জাহাঙ্গীর আলম
সাম্প্রতিক সময়ে চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত দ্বন্দ্ব বারবার উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এমনকি সীমান্তে রক্তপাতের মতো ঘটনাও ঘটেছে। উভয় পক্ষ বসে বিষয়টি সমাধানের একটা চেষ্টাও হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা যাচ্ছে, চীন সীমান্তে আগ্রাসী মনোভাব ত্যাগ করেনি। লাদাখে দুই দেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) পেনগং নদীতে সেতু বানিয়েছে চীন, এমনকি ভারত সীমান্তের বেশ গভীরে নির্মাণ করা হয়েছে ভবন।
এ নিয়ে ভারতে বিরোধী দলগুলো বিজেপি সরকারকে কঠোর ভাষায় সমালোচনায় বিদ্ধ করছে। কিন্তু চীন প্রসঙ্গে সরকার বিস্ময়করভাবে নীরব!
এর নেপথ্য কারণ সম্পর্কে সচেতন মহল যে একাবারেই ওয়াকিবহাল ছিলেন না তেমনটি বলা যায় না। লাদাখে রক্তপাতের পর যখন ভারতে চীনবিরোধী জন মনোভাব তুঙ্গে, চীনা পণ্য বর্জনের ডাক আসছিল তখনই দেখা গেছে চীনা পণ্যের ওপর ভারতীয়রা কতখানি নির্ভরশীল। আর প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগে চীন বহু আগে থেকেই ভারতে শক্ত জায়গা করে নিয়েছে। বলতে গেলে, ভারতের বহু স্টার্টআপ চীনা বিনিয়োগের তেল জলে টিকে আছে।
অর্থনীতিতে ভারতের চীন নির্ভরতা যে কতখানি আর সাম্প্রতিক সময়ে সেটি যে আরও বেড়েছে তা স্পষ্ট হলো চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমস অব দ্য পিপলস রিপাবলিক অব চায়না (জিএসিসি) প্রকাশিত সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে।
জিএসিসির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের ক্যালেন্ডার বছরে চীন থেকে ভারতে আমদানি প্রথমবারের মতো প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এতে প্রধানত অবদান রেখেছে—ইলেকট্রনিকস পণ্য, বিশেষ করে স্মার্টফোন, সেই সঙ্গে ওষুধের কাঁচামাল (এপিআই) ও যন্ত্রপাতি, সার এবং বিশেষ রাসায়নিক।
পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালে ভারতে চীনের রপ্তানি ৯৭ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যেখানে মোট দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য দাঁড়িয়েছে ১২৫ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলারে। সুতরাং এখানে চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি একেবারে দিনের আলোর মতো স্পষ্ট!
জিএসিসির তথ্য মতে, স্মার্টফোন এবং মেমোরি চিপ/স্টোরেজসহ ইলেকট্রিক এবং ইলেকট্রনিকস পণ্যের চালানে সবচেয়ে বেশি উল্লম্ফন দেখা গেছে। টেলিকম সরঞ্জাম, অটোমেশন সরঞ্জাম এবং মেশিন টুলসহ শিল্প পণ্যের বিশাল বাজারে পরিণত হয়েছে ভারত। বিশেষ রাসায়নিক, এপিআই এবং সার, যেমন-ইউরিয়া, অ্যামোনিয়াম সালফেট এবং অন্যান্য রাসায়নিকেও ভারতের চীনা নির্ভরতা বেড়েছে।
এ ছাড়া ২০২১ সালের ক্যালেন্ডার বছরের প্রথম আট মাসে চীন থেকে প্রধান আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে—পেট্রোলিয়াম (অশোধিত) এবং পেট্রোলিয়াম পণ্য, মুক্তা, মূল্যবান এবং আধা-মূল্যবান পাথর এবং কয়লা, কোক এবং ব্রিকেট। ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের ফরেন ট্রেড পারফরমেন্স অ্যানালাইসিসের (এফটিপিএ) তথ্য অনুসারেও এসব পণ্যের আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
দেখা গেছে, উল্লেখিত সময়ের মধ্যে চীন থেকে মোট আমদানির প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলারই ছিল এসব পণ্য। তবে ডিসেম্বর মাসের পণ্য-ভিত্তিক ডেটা ভারত এখনো প্রকাশ করেনি।
চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের একটি প্রতিবেদনে দুই দেশের বিরোধের বিষয়ে কোনো রাখঢাক না করেই স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনার মধ্যেও ২০২১ সালে চীন-ভারত বাণিজ্য বেড়েছে। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। এটি রেকর্ড। এটি আরেকটি প্রমাণ যে, নয়াদিল্লির সেই সক্ষমতা নেই। ভারত তার সক্ষমতা প্রমাণ করতে চাইলে তাকে চীনের বাজারের ওপর নির্ভরতা কমাতেই হবে।
এদিকে বাণিজ্য বিভাগের (বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়) অধীনস্থ ডিরেক্টরেট জেনারেল অব কমার্শিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং পরিসংখ্যান দপ্তরের সাময়িক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চীন থেকে ভারতের আমদানি ৮৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। আর মোট দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১১৪ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ধরের মতে, রপ্তানিকারকদের আন্ডার-ইনভয়েসিং এবং তথ্য না দেওয়া সম্পর্কিত কিছু সমস্যার কারণে ভারত এবং চীনা ডেটার অমিল হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের সঙ্গে ভারতের সামগ্রিক সম্পর্ক সিনো-মার্কিন সম্পর্কেরই প্রতিফলন। এখানে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্কের নিজস্ব স্বতন্ত্র গতিমুখ রয়েছে।
যেমন, চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হওয়া সত্ত্বেও কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র চীনের শিল্প কারখানার ওপর তাদের নির্ভরতা কোনো অংশেই কমাতে পারেনি। একই ভাবে ভারত সরকারের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও চীনের অর্থনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারেনি। ভারত যদি তার ম্যানুফ্যাকচার শিল্পকে প্রাক-মহামারি স্তরে পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করে নিয়ে যেতে না পারে তাহলে চীনের ওপর এই নির্ভরতা আরও বাড়বে। বিশেষ করে এপিআই আমদানিতে চীনের ওপর নির্ভরতা দূর করতে ভারতকে আরও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে।
ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনসের (এফআইইও) পরিচালক ও সিইও আজাই সাহাই বলছেন, চীন থেকে আমদানি রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলার একটি প্রধান কারণ হলো দেশীয় শিল্পের পাশাপাশি এপিআইগুলোর ইলেকট্রনিক পণ্য এবং যন্ত্রপাতির বিপুল চাহিদা।
অবশ্য ভারতীয় নীতি নির্ধারকদের আশাবাদী হওয়ারও কারণ রয়েছে। এফআইইওর তথ্য মতে, ২০২১ সালে চীনে ভারতের রপ্তানিও রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছেছে।
ডিজিসিআইএসের তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালে চীনে ভারতীয় রপ্তানি ২৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। যেখানে ২০২০ সালে ছিল ১৯ বিলিয়ন এবং ২০১৯ সালে ১৭ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার।
চীনে ভারতের রপ্তানি বৃদ্ধির মূলে রয়েছে কৃষি বাজারে প্রবেশাধিকার। ভারতের নন-বাসমতি চাল, বিদেশি সবজি, সয়াবিন এবং ফল রপ্তানি বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত-চীন বাণিজ্য ঘাটতির বেলুন সব সময় উভয় দেশের মধ্যে বিরোধের একটি বিষয় হয়ে রয়েছে। বাণিজ্য ঘাটতি ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিন বছর ধরে সংকোচনের ধারায় ছিল, কিন্তু আবার বেড়েছে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে, মহামারি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের বাজার ৫ শতাংশ সম্প্রসারিত হবে। তা ছাড়া চীন একাই ৬ ট্রিলিয়ন ডলারের ভোক্তা বাজার।
পঞ্চাশটিরও বেশি দেশে চীনের রপ্তানি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। ঘাটতি কমাতে ভারতকে সেসব বাজারে ভাগ বসানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেজ্ঞরা।
ডিজিসিআইএসের সাময়িক পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২১ সালে চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি ৬১ বিলিয়ন ডলার। যেখানে ২০২০ সালে ছিল ৩৯ বিলিয়ন ডলার।
বিশ্লেষণ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
সাম্প্রতিক সময়ে চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত দ্বন্দ্ব বারবার উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এমনকি সীমান্তে রক্তপাতের মতো ঘটনাও ঘটেছে। উভয় পক্ষ বসে বিষয়টি সমাধানের একটা চেষ্টাও হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা যাচ্ছে, চীন সীমান্তে আগ্রাসী মনোভাব ত্যাগ করেনি। লাদাখে দুই দেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) পেনগং নদীতে সেতু বানিয়েছে চীন, এমনকি ভারত সীমান্তের বেশ গভীরে নির্মাণ করা হয়েছে ভবন।
এ নিয়ে ভারতে বিরোধী দলগুলো বিজেপি সরকারকে কঠোর ভাষায় সমালোচনায় বিদ্ধ করছে। কিন্তু চীন প্রসঙ্গে সরকার বিস্ময়করভাবে নীরব!
এর নেপথ্য কারণ সম্পর্কে সচেতন মহল যে একাবারেই ওয়াকিবহাল ছিলেন না তেমনটি বলা যায় না। লাদাখে রক্তপাতের পর যখন ভারতে চীনবিরোধী জন মনোভাব তুঙ্গে, চীনা পণ্য বর্জনের ডাক আসছিল তখনই দেখা গেছে চীনা পণ্যের ওপর ভারতীয়রা কতখানি নির্ভরশীল। আর প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগে চীন বহু আগে থেকেই ভারতে শক্ত জায়গা করে নিয়েছে। বলতে গেলে, ভারতের বহু স্টার্টআপ চীনা বিনিয়োগের তেল জলে টিকে আছে।
অর্থনীতিতে ভারতের চীন নির্ভরতা যে কতখানি আর সাম্প্রতিক সময়ে সেটি যে আরও বেড়েছে তা স্পষ্ট হলো চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমস অব দ্য পিপলস রিপাবলিক অব চায়না (জিএসিসি) প্রকাশিত সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে।
জিএসিসির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের ক্যালেন্ডার বছরে চীন থেকে ভারতে আমদানি প্রথমবারের মতো প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এতে প্রধানত অবদান রেখেছে—ইলেকট্রনিকস পণ্য, বিশেষ করে স্মার্টফোন, সেই সঙ্গে ওষুধের কাঁচামাল (এপিআই) ও যন্ত্রপাতি, সার এবং বিশেষ রাসায়নিক।
পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালে ভারতে চীনের রপ্তানি ৯৭ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যেখানে মোট দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য দাঁড়িয়েছে ১২৫ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলারে। সুতরাং এখানে চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি একেবারে দিনের আলোর মতো স্পষ্ট!
জিএসিসির তথ্য মতে, স্মার্টফোন এবং মেমোরি চিপ/স্টোরেজসহ ইলেকট্রিক এবং ইলেকট্রনিকস পণ্যের চালানে সবচেয়ে বেশি উল্লম্ফন দেখা গেছে। টেলিকম সরঞ্জাম, অটোমেশন সরঞ্জাম এবং মেশিন টুলসহ শিল্প পণ্যের বিশাল বাজারে পরিণত হয়েছে ভারত। বিশেষ রাসায়নিক, এপিআই এবং সার, যেমন-ইউরিয়া, অ্যামোনিয়াম সালফেট এবং অন্যান্য রাসায়নিকেও ভারতের চীনা নির্ভরতা বেড়েছে।
এ ছাড়া ২০২১ সালের ক্যালেন্ডার বছরের প্রথম আট মাসে চীন থেকে প্রধান আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে—পেট্রোলিয়াম (অশোধিত) এবং পেট্রোলিয়াম পণ্য, মুক্তা, মূল্যবান এবং আধা-মূল্যবান পাথর এবং কয়লা, কোক এবং ব্রিকেট। ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের ফরেন ট্রেড পারফরমেন্স অ্যানালাইসিসের (এফটিপিএ) তথ্য অনুসারেও এসব পণ্যের আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
দেখা গেছে, উল্লেখিত সময়ের মধ্যে চীন থেকে মোট আমদানির প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলারই ছিল এসব পণ্য। তবে ডিসেম্বর মাসের পণ্য-ভিত্তিক ডেটা ভারত এখনো প্রকাশ করেনি।
চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের একটি প্রতিবেদনে দুই দেশের বিরোধের বিষয়ে কোনো রাখঢাক না করেই স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনার মধ্যেও ২০২১ সালে চীন-ভারত বাণিজ্য বেড়েছে। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। এটি রেকর্ড। এটি আরেকটি প্রমাণ যে, নয়াদিল্লির সেই সক্ষমতা নেই। ভারত তার সক্ষমতা প্রমাণ করতে চাইলে তাকে চীনের বাজারের ওপর নির্ভরতা কমাতেই হবে।
এদিকে বাণিজ্য বিভাগের (বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়) অধীনস্থ ডিরেক্টরেট জেনারেল অব কমার্শিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং পরিসংখ্যান দপ্তরের সাময়িক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চীন থেকে ভারতের আমদানি ৮৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। আর মোট দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১১৪ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ধরের মতে, রপ্তানিকারকদের আন্ডার-ইনভয়েসিং এবং তথ্য না দেওয়া সম্পর্কিত কিছু সমস্যার কারণে ভারত এবং চীনা ডেটার অমিল হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের সঙ্গে ভারতের সামগ্রিক সম্পর্ক সিনো-মার্কিন সম্পর্কেরই প্রতিফলন। এখানে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্কের নিজস্ব স্বতন্ত্র গতিমুখ রয়েছে।
যেমন, চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হওয়া সত্ত্বেও কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র চীনের শিল্প কারখানার ওপর তাদের নির্ভরতা কোনো অংশেই কমাতে পারেনি। একই ভাবে ভারত সরকারের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও চীনের অর্থনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারেনি। ভারত যদি তার ম্যানুফ্যাকচার শিল্পকে প্রাক-মহামারি স্তরে পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করে নিয়ে যেতে না পারে তাহলে চীনের ওপর এই নির্ভরতা আরও বাড়বে। বিশেষ করে এপিআই আমদানিতে চীনের ওপর নির্ভরতা দূর করতে ভারতকে আরও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে।
ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনসের (এফআইইও) পরিচালক ও সিইও আজাই সাহাই বলছেন, চীন থেকে আমদানি রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলার একটি প্রধান কারণ হলো দেশীয় শিল্পের পাশাপাশি এপিআইগুলোর ইলেকট্রনিক পণ্য এবং যন্ত্রপাতির বিপুল চাহিদা।
অবশ্য ভারতীয় নীতি নির্ধারকদের আশাবাদী হওয়ারও কারণ রয়েছে। এফআইইওর তথ্য মতে, ২০২১ সালে চীনে ভারতের রপ্তানিও রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছেছে।
ডিজিসিআইএসের তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালে চীনে ভারতীয় রপ্তানি ২৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। যেখানে ২০২০ সালে ছিল ১৯ বিলিয়ন এবং ২০১৯ সালে ১৭ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার।
চীনে ভারতের রপ্তানি বৃদ্ধির মূলে রয়েছে কৃষি বাজারে প্রবেশাধিকার। ভারতের নন-বাসমতি চাল, বিদেশি সবজি, সয়াবিন এবং ফল রপ্তানি বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত-চীন বাণিজ্য ঘাটতির বেলুন সব সময় উভয় দেশের মধ্যে বিরোধের একটি বিষয় হয়ে রয়েছে। বাণিজ্য ঘাটতি ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিন বছর ধরে সংকোচনের ধারায় ছিল, কিন্তু আবার বেড়েছে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে, মহামারি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের বাজার ৫ শতাংশ সম্প্রসারিত হবে। তা ছাড়া চীন একাই ৬ ট্রিলিয়ন ডলারের ভোক্তা বাজার।
পঞ্চাশটিরও বেশি দেশে চীনের রপ্তানি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। ঘাটতি কমাতে ভারতকে সেসব বাজারে ভাগ বসানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেজ্ঞরা।
ডিজিসিআইএসের সাময়িক পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২১ সালে চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি ৬১ বিলিয়ন ডলার। যেখানে ২০২০ সালে ছিল ৩৯ বিলিয়ন ডলার।
বিশ্লেষণ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
গত এক সপ্তাহে মোদির কাশ্মীর নীতির বড় দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। এই নীতি এখন অচলাবস্থার মুখে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সুমান্ত্র বোস বলেছেন, পেহেলগাম হামলা মোদির ‘নয়া কাশ্মীর’ বয়ানের (ন্যারেটিভ) বেলুন ফুটো করে দিয়েছে।
১৪ ঘণ্টা আগেডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, তিনিই বিশ্ব চালাচ্ছেন। তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষা সীমাহীন। কিন্তু এটি বিপজ্জনক ঔদ্ধত্যেরও ইঙ্গিত দেয় এবং একটি গুরুতর প্রশ্ন তোলে—এই বিশৃঙ্খল ও প্রতিহিংসাপরায়ণ প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে পৃথিবী কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? দ্য আটলান্টিককে দেওয়া নতুন এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বিশ্বব্যাপী আধিপত্য...
১ দিন আগেবড় প্রশ্ন হলো, ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেবে কি না? ২০১৯ সালে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৪০ ভারতীয় পুলিশ নিহত হয়। এরপর পেহেলগামের হামলাই ছিল কাশ্মীরে সবচেয়ে প্রাণঘাতী। এমনকি এটি ১৯৮৯ সালে কাশ্মীরে ভারতীয় নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু হওয়ার পর থেকে সেখানকার
২ দিন আগেবিশ্লেষকদের মতে, ভারত হয়তো কিছুটা সংযত আচরণই করবে। কারণ, দেশটির সামরিক বাহিনী এখনো পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ফলে, তাদের প্রকাশ্যে এনে যুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়ার মধ্যে ঝুঁকি আছে। ২০১৮ সালে ভারতীয় পার্লামেন্টের এক প্রতিবেদনে দেশের ৬৮ শতাংশ সামরিক সরঞ্জামকে ‘পুরোনো মডেলের’, ২৪ শতাংশকে...
৩ দিন আগে