Ajker Patrika

আমতলীতে রোদে গাছতলায়, বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৩, ০৯: ০৭
আমতলীতে রোদে গাছতলায়, বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান

বরগুনার আমতলীতে একটি বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের রোদের মধ্যে গাছতলায় পাঠদান চলছে। আবার তৃতীয় শ্রেণির ক্লাস চলছিল পরিত্যক্ত ভবনের বারান্দায়। 

আজ সোমবার এমন চিত্র দেখা গেছে উপজেলার উত্তর টিয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শুধু আজ সোমবারই নয়, ঝুঁকিপূর্ণ একতলা ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার পর তিন বছর ধরে এভাবে চলছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির শিক্ষাকার্যক্রম। 

জানা গেছে, ১৯৭৩ সালে আমতলী উপজেলার উত্তর টিয়া সরকারি প্রাথমিক প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে টিনশেডের ঘরে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম চলছিল। ২০০৩ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর একতলা ভবন নির্মাণ করে দেয়। ভবন নির্মাণের ১০ বছরের মাথায় ছাদে ও দেয়ালে ফাটল ধরে পলেস্তারা খসে পড়ে। পাঁচ বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ওই ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকেরা। বিভিন্ন সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ভবনের পলেস্তারা গায়ে পড়ে আহত হয় বলে শিক্ষকেরা জানান। 

বরগুনার আমতলীতে শিক্ষার্থীদের পরিত্যক্ত ভবনে পাঠদান২০২১ সালে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় ওই বিদ্যালয় ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। পরিত্যক্ত ঘোষণার পর থেকেই স্থান সংকুলান না হওয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের রোদে গাছতলায় এবং বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত ভবনের বারান্দায় পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকেরা। 

তিন বছর ধরে এভাবেই চলছে ওই বিদ্যালয়ের পাঠদান। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে আবেদন করলেও ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, এমন অভিযোগ প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমানের। 
আজ সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের গাছতলায় এবং তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরিত্যক্ত ভবনের বারান্দায় পাঠদান করানো হচ্ছে। অন্য শ্রেণির ক্লাস একটি টিনশেডের ঘরে চলছে। 

শিক্ষার্থী মরিয়াম, মারিয়া ইসলাম, আবু হানিফ, সাকিল, হাসিবুর রহমান, মাহফুজ ও নাজমা আক্তার বলে, ‘প্রচণ্ড রোদে গাছতলায় এবং বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত ভবনের বারান্দায় ক্লাস করতে হচ্ছে। আমরা বেশ কষ্টে ক্লাস করছি। আমরা চাই, প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য দ্রুত স্কুলভবন নির্মাণ করে দিন।’ 

সহকারী শিক্ষক আব্দুল মান্নান, ডেইজি বিশ্বাস ও নাসরিন আক্তার বলেন, ‘স্থান সংকুলান না হওয়ায় পরিত্যক্ত ভবনের বারান্দায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে হচ্ছে। আমাদের বেশ সমস্যা হচ্ছে।’ 

বরগুনার আমতলীতে শিক্ষার্থীদের পরিত্যক্ত ভবনে পাঠদানবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘তিন বছর ধরে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিয়ে বেশ সমস্যায় আছি। ভবন নির্মাণের জন্য উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে আবেদন করেছি; কিন্তু ভবনে নির্মাণে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’ 

আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিকুর রহমান বলেন, ওই বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের চাহিদাপত্র অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়নি। 

আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বিদ্যালয়টির জন্য দ্রুত ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত