আব্দুর রহিম পায়েল, রংপুর
প্রয়োজন পথ দেখায়। উম্মে কুলসুম পপিও প্রয়োজনের তাগিদে বেছে নিয়েছিলেন নিজের পথ। সে পথে সাফল্য ছিল, ব্যর্থতা ছিল, ছিল করোনার স্মৃতি। কিন্তু পপি পথ হারাননি। এখন ফেসবুকে তাঁর নামে যে পেজ রয়েছে, তাতে অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ২২ লাখ। পড়াশোনা শেষ করেই তিনি পরিচিতি পেয়েছেন অনলাইন উদ্যোক্তা হিসেবে।
পপি পড়াশোনা করতেন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে, ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিষয়ে। ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ‘বড় ভাই’দের কাছে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের কাজ শেখেন তিনি। এ সময় পরিচয় হয় একই বিশ্ববিদ্যায়ের আরও কিছু সহপাঠীর সঙ্গে। তাঁদের কাছে শোনেন পরিবার ও জীবনযুদ্ধের গল্প। পপি নিজেও ছিলেন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। তাই এসব বিষয় সহজে উপলব্ধি করতে পারেন। এ সময় মাথায় আসে এসব শিক্ষার্থীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার কথা। যাতে তাঁরা নিজেদের আয়ের অর্থ দিয়ে পড়ালেখার খরচ চালাতে পারেন।
প্রথম পদক্ষেপ
নিজের আইডিয়া শুধু ভাবনায় সীমাবদ্ধ রাখতে চাননি পপি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিত বড় ভাইদের সঙ্গে তা নিয়ে কথা বলেন এবং পরামর্শ চান। ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে চার বন্ধু মিলে ‘বিডি অ্যাসিস্ট্যান্ট’ নামে ফেসবুক পেজ খোলেন পপি। এ সময় তাঁরা টেকনিক্যাল হোম সার্ভিস নিয়ে কাজ করছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ড্রপআউট শিক্ষার্থী এবং এসএসসি ও এইচএসসিতে অকৃতকার্য ১৫-২০ জনকে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করেন তিনি। প্রথমে অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানের মাধ্যমে এসব শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অর্ডার সংগ্রহ করে গ্রাহকদের বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের টেকনিক্যাল সার্ভিস দিতে থাকে বিডি অ্যাসিস্ট্যান্ট। এটি ছিল পপি ও তাঁর বন্ধুদের প্রথম পদক্ষেপ।
প্রতিযোগিতা ও নতুন অভিজ্ঞতা
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ‘বিজনেস আইডিয়া’ নামক প্রতিযোগিতায় অংশ নেন পপি ও তাঁর বন্ধুরা। তাঁদের বিডি অ্যাসিস্ট্যান্ট এ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়। প্রতিষ্ঠানটি বিডি অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং পপিদের ব্যবসার পলিসি জেনে ঋণ দিতে আগ্রহী হয়। সেই ঋণের অর্থে তাঁরা ২০১৯ সালে রংপুর শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে বিডি অ্যাসিস্ট্যান্টকে প্রতিষ্ঠানে রূপ দেন। পরে সেখান থেকে নিজেদের কাজ পরিচালনা করতে থাকেন।
করোনা ও হাঁড়িভাঙা আমের গল্প
আমাদের কাছে ইতিহাসের ভয়ংকর স্মৃতি কোভিড-১৯। প্রচুর নতুন উদ্যোগের মতো ২০২০ সালে বিডি অ্যাসিস্ট্যান্ট নামের ছোট্ট প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম সাময়িক স্থবির হয়ে যায়। পপির সঙ্গে থাকা দুই বন্ধু ব্যবসা ছেড়ে চলে যান; কিন্তু পপি হাল ছাড়েননি।
করোনা মহামারির মধ্যে পপির মাথায় নতুন আইডিয়া আসে। সে সময় আমের মৌসুম চলছিল। মানুষের কাছে মৌসুমি ফলের ব্যাপক চাহিদা। পপি তাঁর আরেক সঙ্গী আবু সাঈদ আল সাগরকে নিয়ে অনলাইনে রংপুরের বিখ্যাত হাঁড়িভাঙা আম বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন।
ওই বছর তাঁরা বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকায় থাকা পরিচিত লোকজনের কাছে আম সরবরাহ করেন। ভালো আম সরবরাহের জন্য সে সময় ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন পপি ও সাগর। পরের বছর দুজনে মিলে ফেসবুকে ‘প্রিমিয়াম ফ্রুটস’ নামে একটি পেজ খুলে পুরো দেশে বিভিন্ন মৌসুমি ফল সরবরাহ শুরু করেন। নিজেরা সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে আমবাগান ইজারা নিয়ে বিষমুক্ত আম উৎপাদন করেন এবং বাগানের বিষমুক্ত আমের ভিডিও আপলোড করতে থাকেন নিজেদের পেজে। সেসব ভিডিও দেখে গ্রাহকদের আস্থা বেড়ে যায়। পপি এখন শুধু হাঁড়িভাঙা আমই সরবরাহ করেন না, বিষমুক্ত বিভিন্ন মৌসুমি ফল সরবরাহ করেন পুরো দেশে।
এবং রংপুর শহর
পপি ও সাগর মিলে রংপুর শহরে নিজেদের অফিস তৈরি করেছেন। সেখান থেকে বিডি অ্যাসিস্ট্যান্ট ও প্রিমিয়াম ফ্রুটসের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। এর পাশাপাশি পপি তাঁর ফেসবুক পেজ থেকে বিভিন্ন কৃষিবিষয়ক কনটেন্ট তৈরি করেন। এসব কনটেন্ট এরই মধ্যে অনলাইনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বর্তমানে তাঁর ফেসবুক ফলোয়ারের সংখ্যা ২২ লাখ। বিডি অ্যাসিস্ট্যান্ট ও প্রিমিয়াম ফ্রুটস নামের প্রতিষ্ঠান দুটিতে এখন কাজ করছেন প্রায় ৪০ তরুণ।
পপি জানিয়েছেন, শুধু বিষমুক্ত ফল নয়; তাঁর প্রতিষ্ঠান বিষমুক্ত সবজিও সরবরাহ করবে গ্রাহকদের।
নতুন বছরে নতুন আশা। পপি জানেন, ইচ্ছা থাকলে আশা একসময় পূরণ হবেই। আপাতত সেই স্বপ্নে বিভোর পপি।
প্রয়োজন পথ দেখায়। উম্মে কুলসুম পপিও প্রয়োজনের তাগিদে বেছে নিয়েছিলেন নিজের পথ। সে পথে সাফল্য ছিল, ব্যর্থতা ছিল, ছিল করোনার স্মৃতি। কিন্তু পপি পথ হারাননি। এখন ফেসবুকে তাঁর নামে যে পেজ রয়েছে, তাতে অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ২২ লাখ। পড়াশোনা শেষ করেই তিনি পরিচিতি পেয়েছেন অনলাইন উদ্যোক্তা হিসেবে।
পপি পড়াশোনা করতেন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে, ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিষয়ে। ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ‘বড় ভাই’দের কাছে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের কাজ শেখেন তিনি। এ সময় পরিচয় হয় একই বিশ্ববিদ্যায়ের আরও কিছু সহপাঠীর সঙ্গে। তাঁদের কাছে শোনেন পরিবার ও জীবনযুদ্ধের গল্প। পপি নিজেও ছিলেন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। তাই এসব বিষয় সহজে উপলব্ধি করতে পারেন। এ সময় মাথায় আসে এসব শিক্ষার্থীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার কথা। যাতে তাঁরা নিজেদের আয়ের অর্থ দিয়ে পড়ালেখার খরচ চালাতে পারেন।
প্রথম পদক্ষেপ
নিজের আইডিয়া শুধু ভাবনায় সীমাবদ্ধ রাখতে চাননি পপি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিত বড় ভাইদের সঙ্গে তা নিয়ে কথা বলেন এবং পরামর্শ চান। ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে চার বন্ধু মিলে ‘বিডি অ্যাসিস্ট্যান্ট’ নামে ফেসবুক পেজ খোলেন পপি। এ সময় তাঁরা টেকনিক্যাল হোম সার্ভিস নিয়ে কাজ করছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ড্রপআউট শিক্ষার্থী এবং এসএসসি ও এইচএসসিতে অকৃতকার্য ১৫-২০ জনকে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করেন তিনি। প্রথমে অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানের মাধ্যমে এসব শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অর্ডার সংগ্রহ করে গ্রাহকদের বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের টেকনিক্যাল সার্ভিস দিতে থাকে বিডি অ্যাসিস্ট্যান্ট। এটি ছিল পপি ও তাঁর বন্ধুদের প্রথম পদক্ষেপ।
প্রতিযোগিতা ও নতুন অভিজ্ঞতা
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ‘বিজনেস আইডিয়া’ নামক প্রতিযোগিতায় অংশ নেন পপি ও তাঁর বন্ধুরা। তাঁদের বিডি অ্যাসিস্ট্যান্ট এ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়। প্রতিষ্ঠানটি বিডি অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং পপিদের ব্যবসার পলিসি জেনে ঋণ দিতে আগ্রহী হয়। সেই ঋণের অর্থে তাঁরা ২০১৯ সালে রংপুর শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে বিডি অ্যাসিস্ট্যান্টকে প্রতিষ্ঠানে রূপ দেন। পরে সেখান থেকে নিজেদের কাজ পরিচালনা করতে থাকেন।
করোনা ও হাঁড়িভাঙা আমের গল্প
আমাদের কাছে ইতিহাসের ভয়ংকর স্মৃতি কোভিড-১৯। প্রচুর নতুন উদ্যোগের মতো ২০২০ সালে বিডি অ্যাসিস্ট্যান্ট নামের ছোট্ট প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম সাময়িক স্থবির হয়ে যায়। পপির সঙ্গে থাকা দুই বন্ধু ব্যবসা ছেড়ে চলে যান; কিন্তু পপি হাল ছাড়েননি।
করোনা মহামারির মধ্যে পপির মাথায় নতুন আইডিয়া আসে। সে সময় আমের মৌসুম চলছিল। মানুষের কাছে মৌসুমি ফলের ব্যাপক চাহিদা। পপি তাঁর আরেক সঙ্গী আবু সাঈদ আল সাগরকে নিয়ে অনলাইনে রংপুরের বিখ্যাত হাঁড়িভাঙা আম বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন।
ওই বছর তাঁরা বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকায় থাকা পরিচিত লোকজনের কাছে আম সরবরাহ করেন। ভালো আম সরবরাহের জন্য সে সময় ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন পপি ও সাগর। পরের বছর দুজনে মিলে ফেসবুকে ‘প্রিমিয়াম ফ্রুটস’ নামে একটি পেজ খুলে পুরো দেশে বিভিন্ন মৌসুমি ফল সরবরাহ শুরু করেন। নিজেরা সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে আমবাগান ইজারা নিয়ে বিষমুক্ত আম উৎপাদন করেন এবং বাগানের বিষমুক্ত আমের ভিডিও আপলোড করতে থাকেন নিজেদের পেজে। সেসব ভিডিও দেখে গ্রাহকদের আস্থা বেড়ে যায়। পপি এখন শুধু হাঁড়িভাঙা আমই সরবরাহ করেন না, বিষমুক্ত বিভিন্ন মৌসুমি ফল সরবরাহ করেন পুরো দেশে।
এবং রংপুর শহর
পপি ও সাগর মিলে রংপুর শহরে নিজেদের অফিস তৈরি করেছেন। সেখান থেকে বিডি অ্যাসিস্ট্যান্ট ও প্রিমিয়াম ফ্রুটসের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। এর পাশাপাশি পপি তাঁর ফেসবুক পেজ থেকে বিভিন্ন কৃষিবিষয়ক কনটেন্ট তৈরি করেন। এসব কনটেন্ট এরই মধ্যে অনলাইনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বর্তমানে তাঁর ফেসবুক ফলোয়ারের সংখ্যা ২২ লাখ। বিডি অ্যাসিস্ট্যান্ট ও প্রিমিয়াম ফ্রুটস নামের প্রতিষ্ঠান দুটিতে এখন কাজ করছেন প্রায় ৪০ তরুণ।
পপি জানিয়েছেন, শুধু বিষমুক্ত ফল নয়; তাঁর প্রতিষ্ঠান বিষমুক্ত সবজিও সরবরাহ করবে গ্রাহকদের।
নতুন বছরে নতুন আশা। পপি জানেন, ইচ্ছা থাকলে আশা একসময় পূরণ হবেই। আপাতত সেই স্বপ্নে বিভোর পপি।
চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ও উদ্যোক্তা পারভীন মাহমুদ পেয়েছেন সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টস (সাফা) প্রদত্ত লাইফটাইম উইমেন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড ২০২৫। গতকাল মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে হোটেল সিনামন লাইফে আয়োজিত বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে তাঁকে এই মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা দেওয়া হয়।
৫ দিন আগেবাইরে থেকে ঘরে ফিরে হাতের কাছে পাওয়া ঠান্ডা পানি কিংবা সুস্বাদু তৈরি খাবার; বাড়ি গিয়ে কী খাব—কাজে গিয়ে এমন ভাবনার মুখোমুখি না হওয়া; অথবা সারা দিনের ক্লান্তির পর শান্তিতে ঘুমানোর জন্য পাওয়া গোছানো ঘর! এই যে তৈরি খাবার, গোছানো ঘর কিংবা এক গ্লাস পানি—সবকিছুর পেছনে থাকে একজন মানুষের শ্রম। কিন্তু জমা-খরচ
৬ দিন আগেকরোনার সময় চারদিক অচল হয়ে পড়ে। সেই সময় বগুড়ার মাসুমা ইসলাম নামের ছাব্বিশ বছরের এই গৃহিণী ঘরে বসে শুরু করলেন এক নতুন উদ্যোগ। এর মধ্যে চাকরি হারালেন তাঁর স্বামী, থমকে গেল সংসার। কিন্তু হাল ছাড়লেন না মাসুমা। মাত্র ৩০০ টাকা মূলধন দিয়ে শুরু করে এখন তিনি হয়ে উঠেছেন সফল উদ্যোক্তা।
৬ দিন আগেআমার ছবি ও নাম ব্যবহার করে ফেসবুকে কেউ একজন ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলেছে। আমার পরিচিত সবাইকে ফ্রেন্ডস রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছে। সবাই আমাকে ভেবে অ্যাকসেপ্ট করছে। সবার কাছে আমার নামে খারাপ খারাপ কথা বলছে এবং টাকা ধার চাচ্ছে। আমার কয়েক বন্ধু অ্যাকাউন্টে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাদেরও অনেক বাজে কথা বলছে। আমার কাছের
৬ দিন আগে