যশোরের যশ খেজুরের রস। এই রস থেকে নালি ও পাটালি গুড় তৈরি করে তাকে স্বাদে, ঘ্রাণে অনন্য করে তোলেন রোকেয়া খাতুন। বৈবাহিক জীবনের ৪৮ বছর কেটেছে তাঁর রস-গুড়-পাটালির ঘ্রাণে। খেজুরগাছ থেকে রস নামিয়ে আনার পর কাজ শুরু হয় গাছিবউ রোকেয়ার। টাটকা রস তাতালে ঢেলে জ্বাল দিয়ে গুড়-পাটালি তৈরি করেন তিনি। যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভার কীর্তিপুর গ্রামের মাঠপাড়ার আলতাফ হোসেনের স্ত্রী রোকেয়া খাতুন।
‘বউ ঠিলা ধুয়ে দে, গাছ কাটতি যাবো/ সন্ধি রস পাড়ে আইনে জাউ রান্দে খাবো’ প্রচলিত এ গানে গাছিবউকে শুধু ঠিলা ধুয়ে দেওয়ার কথা বলা হলেও গাছ কাটা ছাড়া প্রায় সব কাজ করেন রোকেয়া খাতুন। এখনো শীতকালে নলেন পাটালির খুশবুতে ভরে যায় তাঁর বাড়ির আঙিনা।
শীত উপেক্ষা করে আমরা যখন কীর্তিপুর গ্রামের মাঠপাড়ায় রোকেয়া খাতুনের বাড়ি উপস্থিত হই, তখন তিনি চুলায় তাতালে রস জ্বাল দিচ্ছিলেন পাটালি বানানোর জন্য। আর কিছু সময় পরপর তাতাল পরিষ্কার করে দিচ্ছিলেন। গুড়-পাটালির জন্য চুলা থেকে নামানোর আগে তা ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নেন রোকেয়া। এরপর কাঠের চামচ দিয়ে বেশ কিছু সময় ঘষে ঘষে আটার খামির মতো সাদা করেন।
এটাকে স্থানীয় ভাষায় বিচমারা বলা হয়। অভিজ্ঞতা থেকে রোকেয়া জানান, যত বেশি বিচমারা যাবে, গুড় তত বেশি সাদা হবে। বলতে বলতে মাটির সরায় গরম তরল গুড় ঢালছিলেন তিনি। কয়েক মিনিটের মধ্যে সে নরম গুড় শক্ত হয়ে পাটালিতে রূপ নিল।
যখন যশোরের খেজুরের রস-গুড়-পাটালি হারিয়ে যেতে বসেছে, রোকেয়া খাতুন সে ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখছেন এবং আমাদের চিরচেনা সেই স্বাদ নেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। মো. একরামুল হক খোকন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, কীর্তিপুর, ঝিকরগাছা
১৯৭৫ সালের পৌষ মাসে রোকেয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর বউ বাড়িতে এনে স্বামী আলতাফ হোসেন খেজুরগাছ কাটতে গিয়েছিলেন। পরদিন সকালে সে রস জ্বাল দিয়ে গুড় বানিয়েছিলেন রোকেয়া। সেই শুরু। আজও রস-গুড় আর পাটালি তাঁর জীবনের সঙ্গে লেগে রয়েছে।
প্রায় ৫ দশকে রস থেকে গুড় বানাতে দারুণ অভিজ্ঞ হয়ে গেছেন রোকেয়া। তিনি জানালেন, সাধারণত জিরেন রস বা গাছের প্রথম দিনের রস দিয়ে পাটালি তৈরি করতে হয়। পৌষ, মাঘ, ফাল্গুন—এই তিন মাস ভালো পাটালি হয়। কিন্তু গরম পড়লে পাটালি জমে না। এটি বানানোর অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। জিরেন রস না হলে পাটালি হবে না। আর এই পাটালি তৈরির জন্য অনেক ধৈর্য দরকার।
