আল-আমিন রাজু, বরগুনা থেকে
বাবা মো. ইদ্রিস খাঁনের (৫০) মাথার চিকিৎসা করার জন্য স্ত্রী ও মা-বাবাকে নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিলেন হাফেজ মো. মিরাজ। মিরাজ চোখে দেখেন না। বাবাই ছিলেন তাঁর চোখ। বাবাকে হারিয়ে হারিয়ে অকুল পাথারে পড়েছেন মিরাজ।
বরগুনার সদর হাসপাতালে অভিযান-১০-এর অগ্নিকাণ্ডে নিহত যাত্রীদের অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে কবর দেওয়ার পরে পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ নমুনা দিতে চাচাতো ভাইয়ের সহযোগিতায় হাসপাতালে এসেছিলেন মিরাজ। সেখানে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় তাঁর।
হাফেজ মিরাজ অন্ধ হলেও অদম্য ইচ্ছা আর বাবার সহযোগিতায় ৩০ পারা কোরআন মুখস্থ করেছেন। আজকের পত্রিকাকে মিরাজ বলেন, ‘আমার বাবার চিকিৎসার জন্য ঢাকায় গিয়েছিলাম। বাবার চিকিৎসা শেষে অভিযান-১০-এ উঠি বাড়ি ফেরার জন্য। আমরা নিচতলায় বসে ছিলাম। এর মধ্যে আমাদের একই এলাকার প্রতিবেশী শহীদের সঙ্গে দেখা হয়। নিচতলায় আমরা যে সিটে বসে ছিলাম সেখানে পাঁচজনের বসতে কষ্ট হচ্ছিল। তাই শহীদ বাবাকে তাঁর সিটে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যান।’
মিরাজের বর্ণনাতেই ওঠে আসে তাঁর স্ত্রীর সাহসিকতার গল্প। বলতে গেলে, ওই পরিস্থিতিতে অবিশ্বাস্য মানসিক শক্তি ও স্থিরতার কারণেই বেঁচে গেছেন মিরাজ, তাঁর মা ও দুই শিশু।
মিরাজ বলেন, ‘আমার বাবা শহীদ ভাইয়ের সঙ্গে চলে যাওয়ার পর আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ মানুষের কান্নাকাটি শুনে ঘুম ভাঙে। এরই মধ্যে আমার স্ত্রী জানাল লঞ্চে আগুন ধরেছে। চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। পরে আমার স্ত্রী আমাকে ও আমার মাকে নদীতে লাফ দিতে বলে। কিন্তু আমি তাকে রেখে লাফ দিতে চাচ্ছিলাম না। পরে আমার স্ত্রী লামিয়া মাহমুদ আমাকে ও আমার মাকে লঞ্চের কিনারে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তখন আমি যে দিকে মানুষের কান্না শুনতে পাচ্ছিলাম সেদিকে সাঁতরে নদীর পাড়ে আসি। পরে আমার স্ত্রী লামিয়া আমার বাবাকে খোঁজার চেষ্টা করে কিন্তু আগুনের তীব্রতার কারণে ব্যর্থ হয়ে আমাদের ২০ মাস বয়সী মেয়ে মিনতাহিনাকে নিজের শরীরের সঙ্গে বেঁধে নদীতে লাফ দেয়। আমি নদীতে লাফ দিয়ে যখন নদীর তীরে আসি তখন লঞ্চ থেকে একটি বিকট শব্দ শুনতে পাই।’
অন্ধ হাফেজ মিরাজ শুধু নিজেই বাঁচেননি। নদী থেকে তীরে ওঠার সময়ে আরেকটি শিশুর জীবন বাঁচিয়েছেন। মিরাজ বলেন, ‘আমি তো অন্ধ মানুষ। কোনোমতে হাতড়ে তিরে আসার চেষ্টা করছিলাম। এর মধ্যে আমার হাতে একটি ছোট মেয়ে বেঁধে যায়। মেয়েটি হাবুডুবু খাচ্ছিল। তখন আমার নিজের মেয়েকে মনে করে তিরে নিয়ে আসি। পরে এক মহিলা জানান এটি তাঁর মেয়ে।’
বাবাকে হারিয়ে ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন মিরাজ। তিনি বলেন, ‘বাবার আগে বন্যার পানিতে দাদা ভেসে গেছিলেন। তাঁকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এবার বাবাকেও হারালাম। জীবিত না পাই অন্তত লাশের আশায় আজ নমুনা দিতে আসলাম। আশায় আছি যেন অন্তত বাবার লাশটা পাই। দাদার কবরটা দিতে পারিনি, অন্তত বাবার কবরটা দিতে চাই!’
মিরাজ নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে কোরআনের হাফেজ হয়েছেন। অসহায় ও প্রতিবন্ধীদের বিনা মূল্যে শিক্ষা দান করেন তিনি। অন্ধদের জন্য বরগুনা শহরে প্রতিষ্ঠা করেছেন আব্দুল্লাহ উম্মে মাখতুম (রা.) দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্রেইল হাফিজিয়া মাদ্রাসা। মাদ্রাসার মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছেন সমাজের অবহেলিত জীবনের অন্ধকার গলিতে ঘুরপাক খাওয়া মানুষের জীবনে আলো ফেরাতে।
বাবা মো. ইদ্রিস খাঁনের (৫০) মাথার চিকিৎসা করার জন্য স্ত্রী ও মা-বাবাকে নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিলেন হাফেজ মো. মিরাজ। মিরাজ চোখে দেখেন না। বাবাই ছিলেন তাঁর চোখ। বাবাকে হারিয়ে হারিয়ে অকুল পাথারে পড়েছেন মিরাজ।
বরগুনার সদর হাসপাতালে অভিযান-১০-এর অগ্নিকাণ্ডে নিহত যাত্রীদের অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে কবর দেওয়ার পরে পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ নমুনা দিতে চাচাতো ভাইয়ের সহযোগিতায় হাসপাতালে এসেছিলেন মিরাজ। সেখানে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় তাঁর।
হাফেজ মিরাজ অন্ধ হলেও অদম্য ইচ্ছা আর বাবার সহযোগিতায় ৩০ পারা কোরআন মুখস্থ করেছেন। আজকের পত্রিকাকে মিরাজ বলেন, ‘আমার বাবার চিকিৎসার জন্য ঢাকায় গিয়েছিলাম। বাবার চিকিৎসা শেষে অভিযান-১০-এ উঠি বাড়ি ফেরার জন্য। আমরা নিচতলায় বসে ছিলাম। এর মধ্যে আমাদের একই এলাকার প্রতিবেশী শহীদের সঙ্গে দেখা হয়। নিচতলায় আমরা যে সিটে বসে ছিলাম সেখানে পাঁচজনের বসতে কষ্ট হচ্ছিল। তাই শহীদ বাবাকে তাঁর সিটে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যান।’
মিরাজের বর্ণনাতেই ওঠে আসে তাঁর স্ত্রীর সাহসিকতার গল্প। বলতে গেলে, ওই পরিস্থিতিতে অবিশ্বাস্য মানসিক শক্তি ও স্থিরতার কারণেই বেঁচে গেছেন মিরাজ, তাঁর মা ও দুই শিশু।
মিরাজ বলেন, ‘আমার বাবা শহীদ ভাইয়ের সঙ্গে চলে যাওয়ার পর আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ মানুষের কান্নাকাটি শুনে ঘুম ভাঙে। এরই মধ্যে আমার স্ত্রী জানাল লঞ্চে আগুন ধরেছে। চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। পরে আমার স্ত্রী আমাকে ও আমার মাকে নদীতে লাফ দিতে বলে। কিন্তু আমি তাকে রেখে লাফ দিতে চাচ্ছিলাম না। পরে আমার স্ত্রী লামিয়া মাহমুদ আমাকে ও আমার মাকে লঞ্চের কিনারে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তখন আমি যে দিকে মানুষের কান্না শুনতে পাচ্ছিলাম সেদিকে সাঁতরে নদীর পাড়ে আসি। পরে আমার স্ত্রী লামিয়া আমার বাবাকে খোঁজার চেষ্টা করে কিন্তু আগুনের তীব্রতার কারণে ব্যর্থ হয়ে আমাদের ২০ মাস বয়সী মেয়ে মিনতাহিনাকে নিজের শরীরের সঙ্গে বেঁধে নদীতে লাফ দেয়। আমি নদীতে লাফ দিয়ে যখন নদীর তীরে আসি তখন লঞ্চ থেকে একটি বিকট শব্দ শুনতে পাই।’
অন্ধ হাফেজ মিরাজ শুধু নিজেই বাঁচেননি। নদী থেকে তীরে ওঠার সময়ে আরেকটি শিশুর জীবন বাঁচিয়েছেন। মিরাজ বলেন, ‘আমি তো অন্ধ মানুষ। কোনোমতে হাতড়ে তিরে আসার চেষ্টা করছিলাম। এর মধ্যে আমার হাতে একটি ছোট মেয়ে বেঁধে যায়। মেয়েটি হাবুডুবু খাচ্ছিল। তখন আমার নিজের মেয়েকে মনে করে তিরে নিয়ে আসি। পরে এক মহিলা জানান এটি তাঁর মেয়ে।’
বাবাকে হারিয়ে ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন মিরাজ। তিনি বলেন, ‘বাবার আগে বন্যার পানিতে দাদা ভেসে গেছিলেন। তাঁকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এবার বাবাকেও হারালাম। জীবিত না পাই অন্তত লাশের আশায় আজ নমুনা দিতে আসলাম। আশায় আছি যেন অন্তত বাবার লাশটা পাই। দাদার কবরটা দিতে পারিনি, অন্তত বাবার কবরটা দিতে চাই!’
মিরাজ নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে কোরআনের হাফেজ হয়েছেন। অসহায় ও প্রতিবন্ধীদের বিনা মূল্যে শিক্ষা দান করেন তিনি। অন্ধদের জন্য বরগুনা শহরে প্রতিষ্ঠা করেছেন আব্দুল্লাহ উম্মে মাখতুম (রা.) দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্রেইল হাফিজিয়া মাদ্রাসা। মাদ্রাসার মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছেন সমাজের অবহেলিত জীবনের অন্ধকার গলিতে ঘুরপাক খাওয়া মানুষের জীবনে আলো ফেরাতে।
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসমাবেশ হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় খাগড়াছড়ি শহরের চেঙ্গী স্কয়ারে এ মহাসমাবেশ হয়। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে কাল শনিবার ভোর ৫টা থেকে পরদিন
২৮ মিনিট আগেপুলিশ জানায়, রংপুরের পীরগাছা সাতদরগা এলাকার বাসিন্দা মোতালেব হোসেন পরিবার নিয়ে ঢাকায় ছিলেন। গ্রামে বসবাসের জন্য স্ত্রী, সন্তান, ভাই ও ভাইয়ের বউকে নিয়ে ঘরের আসবাবপত্রসহ পিকআপ ভ্যানযোগে ঢাকা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রওনা দেন মোতালেব। দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের দমদমা...
৩০ মিনিট আগেনিহতের স্বামী মনির হাওলাদার বলেন, ‘ভোরের দিকে আমি গরু জবাইয়ের উদ্দেশ্যে ছেলেকে নিয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকায় দোকানে যাই। সকালে খবর পাই স্ত্রী কোনো সাড়া দিচ্ছে না। বাড়ি এসে দেখি দরজা-জানালা বন্ধ। জানালার গ্রিল কেটে ভেতরে ঢুকে দেখি স্ত্রী মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ড্রয়ারে রাখা গরু কেনার প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা ন
৩৬ মিনিট আগেপ্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি প্রাইভেট কার বাজারের ভেতর দিয়ে প্রবেশের সময় বিপরীত দিক থেকে আসা মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে দুটি যানবাহনই ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং মোটরসাইকেল আরোহীরা ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন।
১ ঘণ্টা আগে