আব্দুর রহমান
বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক জোট জি-২০। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিশ্বের ১৯টি শীর্ষ ধনী দেশের এই জোটের শীর্ষ সম্মেলন চলছে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে। এতে ভূরাজনীতি বাদ দিয়ে কেবল অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা সীমিত রাখার পরিকল্পনা আছে। তবে এই খণ্ডিত আলোচনায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট সমাধানে কোনো দিকনির্দেশনা আসা সম্ভব কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।
বৈশ্বিক অর্থনীতি যে খুব বাজে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সেবিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ২০২১ সালে বৈশ্বিক গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৪ দশমিক ৭ শতাংশ, সেখানে ২০২২ সালে এসে তা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। ইউরোপের দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মূলত করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়া এবং রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের কারণে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে মূল্যস্ফীতির বেড়েছে। এছাড়াও তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের টানাপড়েন, ইউক্রেন সংকটকে কেন্দ্র করে রাশিয়া এবং পশ্চিমা বিশ্বের টানাপড়েন বিশ্ব অর্থনীতিকে নিম্নগামী করেছে।
‘একসঙ্গে ফিরে আসা, শক্তিশালীভাবে ফিরে আসা’— এই স্লোগান নিয়ে জি-২০ সম্মেলন চললেও রাজনীতির আলোচনা ছাড়া এই ঐক্য বিশ্ব অর্থনীতি জোরদারে কাজ করবে কিনা তাই নিয়ে সংশয় রয়েছে বিশ্লেষকদের। রাশিয়াকে সম্মেলন থেকে বাদ দেওয়ার পশ্চিমা বিশ্বের আহ্বানের মধ্য দিয়ে এই সন্দেহ আরও জোরদার হয়। আয়োজক ইন্দোনেশিয়া অবশ্য সে আহ্বানে সাড়া দেয়নি।
ভূরাজনীতির ইস্যুগুলোকে বাদ দিতে চাইলেও সম্মেলনে যে তার প্রভাব পড়বে সে বিষয়ে সতর্ক ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদাদো। গত সপ্তাহে এক সাক্ষাৎকারে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ভূরাজনীতি এই সম্মেলনের ওপর কালো ছায়া বিস্তার করতে পারে। এই সম্মেলনকে তিনি কোনোভাবেই রাজনৈতিক ফোরামে পরিণত হতে দিতে চান না। একইসঙ্গে ভূরাজনৈতিক মেরুকরণের এই সময়ে ইন্দোনেশিয়ার নিরপেক্ষ অবস্থানকে হারাতে চান না।’
এই সম্মেলনে অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা অন্যতম বড় ইস্যু। বিষয়টি পরিষ্কার হয় ইন্দোনেশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রবোও সুবিয়ানতোর বক্তব্য থেকে। উইদাদোর বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করে তিনি বলেছেন, ‘আমার মতে, জি-২০ সম্মেলনের আলোচনার ইস্যু হওয়া উচিত খাদ্য নিরাপত্তা।’ প্রেসিডেন্ট জোকো উইদাদো সম্মেলনে ভূরাজনৈতিক সংকটের ঊর্ধ্বে উঠে এই ইস্যুতে আলোচনার পথ খুঁজছেন বলেও তিনি জানান।
কিন্তু ইন্দোনেশিয়া চাইলেই কি এটি সম্ভব? বাস্তবতা হলো—বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুই খাদ্যশস্য রপ্তানিকারক দেশই এই সময়ে যুদ্ধে জড়িয়ে। যুদ্ধের কারণে এরই মধ্যে বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়েছে, খাদ্য সংকট তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক সংস্থা বারবার সতর্ক করে আসছে যে, বিশ্বের জনসংখ্যার বড় একটি অংশ এরই মধ্যে খাদ্য সংকটের ঝুঁকিতে পড়েছে। তাই কোনোভাবেই এই সংকট এড়িয়ে অর্থনৈতিক সংকট তো দূরের কথা, খাদ্য সংকটও দূর করা যাবে না।
কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো এই বিষয়ে কোনো ধরনের সমঝোতার পক্ষে নয়। ন্যাটোর সাবেক কমান্ডার জেনারেল ওয়েসলি ক্লার্ক সম্মেলনে স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘আমাদের বলা উচিত যে, ‘রাশিয়া এখনই বেরিয়ে যাও’।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কিংবা জি-৭ জোটভুক্ত কোনো দেশের নেতাই এমন একটি যৌথ বিবৃতি দিতে সম্মত হবেন না, যেখানে রাশিয়ার নিন্দা বা দোষারোপ না করে সংকটের সমাধান চাওয়া হবে। ফলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তিও খুব দ্রুত দেখা যাবে বলে মনে হয় না।
খাদ্য সংকট এবং অর্থনৈতিক সংকটের সমাধান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার ওপরই অনেকটা নির্ভরশীল। এই বিষয়ে ফরাসি বিনিয়োগ ব্যাংক নতিক্সিসের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ত্রিন নগুয়েন কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে বলেন, ‘জি-২০ সম্মেলনের চ্যালেঞ্জ হলো—ভূরাজনৈতিক ইস্যুতে বিভক্ত হয়ে থাকা দেশগুলোর নেতাদের একত্র করে বৈশ্বিক সংকটগুলোর দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি সমাধান খুঁজে বের করা।’
তবে খাদ্য নিরাপত্তার চেয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকেই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেন তিনি।
জি-২০ দেশগুলোর সামনে আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো—জ্বালানি খাত। কপ-২৭ সম্মেলনে কার্বন হ্রাসের ও জীবাশ্ম জ্বালানি কমানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও এই মুহূর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি বৈশ্বিক চাহিদা মেটাতে সক্ষম না হওয়ায় এবং আফ্রিকার দেশগুলো জ্বালানি খাতের বিকাশ চাওয়ায় জীবাশ্ম জ্বালানির ওপরই ভরসা করতে হবে। আর তাই এই খাতের নিরাপত্তাও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ শাহার হামেরি আল-জাজিরাকে বলেন, এই সম্মেলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু জ্বালানি। কারণ, ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বের জ্বালানি উৎপাদক দেশগুলোকে নানাভাবে প্রভাবিত করেছে, ফলে দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা বৈশ্বিক উৎপাদনের ওপর প্রভাব ফেলেছে। তাই সব দেশকেই এই খাতের নিরাপত্তার জন্য অবশ্যই ঐকমত্যে পৌঁছানো দরকার।
এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বালি সম্মেলনই সবচেয়ে বড় সুযোগ। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে যত দেরি হবে, সংকট তত বাড়বে। এ বিষয়ে ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়ার এয়ারলাঙ্গা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রভাষক রাদিতিও ধর্মপুত্র বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়া এই মুহূর্তে কেবল আস্থা তৈরি করতে চায়। কিন্তু যুদ্ধের কারণে তা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।’
এতো প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা চ্যালেঞ্জ এবং রাজনৈতিক বিরোধ থাকার পরও বিশ্বের সাধারণ সমস্যাগুলো সমাধানের ক্ষেত্রে জি-২০ সম্মেলনকেই আশাবাদের জায়গা দেখছেন।
এ বিষয়ে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অর্থনৈতিক গবেষক ড্যান্ডি রাফিট্র্যান্ডি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এই ফোরামের (জি-২০) সাফল্য রয়েছে, যার মধ্যে বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর ঋণ পরিশোধ বন্ধ করার উদ্যোগ এবং মহামারি চলাকালে জরুরি তারল্য ঘাটতির সম্মুখীন দেশগুলোকে অর্থায়ন করা। আর এই জায়গাগুলোই আশা দেখাচ্ছে। তবে আশার বাস্তব রূপ পেতে হলে অবশ্যই জোটকে ভূরাজনৈতিক সংকটের সমাধানই আগে করতে হবে।
তথ্যসূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি, সিএনএন ও এশিয়া টাইমস
বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক জোট জি-২০। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিশ্বের ১৯টি শীর্ষ ধনী দেশের এই জোটের শীর্ষ সম্মেলন চলছে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে। এতে ভূরাজনীতি বাদ দিয়ে কেবল অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা সীমিত রাখার পরিকল্পনা আছে। তবে এই খণ্ডিত আলোচনায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট সমাধানে কোনো দিকনির্দেশনা আসা সম্ভব কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।
বৈশ্বিক অর্থনীতি যে খুব বাজে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সেবিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ২০২১ সালে বৈশ্বিক গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৪ দশমিক ৭ শতাংশ, সেখানে ২০২২ সালে এসে তা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। ইউরোপের দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মূলত করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়া এবং রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের কারণে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে মূল্যস্ফীতির বেড়েছে। এছাড়াও তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের টানাপড়েন, ইউক্রেন সংকটকে কেন্দ্র করে রাশিয়া এবং পশ্চিমা বিশ্বের টানাপড়েন বিশ্ব অর্থনীতিকে নিম্নগামী করেছে।
‘একসঙ্গে ফিরে আসা, শক্তিশালীভাবে ফিরে আসা’— এই স্লোগান নিয়ে জি-২০ সম্মেলন চললেও রাজনীতির আলোচনা ছাড়া এই ঐক্য বিশ্ব অর্থনীতি জোরদারে কাজ করবে কিনা তাই নিয়ে সংশয় রয়েছে বিশ্লেষকদের। রাশিয়াকে সম্মেলন থেকে বাদ দেওয়ার পশ্চিমা বিশ্বের আহ্বানের মধ্য দিয়ে এই সন্দেহ আরও জোরদার হয়। আয়োজক ইন্দোনেশিয়া অবশ্য সে আহ্বানে সাড়া দেয়নি।
ভূরাজনীতির ইস্যুগুলোকে বাদ দিতে চাইলেও সম্মেলনে যে তার প্রভাব পড়বে সে বিষয়ে সতর্ক ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদাদো। গত সপ্তাহে এক সাক্ষাৎকারে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ভূরাজনীতি এই সম্মেলনের ওপর কালো ছায়া বিস্তার করতে পারে। এই সম্মেলনকে তিনি কোনোভাবেই রাজনৈতিক ফোরামে পরিণত হতে দিতে চান না। একইসঙ্গে ভূরাজনৈতিক মেরুকরণের এই সময়ে ইন্দোনেশিয়ার নিরপেক্ষ অবস্থানকে হারাতে চান না।’
এই সম্মেলনে অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা অন্যতম বড় ইস্যু। বিষয়টি পরিষ্কার হয় ইন্দোনেশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রবোও সুবিয়ানতোর বক্তব্য থেকে। উইদাদোর বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করে তিনি বলেছেন, ‘আমার মতে, জি-২০ সম্মেলনের আলোচনার ইস্যু হওয়া উচিত খাদ্য নিরাপত্তা।’ প্রেসিডেন্ট জোকো উইদাদো সম্মেলনে ভূরাজনৈতিক সংকটের ঊর্ধ্বে উঠে এই ইস্যুতে আলোচনার পথ খুঁজছেন বলেও তিনি জানান।
কিন্তু ইন্দোনেশিয়া চাইলেই কি এটি সম্ভব? বাস্তবতা হলো—বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুই খাদ্যশস্য রপ্তানিকারক দেশই এই সময়ে যুদ্ধে জড়িয়ে। যুদ্ধের কারণে এরই মধ্যে বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়েছে, খাদ্য সংকট তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক সংস্থা বারবার সতর্ক করে আসছে যে, বিশ্বের জনসংখ্যার বড় একটি অংশ এরই মধ্যে খাদ্য সংকটের ঝুঁকিতে পড়েছে। তাই কোনোভাবেই এই সংকট এড়িয়ে অর্থনৈতিক সংকট তো দূরের কথা, খাদ্য সংকটও দূর করা যাবে না।
কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো এই বিষয়ে কোনো ধরনের সমঝোতার পক্ষে নয়। ন্যাটোর সাবেক কমান্ডার জেনারেল ওয়েসলি ক্লার্ক সম্মেলনে স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘আমাদের বলা উচিত যে, ‘রাশিয়া এখনই বেরিয়ে যাও’।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কিংবা জি-৭ জোটভুক্ত কোনো দেশের নেতাই এমন একটি যৌথ বিবৃতি দিতে সম্মত হবেন না, যেখানে রাশিয়ার নিন্দা বা দোষারোপ না করে সংকটের সমাধান চাওয়া হবে। ফলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তিও খুব দ্রুত দেখা যাবে বলে মনে হয় না।
খাদ্য সংকট এবং অর্থনৈতিক সংকটের সমাধান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার ওপরই অনেকটা নির্ভরশীল। এই বিষয়ে ফরাসি বিনিয়োগ ব্যাংক নতিক্সিসের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ত্রিন নগুয়েন কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে বলেন, ‘জি-২০ সম্মেলনের চ্যালেঞ্জ হলো—ভূরাজনৈতিক ইস্যুতে বিভক্ত হয়ে থাকা দেশগুলোর নেতাদের একত্র করে বৈশ্বিক সংকটগুলোর দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি সমাধান খুঁজে বের করা।’
তবে খাদ্য নিরাপত্তার চেয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকেই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেন তিনি।