গুড় তৈরির জন্য মাটির ঠিলা পরিষ্কার করে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে এরপর ধানের নাড়া দিয়ে আগুনে পোড়ানো, তা মাঠে নিয়ে যাওয়া, মাঠ থেকে রস বাড়ি এনে জ্বাল দেওয়াসহ সব কাজ করেন রোকেয়া। বয়সের কারণে স্বামী আলতাফ হোসেন এখন আর গাছ কাটতে যান না। ছেলে শরিফুল ইসলাম জাহাঙ্গীর গাছ কাটেন। পুত্রবধূ আরজিনা খাতুন তাঁকে গুড়-পাটালি বানানোর সব কাজে সহায়তা করেন।
ঝিকরগাছা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের (কীর্তিপুর) কাউন্সিলর মো. একরামুল হক খোকন বলেন, ‘যখন যশোরের খেজুরের রস-গুড়-পাটালি হারিয়ে যেতে বসেছে, রোকেয়া খাতুন সে ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখছেন এবং আমাদের চিরচেনা সেই স্বাদ নেওয়ার ব্যবস্থা করছেন।’
যশোরের যশ খেজুরের রস। এই রস থেকে নালি ও পাটালি গুড় তৈরি করে তাকে স্বাদে, ঘ্রাণে অনন্য করে তোলেন রোকেয়া খাতুন। বৈবাহিক জীবনের ৪৮ বছর কেটেছে তাঁর রস-গুড়-পাটালির ঘ্রাণে। খেজুরগাছ থেকে রস নামিয়ে আনার পর কাজ শুরু হয় গাছিবউ রোকেয়ার। টাটকা রস তাতালে ঢেলে জ্বাল দিয়ে গুড়-পাটালি তৈরি করেন তিনি। যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভার কীর্তিপুর গ্রামের মাঠপাড়ার আলতাফ হোসেনের স্ত্রী রোকেয়া খাতুন।
‘বউ ঠিলা ধুয়ে দে, গাছ কাটতি যাবো/ সন্ধি রস পাড়ে আইনে জাউ রান্দে খাবো’ প্রচলিত এ গানে গাছিবউকে শুধু ঠিলা ধুয়ে দেওয়ার কথা বলা হলেও গাছ কাটা ছাড়া প্রায় সব কাজ করেন রোকেয়া খাতুন। এখনো শীতকালে নলেন পাটালির খুশবুতে ভরে যায় তাঁর বাড়ির আঙিনা।
শীত উপেক্ষা করে আমরা যখন কীর্তিপুর গ্রামের মাঠপাড়ায় রোকেয়া খাতুনের বাড়ি উপস্থিত হই, তখন তিনি চুলায় তাতালে রস জ্বাল দিচ্ছিলেন পাটালি বানানোর জন্য। আর কিছু সময় পরপর তাতাল পরিষ্কার করে দিচ্ছিলেন। গুড়-পাটালির জন্য চুলা থেকে নামানোর আগে তা ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নেন রোকেয়া। এরপর কাঠের চামচ দিয়ে বেশ কিছু সময় ঘষে ঘষে আটার খামির মতো সাদা করেন।
এটাকে স্থানীয় ভাষায় বিচমারা বলা হয়। অভিজ্ঞতা থেকে রোকেয়া জানান, যত বেশি বিচমারা যাবে, গুড় তত বেশি সাদা হবে। বলতে বলতে মাটির সরায় গরম তরল গুড় ঢালছিলেন তিনি। কয়েক মিনিটের মধ্যে সে নরম গুড় শক্ত হয়ে পাটালিতে রূপ নিল।
যখন যশোরের খেজুরের রস-গুড়-পাটালি হারিয়ে যেতে বসেছে, রোকেয়া খাতুন সে ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখছেন এবং আমাদের চিরচেনা সেই স্বাদ নেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। মো. একরামুল হক খোকন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, কীর্তিপুর, ঝিকরগাছা
১৯৭৫ সালের পৌষ মাসে রোকেয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর বউ বাড়িতে এনে স্বামী আলতাফ হোসেন খেজুরগাছ কাটতে গিয়েছিলেন। পরদিন সকালে সে রস জ্বাল দিয়ে গুড় বানিয়েছিলেন রোকেয়া। সেই শুরু। আজও রস-গুড় আর পাটালি তাঁর জীবনের সঙ্গে লেগে রয়েছে।
প্রায় ৫ দশকে রস থেকে গুড় বানাতে দারুণ অভিজ্ঞ হয়ে গেছেন রোকেয়া। তিনি জানালেন, সাধারণত জিরেন রস বা গাছের প্রথম দিনের রস দিয়ে পাটালি তৈরি করতে হয়। পৌষ, মাঘ, ফাল্গুন—এই তিন মাস ভালো পাটালি হয়। কিন্তু গরম পড়লে পাটালি জমে না। এটি বানানোর অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। জিরেন রস না হলে পাটালি হবে না। আর এই পাটালি তৈরির জন্য অনেক ধৈর্য দরকার।
গুড় তৈরির জন্য মাটির ঠিলা পরিষ্কার করে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে এরপর ধানের নাড়া দিয়ে আগুনে পোড়ানো, তা মাঠে নিয়ে যাওয়া, মাঠ থেকে রস বাড়ি এনে জ্বাল দেওয়াসহ সব কাজ করেন রোকেয়া। বয়সের কারণে স্বামী আলতাফ হোসেন এখন আর গাছ কাটতে যান না। ছেলে শরিফুল ইসলাম জাহাঙ্গীর গাছ কাটেন। পুত্রবধূ আরজিনা খাতুন তাঁকে গুড়-পাটালি বানানোর সব কাজে সহায়তা করেন।
ঝিকরগাছা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের (কীর্তিপুর) কাউন্সিলর মো. একরামুল হক খোকন বলেন, ‘যখন যশোরের খেজুরের রস-গুড়-পাটালি হারিয়ে যেতে বসেছে, রোকেয়া খাতুন সে ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখছেন এবং আমাদের চিরচেনা সেই স্বাদ নেওয়ার ব্যবস্থা করছেন।’
মানুষ স্বপ্নবাজ প্রাণী। যুদ্ধ ও সংঘাতময় পৃথিবীতে ভিটে চ্যুত মানুষও স্বপ্ন দেখে। এই স্বার্থ আর সংঘাতময় পৃথিবীতে মানুষ তার জীবনের চেয়েও বড়। নইলে বেঁচে থাকে কীভাবে! বিশ্ব শরণার্থী দিবসে তেমনি কিছু নারীর গল্প রইল, যাঁরা উদ্বাস্তু জীবনেও স্বপ্ন দেখেছেন জীবনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।
২ দিন আগেকারও কোলে শিশুসন্তান, কেউ অন্তঃসত্ত্বা, কারও হাতে স্যালাইনের ক্যানুলা। চাকরি বাঁচাতে এই অবস্থায় ২১ দিন ধরে রাস্তায় আন্দোলন করছেন তাঁরা। করবেন নাই-বা কেন, তাঁদের কেউ সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, কারও বেতনের টাকায় চলছে পরিবারের অসুস্থ সদস্যের চিকিৎসা; কেউ আবার বেতনের টাকায় সন্তানের জন্য...
৫ দিন আগেযুদ্ধের কারণে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতা এবং দৈনন্দিন আতঙ্ক ইসরায়েলি নারীদের গভীরভাবে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। ইসরায়েলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে এমন তথ্যের আভাস পাওয়া গেছে।
৫ দিন আগেঅনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় মাত্র ২০ হাজার টাকায় বোরকার ব্যবসা শুরু করেন। ডিজাইন, কাপড় সংগ্রহ, ডেলিভারি—সবই এক হাতে সামলাতেন তিনি। বর্তমানে ঢাকায় তাঁর দুটি শোরুম রয়েছে। বিনিয়োগের পরিমাণ বহু আগেই কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আমেরিকা, কানাডা, জাপান, সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে...
৫ দিন আগে