ইশতিয়াক হাসান

কল্পনা করুন, গহিন এক জঙ্গলে আছেন। এ সময়ই একটি গাছের সামনে চলে এলেন, বিশাল পাতাগুলো কেমন যেন শুঁড়ের মতো। চারপাশ ভারী হয়ে আছে মিষ্টি এক গন্ধে। গাছটির নিচে কোনো একটি প্রাণীর কঙ্কাল পড়ে আছে। পাতাগুলো নড়ছে। এটা কি শুধুই বাতাসের কারণে? আরেকটু কাছে গেলেন, গাছের পাতাগুলো আপনার দিকে ঝুঁকে আসছে...। বিশাল মাংসখেকো কোনো গাছের চিন্তা যদি কোনোভাবে আপনার মস্তিষ্কে ঢুকে যায় তবে, একে সেখান থেকে বের করা মুশকিল। আফ্রিকা, মধ্য কিংবা দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলে এমন মানুষখেকো গাছের নানা গল্পগাথা ডালপালা মেলেছে ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে।
তবে শুনে আনন্দিত হবেন, মানুষকে খেয়ে ফলতে পারে এমন কোনো উদ্ভিদের অস্তিত্বে মোটেই বিশ্বাসী নয় বিজ্ঞান। এখন পর্যন্ত যে তথ্য মিলেছে, তাতে মাংসাশী যেকোনো গাছের জন্য একটা ইঁদুরই খাবার হিসেবে বেশ বড়। তবে মানুষ যুগে যুগে মানুষের রক্তের তৃষ্ণা আছে এমন উদ্ভিদকে কল্পনায়, গল্পে হাজির করেছে বারবারই।
মানুষখেকো গাছের গল্প ব্যাপকভাবে ছড়ানো শুরু করে ১৮৮০-র দশকে। সাধারণত গল্পগুলো এমন হতো, একজন সাহসী ইউরোপীয় দুর্গম কোনো দ্বীপে বা অরণ্যে হাজির হন। এ সময়ই অদ্ভুত কোনো একটি গাছের সামনে চলে আসেন। তারপরই দেখেন স্থানীয় কোনো অধিবাসী অসাবধানতাবশত ওই গাছের গ্রাসে পরিণত হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব গল্প সরাসরি যার অভিজ্ঞতা তার থেকে অন্য কেউ শুনে কিংবা তার থেকে আরও কেউ শুনে ছড়িয়ে দেন। এভাবে মূল কাহিনি অনেকটা ফুলেফেঁপে প্রকাশ পায়।
উদাহরণ হিসেবে ফিল রবিনসনের ১৮৮১ সালের বই আন্ডার দ্য পুনকাহ ট্রির কথা বলতে পারেন। লেখকের চাচা আশ্চর্য এক গাছ খুঁজে পান। ওটার বিশাল মোমের মতো ফুল, ফল রসে টইটম্বুর। পাতাগুলো ছোট্ট হাতের মতো খুলছে, বন্ধ হচ্ছে। একটি স্থানীয় কিশোর একটি হরিণকে তাড়া করতে গিয়ে গাছের লতাপাতার মাঝখানে চলে আসে। তারপর শ্বাসরোধ হয়ে আসছে এমন একটা ফ্যাসফ্যাসে চিৎকার। তারপর যে পাতাগুলোর ভেতরে ছিল ছেলেটি, সেগুলোর পাগলাটে নড়াচড়া চোখে পড়ে। এ ছাড়া জীবনের আর কোনো চিহ্ন নেই। জে ডব্লিউ বুয়েলের ‘সি অ্যান্ড ল্যান্ড’ প্রকাশ পায় ১৮৮৯ সালে। এর মধ্যে অভিযাত্রীদের মুখ থেকে শোনা মোটা গুঁড়ির এক গাছের গল্পও আছে, যে কিনা শিকার থেকে রক্ত শুষে নেয়, তারপর রক্তশূন্য দেহটাকে ছুড়ে দিয়ে নতুন শিকারের প্রতীক্ষায় থাকে।
তবে মানুষখেকো গাছের সবচেয়ে ভয়ানক গল্পটি ফার্স্ট হ্যান্ড অ্যাকাউন্ট বা সরাসরি যার অভিজ্ঞতা তাঁর বিবরণে পাওয়া। কার্ল লেচে নামের এক বিজ্ঞানী সংবাদপত্রগুলোকে বলেন এমন এক গাছের কথা, যেটার নিচের অংশ আনারসের মতো। এর দীর্ঘ, স্বাস্থ্যবান ও কাঁটাযুক্ত আটটি পাতা আছে, সাদা ছয়টি টেনড্রিল ছিল, যেগুলো বাতাসে প্রবলভাবে নড়ছিল। যখন একজন নারীকে গাছটার ওপরে জমা হওয়া মিষ্টি তরল খেতে পাঠানো হয়, তখন তাঁকে আঁকড়ে ধরে টেনড্রিল। পাতাগুলো বন্ধ হয়ে আড়াল করে ফেলে মেয়েটিকে। তারপর গাছের গুঁড়ি বেয়ে নেমে আসে উদ্ভিদের রস আর মানুষের রক্তের একটি মিশেল।
একটা সময় পর্যন্ত গল্পগুলো যে বানানো, এটি পরিষ্কার ছিল না। বুয়েলের মানুষখেকো উদ্ভিদের বর্ণনার পর বাস্তব কিছু আশ্চর্য গাছের খবর মেলে। এর মধ্যে আছে ব্রেড ফ্রুট বা পাউরুটি ফলের গাছ, পিচার প্ল্যান্ট বা কলসগাছ এবং তিরের আগা বিষাক্ত করতে ব্যবহার করা হয় এমন বিষ তৈরি করে এমন গাছ ইত্যাদি। বুয়েল যদিও সন্দিহান ছিলেন, তবে তিনি লেখেন, নির্ভরযোগ্য অনেক অভিযাত্রী এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। লিচের কাহিনিটা বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও সংবাদপত্রে প্রকাশ পায়। কয়েক দশক পরে জানা যায় এটি আসলে বানানো।
তবে সত্যিকারের মাংসাশী গাছেরা কিন্তু এতটা ভয়ংকর নয়। আর তাদের কোনো ছোটখাটো প্রাণীকে খেয়ে ফেলার যুক্তিসংগত কারণও আছে। উদ্ভিদের নাইট্রোজেন প্রয়োজন। কিন্তু কিছু কিছু জায়গার মাটি অনুর্বর। এসব জায়গায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে ছোট ছোট প্রাণী ধরে। ছয় শতাধিক প্রজাতির উদ্ভিদ পোকামাকড়সহ ছোটখাটো প্রাণী খায় বলে জানা গেছে।
এসব উদ্ভিদের মধ্যে অস্বস্তিকর কিছু ব্যাপার আছে তাতে সন্দেহ নেই। পিচার প্ল্যান্ট বা কলস উদ্ভিদের কথা যদি ধরেন, ফাঁদে ফেলা পোকামাকড়টিকে হজম করতে অনেকটা অম্লীয় একটি তরল ব্যবহার করে। তবে তাদের কলস কখনো আবর্জনা উগরে দেয় না।
‘বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি পোকামাকড়ের শরীরের বিভিন্ন অংশে পূর্ণ হয়ে যায়। সবকিছু হজম করতে পারে না এরা,’ বলেন সান ডিয়েগো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে মাংসাশী উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা করা উদ্ভিদবিদ তানিয়া রেনার, ‘এটাকে অনেকটা শ্মশানের সঙ্গে তুলনা করতে পারেন।’
বড় আকারের কলস উদ্ভিদদের ইঁদুর পর্যন্ত খেয়ে ফেলার রেকর্ড আছে। তবে এটা এদের হজমের জন্য একটু বাড়াবাড়ি। সে ক্ষেত্রে বুঝতেই পারছেন একজন মানুষকে হজম করা আকাশকুসুম কল্পনাকে হার মানায়।
অবশ্য মানুষখেকো গাছ নিয়ে বহু গল্প-উপন্যাসও রচিত হয়েছে। যেমন—এ ধরনের একটি গল্পে দেখা যায় এক উদ্ভিদবিদ এমন একটি মাংসাশী উদ্ভিদ খুঁজে পেয়ে এটাকে লুকিয়ে এটার খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতেন। একপর্যায়ে নিজেই এর খাবারে পরিণত হন।
এইচ জি ওয়েলসের এক গল্পে রক্তখেকো একটি অর্কিডের শিকার হতে চলেছিলেন এক উদ্ভিদবিদ। সৌভাগ্যক্রমে হাউসকিপারের কল্যাণে বেঁচে যান। এদিকে হাওয়ার্ড আর গেরিসের ১৯০৫ সালে প্রকাশিত গল্প ‘প্রোফেসর জনকিন’স ক্যানিবাল প্ল্যান্টে’ দেখা যায় উদ্ভিদটি অধ্যাপককে খাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে ক্লোরোফরম দিয়ে গাছটিকে সাময়িক নিষ্ক্রিয় করে দেন অধ্যাপকের বন্ধু। শুধু তাই নয়, ওটার হজম করার কাজে ব্যবহার করা তরলে পৌঁছার আগেই তাঁকে সরিয়ে নেন বন্ধুটি।
এবার বরং মাংসাশী গাছদের ব্যাপারে কিছু তথ্য দেওয়া যাক। উদ্ভিদবিদ ও অভিযাত্রী ডালটন হুকার ১৮৫৯ যখন প্রথম কলস উদ্ভিদদের দেখেন, এদের পরিচয় করিয়ে দেন ‘আকর্ষণীয় এক সবজি হিসেবে’। তবে এই উদ্ভিদরা আসলেই কতটা অস্বাভাবিক, এটি প্রথম কারও নজরে আসে ১৮৬২ সালে।
আর এই পিচার প্ল্যান্ট বা কলস উদ্ভিদদের মধ্যে সবচেয়ে বড় নেপেনথেস রাজা। একই সঙ্গে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মাংসভোজী উদ্ভিদও এটি। কখনো কখনো একে ‘কলস উদ্ভিদের রাজা’ হিসেবেও পরিচয় করে দেওয়া হয়।
আপনি সাড়ে তিন লিটার পানি এবং আড়াই লিটার হজম করতে সক্ষম তরল সমৃদ্ধ একটি ফাঁদ বলতে পারেন একে। এটি পোকামাকড়কে তার দিকে আকৃষ্ট করে। যখন কোনো পোকামাকড় ওই তরলে পড়ে গিয়ে পালাতে ব্যর্থ হয় এবং উদ্ভিদটি একে হজম করে ফেলে। নেপেনথেস রাজা বা জায়ান্ট মালয়েশিয়ান পিচার প্ল্যান্টরা সাধারণত পোকামাকড়, যেমন পিঁপড়া ধরেই সন্তুষ্ট থাকে। তবে কখনো কখনো এদের ফাঁদে তুলনামূলক বড় শিকারও ধরা পড়ে।
কালেভদ্রে কলসের ভেতরে আধা হজম হওয়া ইঁদুর পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তেমনি ছোট পাখি, সরীসৃপ এমনকি ব্যাঙও শিকারে পরিণত হয় হঠাৎ হঠাৎ এই মাংসাশী উদ্ভিদের।
এই উদ্ভিদের অদ্ভুত এক সম্পর্ক আছে মালয়েশিয়ার জঙ্গলের গেছো ছুঁচোদের সঙ্গে। গেছো ছুঁচোদের আকৃষ্ট করে উদ্ভিদটির মধ্যে থাকা রস বা মধু। এই মধু পানের পাশাপাশি নিজেদের খাবারের এলাকা চিহ্নিত করতে গিয়ে গেছো ছুঁচোরা সরাসরি কলসের বা কাপের মধ্যে মল ত্যাগ করে। এটা এই মাংসাশী গাছদের গুরুত্বপূর্ণ নাইট্রোজেনের জোগান দেয়। ইঁদুর কিংবা পাখি কালেভদ্রে মিললেও ছুঁচোর মল নিয়মিতই জোটে। অবশ্য একই ধরনের একটি সম্পর্ক এই উদ্ভিদের সামিট রেট নামের একধরনের ইঁদুরেরও থাকে বলে জানা গেছে। অবশ্য সামিট রেট বা গেছো ছুঁচোরা কখনো এই উদ্ভিদের খাবারে পরিণত হয়েছে বলে জানা যায়নি।
কাজেই এখন পর্যন্ত যে তথ্য, তাতে মানুষখেকো গাছ তো দূরের কথা, হরিণ এমনকি খরগোশের মতো প্রাণী হজম করতে পারে এমন কোনো মাংসাশী উদ্ভিদের খোঁজ মেলেনি। তবে ঘটনা হলো, পৃথিবীতে নতুন নতুন অনেক কিছুর খোঁজই তো মেলে, যার অস্তিত্ব সম্পর্কে আগে মানুষের কোনো ধারণা ছিল না। তাই রহস্যময় প্রাণী বা উদ্ভিদে যাঁদের মাত্রাতিরিক্ত আগ্রহ তাঁরা ঠিক এই মুহূর্তে পৃথিবীর দুর্গম কোনো অরণ্যে এ ধরনের ভয়ংকর কোনো গাছ বড় শিকারের প্রতীক্ষায় আছে ফাঁদ পেতে, এমন তর্ক জুড়তেই পারেন।
সূত্র: অ্যাটলাস অবসকিউরা, উইকিপিডিয়া

কল্পনা করুন, গহিন এক জঙ্গলে আছেন। এ সময়ই একটি গাছের সামনে চলে এলেন, বিশাল পাতাগুলো কেমন যেন শুঁড়ের মতো। চারপাশ ভারী হয়ে আছে মিষ্টি এক গন্ধে। গাছটির নিচে কোনো একটি প্রাণীর কঙ্কাল পড়ে আছে। পাতাগুলো নড়ছে। এটা কি শুধুই বাতাসের কারণে? আরেকটু কাছে গেলেন, গাছের পাতাগুলো আপনার দিকে ঝুঁকে আসছে...। বিশাল মাংসখেকো কোনো গাছের চিন্তা যদি কোনোভাবে আপনার মস্তিষ্কে ঢুকে যায় তবে, একে সেখান থেকে বের করা মুশকিল। আফ্রিকা, মধ্য কিংবা দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলে এমন মানুষখেকো গাছের নানা গল্পগাথা ডালপালা মেলেছে ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে।
তবে শুনে আনন্দিত হবেন, মানুষকে খেয়ে ফলতে পারে এমন কোনো উদ্ভিদের অস্তিত্বে মোটেই বিশ্বাসী নয় বিজ্ঞান। এখন পর্যন্ত যে তথ্য মিলেছে, তাতে মাংসাশী যেকোনো গাছের জন্য একটা ইঁদুরই খাবার হিসেবে বেশ বড়। তবে মানুষ যুগে যুগে মানুষের রক্তের তৃষ্ণা আছে এমন উদ্ভিদকে কল্পনায়, গল্পে হাজির করেছে বারবারই।
মানুষখেকো গাছের গল্প ব্যাপকভাবে ছড়ানো শুরু করে ১৮৮০-র দশকে। সাধারণত গল্পগুলো এমন হতো, একজন সাহসী ইউরোপীয় দুর্গম কোনো দ্বীপে বা অরণ্যে হাজির হন। এ সময়ই অদ্ভুত কোনো একটি গাছের সামনে চলে আসেন। তারপরই দেখেন স্থানীয় কোনো অধিবাসী অসাবধানতাবশত ওই গাছের গ্রাসে পরিণত হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব গল্প সরাসরি যার অভিজ্ঞতা তার থেকে অন্য কেউ শুনে কিংবা তার থেকে আরও কেউ শুনে ছড়িয়ে দেন। এভাবে মূল কাহিনি অনেকটা ফুলেফেঁপে প্রকাশ পায়।
উদাহরণ হিসেবে ফিল রবিনসনের ১৮৮১ সালের বই আন্ডার দ্য পুনকাহ ট্রির কথা বলতে পারেন। লেখকের চাচা আশ্চর্য এক গাছ খুঁজে পান। ওটার বিশাল মোমের মতো ফুল, ফল রসে টইটম্বুর। পাতাগুলো ছোট্ট হাতের মতো খুলছে, বন্ধ হচ্ছে। একটি স্থানীয় কিশোর একটি হরিণকে তাড়া করতে গিয়ে গাছের লতাপাতার মাঝখানে চলে আসে। তারপর শ্বাসরোধ হয়ে আসছে এমন একটা ফ্যাসফ্যাসে চিৎকার। তারপর যে পাতাগুলোর ভেতরে ছিল ছেলেটি, সেগুলোর পাগলাটে নড়াচড়া চোখে পড়ে। এ ছাড়া জীবনের আর কোনো চিহ্ন নেই। জে ডব্লিউ বুয়েলের ‘সি অ্যান্ড ল্যান্ড’ প্রকাশ পায় ১৮৮৯ সালে। এর মধ্যে অভিযাত্রীদের মুখ থেকে শোনা মোটা গুঁড়ির এক গাছের গল্পও আছে, যে কিনা শিকার থেকে রক্ত শুষে নেয়, তারপর রক্তশূন্য দেহটাকে ছুড়ে দিয়ে নতুন শিকারের প্রতীক্ষায় থাকে।
তবে মানুষখেকো গাছের সবচেয়ে ভয়ানক গল্পটি ফার্স্ট হ্যান্ড অ্যাকাউন্ট বা সরাসরি যার অভিজ্ঞতা তাঁর বিবরণে পাওয়া। কার্ল লেচে নামের এক বিজ্ঞানী সংবাদপত্রগুলোকে বলেন এমন এক গাছের কথা, যেটার নিচের অংশ আনারসের মতো। এর দীর্ঘ, স্বাস্থ্যবান ও কাঁটাযুক্ত আটটি পাতা আছে, সাদা ছয়টি টেনড্রিল ছিল, যেগুলো বাতাসে প্রবলভাবে নড়ছিল। যখন একজন নারীকে গাছটার ওপরে জমা হওয়া মিষ্টি তরল খেতে পাঠানো হয়, তখন তাঁকে আঁকড়ে ধরে টেনড্রিল। পাতাগুলো বন্ধ হয়ে আড়াল করে ফেলে মেয়েটিকে। তারপর গাছের গুঁড়ি বেয়ে নেমে আসে উদ্ভিদের রস আর মানুষের রক্তের একটি মিশেল।
একটা সময় পর্যন্ত গল্পগুলো যে বানানো, এটি পরিষ্কার ছিল না। বুয়েলের মানুষখেকো উদ্ভিদের বর্ণনার পর বাস্তব কিছু আশ্চর্য গাছের খবর মেলে। এর মধ্যে আছে ব্রেড ফ্রুট বা পাউরুটি ফলের গাছ, পিচার প্ল্যান্ট বা কলসগাছ এবং তিরের আগা বিষাক্ত করতে ব্যবহার করা হয় এমন বিষ তৈরি করে এমন গাছ ইত্যাদি। বুয়েল যদিও সন্দিহান ছিলেন, তবে তিনি লেখেন, নির্ভরযোগ্য অনেক অভিযাত্রী এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। লিচের কাহিনিটা বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও সংবাদপত্রে প্রকাশ পায়। কয়েক দশক পরে জানা যায় এটি আসলে বানানো।
তবে সত্যিকারের মাংসাশী গাছেরা কিন্তু এতটা ভয়ংকর নয়। আর তাদের কোনো ছোটখাটো প্রাণীকে খেয়ে ফেলার যুক্তিসংগত কারণও আছে। উদ্ভিদের নাইট্রোজেন প্রয়োজন। কিন্তু কিছু কিছু জায়গার মাটি অনুর্বর। এসব জায়গায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে ছোট ছোট প্রাণী ধরে। ছয় শতাধিক প্রজাতির উদ্ভিদ পোকামাকড়সহ ছোটখাটো প্রাণী খায় বলে জানা গেছে।
এসব উদ্ভিদের মধ্যে অস্বস্তিকর কিছু ব্যাপার আছে তাতে সন্দেহ নেই। পিচার প্ল্যান্ট বা কলস উদ্ভিদের কথা যদি ধরেন, ফাঁদে ফেলা পোকামাকড়টিকে হজম করতে অনেকটা অম্লীয় একটি তরল ব্যবহার করে। তবে তাদের কলস কখনো আবর্জনা উগরে দেয় না।
‘বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি পোকামাকড়ের শরীরের বিভিন্ন অংশে পূর্ণ হয়ে যায়। সবকিছু হজম করতে পারে না এরা,’ বলেন সান ডিয়েগো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে মাংসাশী উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা করা উদ্ভিদবিদ তানিয়া রেনার, ‘এটাকে অনেকটা শ্মশানের সঙ্গে তুলনা করতে পারেন।’
বড় আকারের কলস উদ্ভিদদের ইঁদুর পর্যন্ত খেয়ে ফেলার রেকর্ড আছে। তবে এটা এদের হজমের জন্য একটু বাড়াবাড়ি। সে ক্ষেত্রে বুঝতেই পারছেন একজন মানুষকে হজম করা আকাশকুসুম কল্পনাকে হার মানায়।
অবশ্য মানুষখেকো গাছ নিয়ে বহু গল্প-উপন্যাসও রচিত হয়েছে। যেমন—এ ধরনের একটি গল্পে দেখা যায় এক উদ্ভিদবিদ এমন একটি মাংসাশী উদ্ভিদ খুঁজে পেয়ে এটাকে লুকিয়ে এটার খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতেন। একপর্যায়ে নিজেই এর খাবারে পরিণত হন।
এইচ জি ওয়েলসের এক গল্পে রক্তখেকো একটি অর্কিডের শিকার হতে চলেছিলেন এক উদ্ভিদবিদ। সৌভাগ্যক্রমে হাউসকিপারের কল্যাণে বেঁচে যান। এদিকে হাওয়ার্ড আর গেরিসের ১৯০৫ সালে প্রকাশিত গল্প ‘প্রোফেসর জনকিন’স ক্যানিবাল প্ল্যান্টে’ দেখা যায় উদ্ভিদটি অধ্যাপককে খাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে ক্লোরোফরম দিয়ে গাছটিকে সাময়িক নিষ্ক্রিয় করে দেন অধ্যাপকের বন্ধু। শুধু তাই নয়, ওটার হজম করার কাজে ব্যবহার করা তরলে পৌঁছার আগেই তাঁকে সরিয়ে নেন বন্ধুটি।
এবার বরং মাংসাশী গাছদের ব্যাপারে কিছু তথ্য দেওয়া যাক। উদ্ভিদবিদ ও অভিযাত্রী ডালটন হুকার ১৮৫৯ যখন প্রথম কলস উদ্ভিদদের দেখেন, এদের পরিচয় করিয়ে দেন ‘আকর্ষণীয় এক সবজি হিসেবে’। তবে এই উদ্ভিদরা আসলেই কতটা অস্বাভাবিক, এটি প্রথম কারও নজরে আসে ১৮৬২ সালে।
আর এই পিচার প্ল্যান্ট বা কলস উদ্ভিদদের মধ্যে সবচেয়ে বড় নেপেনথেস রাজা। একই সঙ্গে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মাংসভোজী উদ্ভিদও এটি। কখনো কখনো একে ‘কলস উদ্ভিদের রাজা’ হিসেবেও পরিচয় করে দেওয়া হয়।
আপনি সাড়ে তিন লিটার পানি এবং আড়াই লিটার হজম করতে সক্ষম তরল সমৃদ্ধ একটি ফাঁদ বলতে পারেন একে। এটি পোকামাকড়কে তার দিকে আকৃষ্ট করে। যখন কোনো পোকামাকড় ওই তরলে পড়ে গিয়ে পালাতে ব্যর্থ হয় এবং উদ্ভিদটি একে হজম করে ফেলে। নেপেনথেস রাজা বা জায়ান্ট মালয়েশিয়ান পিচার প্ল্যান্টরা সাধারণত পোকামাকড়, যেমন পিঁপড়া ধরেই সন্তুষ্ট থাকে। তবে কখনো কখনো এদের ফাঁদে তুলনামূলক বড় শিকারও ধরা পড়ে।
কালেভদ্রে কলসের ভেতরে আধা হজম হওয়া ইঁদুর পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তেমনি ছোট পাখি, সরীসৃপ এমনকি ব্যাঙও শিকারে পরিণত হয় হঠাৎ হঠাৎ এই মাংসাশী উদ্ভিদের।
এই উদ্ভিদের অদ্ভুত এক সম্পর্ক আছে মালয়েশিয়ার জঙ্গলের গেছো ছুঁচোদের সঙ্গে। গেছো ছুঁচোদের আকৃষ্ট করে উদ্ভিদটির মধ্যে থাকা রস বা মধু। এই মধু পানের পাশাপাশি নিজেদের খাবারের এলাকা চিহ্নিত করতে গিয়ে গেছো ছুঁচোরা সরাসরি কলসের বা কাপের মধ্যে মল ত্যাগ করে। এটা এই মাংসাশী গাছদের গুরুত্বপূর্ণ নাইট্রোজেনের জোগান দেয়। ইঁদুর কিংবা পাখি কালেভদ্রে মিললেও ছুঁচোর মল নিয়মিতই জোটে। অবশ্য একই ধরনের একটি সম্পর্ক এই উদ্ভিদের সামিট রেট নামের একধরনের ইঁদুরেরও থাকে বলে জানা গেছে। অবশ্য সামিট রেট বা গেছো ছুঁচোরা কখনো এই উদ্ভিদের খাবারে পরিণত হয়েছে বলে জানা যায়নি।
কাজেই এখন পর্যন্ত যে তথ্য, তাতে মানুষখেকো গাছ তো দূরের কথা, হরিণ এমনকি খরগোশের মতো প্রাণী হজম করতে পারে এমন কোনো মাংসাশী উদ্ভিদের খোঁজ মেলেনি। তবে ঘটনা হলো, পৃথিবীতে নতুন নতুন অনেক কিছুর খোঁজই তো মেলে, যার অস্তিত্ব সম্পর্কে আগে মানুষের কোনো ধারণা ছিল না। তাই রহস্যময় প্রাণী বা উদ্ভিদে যাঁদের মাত্রাতিরিক্ত আগ্রহ তাঁরা ঠিক এই মুহূর্তে পৃথিবীর দুর্গম কোনো অরণ্যে এ ধরনের ভয়ংকর কোনো গাছ বড় শিকারের প্রতীক্ষায় আছে ফাঁদ পেতে, এমন তর্ক জুড়তেই পারেন।
সূত্র: অ্যাটলাস অবসকিউরা, উইকিপিডিয়া
ইশতিয়াক হাসান

কল্পনা করুন, গহিন এক জঙ্গলে আছেন। এ সময়ই একটি গাছের সামনে চলে এলেন, বিশাল পাতাগুলো কেমন যেন শুঁড়ের মতো। চারপাশ ভারী হয়ে আছে মিষ্টি এক গন্ধে। গাছটির নিচে কোনো একটি প্রাণীর কঙ্কাল পড়ে আছে। পাতাগুলো নড়ছে। এটা কি শুধুই বাতাসের কারণে? আরেকটু কাছে গেলেন, গাছের পাতাগুলো আপনার দিকে ঝুঁকে আসছে...। বিশাল মাংসখেকো কোনো গাছের চিন্তা যদি কোনোভাবে আপনার মস্তিষ্কে ঢুকে যায় তবে, একে সেখান থেকে বের করা মুশকিল। আফ্রিকা, মধ্য কিংবা দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলে এমন মানুষখেকো গাছের নানা গল্পগাথা ডালপালা মেলেছে ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে।
তবে শুনে আনন্দিত হবেন, মানুষকে খেয়ে ফলতে পারে এমন কোনো উদ্ভিদের অস্তিত্বে মোটেই বিশ্বাসী নয় বিজ্ঞান। এখন পর্যন্ত যে তথ্য মিলেছে, তাতে মাংসাশী যেকোনো গাছের জন্য একটা ইঁদুরই খাবার হিসেবে বেশ বড়। তবে মানুষ যুগে যুগে মানুষের রক্তের তৃষ্ণা আছে এমন উদ্ভিদকে কল্পনায়, গল্পে হাজির করেছে বারবারই।
মানুষখেকো গাছের গল্প ব্যাপকভাবে ছড়ানো শুরু করে ১৮৮০-র দশকে। সাধারণত গল্পগুলো এমন হতো, একজন সাহসী ইউরোপীয় দুর্গম কোনো দ্বীপে বা অরণ্যে হাজির হন। এ সময়ই অদ্ভুত কোনো একটি গাছের সামনে চলে আসেন। তারপরই দেখেন স্থানীয় কোনো অধিবাসী অসাবধানতাবশত ওই গাছের গ্রাসে পরিণত হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব গল্প সরাসরি যার অভিজ্ঞতা তার থেকে অন্য কেউ শুনে কিংবা তার থেকে আরও কেউ শুনে ছড়িয়ে দেন। এভাবে মূল কাহিনি অনেকটা ফুলেফেঁপে প্রকাশ পায়।
উদাহরণ হিসেবে ফিল রবিনসনের ১৮৮১ সালের বই আন্ডার দ্য পুনকাহ ট্রির কথা বলতে পারেন। লেখকের চাচা আশ্চর্য এক গাছ খুঁজে পান। ওটার বিশাল মোমের মতো ফুল, ফল রসে টইটম্বুর। পাতাগুলো ছোট্ট হাতের মতো খুলছে, বন্ধ হচ্ছে। একটি স্থানীয় কিশোর একটি হরিণকে তাড়া করতে গিয়ে গাছের লতাপাতার মাঝখানে চলে আসে। তারপর শ্বাসরোধ হয়ে আসছে এমন একটা ফ্যাসফ্যাসে চিৎকার। তারপর যে পাতাগুলোর ভেতরে ছিল ছেলেটি, সেগুলোর পাগলাটে নড়াচড়া চোখে পড়ে। এ ছাড়া জীবনের আর কোনো চিহ্ন নেই। জে ডব্লিউ বুয়েলের ‘সি অ্যান্ড ল্যান্ড’ প্রকাশ পায় ১৮৮৯ সালে। এর মধ্যে অভিযাত্রীদের মুখ থেকে শোনা মোটা গুঁড়ির এক গাছের গল্পও আছে, যে কিনা শিকার থেকে রক্ত শুষে নেয়, তারপর রক্তশূন্য দেহটাকে ছুড়ে দিয়ে নতুন শিকারের প্রতীক্ষায় থাকে।
তবে মানুষখেকো গাছের সবচেয়ে ভয়ানক গল্পটি ফার্স্ট হ্যান্ড অ্যাকাউন্ট বা সরাসরি যার অভিজ্ঞতা তাঁর বিবরণে পাওয়া। কার্ল লেচে নামের এক বিজ্ঞানী সংবাদপত্রগুলোকে বলেন এমন এক গাছের কথা, যেটার নিচের অংশ আনারসের মতো। এর দীর্ঘ, স্বাস্থ্যবান ও কাঁটাযুক্ত আটটি পাতা আছে, সাদা ছয়টি টেনড্রিল ছিল, যেগুলো বাতাসে প্রবলভাবে নড়ছিল। যখন একজন নারীকে গাছটার ওপরে জমা হওয়া মিষ্টি তরল খেতে পাঠানো হয়, তখন তাঁকে আঁকড়ে ধরে টেনড্রিল। পাতাগুলো বন্ধ হয়ে আড়াল করে ফেলে মেয়েটিকে। তারপর গাছের গুঁড়ি বেয়ে নেমে আসে উদ্ভিদের রস আর মানুষের রক্তের একটি মিশেল।
একটা সময় পর্যন্ত গল্পগুলো যে বানানো, এটি পরিষ্কার ছিল না। বুয়েলের মানুষখেকো উদ্ভিদের বর্ণনার পর বাস্তব কিছু আশ্চর্য গাছের খবর মেলে। এর মধ্যে আছে ব্রেড ফ্রুট বা পাউরুটি ফলের গাছ, পিচার প্ল্যান্ট বা কলসগাছ এবং তিরের আগা বিষাক্ত করতে ব্যবহার করা হয় এমন বিষ তৈরি করে এমন গাছ ইত্যাদি। বুয়েল যদিও সন্দিহান ছিলেন, তবে তিনি লেখেন, নির্ভরযোগ্য অনেক অভিযাত্রী এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। লিচের কাহিনিটা বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও সংবাদপত্রে প্রকাশ পায়। কয়েক দশক পরে জানা যায় এটি আসলে বানানো।
তবে সত্যিকারের মাংসাশী গাছেরা কিন্তু এতটা ভয়ংকর নয়। আর তাদের কোনো ছোটখাটো প্রাণীকে খেয়ে ফেলার যুক্তিসংগত কারণও আছে। উদ্ভিদের নাইট্রোজেন প্রয়োজন। কিন্তু কিছু কিছু জায়গার মাটি অনুর্বর। এসব জায়গায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে ছোট ছোট প্রাণী ধরে। ছয় শতাধিক প্রজাতির উদ্ভিদ পোকামাকড়সহ ছোটখাটো প্রাণী খায় বলে জানা গেছে।
এসব উদ্ভিদের মধ্যে অস্বস্তিকর কিছু ব্যাপার আছে তাতে সন্দেহ নেই। পিচার প্ল্যান্ট বা কলস উদ্ভিদের কথা যদি ধরেন, ফাঁদে ফেলা পোকামাকড়টিকে হজম করতে অনেকটা অম্লীয় একটি তরল ব্যবহার করে। তবে তাদের কলস কখনো আবর্জনা উগরে দেয় না।
