Ajker Patrika

এসি ল্যান্ডের বিরুদ্ধে নারী কর্মীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

বরগুনা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২১, ২১: ০১
এসি ল্যান্ডের বিরুদ্ধে নারী কর্মীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

বরগুনার আমতলী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও মো. নাজমুল ইসলামের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ রোববার এ ঘটনার বিচার চেয়ে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী। 

জানা যায়, ভুক্তভোগীর স্বামী আমতলী উপজেলা পরিষদে মজুরিভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার পর ২০১৬ সালে তাঁর স্ত্রীকে (ভুক্তভোগী) ইউএনওর কার্যালয়ের দৈনিক মজুরিভিত্তিক মালি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। 

অভিযোগে বলা হয়, এ বছর মার্চ মাসে মো. নাজমুল ইসলাম আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) যোগ দেন। একই বছর জুলাই মাসে ইউএনও আসাদুজ্জামান বদলি হওয়ার পর তিন মাস নাজমুল ইসলাম আমতলী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত ইউএনওর দায়িত্ব পালন করছেন। ওই নারীর অভিযোগ, নাজমুল ইসলাম কারণে-অকারণে তাঁকে অফিসকক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানি ও খারাপ প্রস্তাব দেন। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় মাঝেমধ্যে তাঁর শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিতেন। ওই নারীর ব্যবহৃত ফোননম্বর সংগ্রহ করে দিনে ও রাতে ১০/১৫ বার কল দিয়ে বিরক্ত করতেন। বিষয়টি ওই নারী অফিসের অন্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জানান।

অভিযোগে আরও জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে অফিসে আসেন মো. নাজমুল ইসলাম। তখন ওই ভুক্তভোগী নারী উপজেলা পরিষদের সাঁট-মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর (সিএ) আবদুস সালামের কক্ষে বসে ছিলেন। এ সময় সেখানে গিয়ে আবদুস সালামকে তাঁর কক্ষ থেকে বের হতে বলেন। সালাম কক্ষ থেকে বের হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় এসি (ল্যান্ড) ওই নারীকে সরকারি জমি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রকাশ্যে যৌন হয়রানি করেন। একপর্যায়ে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তিনি চিৎকার করে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে কক্ষ থেকে বের হন। এ সময় অফিসে থাকা অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেখানে এসে ঘটনা দেখেন। এ সময় ওই নারীর চাকরি বাতিল ও মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। 

নারী কর্মীকে ধর্ষণ চেষ্টা ও যৌন হয়রানি করার অভিযোগ এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা পরিষদের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, মজুরিভিত্তিক (মাস্টাররোল) নিয়োগ পাওয়া ওই নারী কর্মকর্তার সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত ইউএনওর দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রকাশ্যে ওই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছেন। অনেক স্টাফ ও পরিষদে সেবা নিতে আসা অনেকেই দেখেন।

ভুক্তভোগী ওই নারী কর্মকর্তা বলেন, আমি এ ঘটনার বিচার চেয়ে ইউএনও স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছি। তিনি আমাকে এখন বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাজমুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র। আমাকে হেয় করতে এ ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।

ইউএনও একেএম আবদুল্লাহ বিন রশিদ বলেন, আমি ছুটিতে ঢাকায় অবস্থান করছি। তবে ওই নারীর লিখিত অভিযোগের বিষয়টি আমি জেনেছি। অফিসে ফিরে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, তিনিও বিষয়টি শুনেছেন। প্রকৃত ঘটনা জেনে তদন্ত করে সত্যতা পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত