Ajker Patrika

ঝুঁকিপূর্ণ নির্মাণকাজ: চুয়াডাঙ্গা সরকারি বিদ্যালয়ে বাঁশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে ভবন

ভবনের প্রথম তলার ছাঁদ, বিম ও পিলার ঢালাই দেওয়ার শাটারিংয়ে লোহা বা স্টিলের পরিবর্তে বড় একটি অংশে বাঁশ ও কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভবনের প্রথম তলার ছাঁদ, বিম ও পিলার ঢালাই দেওয়ার শাটারিংয়ে লোহা বা স্টিলের পরিবর্তে বড় একটি অংশে বাঁশ ও কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

চুয়াডাঙ্গায় ভিক্টোরিয়া জুবিলি (ভি.জে.) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছয়তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণে বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ৮ কোটি ৯৪ লাখ ১৮ হাজার ৬০০ টাকা বরাদ্দকৃত এই প্রকল্পে সরকারি নির্দেশনা ভেঙে স্টিলের পরিবর্তে বাঁশ ও কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে শাটারিংয়ের কাজে। এতে একদিকে যেমন ভবনের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তেমনি বিদ্যালয়ের মতো ব্যস্ত পরিবেশে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। যদিও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর এ বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি, যা নিয়ে সবার মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায় ঢাকার মিরপুরের মেসার্স মিরন এন্টারপ্রাইজ। ৮ কোটি ৯৪ লোখ ১৮ হাজার ৬০০ টাকা বরাদ্দ পাওয়া নির্মাণকাজটি মিরপুরের মেসার্স মিরন এন্টারপ্রাইজের নামে থাকলেও তাদের হয়ে এখানে কাজটি দেখাশোনা করছেন চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় কয়েকজন ঠিকাদার। ইতিমধ্যে এই নির্মাণকাজের ভিত, প্রথম তলার সিঁড়ি ও প্রথম তলার ছাদহ বেশ খানিকটা কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। টেন্ডার অনুযায়ী ছয়তলা ভিতবিশিষ্ট ছয়তলা একাডেমিক ভবন, স্যানিটারি, পানি সরবরাহ, বৈদ্যুতিককরণসহ নির্মাণকাজ শেষ করার কথা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটি নির্মাণে প্রথম তলার ছাঁদ, বিম ও পিলার ঢালাই দেওয়ার শাটারিংয়ে লোহা বা স্টিল ব্যবহার করার কথা থাকলেও বড় একটি অংশে বাঁশ ও নিম্নমানের কাঠ ব্যবহার হয়েছে। এদিকে বিদ্যালয় খোলা থাকা অবস্থায়ও নির্মাণকাজ চলছে। অথচ কাজ চলাকালীন নির্মাণ এলাকায় কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী বা সুরক্ষাব্যবস্থা নেই। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

এতে অভিভাবকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ভীতি ও ক্ষোভ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক বলেন, ‘এটি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে দুই শিফটে ক্লাস হয়, আর বাচ্চারা এর পাশেই খেলাধুলা করে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় কে নেবে? শুনেছি, বাঁশের শাটারিং খুলে পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।’ দ্রুত এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে তারা মনে করেন।

এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক জেসমিন আরা খাতুন নির্মাণকাজে বাঁশ ও কাঠ ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘শিডিউল অনুযায়ী লোহা বা স্টিল ব্যবহারের কথা ছিল। আমি নিজে এটি দেখার পর ইঞ্জিনিয়ারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, সাময়িকভাবে এগুলো ব্যবহার করা হয়েছে, ঢালাইয়ের সময় তুলে নেওয়া হবে। কিন্তু তারা তা করেননি।’

তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আশরাফুল আলম রুবেল কোনো অনিয়মের কথা মানতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘কাজের কোনো সমস্যা নেই, আপনার সমস্যা কী?’

এ ব্যাপারে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভবন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না। আমরা সব বিষয়ে সতর্ক। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নজরেও বিষয়টি এসেছে এবং তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জমির আইল কাটা নিয়ে দুই ভাইয়ের মারামারি, প্রাণ গেল কৃষকের

বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় জমির আইল কাটা নিয়ে দুই চাচাতো ভাইয়ের মারামারি চলার সময় হাবিব শেখ (৪২) নামের এক কৃষক প্রাণ হারিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের বনগ্রাম ব্যাঙডুবি মাঠে এ ঘটনা ঘটে। কৃষকের পরিবারের দাবি, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই ভাইই হাবিবকে পিটিয়ে মেরেছেন। অন্য দিকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দাবি, তাঁদের মারামারি ফেরাতে গিয়ে স্ট্রোক করে মারা গেছেন হাবিব।

নিহত হাবিব শেখ বালিয়াকান্দির নবাবপুর ইউনিয়নের বনগ্রাম গ্রামের লিয়াকত শেখের ছেলে।  

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বনগ্রাম গ্রামের মঞ্জু শেখের ছেলে শরিফুল এবং একই গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে রাকিব শেখ (২৭) সম্পর্কে চাচাতো ভাই। আজ সকালে শরিফুল ব্যাঙডুবি মাঠে পেঁয়াজ লাগাতে যান। তখন রাকিব জমির আইল কাটা হয়েছে বলে বাধা দেন। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে মারামারি বেধে যায়। এ সময় সেখানে থাকা হাবিব প্রাণ হারান।

হাবিরের ভগ্নিপতি মো. আলাউদ্দিন আলী জানান,, শরিফুল তাঁর জমি চাষের জন্য হাবিবকে ঠিক করেন। তাই আজ সকালে হাবিব পাওয়ার টিলার নিয়ে সে জমি চাষ করছিলেন। একপর্যায়ে জমির সীমানা নিয়ে শরিফুল ও তাঁর চাচাতো ভাই রাকিবের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। হাবিবদের সঙ্গে শরিফুল ও রাকিবদের পরিবারের জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব রয়েছে। সুপরিকল্পিতভাবে হাবিবকে কাজ দিয়ে তুচ্ছ ঘটনা ঘটিয়ে দুই ভাইই তাঁকে পিটিয়ে মেরেছেন। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করা হবে বলে জানান আলাউদ্দিন।

অন্য দিকে অভিযুক্ত শরিফুল শেখ জানান, জমির সীমানা নিয়ে তাঁদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মারামারি হয়। মারামারি ঠেকানোর সময় হঠাৎ স্ট্রোক করেন হাবিব। হাবিবকে কেউ আঘাত করেননি।

বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক মো. মাহফুজুর রহমান জানান, হাসপাতালে আনার আগেই হাবিবের মৃত্যু হয়েছে। মারামারির ঘটনায় শরিফুল ও তাঁর ছেলে টোকন শেখকে (৩২) হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। জামাল উদ্দিন নামের আরেক ব্যক্তির অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।  

বালিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রব তালুকদার বলেন, ঘটনাস্থল পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। তাঁরা পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপের জন্য কাজ করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সংস্কৃতির ওপর আঘাত মানে নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষাকে ব্যাহত করা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের সামনে সংস্কৃতির ওপর আক্রমণের প্রতিবাদ সমাবেশ করেন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানটির কর্মী ও সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের সামনে সংস্কৃতির ওপর আক্রমণের প্রতিবাদ সমাবেশ করেন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানটির কর্মী ও সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাঙালি সংস্কৃতি বা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর আঘাত মানে গণ-অভ্যুত্থানের নতুন বাংলাদেশের যে আকাঙ্ক্ষা বা স্বপ্ন সেটিকে ব্যাহত করা বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠান ‘ছায়ানট’-এর কর্মীরা। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের সামনে সংস্কৃতির ওপর আক্রমণের প্রতিবাদ সমাবেশে এ কথা বলেন ছায়ানট সংস্কৃতিকর্মীরা।

এ সময় গানে গানে সংহতি সমাবেশের আয়োজনের মাধ্যমে সংস্কৃতি স্থাপনার ওপর আক্রমণের প্রতিবাদ জানানো হয়। প্রতিবাদ ও সংহতি সমাবেশে এক হাজারের বেশি সংস্কৃতিকর্মী অংশগ্রহণ করেছেন জানান পার্থ তানভীর।

ছায়ানটের প্রাক্তন শিক্ষার্থী কৃষ্ণকলি ইসলাম বলেছেন, ‘আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, আমরা এটা কখনো মেনে নিতে পারি না। শত শত, হাজার হাজার সংস্কৃতি ব্যক্তি এখান থেকে শিখে বের হয়েছেন, যা দেশের সংস্কৃতি চর্চা ছড়িয়ে দিয়েছেন। এই আক্রমণ জাতি হিসেবে লজ্জার। ’২৪-এর জুলাইয়ের ৫ আগস্টের পর নতুন বাংলাদেশের যে আকাঙ্ক্ষা বা স্বপ্ন ছিল মানুষের, সেই আকাঙ্ক্ষা বেহাত হয়েছে।’

তৃষ্ণা রানী শীল বলেন, ‘আমরা নতুন পরিবর্তন আশা করেছিলাম। কিন্তু এমন পরিবর্তন সবার জন্য দুঃখজনক, যা কাম্য ছিল না। যা হয়েছে সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার হোক। সংস্কৃতি ছাড়া সুষ্ঠু বাংলা গড়তে পারব না। আমরা সামনের নতুন বছর নতুনভাবে শুরু করতে চাই সংস্কৃতি মনপ্রবণ নিয়ে। যত দিন সংস্কৃতি থাকবে ছায়ানট থাকবে।’

ছায়ানটের শিক্ষার্থী মো. জাবির মুনতাসির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যারা এই ঘৃণিত কাজটি করেছে ঠিক করেনি। শিল্পীদের প্রিয় জায়গা হচ্ছে ছায়ানট। এখানে সবাই গান শেখে, আমিও শিখি। ছুটির দিনে শুক্রবার আনন্দের সঙ্গে গান শিখতে এসে দেখি কিছু অসভ্য লোকেরা নাকি ছায়ানটে হামলা করেছে। সভ্য মানুষ হলে বাংলার বুকে এভাবে আঘাত হানতে পারত না।’

নাজিয়া হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মনুষ্যত্বপূর্ণ মানুষ হয়ে দেখাতে হবে। আমরা যে নতুন প্রজন্ম, সুস্থ মনস্তাত্ত্বিক ভাবনা নিয়ে বেড়ে উঠছি সেটাকে আঘাত করা হয়েছে বলে মনে করছি। এটা শুধু সংস্কৃতির ওপর আঘাত নয়, এটা আমাদের বেড়া ওঠার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি।’

ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছায়ানটের মতো একটা বৃহৎ সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠান, যেটা কিংবদন্তি। সেই কিংবদন্তি স্থাপনার ওপর হামলা মেনে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, মুক্তিযোদ্ধা, অভ্যুত্থান সবকিছুতে সংস্কৃতিতে এই গান অগ্রভাগে ছিল, আছেই। যুগ যুগ ধরে গান শুনিয়ে দেশপ্রেমিক মানুষকে সাহস ও অনুপ্রাণিত করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরে এমন একটা ঘটনা কীভাবে ঘটাল, এটা আমরা মেনে নিতে পারি না। এই স্থাপনার ওপর হামলা মানে বাঙালির জাতিসত্তার ওপর হামলা। আমরা এই হামলার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে বিচার চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
হেলাল উদ্দিন হত্যারকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: ফাইল ফটো
হেলাল উদ্দিন হত্যারকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: ফাইল ফটো

কয়েকজনের কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন বেদেনা আক্তার (৪০)। টাকা পরিশোধ করতে পাওনাদাররা তাঁকে চাপ দিচ্ছিলেন। তাই নিজের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে একটি ষাঁড় স্বামীকে না জানিয়ে বিক্রির পরিকল্পনা করেন তিনি। এ জন্য বাবার বাড়ির এলাকা থেকে চোর ভাড়া করেন বেদেনা আক্তার। গত শনিবার রাতে ভাড়া করা চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন তিনি। কিন্তু চুরির ঘটনা টের পেয়ে যান বেদেনার স্বামী হেলাল উদ্দিন। তিনি ষাঁড় চুরিতে বাধা দিতে গেলে স্ত্রীসহ পাঁচজন মিলে হেলালকে মুখ ও হাত-পা বেঁধে গলা কেটে হত্যা করেন। নেত্রকোনা সদর উপজেলার কৃষক হেলাল উদ্দিনকে (৫৮) হত্যায় আদালতে জবানবন্দিতে তাঁর স্ত্রী বেদেনা আক্তার এসব কথা জানিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নেত্রকোনা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) চম্পক দাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে গত রোববার ভোরে সদর উপজেলার নাড়িয়াপাড়া গ্রামে নিজ ঘর থেকে কৃষক হেলাল উদ্দিনের হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত হেলাল উদ্দিন সদর উপজেলার নাড়িয়াপাড়া গ্রামের মৃত আশ্রাব আলীর ছেলে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার দুপুরে নিহত হেলালের ছোট ভাই রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী বেদেনা আক্তারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার অন্য দুজন হলেন সদর উপজেলার নাড়িয়াপাড়া এলাকার রিয়েল মিয়া (৪০) ও বারহাট্টা উপজেলার সেমিয়া দুধকুড়া গ্রামের লিটন মিয়া (৫০)।

পুলিশ জানায়, গতকাল বিকেলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর স্ত্রী বেদেনা আক্তারকে আটক করার পর তিনি হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এ বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নেত্রকোনা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) চম্পক দাম জানান, আদালতে বেদেনা আক্তার জবানবন্দিতে বলেছেন, তিনি বিভিন্ন সময়ে কয়েকজনের কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। পাওনাদারেরা এখন টাকার জন্য তাঁকে তাগাদা দিচ্ছেন। তাই তাঁর বাবার বাড়ি বারহাট্টা উপজেলার সেমিয়া দুধকুড়া গ্রামের লিটন মিয়ার সঙ্গে চুরি করে তাঁর স্বামী হেলাল উদ্দিনের ষাঁড় নিয়ে বিক্রি করার জন্য চুক্তি করেন। গত শনিবার রাতে লিটন মিয়া, নাড়িয়াপাড়া গ্রামের রিয়েল মিয়াসহ চারজন মিলে গরু চুরি করতে গেলে হেলাল উদ্দিন টের পেয়ে যান। তিনি ষাঁড় চুরিতে বাধা দিতে গেলে স্ত্রীসহ পাঁচজন মিলে হেলালকে মুখ ও হাত-পা বেঁধে গলা কেটে হত্যা করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা চম্পক দাম বলেন, বেদেনা আক্তারের তথ্য অনুযায়ী গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে লিটন মিয়া ও রিয়েল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। লিটন মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় পাঁচটি চুরির মামলা রয়েছে।

নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল মামুন সরকার বলেন, ‘অল্প সময়ে হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদ্‌ঘাটনসহ জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। নিহত ব্যক্তির স্ত্রী বেদেনা আক্তারসহ তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত অন্য দুজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার মামলায় ১১ জন কারাগারে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৫০
প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলার মামলায় ১১ জন কারাগারে

দৈনিক‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎ প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার ১১ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামসেদ আলম আজ মঙ্গলবার পৃথক আদেশে তেজগাঁও থানায় প্রথম আলোর করা মামলায় দুজনকে ও দ্য ডেইলি স্টারের করা মামলায় নয়জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগরের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।

প্রথম আলোর মামলায় যাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে, তাঁরা হলেন মোহাম্মদ ইয়াসিন (৩৯) ও মো. হাশেম (২৪)।

এ মামলায় গতকাল সোমবার ১৫ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।

একই থানায় দ্য ডেইলি স্টারের করা মামলায় কারাগারে পাঠানো ব্যক্তিরা হলেন মো. মাইনুল ইসলাম (২২), জুলফিকার আলী সৌরভ (২২), মো. আলমাস আলী (৩২), মো. জুবায়ের হোসেন (২১), আয়নুল হক কাশেমী (৩০), আব্দুর রহমান পলাশ (৩০), মো. জান্নাতুল নাঈম (২১), কারি মো. মুয়াজবীন আ. রহমান (৩৪) ও মো. ফয়সাল আহমেদ (২৪)।

আজ সন্ধ্যার আগে দুই মামলার এই ১১ আসামিকে আদালতে হাজির করে তেজগাঁও থানা-পুলিশ। তদন্ত কর্মকর্তারা তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

তবে পুলিশ প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভবিষ্যতে রিমান্ডে নেওয়ার প্রয়োজন হবে। আপাতত তাঁদের কারাগারে আটক রাখা দরকার।

শুনানি শেষে আদালত সবাইকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গত বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক সোয়া ১১টার দিকে কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ের সামনে কয়েক শ মানুষ জড়ো হয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে হামলা চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে।

এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারা পুলিশের ওপর মারমুখী আচরণ করে। পরে আরও পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ফায়ার সার্ভিসও ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোসহ ভবনে আটকা পড়াদের উদ্ধার করে।

পরে হামলাকারীরা দ্য ডেইলি স্টারে একইভাবে হামলা করে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে।

এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৩৫০ থেকে ৪৫০ জনকে আসামি করে গত রোববার মামলা করেন প্রথম আলোর হেড অব সিকিউরিটি মেজর (অব.) মো. সাজ্জাদুল কবির। পরদিন পত্রিকাটির হেড অব অপারেশন মিজানুর রহমানও বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলা করেন।

দুই মামলায় অভিযোগ করা হয়, হামলাকারীরা হত্যার উদ্দেশ্যে প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে, ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে এবং মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ট করে।

এতে প্রথম আলোর ৩২ কোটি টাকা ক্ষতি হয়। দ্য ডেইলি স্টারের ক্ষতির পরিমাণ ৪০ কোটি টাকা।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ধারা ছাড়াও উভয় মামলায় দণ্ডবিধি, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ এবং ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারাও যোগ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভোটের জোট: আসন সমঝোতা শেষ পর্যায়ে

উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়ে গুঞ্জন

১১৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের, মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এর বেশি বহাল থাকছে যেসব প্রতিষ্ঠানে

দিল্লিতে ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা হিন্দুত্ববাদীদের, উত্তেজনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত