গা শহরে। এরপর চলে তাঁর লেনদেনের দেখা-সাক্ষাৎ। রাত ৯টার পর বাগানবাড়িতে বসে ‘মদের আসর’। একা নন, ঘুষে সহযোগিতাকারীরাও থাকেন এই ফুর্তিতে—জানান এলাকার কয়েকজন।
বাগেরহাটে যাওয়ার আগে মনির ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের উপপরিচালকের কার্যালয়ে। মনিরের পদ উচ্চমান সহকারী হলেও ক্যাশিয়ারগিরি তাঁর অত্যন্ত পছন্দের। কর্মস্থলে তিনি রীতিমতো ‘ঘুষযন্ত্র’। ‘তাঁর বাঁ হাতে টাকা উঠলে ডান হাত নিমেষেই কাজ করে’—মন্তব্য একজন শিক্ষকের। আবার মনিরকে টাকা দিলেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ করেন কয়েকজন শিক্ষক।
দুদকের জালে মনির
খুলনায় চাকরিকালে সপ্তাহের ছুটির দিন মনির বিভিন্ন জেলায় ঘুষ কালেকশনে বের হতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষকদের বিভিন্ন কাজ কৌশলে আটকে রেখে তিনি ঘুষ দাবি করতেন। সে সময় বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী শিক্ষক মনিরের বিরুদ্ধে মাউশি ও দুদকে অভিযোগ করেছিলেন।
এই খুলনা অফিসে থাকাকালেই মনিরের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে মাউশি। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীদের মাধ্যমে সেই অভিযোগটিও খালাস করতে চেয়েছিলেন, তবে তিনি ব্যর্থ হন। বিষয়টি যায় দুদকের নজরে। দুদক এখনো তদন্ত কার্যক্রম চালু রেখেছে বলে জানা গেছে।
মাউশির খুলনা অঞ্চলের তৎকালীন উপপরিচালক এস এম আবদুল খালেক বলেন, ‘মনিরের কোথায় কী সম্পদ আছে, তা জানি না। মনির এতই ক্ষমতাবান, খুলনায় থাকাকালে সে আমাকেই নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করত।’
মনিরের বর্তমান কর্মস্থল বাগেরহাট জেলা শিক্ষা অফিসের প্রধান তথা জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘আমি শুনেছি মনিরের বিরুদ্ধে দুদকে একটি তদন্ত চলছে। তবে সেটার অগ্রগতির বিষয়ে জানি না। আমার এখানে আসার পর আমি নজরে রেখেছি। এখানে কোনো বাজে কাজ করার সুযোগ নেই। তবে বাড়ি দূরে হওয়ায় সপ্তাহে বৃহস্পতিবার একটু আগে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
এ বিষয়ে মনিরুজ্জামান মনিরের বক্তব্য নেওয়ার জন্য তাঁর মোবাইল ফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে মনিরের দ্বিতীয় স্ত্রী সোনিয়া খাতুন বলেন, ‘আমি মেয়েমানুষ, এত কিছু জানি না। আর জানার চেষ্টাও করিনি। আমার স্বামীর নামে কোথায় কোথায় সম্পত্তি আছে, আমি জানি না। আপনারা সাংবাদিক, ভালো করে খোঁজ নিয়ে বের করেন।’
মেহেরাব্বিন সানভী, চুয়াডাঙ্গা

মনিরুজ্জামান মনির শিক্ষা অফিসের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। অথচ তাঁর বিলাসী জীবন। বর্তমান কর্মস্থল বাগেরহাট হলেও তাঁর ‘ঘুষের যোগাযোগ’ খুলনা বিভাগের ১০ জেলায়। এমপিওভুক্তি, বদলি, গ্রেড পাইয়ে দেওয়া—সব কাজই তিনি করে দেন। এই ঘুষ-দুর্নীতির টাকায় তিনি দুই স্ত্রী, স্বজনের নামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
যত সম্পত্তি ঢাকায়
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকায় মনিরের কেনা বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে আয়েশি জীবন কাটাচ্ছেন তাঁর প্রথম স্ত্রী মোসা. রিমা খাতুন। মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদসংলগ্ন এলাকায় ১ হাজার ৭৮০ বর্গফুটের ওই ফ্ল্যাটের দাম কোটি টাকার বেশি। অভিযোগ রয়েছে, রাজধানীর বিভিন্ন ব্যাংকে রিমার নামে রয়েছে লাখ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানত (এফডিআর)।
ঢাকার কালশীতে বহুতল ভবন করছেন মনিরুজ্জামান মনির। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাউশির সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে এই বাড়িতে বিনিয়োগ করেছেন মনির। নিজেই করেন সবকিছুর তদারকি। অনুসন্ধানের একপর্যায়ে এই প্রতিবেদক ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের ছদ্মবেশে যোগাযোগ করলে বাড়িটিতে মনিরের অংশীদারত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আব্বাস নামের কেয়ারটেকার।
গুঞ্জন রয়েছে, ছোট স্ত্রী সোনিয়া খাতুনের বোনের মেয়ের নামে ঢাকার বারিধারা ডিওএইচএসে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছেন মনিরুজ্জামান মনির (৪৫)।
চুয়াডাঙ্গায় সম্পদের পাহাড়
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মুসলিমপাড়ায় হোমিওপ্যাথি কলেজের পাশে ১৬ কাঠা জমির ওপর মনিরের রয়েছে নিজস্ব একটি বাগানবাড়ি। এই বাগানবাড়িতে রাখা আছে একজন কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক)। স্থানীয়রা জানান, জমিসহ এ বাড়ির আনুমানিক মূল্য ৮০ লাখ টাকা। ওই জমির ১০ কাঠার মালিকানা প্রথম স্ত্রীর বাবার নামে। বাকি ৬ কাঠা মনিরের নিজের নামে আছে। এই বাগানবাড়ির দক্ষিণ পাশে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা আছে আরও দুটি প্লট। তার দামও অর্ধকোটির ওপরে। এই বাগানবাড়ির পূর্ব পাশে খানিকটা দূরে আছে আরেকটি বাড়িসহ প্লট। এই বাড়িসহ জমিরও আনুমানিক মূল্য ৪০ লাখ টাকা।
মনিরের ছোট স্ত্রী সোনিয়া খাতুন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে সহকারী হিসাবরক্ষক। চুয়াডাঙ্গা শহরের জোলের ধারে চারতলার বাড়িতে তিনি বসবাস করেন। প্রায় ৭০ লাখ টাকা দামের ওই চারতলা বাড়িটি সোনিয়ার নামে। এই বাড়িটির পশ্চিম পাশে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা প্রায় ১০ কাঠার একটি প্লট আছে। সেখানে তিনি সবজি চাষ করেন। শহরের বেলগাছি মুসলিমপাড়ায় আছে ৫ কাঠার একটি বাগান। এই বাগানে কাঠ ও ফলের গাছ আছে। মুসলিমপাড়া মাজারের পাশেই আছে আরেকটি বাগান। শহরের নীলার মোড়েও রয়েছে ৫০ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের জমি। এ ছাড়া নীলার মোড়ের পাশেই দুটি দোকানসহ আরেকটি প্লট আছে। সুমিরদিয়া মাঠে রাস্তার পাশেই রয়েছে ১০ কাঠার একটি বাগান। নাম প্রকাশ না করার শর্ত দিয়ে মুসলিমপাড়া ও নীলার মোড় এলাকার কয়েকজন বলেন, মনির মাঝেমধ্যে সম্পত্তির খোঁজখবর নিতে আসেন।
দর্শনার পুরোনো বাজারপাড়ায় ৫ কাঠা জমির ওপরে দুই ইউনিটের একটি বাড়ি আছে। সেই বাড়ির আনুমানিক মূল্য অর্ধকোটি টাকা। দর্শনা পৌরসভায় ওই বাড়িটির হোল্ডিং নম্বর মনিরুজ্জামান মনিরের নামেই।
‘কপাল খোলে’ মাউশিতে
২০০৫ সালে দর্শনা সরকারি কলেজে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের (তৃতীয় শ্রেণি) চাকরি হয় মনিরের। পরে তিনি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে বদলি হয়ে আসেন। এক-এগারোর সময় সারা দেশে সরকারি চাকরিজীবী সংস্কার হলে তিনি ঢাকা শিক্ষা ভবনে মাউশির প্রধান কার্যালয়ে স্কুল শাখায় বদলি হন। সেখান থেকেই তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে। ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন বড় নেটওয়ার্ক।
মনির ২০১৪ সাল পর্যন্ত রাজধানীর শিক্ষা ভবনে মাউশির প্রধান কার্যালয়ে স্কুল শাখায় চাকরি করেছেন। তখন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির কাজ কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষা ভবন থেকেই হতো। ২০১৪ সালে তা বিকেন্দ্রীকরণ করে মাউশির ৯টি অঞ্চলে ভাগ করে দেওয়া হয়। মনির সে সময় তাঁর নিজের বিভাগ খুলনা আঞ্চলিক অফিসে পদায়ন নেন। প্রথমে কুষ্টিয়া তারপর খুলনা উপপরিচালকের কার্যালয়ে বদলি হন মনির। খুলনা উপপরিচালকের কার্যালয়ে থাকাকালে মনির খুলনা বিভাগের ১০ জেলার শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি, বদলি ও গ্রেড পাইয়ে দেওয়ার তদবিরে জড়ান বলেও অভিযোগ উঠেছে।
দুর্নীতি ঢাকতে নানা কৌশল
অবৈধ আয় লুকাতে মনিরের কৌশলের শেষ নেই। সরোজগঞ্জে বাড়ি, দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় থাকেন বিদেশে। তিনি টাকা পাঠান মনিরের অ্যাকাউন্টে। নির্ধারিত দিনে আত্মীয়ের বাড়ির লোকজন টাকা তুলে নেন। আর মনির তদন্তে দেখান স্বজনের রেমিট্যান্সের আয়। নিজে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে স্বজনদের নামেও কিনেছেন সম্পত্তি। গোপনে একাধিক ব্যবসা পরিচালনা করছেন ঘনিষ্ঠজনদের দিয়ে।
বর্তমানে এই মনির বাগেরহাট জেলা শিক্ষা অফিসে হিসাবরক্ষক কাম ক্লার্ক হিসেবে কর্মরত। প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার দুপুরেই বের হয়ে যান অফিস থেকে। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে আসেন চুয়াডাঙ্গা শহরে। এরপর চলে তাঁর লেনদেনের দেখা-সাক্ষাৎ। রাত ৯টার পর বাগানবাড়িতে বসে ‘মদের আসর’। একা নন, ঘুষে সহযোগিতাকারীরাও থাকেন এই ফুর্তিতে—জানান এলাকার কয়েকজন।
বাগেরহাটে যাওয়ার আগে মনির ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের উপপরিচালকের কার্যালয়ে। মনিরের পদ উচ্চমান সহকারী হলেও ক্যাশিয়ারগিরি তাঁর অত্যন্ত পছন্দের। কর্মস্থলে তিনি রীতিমতো ‘ঘুষযন্ত্র’। ‘তাঁর বাঁ হাতে টাকা উঠলে ডান হাত নিমেষেই কাজ করে’—মন্তব্য একজন শিক্ষকের। আবার মনিরকে টাকা দিলেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ করেন কয়েকজন শিক্ষক।
দুদকের জালে মনির
খুলনায় চাকরিকালে সপ্তাহের ছুটির দিন মনির বিভিন্ন জেলায় ঘুষ কালেকশনে বের হতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষকদের বিভিন্ন কাজ কৌশলে আটকে রেখে তিনি ঘুষ দাবি করতেন। সে সময় বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী শিক্ষক মনিরের বিরুদ্ধে মাউশি ও দুদকে অভিযোগ করেছিলেন।
এই খুলনা অফিসে থাকাকালেই মনিরের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে মাউশি। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীদের মাধ্যমে সেই অভিযোগটিও খালাস করতে চেয়েছিলেন, তবে তিনি ব্যর্থ হন। বিষয়টি যায় দুদকের নজরে। দুদক এখনো তদন্ত কার্যক্রম চালু রেখেছে বলে জানা গেছে।
মাউশির খুলনা অঞ্চলের তৎকালীন উপপরিচালক এস এম আবদুল খালেক বলেন, ‘মনিরের কোথায় কী সম্পদ আছে, তা জানি না। মনির এতই ক্ষমতাবান, খুলনায় থাকাকালে সে আমাকেই নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করত।’
মনিরের বর্তমান কর্মস্থল বাগেরহাট জেলা শিক্ষা অফিসের প্রধান তথা জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘আমি শুনেছি মনিরের বিরুদ্ধে দুদকে একটি তদন্ত চলছে। তবে সেটার অগ্রগতির বিষয়ে জানি না। আমার এখানে আসার পর আমি নজরে রেখেছি। এখানে কোনো বাজে কাজ করার সুযোগ নেই। তবে বাড়ি দূরে হওয়ায় সপ্তাহে বৃহস্পতিবার একটু আগে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
এ বিষয়ে মনিরুজ্জামান মনিরের বক্তব্য নেওয়ার জন্য তাঁর মোবাইল ফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে মনিরের দ্বিতীয় স্ত্রী সোনিয়া খাতুন বলেন, ‘আমি মেয়েমানুষ, এত কিছু জানি না। আর জানার চেষ্টাও করিনি। আমার স্বামীর নামে কোথায় কোথায় সম্পত্তি আছে, আমি জানি না। আপনারা সাংবাদিক, ভালো করে খোঁজ নিয়ে বের করেন।’

মনিরুজ্জামান মনির শিক্ষা অফিসের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। অথচ তাঁর বিলাসী জীবন। বর্তমান কর্মস্থল বাগেরহাট হলেও তাঁর ‘ঘুষের যোগাযোগ’ খুলনা বিভাগের ১০ জেলায়। এমপিওভুক্তি, বদলি, গ্রেড পাইয়ে দেওয়া—সব কাজই তিনি করে দেন। এই ঘুষ-দুর্নীতির টাকায় তিনি দুই স্ত্রী, স্বজনের নামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
যত সম্পত্তি ঢাকায়
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকায় মনিরের কেনা বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে আয়েশি জীবন কাটাচ্ছেন তাঁর প্রথম স্ত্রী মোসা. রিমা খাতুন। মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদসংলগ্ন এলাকায় ১ হাজার ৭৮০ বর্গফুটের ওই ফ্ল্যাটের দাম কোটি টাকার বেশি। অভিযোগ রয়েছে, রাজধানীর বিভিন্ন ব্যাংকে রিমার নামে রয়েছে লাখ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানত (এফডিআর)।
ঢাকার কালশীতে বহুতল ভবন করছেন মনিরুজ্জামান মনির। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাউশির সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে এই বাড়িতে বিনিয়োগ করেছেন মনির। নিজেই করেন সবকিছুর তদারকি। অনুসন্ধানের একপর্যায়ে এই প্রতিবেদক ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের ছদ্মবেশে যোগাযোগ করলে বাড়িটিতে মনিরের অংশীদারত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আব্বাস নামের কেয়ারটেকার।
গুঞ্জন রয়েছে, ছোট স্ত্রী সোনিয়া খাতুনের বোনের মেয়ের নামে ঢাকার বারিধারা ডিওএইচএসে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছেন মনিরুজ্জামান মনির (৪৫)।
চুয়াডাঙ্গায় সম্পদের পাহাড়
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মুসলিমপাড়ায় হোমিওপ্যাথি কলেজের পাশে ১৬ কাঠা জমির ওপর মনিরের রয়েছে নিজস্ব একটি বাগানবাড়ি। এই বাগানবাড়িতে রাখা আছে একজন কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক)। স্থানীয়রা জানান, জমিসহ এ বাড়ির আনুমানিক মূল্য ৮০ লাখ টাকা। ওই জমির ১০ কাঠার মালিকানা প্রথম স্ত্রীর বাবার নামে। বাকি ৬ কাঠা মনিরের নিজের নামে আছে। এই বাগানবাড়ির দক্ষিণ পাশে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা আছে আরও দুটি প্লট। তার দামও অর্ধকোটির ওপরে। এই বাগানবাড়ির পূর্ব পাশে খানিকটা দূরে আছে আরেকটি বাড়িসহ প্লট। এই বাড়িসহ জমিরও আনুমানিক মূল্য ৪০ লাখ টাকা।
মনিরের ছোট স্ত্রী সোনিয়া খাতুন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে সহকারী হিসাবরক্ষক। চুয়াডাঙ্গা শহরের জোলের ধারে চারতলার বাড়িতে তিনি বসবাস করেন। প্রায় ৭০ লাখ টাকা দামের ওই চারতলা বাড়িটি সোনিয়ার নামে। এই বাড়িটির পশ্চিম পাশে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা প্রায় ১০ কাঠার একটি প্লট আছে। সেখানে তিনি সবজি চাষ করেন। শহরের বেলগাছি মুসলিমপাড়ায় আছে ৫ কাঠার একটি বাগান। এই বাগানে কাঠ ও ফলের গাছ আছে। মুসলিমপাড়া মাজারের পাশেই আছে আরেকটি বাগান। শহরের নীলার মোড়েও রয়েছে ৫০ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের জমি। এ ছাড়া নীলার মোড়ের পাশেই দুটি দোকানসহ আরেকটি প্লট আছে। সুমিরদিয়া মাঠে রাস্তার পাশেই রয়েছে ১০ কাঠার একটি বাগান। নাম প্রকাশ না করার শর্ত দিয়ে মুসলিমপাড়া ও নীলার মোড় এলাকার কয়েকজন বলেন, মনির মাঝেমধ্যে সম্পত্তির খোঁজখবর নিতে আসেন।
দর্শনার পুরোনো বাজারপাড়ায় ৫ কাঠা জমির ওপরে দুই ইউনিটের একটি বাড়ি আছে। সেই বাড়ির আনুমানিক মূল্য অর্ধকোটি টাকা। দর্শনা পৌরসভায় ওই বাড়িটির হোল্ডিং নম্বর মনিরুজ্জামান মনিরের নামেই।
‘কপাল খোলে’ মাউশিতে
২০০৫ সালে দর্শনা সরকারি কলেজে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরের (তৃতীয় শ্রেণি) চাকরি হয় মনিরের। পরে তিনি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে বদলি হয়ে আসেন। এক-এগারোর সময় সারা দেশে সরকারি চাকরিজীবী সংস্কার হলে তিনি ঢাকা শিক্ষা ভবনে মাউশির প্রধান কার্যালয়ে স্কুল শাখায় বদলি হন। সেখান থেকেই তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে। ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন বড় নেটওয়ার্ক।
মনির ২০১৪ সাল পর্যন্ত রাজধানীর শিক্ষা ভবনে মাউশির প্রধান কার্যালয়ে স্কুল শাখায় চাকরি করেছেন। তখন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির কাজ কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষা ভবন থেকেই হতো। ২০১৪ সালে তা বিকেন্দ্রীকরণ করে মাউশির ৯টি অঞ্চলে ভাগ করে দেওয়া হয়। মনির সে সময় তাঁর নিজের বিভাগ খুলনা আঞ্চলিক অফিসে পদায়ন নেন। প্রথমে কুষ্টিয়া তারপর খুলনা উপপরিচালকের কার্যালয়ে বদলি হন মনির। খুলনা উপপরিচালকের কার্যালয়ে থাকাকালে মনির খুলনা বিভাগের ১০ জেলার শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি, বদলি ও গ্রেড পাইয়ে দেওয়ার তদবিরে জড়ান বলেও অভিযোগ উঠেছে।
দুর্নীতি ঢাকতে নানা কৌশল
অবৈধ আয় লুকাতে মনিরের কৌশলের শেষ নেই। সরোজগঞ্জে বাড়ি, দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় থাকেন বিদেশে। তিনি টাকা পাঠান মনিরের অ্যাকাউন্টে। নির্ধারিত দিনে আত্মীয়ের বাড়ির লোকজন টাকা তুলে নেন। আর মনির তদন্তে দেখান স্বজনের রেমিট্যান্সের আয়। নিজে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে স্বজনদের নামেও কিনেছেন সম্পত্তি। গোপনে একাধিক ব্যবসা পরিচালনা করছেন ঘনিষ্ঠজনদের দিয়ে।
বর্তমানে এই মনির বাগেরহাট জেলা শিক্ষা অফিসে হিসাবরক্ষক কাম ক্লার্ক হিসেবে কর্মরত। প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার দুপুরেই বের হয়ে যান অফিস থেকে। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে আসেন চুয়াডাঙ্গা শহরে। এরপর চলে তাঁর লেনদেনের দেখা-সাক্ষাৎ। রাত ৯টার পর বাগানবাড়িতে বসে ‘মদের আসর’। একা নন, ঘুষে সহযোগিতাকারীরাও থাকেন এই ফুর্তিতে—জানান এলাকার কয়েকজন।
বাগেরহাটে যাওয়ার আগে মনির ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের উপপরিচালকের কার্যালয়ে। মনিরের পদ উচ্চমান সহকারী হলেও ক্যাশিয়ারগিরি তাঁর অত্যন্ত পছন্দের। কর্মস্থলে তিনি রীতিমতো ‘ঘুষযন্ত্র’। ‘তাঁর বাঁ হাতে টাকা উঠলে ডান হাত নিমেষেই কাজ করে’—মন্তব্য একজন শিক্ষকের। আবার মনিরকে টাকা দিলেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ করেন কয়েকজন শিক্ষক।
দুদকের জালে মনির
খুলনায় চাকরিকালে সপ্তাহের ছুটির দিন মনির বিভিন্ন জেলায় ঘুষ কালেকশনে বের হতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষকদের বিভিন্ন কাজ কৌশলে আটকে রেখে তিনি ঘুষ দাবি করতেন। সে সময় বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী শিক্ষক মনিরের বিরুদ্ধে মাউশি ও দুদকে অভিযোগ করেছিলেন।
এই খুলনা অফিসে থাকাকালেই মনিরের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে মাউশি। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীদের মাধ্যমে সেই অভিযোগটিও খালাস করতে চেয়েছিলেন, তবে তিনি ব্যর্থ হন। বিষয়টি যায় দুদকের নজরে। দুদক এখনো তদন্ত কার্যক্রম চালু রেখেছে বলে জানা গেছে।
মাউশির খুলনা অঞ্চলের তৎকালীন উপপরিচালক এস এম আবদুল খালেক বলেন, ‘মনিরের কোথায় কী সম্পদ আছে, তা জানি না। মনির এতই ক্ষমতাবান, খুলনায় থাকাকালে সে আমাকেই নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করত।’
মনিরের বর্তমান কর্মস্থল বাগেরহাট জেলা শিক্ষা অফিসের প্রধান তথা জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘আমি শুনেছি মনিরের বিরুদ্ধে দুদকে একটি তদন্ত চলছে। তবে সেটার অগ্রগতির বিষয়ে জানি না। আমার এখানে আসার পর আমি নজরে রেখেছি। এখানে কোনো বাজে কাজ করার সুযোগ নেই। তবে বাড়ি দূরে হওয়ায় সপ্তাহে বৃহস্পতিবার একটু আগে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
এ বিষয়ে মনিরুজ্জামান মনিরের বক্তব্য নেওয়ার জন্য তাঁর মোবাইল ফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে মনিরের দ্বিতীয় স্ত্রী সোনিয়া খাতুন বলেন, ‘আমি মেয়েমানুষ, এত কিছু জানি না। আর জানার চেষ্টাও করিনি। আমার স্বামীর নামে কোথায় কোথায় সম্পত্তি আছে, আমি জানি না। আপনারা সাংবাদিক, ভালো করে খোঁজ নিয়ে বের করেন।’

রাজধানীর মেরুল বাড্ডা ও শাহজাদপুর এলাকায় আজ সোমবার ভোরে আকাশ ও ভিক্টর পরিবহনের দুটি বাসে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। কে বা কারা বাস দুটিতে আগুন দিয়েছে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ। এসব ঘটনায় কেউ আহত হয়নি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
৭ মিনিট আগে
সকালে আরিফ ও ইমরান ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সামনে বের হলে শাহ কামালের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের লোকজন অতর্কিতে গুলি চালায়। এতে আরিফ ও ইমরান গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফকে মৃত ঘোষণা করেন।
১২ মিনিট আগে
হাসপাতালে ভর্তি রোগীর জন্য দৈনিক মাছ বরাদ্দ ১১৮ গ্রাম। রোগীদের দেওয়া হয় ৬০, ৬২, ৬৫ বা ৮০ গ্রাম মাছ। আর সকালের নাশতায় পাউরুটি বরাদ্দ ১৫২ গ্রাম। সেখানে রোগী পায় মাত্র ৫৬ গ্রাম ওজনের মানহীন বেকারিতে তৈরি দুটি পাউরুটি। যা বরাদ্দের অর্ধেকেরও কম।
১৪ মিনিট আগে
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্ব) মাহবুবের রহমান শামীম বলেছেন, আজকে বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, গণতন্ত্রকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
২১ মিনিট আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মেরুল বাড্ডা ও শাহজাদপুর এলাকায় আজ সোমবার ভোরে আকাশ ও ভিক্টর পরিবহনের দুটি বাসে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। কে বা কারা বাস দুটিতে আগুন দিয়েছে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ। এসব ঘটনায় কেউ আহত হয়নি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ বলেন, ভোরে বাসে আগুনের খবর জানাতে দু’টি ফোন কল আসে। প্রথমটি ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে, দ্বিতীয়টি সকাল ৬টা ১০ মিনিটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাসে কীভাবে আগুন লেগেছে, তা আমরা এখনো জানি না। আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। কেউ হতাহত হয়েছে বলেও তথ্য পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি কী কারণে ঘটেছে তা তদন্ত করে পুলিশ জানাবে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ (ডিএমপি) সূত্র জানায়, মেরুল বাড্ডায় আরমা মাজেদা মালিক টাওয়ারের সামনে আকাশ পরিবহনের একটি বাসে আগুন লাগে। আগুনে বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। বাসের মালিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন। থানা-পুলিশের সদস্যরাও ঘটনাস্থলে রয়েছেন। তবে ওই এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
অন্যদিকে ট্রাফিক বাড্ডা জোনের শাহজাদপুর এলাকায় ভিক্টর পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ডিবি ও থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছে। বাসটি সড়কের মাঝামাঝি থাকায় দুই পাশ দিয়ে যান চলাচল সীমিতভাবে চলাচল করছিল। এর ফলে প্রগতি সরণি সড়কের আউটগোয়িং রুটে জট সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ।

রাজধানীর মেরুল বাড্ডা ও শাহজাদপুর এলাকায় আজ সোমবার ভোরে আকাশ ও ভিক্টর পরিবহনের দুটি বাসে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। কে বা কারা বাস দুটিতে আগুন দিয়েছে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ। এসব ঘটনায় কেউ আহত হয়নি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ বলেন, ভোরে বাসে আগুনের খবর জানাতে দু’টি ফোন কল আসে। প্রথমটি ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে, দ্বিতীয়টি সকাল ৬টা ১০ মিনিটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাসে কীভাবে আগুন লেগেছে, তা আমরা এখনো জানি না। আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। কেউ হতাহত হয়েছে বলেও তথ্য পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি কী কারণে ঘটেছে তা তদন্ত করে পুলিশ জানাবে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ (ডিএমপি) সূত্র জানায়, মেরুল বাড্ডায় আরমা মাজেদা মালিক টাওয়ারের সামনে আকাশ পরিবহনের একটি বাসে আগুন লাগে। আগুনে বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। বাসের মালিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন। থানা-পুলিশের সদস্যরাও ঘটনাস্থলে রয়েছেন। তবে ওই এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
অন্যদিকে ট্রাফিক বাড্ডা জোনের শাহজাদপুর এলাকায় ভিক্টর পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ডিবি ও থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছে। বাসটি সড়কের মাঝামাঝি থাকায় দুই পাশ দিয়ে যান চলাচল সীমিতভাবে চলাচল করছিল। এর ফলে প্রগতি সরণি সড়কের আউটগোয়িং রুটে জট সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ।

মনিরুজ্জামান মনির শিক্ষা অফিসের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। অথচ তাঁর বিলাসী জীবন। বর্তমান কর্মস্থল বাগেরহাট হলেও তাঁর ‘ঘুষের যোগাযোগ’ খুলনা বিভাগের ১০ জেলায়। এমপিওভুক্তি, বদলি, গ্রেড পাইয়ে দেওয়া—সব কাজই তিনি করে দেন। এই ঘুষ-দুর্নীতির টাকায় তিনি দুই স্ত্রী, স্বজনের নামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে অভিযোগ...
০৬ এপ্রিল ২০২৫
সকালে আরিফ ও ইমরান ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সামনে বের হলে শাহ কামালের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের লোকজন অতর্কিতে গুলি চালায়। এতে আরিফ ও ইমরান গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফকে মৃত ঘোষণা করেন।
১২ মিনিট আগে
হাসপাতালে ভর্তি রোগীর জন্য দৈনিক মাছ বরাদ্দ ১১৮ গ্রাম। রোগীদের দেওয়া হয় ৬০, ৬২, ৬৫ বা ৮০ গ্রাম মাছ। আর সকালের নাশতায় পাউরুটি বরাদ্দ ১৫২ গ্রাম। সেখানে রোগী পায় মাত্র ৫৬ গ্রাম ওজনের মানহীন বেকারিতে তৈরি দুটি পাউরুটি। যা বরাদ্দের অর্ধেকেরও কম।
১৪ মিনিট আগে
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্ব) মাহবুবের রহমান শামীম বলেছেন, আজকে বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, গণতন্ত্রকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
২১ মিনিট আগেমুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি

মুন্সিগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিপক্ষের গুলিতে আরিফ মির (৩৫) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁর চাচাতো ভাই ইমরান গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
আজ সোমবার ভোর ৬টার দিকে সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের চরডুমুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আরিফ মির স্থানীয় বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আওলাদ হোসেনের অনুসারী বলে জানা গেছে। আহত ইমরানকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আতিক মল্লিক ও মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওহিদ মোল্লার অনুসারী শাহ কামাল, জাহাঙ্গীর ও খাইরুদ্দিন গ্রুপের সঙ্গে আরিফ মিরের গ্রুপের বিরোধ চলছিল।
আজ সকালে আরিফ ও ইমরান ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সামনে বের হলে শাহ কামালের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের লোকজন অতর্কিতে গুলি চালায়। এতে আরিফ ও ইমরান গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফকে মৃত ঘোষণা করেন।
মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রুহুল আমিন বলেন, দুইজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আনা হয়। এর মধ্যে হাসপাতালে আনার আগেই আরিফে মারা গেছেন। অন্যজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিপক্ষের গুলিতে আরিফ মির (৩৫) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁর চাচাতো ভাই ইমরান গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
আজ সোমবার ভোর ৬টার দিকে সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের চরডুমুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আরিফ মির স্থানীয় বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আওলাদ হোসেনের অনুসারী বলে জানা গেছে। আহত ইমরানকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আতিক মল্লিক ও মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওহিদ মোল্লার অনুসারী শাহ কামাল, জাহাঙ্গীর ও খাইরুদ্দিন গ্রুপের সঙ্গে আরিফ মিরের গ্রুপের বিরোধ চলছিল।
আজ সকালে আরিফ ও ইমরান ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সামনে বের হলে শাহ কামালের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের লোকজন অতর্কিতে গুলি চালায়। এতে আরিফ ও ইমরান গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফকে মৃত ঘোষণা করেন।
মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রুহুল আমিন বলেন, দুইজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আনা হয়। এর মধ্যে হাসপাতালে আনার আগেই আরিফে মারা গেছেন। অন্যজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মনিরুজ্জামান মনির শিক্ষা অফিসের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। অথচ তাঁর বিলাসী জীবন। বর্তমান কর্মস্থল বাগেরহাট হলেও তাঁর ‘ঘুষের যোগাযোগ’ খুলনা বিভাগের ১০ জেলায়। এমপিওভুক্তি, বদলি, গ্রেড পাইয়ে দেওয়া—সব কাজই তিনি করে দেন। এই ঘুষ-দুর্নীতির টাকায় তিনি দুই স্ত্রী, স্বজনের নামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে অভিযোগ...
০৬ এপ্রিল ২০২৫
রাজধানীর মেরুল বাড্ডা ও শাহজাদপুর এলাকায় আজ সোমবার ভোরে আকাশ ও ভিক্টর পরিবহনের দুটি বাসে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। কে বা কারা বাস দুটিতে আগুন দিয়েছে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ। এসব ঘটনায় কেউ আহত হয়নি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
৭ মিনিট আগে
হাসপাতালে ভর্তি রোগীর জন্য দৈনিক মাছ বরাদ্দ ১১৮ গ্রাম। রোগীদের দেওয়া হয় ৬০, ৬২, ৬৫ বা ৮০ গ্রাম মাছ। আর সকালের নাশতায় পাউরুটি বরাদ্দ ১৫২ গ্রাম। সেখানে রোগী পায় মাত্র ৫৬ গ্রাম ওজনের মানহীন বেকারিতে তৈরি দুটি পাউরুটি। যা বরাদ্দের অর্ধেকেরও কম।
১৪ মিনিট আগে
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্ব) মাহবুবের রহমান শামীম বলেছেন, আজকে বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, গণতন্ত্রকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
২১ মিনিট আগেমনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি

হাসপাতালে ভর্তি রোগীর জন্য দৈনিক মাছ বরাদ্দ ১১৮ গ্রাম। রোগীদের দেওয়া হয় ৬০, ৬২, ৬৫ বা ৮০ গ্রাম মাছ। আর সকালের নাশতায় পাউরুটি বরাদ্দ ১৫২ গ্রাম। সেখানে রোগী পায় মাত্র ৫৬ গ্রাম ওজনের মানহীন বেকারিতে তৈরি দুটি পাউরুটি। যা বরাদ্দের অর্ধেকেরও কম। এসব অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে। সংস্থাটির যশোর জেলা দপ্তরের উপসহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব নিয়োগীর নেতৃত্বে গতকাল রোববার দিনভর চলা অভিযানে ৫০ শয্যার এই সরকারি হাসপাতালের নানা অনিয়মের চিত্র ধরা পড়ে। এ সময় নয়ন হোসেন নামে ক্লিনিকের এক দালালকে ধরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে সোপর্দ করেছে দুদক।
দুদক জানিয়েছে, তাদের সদর দপ্তরে জমা পড়া অভিযোগের ভিত্তিতে তারা তিন সদস্যর একটি দল মনিরামপুর হাসপাতালে শুরুতে ছদ্মবেশে অভিযান চালায়। অভিযোগের বিষয়গুলোর প্রমাণ পেয়ে পরে তারা প্রকাশ্যে অভিযানে নামে।
দুদকের উপসহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব নিয়োগী বলেন, ‘সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ১০-১৫ টাকা। আমরা অভিযোগ পেয়েছি মনিরামপুর হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সচালক এখলাস হোসেন রোগীদের জিম্মি করে তিন গুণ ভাড়া আদায় করে। মনিরামপুর থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী নেওয়ার জন্য আমরা ছদ্মবেশে অ্যাম্বুলেন্সচালকের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলি। চালক আমাদের কাছে দুই হাজার টাকা ভাড়া দাবি করে। দূরত্ব হিসাব করলে মনিরামপুর থেকে খুলনা পর্যন্ত সরকারি ভাড়া আসে ৬০০-৭০০ টাকা। সেখানে চালক তিন গুণ ভাড়া আদায় করে।
চিরঞ্জীব নিয়োগী বলেন, ‘ভর্তি রোগীর খাবারের মান যাচাই করতে গিয়ে আমরা দেখেছি, সকালের নাশতায় রোগীকে ১৫২ গ্রাম ওজনের পাউরুটি দেওয়ার নিয়ম থাকলেও সরবরাহ করা রুটির ওজন মিলেছে মাত্র ৫৬ গ্রাম। রোগীর খাবারে ১১৮ গ্রাম ওজনের মাছের টুকরা দেওয়ার কথা থাকলেও সরবরাহ করা মাছের প্রতি টুকরার ওজন মিলেছে ৬০ থেকে ৮০ গ্রাম। এ ছাড়া মানহীন তেল ও লবণ ব্যবহার করা হচ্ছে রোগীর জন্য রান্না করা তরকারিতে। রোগীদের যে ডাল খাওয়ানো হয় তার মানও খুবই নিম্নমানের।’
দুদকের উপসহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব নিয়োগী বলেন, ভর্তি বিভাগে অভিযানে দেখা গেছে হাসপাতালে সরকারি ওষুধ ও স্যালাইন মজুত থাকলেও রোগীদের সেই ওষুধ বা স্যালাইন বাইরে থেকে কেনানো হচ্ছে। রোগীর বাথরুম বা টয়লেটের অবস্থাও নাজুক দেখা গেছে।
দুদকের এই উপপরিচালক বলেন, ‘অভিযানে দেখা গেছে, হাসপাতালের ল্যাব সহকারী আনিছুজ্জামান বিভিন্ন ক্লিনিকের দালালের মাধ্যমে রোগীদের পরীক্ষা করানোর জন্য বাইরের ক্লিনিকে পাঠিয়ে থাকে। আমরা নয়ন হোসেন নামে এক দালালকে ধরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে সোপর্দ করেছি। এ ছাড়া জরুরি বিভাগে অভিযানের সময় দেখা গেছে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া ওয়ার্ডবয়রা কোনো প্রকার প্রশিক্ষণ ছাড়াই রোগীর সেলাই বা ব্যান্ডেজের কাজ করছে।’
চিরঞ্জীব নিয়োগী বলেন, ‘অভিযানের সময় হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক অনুপ বসু আমাদের সঙ্গে ছিলেন। আমরা অনিয়মের বিষয়গুলো হাসপাতালপ্রধানকে জানিয়েছি। অনিয়ম পাওয়া বিষয়গুলো আমাদের সদর দপ্তরকে লিখিতভাবে জানাব। এ ছাড়া সিভিল সার্জনকে বিষয়গুলো জানানো হবে।’
দুদকের অভিযোগের বিষয়ে মনিরামপুর হাসপাতালে খাবার পরিবেশনকারী ঠিকাদার ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘২০১২ সালের মূল্যতালিকায় আজও আমাদের খাদ্য সরবরাহ করতে হচ্ছে। নতুন করে আর টেন্ডার না হওয়ায় লোকসান করে খাদ্য সরবরাহ করতে হচ্ছে।’
মনিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) অনুপ বসু বলেন, ‘মাঝেমধ্যে আমরা ঠিকাদারকে ডেকে রোগীর খাবারের মান সম্পর্কে সতর্ক করি। দুই-চার দিন ঠিক থাকার পর আবার যাইতাই হয়ে যাচ্ছে। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় ঠিকাদার পরিবর্তন করা সম্ভব হচ্ছে না।’
মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফাইয়াজ আহমেদ ফয়সাল বলেন, দুদকের পাওয়া অনিয়মগুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

হাসপাতালে ভর্তি রোগীর জন্য দৈনিক মাছ বরাদ্দ ১১৮ গ্রাম। রোগীদের দেওয়া হয় ৬০, ৬২, ৬৫ বা ৮০ গ্রাম মাছ। আর সকালের নাশতায় পাউরুটি বরাদ্দ ১৫২ গ্রাম। সেখানে রোগী পায় মাত্র ৫৬ গ্রাম ওজনের মানহীন বেকারিতে তৈরি দুটি পাউরুটি। যা বরাদ্দের অর্ধেকেরও কম। এসব অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে। সংস্থাটির যশোর জেলা দপ্তরের উপসহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব নিয়োগীর নেতৃত্বে গতকাল রোববার দিনভর চলা অভিযানে ৫০ শয্যার এই সরকারি হাসপাতালের নানা অনিয়মের চিত্র ধরা পড়ে। এ সময় নয়ন হোসেন নামে ক্লিনিকের এক দালালকে ধরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে সোপর্দ করেছে দুদক।
দুদক জানিয়েছে, তাদের সদর দপ্তরে জমা পড়া অভিযোগের ভিত্তিতে তারা তিন সদস্যর একটি দল মনিরামপুর হাসপাতালে শুরুতে ছদ্মবেশে অভিযান চালায়। অভিযোগের বিষয়গুলোর প্রমাণ পেয়ে পরে তারা প্রকাশ্যে অভিযানে নামে।
দুদকের উপসহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব নিয়োগী বলেন, ‘সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ১০-১৫ টাকা। আমরা অভিযোগ পেয়েছি মনিরামপুর হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সচালক এখলাস হোসেন রোগীদের জিম্মি করে তিন গুণ ভাড়া আদায় করে। মনিরামপুর থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী নেওয়ার জন্য আমরা ছদ্মবেশে অ্যাম্বুলেন্সচালকের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলি। চালক আমাদের কাছে দুই হাজার টাকা ভাড়া দাবি করে। দূরত্ব হিসাব করলে মনিরামপুর থেকে খুলনা পর্যন্ত সরকারি ভাড়া আসে ৬০০-৭০০ টাকা। সেখানে চালক তিন গুণ ভাড়া আদায় করে।
চিরঞ্জীব নিয়োগী বলেন, ‘ভর্তি রোগীর খাবারের মান যাচাই করতে গিয়ে আমরা দেখেছি, সকালের নাশতায় রোগীকে ১৫২ গ্রাম ওজনের পাউরুটি দেওয়ার নিয়ম থাকলেও সরবরাহ করা রুটির ওজন মিলেছে মাত্র ৫৬ গ্রাম। রোগীর খাবারে ১১৮ গ্রাম ওজনের মাছের টুকরা দেওয়ার কথা থাকলেও সরবরাহ করা মাছের প্রতি টুকরার ওজন মিলেছে ৬০ থেকে ৮০ গ্রাম। এ ছাড়া মানহীন তেল ও লবণ ব্যবহার করা হচ্ছে রোগীর জন্য রান্না করা তরকারিতে। রোগীদের যে ডাল খাওয়ানো হয় তার মানও খুবই নিম্নমানের।’
দুদকের উপসহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব নিয়োগী বলেন, ভর্তি বিভাগে অভিযানে দেখা গেছে হাসপাতালে সরকারি ওষুধ ও স্যালাইন মজুত থাকলেও রোগীদের সেই ওষুধ বা স্যালাইন বাইরে থেকে কেনানো হচ্ছে। রোগীর বাথরুম বা টয়লেটের অবস্থাও নাজুক দেখা গেছে।
দুদকের এই উপপরিচালক বলেন, ‘অভিযানে দেখা গেছে, হাসপাতালের ল্যাব সহকারী আনিছুজ্জামান বিভিন্ন ক্লিনিকের দালালের মাধ্যমে রোগীদের পরীক্ষা করানোর জন্য বাইরের ক্লিনিকে পাঠিয়ে থাকে। আমরা নয়ন হোসেন নামে এক দালালকে ধরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে সোপর্দ করেছি। এ ছাড়া জরুরি বিভাগে অভিযানের সময় দেখা গেছে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া ওয়ার্ডবয়রা কোনো প্রকার প্রশিক্ষণ ছাড়াই রোগীর সেলাই বা ব্যান্ডেজের কাজ করছে।’
চিরঞ্জীব নিয়োগী বলেন, ‘অভিযানের সময় হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক অনুপ বসু আমাদের সঙ্গে ছিলেন। আমরা অনিয়মের বিষয়গুলো হাসপাতালপ্রধানকে জানিয়েছি। অনিয়ম পাওয়া বিষয়গুলো আমাদের সদর দপ্তরকে লিখিতভাবে জানাব। এ ছাড়া সিভিল সার্জনকে বিষয়গুলো জানানো হবে।’
দুদকের অভিযোগের বিষয়ে মনিরামপুর হাসপাতালে খাবার পরিবেশনকারী ঠিকাদার ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘২০১২ সালের মূল্যতালিকায় আজও আমাদের খাদ্য সরবরাহ করতে হচ্ছে। নতুন করে আর টেন্ডার না হওয়ায় লোকসান করে খাদ্য সরবরাহ করতে হচ্ছে।’
মনিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) অনুপ বসু বলেন, ‘মাঝেমধ্যে আমরা ঠিকাদারকে ডেকে রোগীর খাবারের মান সম্পর্কে সতর্ক করি। দুই-চার দিন ঠিক থাকার পর আবার যাইতাই হয়ে যাচ্ছে। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় ঠিকাদার পরিবর্তন করা সম্ভব হচ্ছে না।’
মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফাইয়াজ আহমেদ ফয়সাল বলেন, দুদকের পাওয়া অনিয়মগুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

মনিরুজ্জামান মনির শিক্ষা অফিসের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। অথচ তাঁর বিলাসী জীবন। বর্তমান কর্মস্থল বাগেরহাট হলেও তাঁর ‘ঘুষের যোগাযোগ’ খুলনা বিভাগের ১০ জেলায়। এমপিওভুক্তি, বদলি, গ্রেড পাইয়ে দেওয়া—সব কাজই তিনি করে দেন। এই ঘুষ-দুর্নীতির টাকায় তিনি দুই স্ত্রী, স্বজনের নামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে অভিযোগ...