‘বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি পোকামাকড়ের শরীরের বিভিন্ন অংশে পূর্ণ হয়ে যায়। সবকিছু হজম করতে পারে না এরা,’ বলেন সান ডিয়েগো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে মাংসাশী উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা করা উদ্ভিদবিদ তানিয়া রেনার, ‘এটাকে অনেকটা শ্মশানের সঙ্গে তুলনা করতে পারেন।’
বড় আকারের কলস উদ্ভিদদের ইঁদুর পর্যন্ত খেয়ে ফেলার রেকর্ড আছে। তবে এটা এদের হজমের জন্য একটু বাড়াবাড়ি। সে ক্ষেত্রে বুঝতেই পারছেন একজন মানুষকে হজম করা আকাশকুসুম কল্পনাকে হার মানায়।
অবশ্য মানুষখেকো গাছ নিয়ে বহু গল্প-উপন্যাসও রচিত হয়েছে। যেমন—এ ধরনের একটি গল্পে দেখা যায় এক উদ্ভিদবিদ এমন একটি মাংসাশী উদ্ভিদ খুঁজে পেয়ে এটাকে লুকিয়ে এটার খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতেন। একপর্যায়ে নিজেই এর খাবারে পরিণত হন।
এইচ জি ওয়েলসের এক গল্পে রক্তখেকো একটি অর্কিডের শিকার হতে চলেছিলেন এক উদ্ভিদবিদ। সৌভাগ্যক্রমে হাউসকিপারের কল্যাণে বেঁচে যান। এদিকে হাওয়ার্ড আর গেরিসের ১৯০৫ সালে প্রকাশিত গল্প ‘প্রোফেসর জনকিন’স ক্যানিবাল প্ল্যান্টে’ দেখা যায় উদ্ভিদটি অধ্যাপককে খাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে ক্লোরোফরম দিয়ে গাছটিকে সাময়িক নিষ্ক্রিয় করে দেন অধ্যাপকের বন্ধু। শুধু তাই নয়, ওটার হজম করার কাজে ব্যবহার করা তরলে পৌঁছার আগেই তাঁকে সরিয়ে নেন বন্ধুটি।
এবার বরং মাংসাশী গাছদের ব্যাপারে কিছু তথ্য দেওয়া যাক। উদ্ভিদবিদ ও অভিযাত্রী ডালটন হুকার ১৮৫৯ যখন প্রথম কলস উদ্ভিদদের দেখেন, এদের পরিচয় করিয়ে দেন ‘আকর্ষণীয় এক সবজি হিসেবে’। তবে এই উদ্ভিদরা আসলেই কতটা অস্বাভাবিক, এটি প্রথম কারও নজরে আসে ১৮৬২ সালে।
আর এই পিচার প্ল্যান্ট বা কলস উদ্ভিদদের মধ্যে সবচেয়ে বড় নেপেনথেস রাজা। একই সঙ্গে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মাংসভোজী উদ্ভিদও এটি। কখনো কখনো একে ‘কলস উদ্ভিদের রাজা’ হিসেবেও পরিচয় করে দেওয়া হয়।
আপনি সাড়ে তিন লিটার পানি এবং আড়াই লিটার হজম করতে সক্ষম তরল সমৃদ্ধ একটি ফাঁদ বলতে পারেন একে। এটি পোকামাকড়কে তার দিকে আকৃষ্ট করে। যখন কোনো পোকামাকড় ওই তরলে পড়ে গিয়ে পালাতে ব্যর্থ হয় এবং উদ্ভিদটি একে হজম করে ফেলে। নেপেনথেস রাজা বা জায়ান্ট মালয়েশিয়ান পিচার প্ল্যান্টরা সাধারণত পোকামাকড়, যেমন পিঁপড়া ধরেই সন্তুষ্ট থাকে। তবে কখনো কখনো এদের ফাঁদে তুলনামূলক বড় শিকারও ধরা পড়ে।
কালেভদ্রে কলসের ভেতরে আধা হজম হওয়া ইঁদুর পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তেমনি ছোট পাখি, সরীসৃপ এমনকি ব্যাঙও শিকারে পরিণত হয় হঠাৎ হঠাৎ এই মাংসাশী উদ্ভিদের।
এই উদ্ভিদের অদ্ভুত এক সম্পর্ক আছে মালয়েশিয়ার জঙ্গলের গেছো ছুঁচোদের সঙ্গে। গেছো ছুঁচোদের আকৃষ্ট করে উদ্ভিদটির মধ্যে থাকা রস বা মধু। এই মধু পানের পাশাপাশি নিজেদের খাবারের এলাকা চিহ্নিত করতে গিয়ে গেছো ছুঁচোরা সরাসরি কলসের বা কাপের মধ্যে মল ত্যাগ করে। এটা এই মাংসাশী গাছদের গুরুত্বপূর্ণ নাইট্রোজেনের জোগান দেয়। ইঁদুর কিংবা পাখি কালেভদ্রে মিললেও ছুঁচোর মল নিয়মিতই জোটে। অবশ্য একই ধরনের একটি সম্পর্ক এই উদ্ভিদের সামিট রেট নামের একধরনের ইঁদুরেরও থাকে বলে জানা গেছে। অবশ্য সামিট রেট বা গেছো ছুঁচোরা কখনো এই উদ্ভিদের খাবারে পরিণত হয়েছে বলে জানা যায়নি।
কাজেই এখন পর্যন্ত যে তথ্য, তাতে মানুষখেকো গাছ তো দূরের কথা, হরিণ এমনকি খরগোশের মতো প্রাণী হজম করতে পারে এমন কোনো মাংসাশী উদ্ভিদের খোঁজ মেলেনি। তবে ঘটনা হলো, পৃথিবীতে নতুন নতুন অনেক কিছুর খোঁজই তো মেলে, যার অস্তিত্ব সম্পর্কে আগে মানুষের কোনো ধারণা ছিল না। তাই রহস্যময় প্রাণী বা উদ্ভিদে যাঁদের মাত্রাতিরিক্ত আগ্রহ তাঁরা ঠিক এই মুহূর্তে পৃথিবীর দুর্গম কোনো অরণ্যে এ ধরনের ভয়ংকর কোনো গাছ বড় শিকারের প্রতীক্ষায় আছে ফাঁদ পেতে, এমন তর্ক জুড়তেই পারেন।
সূত্র: অ্যাটলাস অবসকিউরা, উইকিপিডিয়া

কল্পনা করুন, গহিন এক জঙ্গলে আছেন। এ সময়ই একটি গাছের সামনে চলে এলেন, বিশাল পাতাগুলো কেমন যেন শুঁড়ের মতো। চারপাশ ভারী হয়ে আছে মিষ্টি এক গন্ধে। গাছটির নিচে কোনো একটি প্রাণীর কঙ্কাল পড়ে আছে। পাতাগুলো নড়ছে। এটা কি শুধুই বাতাসের কারণে? আরেকটু কাছে গেলেন, গাছের পাতাগুলো আপনার দিকে ঝুঁকে আসছে...। বিশাল মাংসখেকো কোনো গাছের চিন্তা যদি কোনোভাবে আপনার মস্তিষ্কে ঢুকে যায় তবে, একে সেখান থেকে বের করা মুশকিল। আফ্রিকা, মধ্য কিংবা দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলে এমন মানুষখেকো গাছের নানা গল্পগাথা ডালপালা মেলেছে ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে।
তবে শুনে আনন্দিত হবেন, মানুষকে খেয়ে ফলতে পারে এমন কোনো উদ্ভিদের অস্তিত্বে মোটেই বিশ্বাসী নয় বিজ্ঞান। এখন পর্যন্ত যে তথ্য মিলেছে, তাতে মাংসাশী যেকোনো গাছের জন্য একটা ইঁদুরই খাবার হিসেবে বেশ বড়। তবে মানুষ যুগে যুগে মানুষের রক্তের তৃষ্ণা আছে এমন উদ্ভিদকে কল্পনায়, গল্পে হাজির করেছে বারবারই।
মানুষখেকো গাছের গল্প ব্যাপকভাবে ছড়ানো শুরু করে ১৮৮০-র দশকে। সাধারণত গল্পগুলো এমন হতো, একজন সাহসী ইউরোপীয় দুর্গম কোনো দ্বীপে বা অরণ্যে হাজির হন। এ সময়ই অদ্ভুত কোনো একটি গাছের সামনে চলে আসেন। তারপরই দেখেন স্থানীয় কোনো অধিবাসী অসাবধানতাবশত ওই গাছের গ্রাসে পরিণত হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব গল্প সরাসরি যার অভিজ্ঞতা তার থেকে অন্য কেউ শুনে কিংবা তার থেকে আরও কেউ শুনে ছড়িয়ে দেন। এভাবে মূল কাহিনি অনেকটা ফুলেফেঁপে প্রকাশ পায়।
উদাহরণ হিসেবে ফিল রবিনসনের ১৮৮১ সালের বই আন্ডার দ্য পুনকাহ ট্রির কথা বলতে পারেন। লেখকের চাচা আশ্চর্য এক গাছ খুঁজে পান। ওটার বিশাল মোমের মতো ফুল, ফল রসে টইটম্বুর। পাতাগুলো ছোট্ট হাতের মতো খুলছে, বন্ধ হচ্ছে। একটি স্থানীয় কিশোর একটি হরিণকে তাড়া করতে গিয়ে গাছের লতাপাতার মাঝখানে চলে আসে। তারপর শ্বাসরোধ হয়ে আসছে এমন একটা ফ্যাসফ্যাসে চিৎকার। তারপর যে পাতাগুলোর ভেতরে ছিল ছেলেটি, সেগুলোর পাগলাটে নড়াচড়া চোখে পড়ে। এ ছাড়া জীবনের আর কোনো চিহ্ন নেই। জে ডব্লিউ বুয়েলের ‘সি অ্যান্ড ল্যান্ড’ প্রকাশ পায় ১৮৮৯ সালে। এর মধ্যে অভিযাত্রীদের মুখ থেকে শোনা মোটা গুঁড়ির এক গাছের গল্পও আছে, যে কিনা শিকার থেকে রক্ত শুষে নেয়, তারপর রক্তশূন্য দেহটাকে ছুড়ে দিয়ে নতুন শিকারের প্রতীক্ষায় থাকে।
তবে মানুষখেকো গাছের সবচেয়ে ভয়ানক গল্পটি ফার্স্ট হ্যান্ড অ্যাকাউন্ট বা সরাসরি যার অভিজ্ঞতা তাঁর বিবরণে পাওয়া। কার্ল লেচে নামের এক বিজ্ঞানী সংবাদপত্রগুলোকে বলেন এমন এক গাছের কথা, যেটার নিচের অংশ আনারসের মতো। এর দীর্ঘ, স্বাস্থ্যবান ও কাঁটাযুক্ত আটটি পাতা আছে, সাদা ছয়টি টেনড্রিল ছিল, যেগুলো বাতাসে প্রবলভাবে নড়ছিল। যখন একজন নারীকে গাছটার ওপরে জমা হওয়া মিষ্টি তরল খেতে পাঠানো হয়, তখন তাঁকে আঁকড়ে ধরে টেনড্রিল। পাতাগুলো বন্ধ হয়ে আড়াল করে ফেলে মেয়েটিকে। তারপর গাছের গুঁড়ি বেয়ে নেমে আসে উদ্ভিদের রস আর মানুষের রক্তের একটি মিশেল।
একটা সময় পর্যন্ত গল্পগুলো যে বানানো, এটি পরিষ্কার ছিল না। বুয়েলের মানুষখেকো উদ্ভিদের বর্ণনার পর বাস্তব কিছু আশ্চর্য গাছের খবর মেলে। এর মধ্যে আছে ব্রেড ফ্রুট বা পাউরুটি ফলের গাছ, পিচার প্ল্যান্ট বা কলসগাছ এবং তিরের আগা বিষাক্ত করতে ব্যবহার করা হয় এমন বিষ তৈরি করে এমন গাছ ইত্যাদি। বুয়েল যদিও সন্দিহান ছিলেন, তবে তিনি লেখেন, নির্ভরযোগ্য অনেক অভিযাত্রী এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। লিচের কাহিনিটা বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও সংবাদপত্রে প্রকাশ পায়। কয়েক দশক পরে জানা যায় এটি আসলে বানানো।
তবে সত্যিকারের মাংসাশী গাছেরা কিন্তু এতটা ভয়ংকর নয়। আর তাদের কোনো ছোটখাটো প্রাণীকে খেয়ে ফেলার যুক্তিসংগত কারণও আছে। উদ্ভিদের নাইট্রোজেন প্রয়োজন। কিন্তু কিছু কিছু জায়গার মাটি অনুর্বর। এসব জায়গায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে ছোট ছোট প্রাণী ধরে। ছয় শতাধিক প্রজাতির উদ্ভিদ পোকামাকড়সহ ছোটখাটো প্রাণী খায় বলে জানা গেছে।
এসব উদ্ভিদের মধ্যে অস্বস্তিকর কিছু ব্যাপার আছে তাতে সন্দেহ নেই। পিচার প্ল্যান্ট বা কলস উদ্ভিদের কথা যদি ধরেন, ফাঁদে ফেলা পোকামাকড়টিকে হজম করতে অনেকটা অম্লীয় একটি তরল ব্যবহার করে। তবে তাদের কলস কখনো আবর্জনা উগরে দেয় না।
‘বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি পোকামাকড়ের শরীরের বিভিন্ন অংশে পূর্ণ হয়ে যায়। সবকিছু হজম করতে পারে না এরা,’ বলেন সান ডিয়েগো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে মাংসাশী উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা করা উদ্ভিদবিদ তানিয়া রেনার, ‘এটাকে অনেকটা শ্মশানের সঙ্গে তুলনা করতে পারেন।’
বড় আকারের কলস উদ্ভিদদের ইঁদুর পর্যন্ত খেয়ে ফেলার রেকর্ড আছে। তবে এটা এদের হজমের জন্য একটু বাড়াবাড়ি। সে ক্ষেত্রে বুঝতেই পারছেন একজন মানুষকে হজম করা আকাশকুসুম কল্পনাকে হার মানায়।
অবশ্য মানুষখেকো গাছ নিয়ে বহু গল্প-উপন্যাসও রচিত হয়েছে। যেমন—এ ধরনের একটি গল্পে দেখা যায় এক উদ্ভিদবিদ এমন একটি মাংসাশী উদ্ভিদ খুঁজে পেয়ে এটাকে লুকিয়ে এটার খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতেন। একপর্যায়ে নিজেই এর খাবারে পরিণত হন।
এইচ জি ওয়েলসের এক গল্পে রক্তখেকো একটি অর্কিডের শিকার হতে চলেছিলেন এক উদ্ভিদবিদ। সৌভাগ্যক্রমে হাউসকিপারের কল্যাণে বেঁচে যান। এদিকে হাওয়ার্ড আর গেরিসের ১৯০৫ সালে প্রকাশিত গল্প ‘প্রোফেসর জনকিন’স ক্যানিবাল প্ল্যান্টে’ দেখা যায় উদ্ভিদটি অধ্যাপককে খাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে ক্লোরোফরম দিয়ে গাছটিকে সাময়িক নিষ্ক্রিয় করে দেন অধ্যাপকের বন্ধু। শুধু তাই নয়, ওটার হজম করার কাজে ব্যবহার করা তরলে পৌঁছার আগেই তাঁকে সরিয়ে নেন বন্ধুটি।
এবার বরং মাংসাশী গাছদের ব্যাপারে কিছু তথ্য দেওয়া যাক। উদ্ভিদবিদ ও অভিযাত্রী ডালটন হুকার ১৮৫৯ যখন প্রথম কলস উদ্ভিদদের দেখেন, এদের পরিচয় করিয়ে দেন ‘আকর্ষণীয় এক সবজি হিসেবে’। তবে এই উদ্ভিদরা আসলেই কতটা অস্বাভাবিক, এটি প্রথম কারও নজরে আসে ১৮৬২ সালে।
আর এই পিচার প্ল্যান্ট বা কলস উদ্ভিদদের মধ্যে সবচেয়ে বড় নেপেনথেস রাজা। একই সঙ্গে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মাংসভোজী উদ্ভিদও এটি। কখনো কখনো একে ‘কলস উদ্ভিদের রাজা’ হিসেবেও পরিচয় করে দেওয়া হয়।
আপনি সাড়ে তিন লিটার পানি এবং আড়াই লিটার হজম করতে সক্ষম তরল সমৃদ্ধ একটি ফাঁদ বলতে পারেন একে। এটি পোকামাকড়কে তার দিকে আকৃষ্ট করে। যখন কোনো পোকামাকড় ওই তরলে পড়ে গিয়ে পালাতে ব্যর্থ হয় এবং উদ্ভিদটি একে হজম করে ফেলে। নেপেনথেস রাজা বা জায়ান্ট মালয়েশিয়ান পিচার প্ল্যান্টরা সাধারণত পোকামাকড়, যেমন পিঁপড়া ধরেই সন্তুষ্ট থাকে। তবে কখনো কখনো এদের ফাঁদে তুলনামূলক বড় শিকারও ধরা পড়ে।
কালেভদ্রে কলসের ভেতরে আধা হজম হওয়া ইঁদুর পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তেমনি ছোট পাখি, সরীসৃপ এমনকি ব্যাঙও শিকারে পরিণত হয় হঠাৎ হঠাৎ এই মাংসাশী উদ্ভিদের।
এই উদ্ভিদের অদ্ভুত এক সম্পর্ক আছে মালয়েশিয়ার জঙ্গলের গেছো ছুঁচোদের সঙ্গে। গেছো ছুঁচোদের আকৃষ্ট করে উদ্ভিদটির মধ্যে থাকা রস বা মধু। এই মধু পানের পাশাপাশি নিজেদের খাবারের এলাকা চিহ্নিত করতে গিয়ে গেছো ছুঁচোরা সরাসরি কলসের বা কাপের মধ্যে মল ত্যাগ করে। এটা এই মাংসাশী গাছদের গুরুত্বপূর্ণ নাইট্রোজেনের জোগান দেয়। ইঁদুর কিংবা পাখি কালেভদ্রে মিললেও ছুঁচোর মল নিয়মিতই জোটে। অবশ্য একই ধরনের একটি সম্পর্ক এই উদ্ভিদের সামিট রেট নামের একধরনের ইঁদুরেরও থাকে বলে জানা গেছে। অবশ্য সামিট রেট বা গেছো ছুঁচোরা কখনো এই উদ্ভিদের খাবারে পরিণত হয়েছে বলে জানা যায়নি।
কাজেই এখন পর্যন্ত যে তথ্য, তাতে মানুষখেকো গাছ তো দূরের কথা, হরিণ এমনকি খরগোশের মতো প্রাণী হজম করতে পারে এমন কোনো মাংসাশী উদ্ভিদের খোঁজ মেলেনি। তবে ঘটনা হলো, পৃথিবীতে নতুন নতুন অনেক কিছুর খোঁজই তো মেলে, যার অস্তিত্ব সম্পর্কে আগে মানুষের কোনো ধারণা ছিল না। তাই রহস্যময় প্রাণী বা উদ্ভিদে যাঁদের মাত্রাতিরিক্ত আগ্রহ তাঁরা ঠিক এই মুহূর্তে পৃথিবীর দুর্গম কোনো অরণ্যে এ ধরনের ভয়ংকর কোনো গাছ বড় শিকারের প্রতীক্ষায় আছে ফাঁদ পেতে, এমন তর্ক জুড়তেই পারেন।
সূত্র: অ্যাটলাস অবসকিউরা, উইকিপিডিয়া

শিশুদের কয়েন মুখে দেওয়া বা গিলে ফেলা নতুন কিছু নয়। চোখের পলকে এই অঘটন অনেক শিশুই ঘটিয়ে ফেলে। পরে অনেককে দৌড়াতে হয় হাসপাতালে, আবার অনেকের স্বাভাবিক নিয়মে তা মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে।
৪ দিন আগে
২০২০ সালের হ্যালোইন রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের গ্রিনভিলে এক অবিশ্বাস্য ঘটনার মুখোমুখি হন ক্রিস্টোফার লি টেইলর। সেই রাতে স্ত্রীর বোনের বাড়িতে হ্যালোইন পার্টিতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের।
৬ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে বলা হয় পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রবাল রিফ। প্রশান্ত মহাসাগরের কোরাল সাগরের এই প্রবাল রিফের কাছাকাছি এক দ্বীপে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ৮০ বছর বয়সী এক নারী পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।
৮ দিন আগে
চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন।
১১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শিশুদের কয়েন মুখে দেওয়া বা গিলে ফেলা নতুন কিছু নয়। চোখের পলকে এই অঘটন অনেক শিশুই ঘটিয়ে ফেলে। পরে অনেককে দৌড়াতে হয় হাসপাতালে, আবার অনেকের স্বাভাবিক নিয়মে তা মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে। এদিকে চীনের ১১ বছর বয়সী এক শিশু গিলে ফেলেছে সোনার দানা (গোল্ড বিন)। যার বাজারমূল্য ১০ হাজার ইউয়ান (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ৭২ হাজার ২৫ টাকা)।
দক্ষিণ-পূর্ব চীনের জিয়াংসু প্রদেশের কুনশানের বাসিন্দা জি গত ১৭ অক্টোবর ১০ গ্রামের একটি সোনার দানা কেনেন। কয়েক দিন পর ২২ অক্টোবর তাঁর ছেলে সোনার দানাটি হাতে পেয়ে খেলতে খেলতে হঠাৎ গিলে ফেলে।
এ সময় জি বারান্দায় কাপড় ধুচ্ছিলেন। তাঁর ছেলে আতঙ্কিত হয়ে ছুটে এসে জানায়, সে গোল্ড বিনটি গিলে ফেলেছে। তার ভয় হচ্ছে সে কি এখন মারা যাবে!
জিকে তাঁর ছেলে আরও জানায়, জিব দিয়ে স্বাদ পরীক্ষা করার সময় সে সোনার দানাটি গিলে ফেলেছে।
প্রথমে জি ভেবেছিলেন, ছেলে মজা করছে। পরে দেখেন সোনার দানাটি নেই। তখন তিনি চিন্তায় পড়ে যান।
জির তখন মনে পড়ে, তাঁর ভাগনিও একবার একটি কয়েন গিলে ফেলেছিল। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলেছিলেন, এটি গুরুতর কিছু নয়। মলের সঙ্গে বের হয়ে যাবে।
জি মাথা ঠান্ডা করে ভাবতে থাকেন কী করা যায়। ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি করে তিনি দেখেন, সোনার জিনিসও একইভাবে মলের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে পারে।
এরপর জি ছেলেকে চোখে চোখে রাখতে থাকেন হারানো এই মূল্যবান সম্পদ উদ্ধারের আশায়। ছেলেকে সতর্ক করতে থাকেন বাইরে মলত্যাগ না করে ঘরে নির্ধারিত স্থানে করতে। কারণ, মলের সঙ্গে সোনার দানাটি বের হয়ে আসবে। তা সত্ত্বেও টানা পাঁচ দিন ধরে দিনে দুবার পরীক্ষা করেও সোনাটি পাওয়া যায়নি।
পরে গত ২৬ অক্টোবর ছেলেকে কুনশান ফিফথ পিপলস হাসপাতালে নিয়ে যান জি। পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা দেখেন, শিশুটির পেটে একটি বস্তু রয়েছে। তবে শিশুটির কোনো ব্যথা বা বমির লক্ষণ ছিল না।
পরে সেদিন সন্ধ্যায় সোনার দানাটি নিরাপদে বের হয়। তবে এটি কি স্বাভাবিকভাবে বের হয়েছে নাকি চিকিৎসার মাধ্যমে বের করা হয়েছে, তা সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে বলা হয়নি।

শিশুদের কয়েন মুখে দেওয়া বা গিলে ফেলা নতুন কিছু নয়। চোখের পলকে এই অঘটন অনেক শিশুই ঘটিয়ে ফেলে। পরে অনেককে দৌড়াতে হয় হাসপাতালে, আবার অনেকের স্বাভাবিক নিয়মে তা মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে। এদিকে চীনের ১১ বছর বয়সী এক শিশু গিলে ফেলেছে সোনার দানা (গোল্ড বিন)। যার বাজারমূল্য ১০ হাজার ইউয়ান (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ৭২ হাজার ২৫ টাকা)।
দক্ষিণ-পূর্ব চীনের জিয়াংসু প্রদেশের কুনশানের বাসিন্দা জি গত ১৭ অক্টোবর ১০ গ্রামের একটি সোনার দানা কেনেন। কয়েক দিন পর ২২ অক্টোবর তাঁর ছেলে সোনার দানাটি হাতে পেয়ে খেলতে খেলতে হঠাৎ গিলে ফেলে।
এ সময় জি বারান্দায় কাপড় ধুচ্ছিলেন। তাঁর ছেলে আতঙ্কিত হয়ে ছুটে এসে জানায়, সে গোল্ড বিনটি গিলে ফেলেছে। তার ভয় হচ্ছে সে কি এখন মারা যাবে!
জিকে তাঁর ছেলে আরও জানায়, জিব দিয়ে স্বাদ পরীক্ষা করার সময় সে সোনার দানাটি গিলে ফেলেছে।
প্রথমে জি ভেবেছিলেন, ছেলে মজা করছে। পরে দেখেন সোনার দানাটি নেই। তখন তিনি চিন্তায় পড়ে যান।
জির তখন মনে পড়ে, তাঁর ভাগনিও একবার একটি কয়েন গিলে ফেলেছিল। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলেছিলেন, এটি গুরুতর কিছু নয়। মলের সঙ্গে বের হয়ে যাবে।
জি মাথা ঠান্ডা করে ভাবতে থাকেন কী করা যায়। ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি করে তিনি দেখেন, সোনার জিনিসও একইভাবে মলের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে পারে।
এরপর জি ছেলেকে চোখে চোখে রাখতে থাকেন হারানো এই মূল্যবান সম্পদ উদ্ধারের আশায়। ছেলেকে সতর্ক করতে থাকেন বাইরে মলত্যাগ না করে ঘরে নির্ধারিত স্থানে করতে। কারণ, মলের সঙ্গে সোনার দানাটি বের হয়ে আসবে। তা সত্ত্বেও টানা পাঁচ দিন ধরে দিনে দুবার পরীক্ষা করেও সোনাটি পাওয়া যায়নি।
পরে গত ২৬ অক্টোবর ছেলেকে কুনশান ফিফথ পিপলস হাসপাতালে নিয়ে যান জি। পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা দেখেন, শিশুটির পেটে একটি বস্তু রয়েছে। তবে শিশুটির কোনো ব্যথা বা বমির লক্ষণ ছিল না।
পরে সেদিন সন্ধ্যায় সোনার দানাটি নিরাপদে বের হয়। তবে এটি কি স্বাভাবিকভাবে বের হয়েছে নাকি চিকিৎসার মাধ্যমে বের করা হয়েছে, তা সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে বলা হয়নি।

কল্পনা করুন, গহিন এক জঙ্গলে আছেন। এ সময়ই একটি গাছের সামনে চলে এলেন, বিশাল পাতাগুলো কেমন যেন শুঁড়ের মতো। চারপাশ ভারী হয়ে আছে মিষ্টি এক গন্ধে। গাছটির নিচে কোনো একটি প্রাণীর কঙ্কাল পড়ে আছে। পাতাগুলো নড়ছে। এটা কি শুধুই বাতাসের কারণে? আরেকটি কাছে গেলেন, গাছের পাতাগুলো আপনার দিকে ঝুঁকে আসছে...। বিশাল মাংস
২২ এপ্রিল ২০২৩
২০২০ সালের হ্যালোইন রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের গ্রিনভিলে এক অবিশ্বাস্য ঘটনার মুখোমুখি হন ক্রিস্টোফার লি টেইলর। সেই রাতে স্ত্রীর বোনের বাড়িতে হ্যালোইন পার্টিতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের।
৬ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে বলা হয় পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রবাল রিফ। প্রশান্ত মহাসাগরের কোরাল সাগরের এই প্রবাল রিফের কাছাকাছি এক দ্বীপে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ৮০ বছর বয়সী এক নারী পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।
৮ দিন আগে
চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন।
১১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২০২০ সালের হ্যালোইন রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের গ্রিনভিলে এক অবিশ্বাস্য ঘটনার মুখোমুখি হন ক্রিস্টোফার লি টেইলর। সেই রাতে স্ত্রীর বোনের বাড়িতে হ্যালোইন পার্টিতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। আর হ্যালোইনের বিশেষ পোশাক হিসেবে টেইলরের কাছে সেদিন বিকল্প ছিল মাত্র দুটো—তাঁকে হয় যিশুখ্রিষ্ট সাজতে হবে, নয়তো অ্যামাজন প্রাইম সিরিজ দ্য বয়েজ-এর কুখ্যাত সুপারহিরো ‘হোমল্যান্ডার’। কিছুটা অস্বস্তি নিয়ে শেষ পর্যন্ত সুপারহিরোর পোশাকটিই বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য গার্ডিয়ানে টেইলর লিখেছেন, সেদিন অন্য এক চরিত্র ‘স্টারলাইট’ সেজে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তাঁর স্ত্রী চেলসি। তাঁদের দুই সন্তানও ছিল গাড়িতে—তাদের একজন সেজেছিল ‘আয়রন ম্যান’ আর অন্যজন ‘ড্রাগন’।
যাত্রাপথে হঠাৎ তাঁরা দেখতে পান একটি বাড়ি থেকে আগুনের শিখা বের হচ্ছে। টেইলর তখনই তাঁর স্ত্রী চেলসিকে বলেন, ‘গাড়ি থামাও, আর ৯১১-এ ফোন দাও।’ তিনি দৌড়ে চলে যান জ্বলন্ত বাড়ির দিকে।
বাড়িটির সামনে কয়েকজন মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলেন, কিন্তু তাঁরা শুধু আগুনের ধ্বংসযজ্ঞ দেখেই যাচ্ছিলেন, যেন কারওরই কিছু করার নেই। টেইলর তাঁদের কাছে জানতে চান—ভেতরে কেউ আছে কি না। উত্তর আসে, ‘জানি না।’
টেইলর অবশ্য দৌড়ে বাড়িটির আরও কাছে এগিয়ে যান এবং দরজা খুলে ডাক দেন, ‘কেউ আছেন?’ ভেতর থেকে ক্ষীণ একটি আওয়াজও ভেসে আসে। দেরি না করে তখনই দৌড়ে আগুনের ভেতরে ঢুকে পড়েন তিনি।
ভেতরে প্রবল ধোঁয়া ও তাপ সহ্য করেই সিঁড়ি বেয়ে ওপরে গিয়ে টেইলর দেখতে পান এক ব্যক্তি অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। সময় নষ্ট না করে তিনি প্রায় ছয় লম্বা ওই লোকটিকে বহন করে রাস্তায় নিয়ে আসেন।
লোকটির জ্ঞান ফিরে আসার পর অবশ্য পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসও আসে। কিন্তু টেইলর তখন নিজের অদ্ভুত বেশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে কোনো রকমে পালিয়ে আসেন।
তবে টেইলরের এই জীবন বাঁচানোর খবরটি আর চাপা থাকে না। এই ঘটনার পর সবাই তাঁকে ‘সুপারহিরো’ বলে সবাই ডাকতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে ‘কার্নেগি মেডেল ফর হিরোইজম’ পান তিনি এবং ওহাইও ফায়ার সার্ভিস হল অব ফেমে তাঁর নাম ওঠে। পাঁচ বছর পরও তাঁর সন্তানেরা গর্ব করে বলে—‘আমার বাবা সত্যিকারের সুপারহিরো।’
এমনকি দ্য বয়েজ সিরিজে হোমল্যান্ডারের চরিত্রে অভিনয় করা অ্যান্টনি স্টার তাঁর গল্পটি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে লিখেছিলেন, ‘এর চেয়ে গর্বিত মুহূর্ত আর হতে পারে না।’

২০২০ সালের হ্যালোইন রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের গ্রিনভিলে এক অবিশ্বাস্য ঘটনার মুখোমুখি হন ক্রিস্টোফার লি টেইলর। সেই রাতে স্ত্রীর বোনের বাড়িতে হ্যালোইন পার্টিতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। আর হ্যালোইনের বিশেষ পোশাক হিসেবে টেইলরের কাছে সেদিন বিকল্প ছিল মাত্র দুটো—তাঁকে হয় যিশুখ্রিষ্ট সাজতে হবে, নয়তো অ্যামাজন প্রাইম সিরিজ দ্য বয়েজ-এর কুখ্যাত সুপারহিরো ‘হোমল্যান্ডার’। কিছুটা অস্বস্তি নিয়ে শেষ পর্যন্ত সুপারহিরোর পোশাকটিই বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য গার্ডিয়ানে টেইলর লিখেছেন, সেদিন অন্য এক চরিত্র ‘স্টারলাইট’ সেজে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তাঁর স্ত্রী চেলসি। তাঁদের দুই সন্তানও ছিল গাড়িতে—তাদের একজন সেজেছিল ‘আয়রন ম্যান’ আর অন্যজন ‘ড্রাগন’।
যাত্রাপথে হঠাৎ তাঁরা দেখতে পান একটি বাড়ি থেকে আগুনের শিখা বের হচ্ছে। টেইলর তখনই তাঁর স্ত্রী চেলসিকে বলেন, ‘গাড়ি থামাও, আর ৯১১-এ ফোন দাও।’ তিনি দৌড়ে চলে যান জ্বলন্ত বাড়ির দিকে।
বাড়িটির সামনে কয়েকজন মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলেন, কিন্তু তাঁরা শুধু আগুনের ধ্বংসযজ্ঞ দেখেই যাচ্ছিলেন, যেন কারওরই কিছু করার নেই। টেইলর তাঁদের কাছে জানতে চান—ভেতরে কেউ আছে কি না। উত্তর আসে, ‘জানি না।’
টেইলর অবশ্য দৌড়ে বাড়িটির আরও কাছে এগিয়ে যান এবং দরজা খুলে ডাক দেন, ‘কেউ আছেন?’ ভেতর থেকে ক্ষীণ একটি আওয়াজও ভেসে আসে। দেরি না করে তখনই দৌড়ে আগুনের ভেতরে ঢুকে পড়েন তিনি।
ভেতরে প্রবল ধোঁয়া ও তাপ সহ্য করেই সিঁড়ি বেয়ে ওপরে গিয়ে টেইলর দেখতে পান এক ব্যক্তি অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। সময় নষ্ট না করে তিনি প্রায় ছয় লম্বা ওই লোকটিকে বহন করে রাস্তায় নিয়ে আসেন।
লোকটির জ্ঞান ফিরে আসার পর অবশ্য পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসও আসে। কিন্তু টেইলর তখন নিজের অদ্ভুত বেশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে কোনো রকমে পালিয়ে আসেন।
তবে টেইলরের এই জীবন বাঁচানোর খবরটি আর চাপা থাকে না। এই ঘটনার পর সবাই তাঁকে ‘সুপারহিরো’ বলে সবাই ডাকতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে ‘কার্নেগি মেডেল ফর হিরোইজম’ পান তিনি এবং ওহাইও ফায়ার সার্ভিস হল অব ফেমে তাঁর নাম ওঠে। পাঁচ বছর পরও তাঁর সন্তানেরা গর্ব করে বলে—‘আমার বাবা সত্যিকারের সুপারহিরো।’
এমনকি দ্য বয়েজ সিরিজে হোমল্যান্ডারের চরিত্রে অভিনয় করা অ্যান্টনি স্টার তাঁর গল্পটি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে লিখেছিলেন, ‘এর চেয়ে গর্বিত মুহূর্ত আর হতে পারে না।’

কল্পনা করুন, গহিন এক জঙ্গলে আছেন। এ সময়ই একটি গাছের সামনে চলে এলেন, বিশাল পাতাগুলো কেমন যেন শুঁড়ের মতো। চারপাশ ভারী হয়ে আছে মিষ্টি এক গন্ধে। গাছটির নিচে কোনো একটি প্রাণীর কঙ্কাল পড়ে আছে। পাতাগুলো নড়ছে। এটা কি শুধুই বাতাসের কারণে? আরেকটি কাছে গেলেন, গাছের পাতাগুলো আপনার দিকে ঝুঁকে আসছে...। বিশাল মাংস
২২ এপ্রিল ২০২৩
শিশুদের কয়েন মুখে দেওয়া বা গিলে ফেলা নতুন কিছু নয়। চোখের পলকে এই অঘটন অনেক শিশুই ঘটিয়ে ফেলে। পরে অনেককে দৌড়াতে হয় হাসপাতালে, আবার অনেকের স্বাভাবিক নিয়মে তা মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে।
৪ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে বলা হয় পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রবাল রিফ। প্রশান্ত মহাসাগরের কোরাল সাগরের এই প্রবাল রিফের কাছাকাছি এক দ্বীপে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ৮০ বছর বয়সী এক নারী পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।
৮ দিন আগে
চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন।
১১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে বলা হয় পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রবাল রিফ। প্রশান্ত মহাসাগরের কোরাল সাগরের এই প্রবাল রিফের কাছাকাছি এক দ্বীপে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ৮০ বছর বয়সী এক নারী পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।
গত শনিবার কেয়ার্নস শহর থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বা ১৫৫ মাইল উত্তরে অবস্থিত লিজার্ড আইল্যান্ডে হাইক করতে গিয়েছিলেন ওই নারী। কোরাল অ্যাডভেঞ্চারার নামের একটি ক্রুজ জাহাজে চড়ে আরও অনেকের সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। ওই নারী পর্যটক হাইক করার সময় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে গিয়ে দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূর্যাস্তের সময় জাহাজটি দ্বীপ ছেড়ে যায়। কয়েক ঘণ্টা পর ক্রুরা বুঝতে পারেন, ওই নারী জাহাজে নেই। পরে জাহাজটি দ্বীপে ফিরে যায়। ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়।
পরদিন রোববার সকালে অনুসন্ধানকারীরা দ্বীপ থেকে ওই নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
অস্ট্রেলিয়ান মেরিটাইম সেফটি অথরিটি (এএমএসএ) জানিয়েছে, তারা ঘটনাটি তদন্ত করছে এবং চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে জাহাজটি ডারউইনে পৌঁছালে ক্রু সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।
এএমএসএর এক মুখপাত্র জানান, গত শনিবার স্থানীয় সময় রাত প্রায় ৯টার দিকে (জিএমটি অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ৫ টা) জাহাজের ক্যাপ্টেন প্রথমবারের মতো ওই নারীর নিখোঁজ হওয়ার খবর দেন।
সংস্থাটি বলেছে, তারা অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে ঘটনাটি তদন্ত করবে এবং তারা বাণিজ্যিক জাহাজে যাত্রী ও ক্রুদের নিরাপত্তাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখে।
কোরাল এক্সপেডিশনস-এর প্রধান নির্বাহী মার্ক ফাইফিল্ড জানিয়েছেন, সংস্থার কর্মীরা ওই নারীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এই ‘দুঃখজনক মৃত্যু’-র ঘটনায় পরিবারকে সহায়তা দিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় তদন্ত এখনো চলছে, তবে যা ঘটেছে তার জন্য আমরা গভীরভাবে দুঃখিত এবং ওই নারীর পরিবারকে সর্বোচ্চ সহায়তা দিচ্ছি।’
কুইন্সল্যান্ড পুলিশ জানিয়েছে, নারীর এই ‘হঠাৎ এবং সন্দেহাতীত’ মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শেষে একটি প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
কুরিয়ার মেল পত্রিকার প্রতিবেদনে জানা যায়, ওই প্রবীণ নারী দ্বীপের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কুকস লুক-এ ওঠার জন্য দলের সঙ্গে হাইকিংয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু পরে তিনি বিশ্রাম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
৬০ দিনের ক্রুজে গিয়েছিলেন ওই নারী, যার টিকিটের দাম কয়েক হাজার অস্ট্রেলীয় ডলার। কোম্পানির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, কোরাল অ্যাডভেঞ্চারার জাহাজে সর্বোচ্চ ১২০ জন যাত্রী ও ৪৬ জন ক্রু সদস্য থাকতে পারেন। অস্ট্রেলিয়ার উপকূলের দুর্গম এলাকাগুলোতে যাওয়ার জন্য এটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। এই জাহাজে ছোট নৌকা বা ‘টেন্ডার’ রয়েছে যেগুলো দিয়ে দিনের বেলা যাত্রীদের ভ্রমণে ব্যবহার করা হয়।

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে বলা হয় পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রবাল রিফ। প্রশান্ত মহাসাগরের কোরাল সাগরের এই প্রবাল রিফের কাছাকাছি এক দ্বীপে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ৮০ বছর বয়সী এক নারী পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।
গত শনিবার কেয়ার্নস শহর থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বা ১৫৫ মাইল উত্তরে অবস্থিত লিজার্ড আইল্যান্ডে হাইক করতে গিয়েছিলেন ওই নারী। কোরাল অ্যাডভেঞ্চারার নামের একটি ক্রুজ জাহাজে চড়ে আরও অনেকের সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। ওই নারী পর্যটক হাইক করার সময় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে গিয়ে দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূর্যাস্তের সময় জাহাজটি দ্বীপ ছেড়ে যায়। কয়েক ঘণ্টা পর ক্রুরা বুঝতে পারেন, ওই নারী জাহাজে নেই। পরে জাহাজটি দ্বীপে ফিরে যায়। ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়।
পরদিন রোববার সকালে অনুসন্ধানকারীরা দ্বীপ থেকে ওই নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
অস্ট্রেলিয়ান মেরিটাইম সেফটি অথরিটি (এএমএসএ) জানিয়েছে, তারা ঘটনাটি তদন্ত করছে এবং চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে জাহাজটি ডারউইনে পৌঁছালে ক্রু সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।
এএমএসএর এক মুখপাত্র জানান, গত শনিবার স্থানীয় সময় রাত প্রায় ৯টার দিকে (জিএমটি অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ৫ টা) জাহাজের ক্যাপ্টেন প্রথমবারের মতো ওই নারীর নিখোঁজ হওয়ার খবর দেন।
সংস্থাটি বলেছে, তারা অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে ঘটনাটি তদন্ত করবে এবং তারা বাণিজ্যিক জাহাজে যাত্রী ও ক্রুদের নিরাপত্তাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখে।
কোরাল এক্সপেডিশনস-এর প্রধান নির্বাহী মার্ক ফাইফিল্ড জানিয়েছেন, সংস্থার কর্মীরা ওই নারীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এই ‘দুঃখজনক মৃত্যু’-র ঘটনায় পরিবারকে সহায়তা দিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় তদন্ত এখনো চলছে, তবে যা ঘটেছে তার জন্য আমরা গভীরভাবে দুঃখিত এবং ওই নারীর পরিবারকে সর্বোচ্চ সহায়তা দিচ্ছি।’
কুইন্সল্যান্ড পুলিশ জানিয়েছে, নারীর এই ‘হঠাৎ এবং সন্দেহাতীত’ মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শেষে একটি প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
কুরিয়ার মেল পত্রিকার প্রতিবেদনে জানা যায়, ওই প্রবীণ নারী দ্বীপের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কুকস লুক-এ ওঠার জন্য দলের সঙ্গে হাইকিংয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু পরে তিনি বিশ্রাম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
৬০ দিনের ক্রুজে গিয়েছিলেন ওই নারী, যার টিকিটের দাম কয়েক হাজার অস্ট্রেলীয় ডলার। কোম্পানির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, কোরাল অ্যাডভেঞ্চারার জাহাজে সর্বোচ্চ ১২০ জন যাত্রী ও ৪৬ জন ক্রু সদস্য থাকতে পারেন। অস্ট্রেলিয়ার উপকূলের দুর্গম এলাকাগুলোতে যাওয়ার জন্য এটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। এই জাহাজে ছোট নৌকা বা ‘টেন্ডার’ রয়েছে যেগুলো দিয়ে দিনের বেলা যাত্রীদের ভ্রমণে ব্যবহার করা হয়।

কল্পনা করুন, গহিন এক জঙ্গলে আছেন। এ সময়ই একটি গাছের সামনে চলে এলেন, বিশাল পাতাগুলো কেমন যেন শুঁড়ের মতো। চারপাশ ভারী হয়ে আছে মিষ্টি এক গন্ধে। গাছটির নিচে কোনো একটি প্রাণীর কঙ্কাল পড়ে আছে। পাতাগুলো নড়ছে। এটা কি শুধুই বাতাসের কারণে? আরেকটি কাছে গেলেন, গাছের পাতাগুলো আপনার দিকে ঝুঁকে আসছে...। বিশাল মাংস
২২ এপ্রিল ২০২৩
শিশুদের কয়েন মুখে দেওয়া বা গিলে ফেলা নতুন কিছু নয়। চোখের পলকে এই অঘটন অনেক শিশুই ঘটিয়ে ফেলে। পরে অনেককে দৌড়াতে হয় হাসপাতালে, আবার অনেকের স্বাভাবিক নিয়মে তা মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে।
৪ দিন আগে
২০২০ সালের হ্যালোইন রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের গ্রিনভিলে এক অবিশ্বাস্য ঘটনার মুখোমুখি হন ক্রিস্টোফার লি টেইলর। সেই রাতে স্ত্রীর বোনের বাড়িতে হ্যালোইন পার্টিতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের।
৬ দিন আগে
চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন।
১১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন। এমন আকস্মিক ঘটনায় হতভম্ব ১৬ বছর বয়সী এই কিশোর বুঝে উঠতে পারছে না, কী তার ভুল। পুলিশের নির্দেশ মানার পর হাতে পড়ল হাতকড়া।
টাকি অ্যালেনকে কিশোর বয়সে এই অদ্ভুত অভিজ্ঞতা দিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। অ্যালেনের হাতে থাকা চিপসকে বন্দুক হিসেবে শনাক্ত করেছে এক এআই সিস্টেম!
