Ajker Patrika

ফকিরহাটে হঠাৎ ডেঙ্গুর প্রকোপ: ১০ দিনে ভর্তি ২৫, মৃত্যু ১

ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে রোগী দেখছেন চিকিৎসক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে রোগী দেখছেন চিকিৎসক। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় হঠাৎ ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সেপ্টেম্বর মাস থেকে ফকিরহাটে ডেঙ্গুজ্বরের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। গত ১০ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মারা গেছেন এক নারী। উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় অনেক রোগীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

এ দিকে ফকিরহাট বাজারের ফার্মেসি মালিকেরা বলছেন, নাপা, প্যারাসিটামল এবং ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত স্যালাইনজাতীয় ওষুধের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে হাসপাতালে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই।

আজ শনিবার দুপুরে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, ডেঙ্গু ওয়ার্ডে রোগীর ধারণক্ষমতা না থাকায় কেবিন এবং সাধারণ রোগীদের সঙ্গেও ডেঙ্গু রোগীদের রাখা হয়েছে। এতে সাধারণ রোগীরাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ দিকে জ্বর ও ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সী রোগী প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসছে হাসপাতালে।

উপজেলার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকেও চিকিৎসা নিচ্ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিরা। অনেকে আবার বাগেরহাট জেলা এবং খুলনা শহরে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে বলেও জানা গেছে।

হাসপাতালের পরিসংখ্যানবিদ সুকুমার ভট্টাচার্য্য জানান, গত ১৫ দিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আউট ডোরে ৫ হাজার ৬২০ রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রোগী জ্বর, কাশি, গায়ে ব্যথাসহ ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে আসে। কিন্তু বেশির ভাগ রোগীর টেস্টে অনীহা থাকার কারণে প্রকৃত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা নির্ণয় করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। রোগীরা পরীক্ষা করালে শনাক্তের সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে বলে তিনি জানান।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও সাবেক আরএমও মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৬০-৭০ জন জ্বর ও গায়ে ব্যথাসহ ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে আসে। এর মধ্যে শুধু জটিল ও মারাত্মক রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বেশির ভাগ রোগী বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তবে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি নিয়মিত প্লাটিলেট চেক করার। কোনো জটিলতা তৈরি হলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শুধু ডেঙ্গু পজিটিভ শনাক্তের সাধারণ পরীক্ষা করা ছাড়া ডেঙ্গুর প্লাটিলেট কাউন্টসহ অন্যান্য টেস্টের কোনো ব্যবস্থা নেই এ সরকারি হাসপাতালে। রোগীদের সব সময় বেসরকারি ক্লিনিক থেকে টেস্ট করিয়ে আনতে হচ্ছে। ফলে খরচ ও ভোগান্তি দুটোই বাড়ছে তাদের।

হাসপাতালে ভর্তি বেল্লাল হোসেন, সালমা বেগম, শেখ আজিজুলসহ কয়েক রোগী জানায়, তাঁদের পরিবারের প্রায় সবাই জ্বরে আক্রান্ত। তাঁদের শরীরে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেওয়ায় পরীক্ষা করে ডেঙ্গু ধরা পড়ে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জমান সাগর বলেন, সেপ্টেম্বরে এসে ফকিরহাটে ডেঙ্গুজ্বরের সংক্রমণ বেড়েছে। ভর্তি রোগীদের জন্য ওষুধ রয়েছে এবং যথাসাধ্য সেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে জনসচেতনতাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো উপায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...