জি-২০ দেশগুলোর সামনে আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো—জ্বালানি খাত। কপ-২৭ সম্মেলনে কার্বন হ্রাসের ও জীবাশ্ম জ্বালানি কমানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও এই মুহূর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি বৈশ্বিক চাহিদা মেটাতে সক্ষম না হওয়ায় এবং আফ্রিকার দেশগুলো জ্বালানি খাতের বিকাশ চাওয়ায় জীবাশ্ম জ্বালানির ওপরই ভরসা করতে হবে। আর তাই এই খাতের নিরাপত্তাও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ শাহার হামেরি আল-জাজিরাকে বলেন, এই সম্মেলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু জ্বালানি। কারণ, ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বের জ্বালানি উৎপাদক দেশগুলোকে নানাভাবে প্রভাবিত করেছে, ফলে দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা বৈশ্বিক উৎপাদনের ওপর প্রভাব ফেলেছে। তাই সব দেশকেই এই খাতের নিরাপত্তার জন্য অবশ্যই ঐকমত্যে পৌঁছানো দরকার।
এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বালি সম্মেলনই সবচেয়ে বড় সুযোগ। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে যত দেরি হবে, সংকট তত বাড়বে। এ বিষয়ে ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়ার এয়ারলাঙ্গা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রভাষক রাদিতিও ধর্মপুত্র বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়া এই মুহূর্তে কেবল আস্থা তৈরি করতে চায়। কিন্তু যুদ্ধের কারণে তা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।’
এতো প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা চ্যালেঞ্জ এবং রাজনৈতিক বিরোধ থাকার পরও বিশ্বের সাধারণ সমস্যাগুলো সমাধানের ক্ষেত্রে জি-২০ সম্মেলনকেই আশাবাদের জায়গা দেখছেন।
এ বিষয়ে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অর্থনৈতিক গবেষক ড্যান্ডি রাফিট্র্যান্ডি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এই ফোরামের (জি-২০) সাফল্য রয়েছে, যার মধ্যে বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর ঋণ পরিশোধ বন্ধ করার উদ্যোগ এবং মহামারি চলাকালে জরুরি তারল্য ঘাটতির সম্মুখীন দেশগুলোকে অর্থায়ন করা। আর এই জায়গাগুলোই আশা দেখাচ্ছে। তবে আশার বাস্তব রূপ পেতে হলে অবশ্যই জোটকে ভূরাজনৈতিক সংকটের সমাধানই আগে করতে হবে।
তথ্যসূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি, সিএনএন ও এশিয়া টাইমস
নিজের ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প জানান, তিনি ইতিমধ্যে নির্বাহী আদেশে সই করেছেন এবং নতুন কোনো শর্ত আরোপ করা হচ্ছে না। একই সময়ে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও মার্কিন পণ্যে তাদের শুল্ক স্থগিতাদেশ একই মেয়াদে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। তাদের পূর্বের চুক্তি শেষ হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে।
২ ঘণ্টা আগেবিশ্বজুড়েই ছাত্র ইউনিয়নগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগকারী গোষ্ঠী হিসেবে কাজ করে। ইতিহাস বলে, এই ছাত্ররাই সরকারকে দায়বদ্ধ করে তোলে এবং তরুণদের অধিকার রক্ষা করে। বাংলাদেশে অনেক ছাত্র নেতা পরবর্তীকালে মূলধারার রাজনীতিতে প্রবেশ...
২ দিন আগেশেখ হাসিনার পতনের বর্ষপূর্তি উদ্যাপন ও বাংলাদেশের এক নতুন ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতির আশায় হাজারো মানুষ গত সপ্তাহে ঢাকায় জড়ো হয়েছিলেন। বর্ষাস্নাত দিনটিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে নেতা, অধিকারকর্মীদের উপস্থিতিতে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক ‘নয়া বাংলাদেশের’ ঘোষণাপত্র উন্মোচন করেছেন।
২ দিন আগেমিয়ানমারে জান্তা বাহিনী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেনা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। সেই ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত কিছু ব্যক্তি ও কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে গত ২৪ জুলাই মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট কিছু ব্যক্তি ও কোম্পানির ওপর...
৩ দিন আগে