০৬ এপ্রিল ২০২৫
রাজধানীর মেরুল বাড্ডা ও শাহজাদপুর এলাকায় আজ সোমবার ভোরে আকাশ ও ভিক্টর পরিবহনের দুটি বাসে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। কে বা কারা বাস দুটিতে আগুন দিয়েছে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ। এসব ঘটনায় কেউ আহত হয়নি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
৭ মিনিট আগে
সকালে আরিফ ও ইমরান ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সামনে বের হলে শাহ কামালের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের লোকজন অতর্কিতে গুলি চালায়। এতে আরিফ ও ইমরান গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফকে মৃত ঘোষণা করেন।
১২ মিনিট আগে
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্ব) মাহবুবের রহমান শামীম বলেছেন, আজকে বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, গণতন্ত্রকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
২১ মিনিট আগেনোয়াখালী প্রতিনিধি

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্ব) মাহবুবের রহমান শামীম বলেছেন, আজকে বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, গণতন্ত্রকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। জনগণের ভোটাধিকার যারা বাধাগ্রস্ত করবে, জনগণ তাদের রুখে দেবে।
তিনি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্রকে নিয়ে ষড়যন্ত্র, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র মানে তারেক রহমানকে নিয়ে ষড়যন্ত্র। যারা নির্বাচনকে বানচাল বা বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হবে, আর নির্বাচনে ভরাডুবি হবে জেনেই তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
োয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর রোববার সন্ধ্যায় নিজ নির্বাচনী এলাকায় হাতিয়ার চেয়ারম্যানঘাটে এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শামীম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় নেই। আর ওই নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য সারা দেশের মানুষ উদ্গ্রীব হয়ে আছে। যতই ষড়যন্ত্র হোক আমরা, আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকলে নির্বাচন বানচাল করা যাবে না। সারা দেশের জনগণ ভোটে নেমে পড়েছে, ভোটের ট্রেনে জনগণ উঠে গেছে। নির্বাচন ঘিরে প্রতিটি অঞ্চলে মিছিল-মিটিং হচ্ছে।’
হরিণী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আখতারুজ্জামান দোলনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন, সাবেক সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক খোকন, সাবেক সহসভাপতি মাসউদুর রহমান বাবর, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিরুল হায়দার সাজ্জাদ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল্লাহিল মজিদ নিশানসহ অনেকে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্ব) মাহবুবের রহমান শামীম বলেছেন, আজকে বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, গণতন্ত্রকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। জনগণের ভোটাধিকার যারা বাধাগ্রস্ত করবে, জনগণ তাদের রুখে দেবে।
তিনি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্রকে নিয়ে ষড়যন্ত্র, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র মানে তারেক রহমানকে নিয়ে ষড়যন্ত্র। যারা নির্বাচনকে বানচাল বা বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হবে, আর নির্বাচনে ভরাডুবি হবে জেনেই তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
োয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর রোববার সন্ধ্যায় নিজ নির্বাচনী এলাকায় হাতিয়ার চেয়ারম্যানঘাটে এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শামীম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় নেই। আর ওই নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য সারা দেশের মানুষ উদ্গ্রীব হয়ে আছে। যতই ষড়যন্ত্র হোক আমরা, আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকলে নির্বাচন বানচাল করা যাবে না। সারা দেশের জনগণ ভোটে নেমে পড়েছে, ভোটের ট্রেনে জনগণ উঠে গেছে। নির্বাচন ঘিরে প্রতিটি অঞ্চলে মিছিল-মিটিং হচ্ছে।’
হরিণী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আখতারুজ্জামান দোলনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন, সাবেক সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক খোকন, সাবেক সহসভাপতি মাসউদুর রহমান বাবর, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিরুল হায়দার সাজ্জাদ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল্লাহিল মজিদ নিশানসহ অনেকে।

মনিরুজ্জামান মনির শিক্ষা অফিসের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। অথচ তাঁর বিলাসী জীবন। বর্তমান কর্মস্থল বাগেরহাট হলেও তাঁর ‘ঘুষের যোগাযোগ’ খুলনা বিভাগের ১০ জেলায়। এমপিওভুক্তি, বদলি, গ্রেড পাইয়ে দেওয়া—সব কাজই তিনি করে দেন। এই ঘুষ-দুর্নীতির টাকায় তিনি দুই স্ত্রী, স্বজনের নামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে অভিযোগ...
০৬ এপ্রিল ২০২৫
রাজধানীর মেরুল বাড্ডা ও শাহজাদপুর এলাকায় আজ সোমবার ভোরে আকাশ ও ভিক্টর পরিবহনের দুটি বাসে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। কে বা কারা বাস দুটিতে আগুন দিয়েছে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ। এসব ঘটনায় কেউ আহত হয়নি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
৭ মিনিট আগে
সকালে আরিফ ও ইমরান ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সামনে বের হলে শাহ কামালের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের লোকজন অতর্কিতে গুলি চালায়। এতে আরিফ ও ইমরান গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফকে মৃত ঘোষণা করেন।
১২ মিনিট আগে
হাসপাতালে ভর্তি রোগীর জন্য দৈনিক মাছ বরাদ্দ ১১৮ গ্রাম। রোগীদের দেওয়া হয় ৬০, ৬২, ৬৫ বা ৮০ গ্রাম মাছ। আর সকালের নাশতায় পাউরুটি বরাদ্দ ১৫২ গ্রাম। সেখানে রোগী পায় মাত্র ৫৬ গ্রাম ওজনের মানহীন বেকারিতে তৈরি দুটি পাউরুটি। যা বরাদ্দের অর্ধেকেরও কম।
১৪ মিনিট আগে