অনলাইন ডেস্ক
তৃতীয় দিনে প্রবেশ করেছে ইরান-ইসরায়েলের চলমান সংঘাত। দিন যত যাচ্ছে, এই সংঘাতে দুই পক্ষেরই প্রাণহানির সংখ্যা বাড়ছে। ইরানে অন্তত ৮০ জন এবং ইসরায়েলে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থামানোর উদ্দেশ্যে এটি একটি ‘প্রতিরোধমূলক হামলা’। কিন্তু বিশ্লেষকেরা বলছেন অন্য কথা। তাঁদের মতে, ইরানে ইসরায়েলের হামলাটি ছিল একতরফা, পরিকল্পিত ও উসকানিমূলক—যার পেছনে রয়েছে ভিন্ন রাজনৈতিক স্বার্থ।
ইসরায়েলের সরকার দাবি করেছে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দ্বারপ্রান্তে ছিল এবং আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাদের হামলাটি জরুরি হয়ে পড়েছিল। কিন্তু বাস্তবে এমন ‘জরুরি’ হয়ে ওঠার কোনো প্রমাণ নেই। ১২ জুন আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) এক প্রতিবেদনে ইরানের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের কথা বলা হলেও এ ধরনের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। অথচ ইসরায়েল সেই প্রতিবেদনকেই ‘জরুরি হুমকি’ হিসেবে ধরে নিয়ে কাউকে না জানিয়ে নিজেরাই হামলা চালিয়ে ইরানকে থামাতে চেয়েছে।
ইসরায়েল বলছে, তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ‘মাথা কেটে’ ফেলতে চেয়েছে। কিন্তু বিশ্লেষকেরা একটি বিষয়ে একমত যে এককভাবে এমন কোনো হামলার মধ্য দিয়ে ইরানের পারমাণবিক ক্ষমতা ধ্বংস করা অসম্ভব। দেখা গেছে, ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি, গ্যাসক্ষেত্র, তেলের ডিপো ও সরকারি ভবনে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে হত্যা করেছে দেশটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদকে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন আলি শামখানি। তিনি ইরানের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা। সম্প্রতি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ছিলেন। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ইসরায়েলের একটি পরিচিত কৌশল। এভাবে নির্দিষ্ট কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে ইসরায়েল মূলত গোটা একটি ব্যবস্থাকে দুর্বল করে ফেলতে চায়। এভাবে ইসরায়েল একটি পূর্ণাঙ্গ কৌশল বাস্তবায়ন করছে, যার লক্ষ্য শুধু পারমাণবিক কর্মসূচি থামানো নয়, বরং ইরানের প্রশাসনিক কাঠামোকে কাঁপিয়ে দেওয়া।
আরেকটি বিষয় হলো—ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সরাসরি বলেছেন, ‘ইরানের গর্বিত জনগণ যেন অবদমনমূলক শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়।’
অর্থাৎ, এই হামলা ইরানে ‘রেজিম চেঞ্জ’ বা সরকার পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু করারও চেষ্টা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, বিদেশি হামলার মুখে সাধারণত ইরানিরা দেশাত্মবোধে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। এবারও এমনটাই দেখা গেছে। ইরানের যেসব মানুষ ইসলামি প্রজাতন্ত্রের বিরোধী, তাঁরাও এখন জাতীয় পতাকার নিচে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন।
ইরানে ইসরায়েলের হামলা নিয়ে এমন কৌশলগত ও আদর্শিক ব্যাখ্যা দেওয়া হলেও ভিন্ন আরেকটি কারণ উপস্থাপন করেছেন মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক গবেষক ওরি গোল্ডবার্গ। এ বিষয়ে আল জাজিরায় লেখা এক বিশ্লেষণে তিনি উল্লেখ করেছেন, গাজায় গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক মহলের চোখ এখন ইসরায়েলের দিকে। অনেক দেশই ফিলিস্তিনকে এখন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে, আর আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর এই সময়টিতেই নেতানিয়াহু এমন এক ‘শত্রু’র বিরুদ্ধে হামলা চালালেন, যাকে বিশ্ব সম্ভাব্য হুমকি হিসেবেই দেখে।
এই হামলা তাই আন্তর্জাতিক নজর অন্যদিকে ফেরানোর কৌশল হতে পারে। বৈশ্বিক একটি ‘নিরাপত্তা নীতি’কে এ ক্ষেত্রে হাতিয়ার করেছে ইসরায়েল। এই নিরাপত্তা ধারণা কাজে লাগিয়ে কোনো জবাবদিহি ছাড়াই ইসরায়েল বিশ্বজুড়ে যেকোনো জায়গায়, যেকোনো সময়, যেকোনো ব্যক্তিকে হত্যা করার বৈধতা আদায় করে।
এই ‘নিরাপত্তানীতি’র মাধ্যমে ইসরায়েল তার নিজস্ব অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে গাজা, ইয়েমেন, লেবানন, সিরিয়া এবং এখন ইরানে। নেতানিয়াহু এই হামলার মাধ্যমে নিজেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচার থেকে বাঁচাতে এবং দেশের ভেতরে নিজের জনসমর্থন ফেরাতে চাচ্ছেন। তবে ইসরায়েলি সমাজের অভ্যন্তরীণ অবস্থা দেখলে মনে হয়, তারা একধরনের অভ্যস্ততার মধ্যে ঢুকে গেছে, যা স্বল্প মেয়াদে নেতানিয়াহুর পক্ষে গেলেও দীর্ঘ মেয়াদে সমাজের জন্য অশনিসংকেত হয়ে উঠতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:
তৃতীয় দিনে প্রবেশ করেছে ইরান-ইসরায়েলের চলমান সংঘাত। দিন যত যাচ্ছে, এই সংঘাতে দুই পক্ষেরই প্রাণহানির সংখ্যা বাড়ছে। ইরানে অন্তত ৮০ জন এবং ইসরায়েলে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থামানোর উদ্দেশ্যে এটি একটি ‘প্রতিরোধমূলক হামলা’। কিন্তু বিশ্লেষকেরা বলছেন অন্য কথা। তাঁদের মতে, ইরানে ইসরায়েলের হামলাটি ছিল একতরফা, পরিকল্পিত ও উসকানিমূলক—যার পেছনে রয়েছে ভিন্ন রাজনৈতিক স্বার্থ।
ইসরায়েলের সরকার দাবি করেছে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দ্বারপ্রান্তে ছিল এবং আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাদের হামলাটি জরুরি হয়ে পড়েছিল। কিন্তু বাস্তবে এমন ‘জরুরি’ হয়ে ওঠার কোনো প্রমাণ নেই। ১২ জুন আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) এক প্রতিবেদনে ইরানের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের কথা বলা হলেও এ ধরনের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। অথচ ইসরায়েল সেই প্রতিবেদনকেই ‘জরুরি হুমকি’ হিসেবে ধরে নিয়ে কাউকে না জানিয়ে নিজেরাই হামলা চালিয়ে ইরানকে থামাতে চেয়েছে।
ইসরায়েল বলছে, তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ‘মাথা কেটে’ ফেলতে চেয়েছে। কিন্তু বিশ্লেষকেরা একটি বিষয়ে একমত যে এককভাবে এমন কোনো হামলার মধ্য দিয়ে ইরানের পারমাণবিক ক্ষমতা ধ্বংস করা অসম্ভব। দেখা গেছে, ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি, গ্যাসক্ষেত্র, তেলের ডিপো ও সরকারি ভবনে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে হত্যা করেছে দেশটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদকে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন আলি শামখানি। তিনি ইরানের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা। সম্প্রতি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ছিলেন। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ইসরায়েলের একটি পরিচিত কৌশল। এভাবে নির্দিষ্ট কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে ইসরায়েল মূলত গোটা একটি ব্যবস্থাকে দুর্বল করে ফেলতে চায়। এভাবে ইসরায়েল একটি পূর্ণাঙ্গ কৌশল বাস্তবায়ন করছে, যার লক্ষ্য শুধু পারমাণবিক কর্মসূচি থামানো নয়, বরং ইরানের প্রশাসনিক কাঠামোকে কাঁপিয়ে দেওয়া।
আরেকটি বিষয় হলো—ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সরাসরি বলেছেন, ‘ইরানের গর্বিত জনগণ যেন অবদমনমূলক শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়।’
অর্থাৎ, এই হামলা ইরানে ‘রেজিম চেঞ্জ’ বা সরকার পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু করারও চেষ্টা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, বিদেশি হামলার মুখে সাধারণত ইরানিরা দেশাত্মবোধে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। এবারও এমনটাই দেখা গেছে। ইরানের যেসব মানুষ ইসলামি প্রজাতন্ত্রের বিরোধী, তাঁরাও এখন জাতীয় পতাকার নিচে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন।
ইরানে ইসরায়েলের হামলা নিয়ে এমন কৌশলগত ও আদর্শিক ব্যাখ্যা দেওয়া হলেও ভিন্ন আরেকটি কারণ উপস্থাপন করেছেন মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক গবেষক ওরি গোল্ডবার্গ। এ বিষয়ে আল জাজিরায় লেখা এক বিশ্লেষণে তিনি উল্লেখ করেছেন, গাজায় গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক মহলের চোখ এখন ইসরায়েলের দিকে। অনেক দেশই ফিলিস্তিনকে এখন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে, আর আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর এই সময়টিতেই নেতানিয়াহু এমন এক ‘শত্রু’র বিরুদ্ধে হামলা চালালেন, যাকে বিশ্ব সম্ভাব্য হুমকি হিসেবেই দেখে।
এই হামলা তাই আন্তর্জাতিক নজর অন্যদিকে ফেরানোর কৌশল হতে পারে। বৈশ্বিক একটি ‘নিরাপত্তা নীতি’কে এ ক্ষেত্রে হাতিয়ার করেছে ইসরায়েল। এই নিরাপত্তা ধারণা কাজে লাগিয়ে কোনো জবাবদিহি ছাড়াই ইসরায়েল বিশ্বজুড়ে যেকোনো জায়গায়, যেকোনো সময়, যেকোনো ব্যক্তিকে হত্যা করার বৈধতা আদায় করে।
এই ‘নিরাপত্তানীতি’র মাধ্যমে ইসরায়েল তার নিজস্ব অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে গাজা, ইয়েমেন, লেবানন, সিরিয়া এবং এখন ইরানে। নেতানিয়াহু এই হামলার মাধ্যমে নিজেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচার থেকে বাঁচাতে এবং দেশের ভেতরে নিজের জনসমর্থন ফেরাতে চাচ্ছেন। তবে ইসরায়েলি সমাজের অভ্যন্তরীণ অবস্থা দেখলে মনে হয়, তারা একধরনের অভ্যস্ততার মধ্যে ঢুকে গেছে, যা স্বল্প মেয়াদে নেতানিয়াহুর পক্ষে গেলেও দীর্ঘ মেয়াদে সমাজের জন্য অশনিসংকেত হয়ে উঠতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত গতকাল শনিবার নবম দিনে গড়িয়েছে। এই ৯ দিনে দুপক্ষই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে, যদিও ইরানের ক্ষয়ক্ষতি ইসরায়েলের তুলনায় অনেক বেশি। অনেক পর্যবেক্ষক বলছেন, এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হতে চলেছে। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধে জড়ালে ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে..
৩ ঘণ্টা আগেইরানের উত্তরাঞ্চলে গতকাল শুক্রবার মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের এই সময়ে ভূকম্পন ইরানের গোপন পারমাণবিক পরীক্ষা কি না, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগেকয়েক মাস ধরে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের করণীয় কী হওয়া উচিত—তা নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে। এই তর্ক-বিতর্কের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র আগের কঠোর নিষেধাজ্ঞাকে আরও জোরালো করেছে। আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) গত জানুয়ারিতে ঘোষণা দিয়েছে, তারা আগামী ১ জুলাই থেকে ইরানি তেলে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর...
৯ ঘণ্টা আগেমধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে দ্রুত বাড়তে থাকা উত্তেজনাকে চীন ও রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র-নির্ভর বিশ্বব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠার একটি মোক্ষম সুযোগ হিসেবে দেখছে বলে মনে করছেন অনেকে। ফোনালাপে পুতিন এবং সি ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলাকে জাতিসংঘ সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে আখ্যায়িত
১০ ঘণ্টা আগে