স্থানীয় গণমাধ্যম ডব্লিউএমএআর-২ নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টাকি অ্যালেন বলে, ‘হঠাৎ দেখি প্রায় আটটা পুলিশ কার এসে গেল। তারপর সবাই বন্দুক তাক করে আমাকে মাটিতে শুতে বলছে।’
অ্যালেন বলতে থাকে, ‘ফুটবল অনুশীলনের পর এক প্যাকেট ডোরিটোস চিপস খেয়ে খালি প্যাকেটটি পকেটে রেখে দিই। এর ২০ মিনিট পরই এই ঘটনা। একজন অফিসার আমাকে হাঁটু গেড়ে বসতে বলেন, তারপর আমাকে আটক করে হাতকড়া পরান।
তবে বাল্টিমোর কাউন্টি পুলিশ বিভাগ বিবিসি নিউজের কাছে দাবি করে, অ্যালেনকে হাতকড়া পরানো হয়েছিল, গ্রেপ্তার করা হয়নি।
এক বিবৃতিতে তারা জানায়, কোনো হুমকি নেই নিশ্চিত হওয়ার পর বিষয়টি নিরাপদে সমাধান করা হয়।
এই ঘটনার পর থেকে ফুটবল অনুশীলন শেষে স্কুলের ভেতরে চলে যায় অ্যালেন। সে জানায়, বাইরে যাওয়া নিরাপদ নয়, বিশেষ করে চিপস খাওয়া বা কিছু পান করা।
বাল্টিমোর কাউন্টি পুলিশ বিভাগ জানায়, সেই মুহূর্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যথোপযুক্ত ও আনুপাতিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাদের কর্মকর্তারা।
বিভাগটি আরও জানায়, এআই সতর্কবার্তাটি মানব পর্যালোচকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা এতে কোনো হুমকি পাননি। এই বার্তা স্কুলের প্রিন্সিপালের কাছে পাঠানো হলেও তিনি এ তথ্যটি দেখেননি এবং স্কুলের নিরাপত্তা টিমকে জানান। তারা পুলিশকে ডাকে।
অভিভাবকদের উদ্দেশে এক চিঠিতে স্কুলের প্রিন্সিপাল কেট স্মিথ বলেন, স্কুলের নিরাপত্তা দল দ্রুত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এবং কোনো অস্ত্র না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর প্রাথমিক সতর্কতা বাতিল করে।
তিনি আরও জানান, ‘আমাদের স্কুল রিসোর্স অফিসারকে (এসআরও) বিষয়টি জানানো হলে তিনি অতিরিক্ত সহায়তার জন্য স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পুলিশ কর্মকর্তারা স্কুলে এসে ওই শিক্ষার্থীকে তল্লাশি করেন এবং দ্রুত নিশ্চিত হন যে তার কাছে কোনো অস্ত্র নেই।’
এআই টুল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওমনিলার্ট এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা বিবিসি নিউজকে জানায়, ‘ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী ও সম্প্রদায়ের প্রতি আমাদের উদ্বেগ জানাতে চাই।’
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তাদের সিস্টেম প্রথমে এমন কিছু শনাক্ত করে যা দেখতে আগ্নেয়াস্ত্রের মতো লাগছিল। ছবিটি পরে তাদের পর্যালোচনা দল যাচাই করে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেই তথ্য ও ছবি বাল্টিমোর কাউন্টি পাবলিক স্কুলের নিরাপত্তা দলের কাছে মূল্যায়নের জন্য পাঠানো হয়।
নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, তাদের সিস্টেমে ‘সমাধান হয়েছে’ বলে চিহ্নিত হওয়ার পরই এ বিষয়ে তাদের সম্পৃক্ততা শেষ হয়। তাদের সিস্টেম ‘যেভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল, সেভাবেই কাজ করেছে।’
অ্যালেন মন্তব্য করেছে, ‘আমার মনে হয় না কোনো চিপসের প্যাকেটকে কখনো বন্দুক হিসেবে ভুল ধরা উচিত।’
এই ঘটনায় স্কুলগুলোতে এমন প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছে অনেকে। স্থানীয় রাজনীতিবিদেরা ঘটনাটি নিয়ে আরও তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। বাল্টিমোর কাউন্টির স্থানীয় কাউন্সিলর ইজি পাকোটা ফেসবুকে লেখেন, ‘আমি বাল্টিমোর কাউন্টি পাবলিক স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি তাদের এআই-চালিত অস্ত্র শনাক্তকরণ ব্যবস্থার প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনা করতে।’

চিপস খেতে খেতে রাস্তায় হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের স্কুলপড়ুয়া কিশোর টাকি অ্যালেন। হঠাৎ আটটি পুলিশের গাড়ি এসে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। গাড়ি থামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে হাঁটু গেড়ে বসতে বললেন। এমন আকস্মিক ঘটনায় হতভম্ব ১৬ বছর বয়সী এই কিশোর বুঝে উঠতে পারছে না, কী তার ভুল। পুলিশের নির্দেশ মানার পর হাতে পড়ল হাতকড়া।
টাকি অ্যালেনকে কিশোর বয়সে এই অদ্ভুত অভিজ্ঞতা দিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। অ্যালেনের হাতে থাকা চিপসকে বন্দুক হিসেবে শনাক্ত করেছে এক এআই সিস্টেম!
স্থানীয় গণমাধ্যম ডব্লিউএমএআর-২ নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টাকি অ্যালেন বলে, ‘হঠাৎ দেখি প্রায় আটটা পুলিশ কার এসে গেল। তারপর সবাই বন্দুক তাক করে আমাকে মাটিতে শুতে বলছে।’
অ্যালেন বলতে থাকে, ‘ফুটবল অনুশীলনের পর এক প্যাকেট ডোরিটোস চিপস খেয়ে খালি প্যাকেটটি পকেটে রেখে দিই। এর ২০ মিনিট পরই এই ঘটনা। একজন অফিসার আমাকে হাঁটু গেড়ে বসতে বলেন, তারপর আমাকে আটক করে হাতকড়া পরান।
তবে বাল্টিমোর কাউন্টি পুলিশ বিভাগ বিবিসি নিউজের কাছে দাবি করে, অ্যালেনকে হাতকড়া পরানো হয়েছিল, গ্রেপ্তার করা হয়নি।
এক বিবৃতিতে তারা জানায়, কোনো হুমকি নেই নিশ্চিত হওয়ার পর বিষয়টি নিরাপদে সমাধান করা হয়।
এই ঘটনার পর থেকে ফুটবল অনুশীলন শেষে স্কুলের ভেতরে চলে যায় অ্যালেন। সে জানায়, বাইরে যাওয়া নিরাপদ নয়, বিশেষ করে চিপস খাওয়া বা কিছু পান করা।
বাল্টিমোর কাউন্টি পুলিশ বিভাগ জানায়, সেই মুহূর্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যথোপযুক্ত ও আনুপাতিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাদের কর্মকর্তারা।
বিভাগটি আরও জানায়, এআই সতর্কবার্তাটি মানব পর্যালোচকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা এতে কোনো হুমকি পাননি। এই বার্তা স্কুলের প্রিন্সিপালের কাছে পাঠানো হলেও তিনি এ তথ্যটি দেখেননি এবং স্কুলের নিরাপত্তা টিমকে জানান। তারা পুলিশকে ডাকে।
অভিভাবকদের উদ্দেশে এক চিঠিতে স্কুলের প্রিন্সিপাল কেট স্মিথ বলেন, স্কুলের নিরাপত্তা দল দ্রুত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এবং কোনো অস্ত্র না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর প্রাথমিক সতর্কতা বাতিল করে।
তিনি আরও জানান, ‘আমাদের স্কুল রিসোর্স অফিসারকে (এসআরও) বিষয়টি জানানো হলে তিনি অতিরিক্ত সহায়তার জন্য স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পুলিশ কর্মকর্তারা স্কুলে এসে ওই শিক্ষার্থীকে তল্লাশি করেন এবং দ্রুত নিশ্চিত হন যে তার কাছে কোনো অস্ত্র নেই।’
এআই টুল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওমনিলার্ট এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা বিবিসি নিউজকে জানায়, ‘ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী ও সম্প্রদায়ের প্রতি আমাদের উদ্বেগ জানাতে চাই।’
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তাদের সিস্টেম প্রথমে এমন কিছু শনাক্ত করে যা দেখতে আগ্নেয়াস্ত্রের মতো লাগছিল। ছবিটি পরে তাদের পর্যালোচনা দল যাচাই করে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেই তথ্য ও ছবি বাল্টিমোর কাউন্টি পাবলিক স্কুলের নিরাপত্তা দলের কাছে মূল্যায়নের জন্য পাঠানো হয়।
নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, তাদের সিস্টেমে ‘সমাধান হয়েছে’ বলে চিহ্নিত হওয়ার পরই এ বিষয়ে তাদের সম্পৃক্ততা শেষ হয়। তাদের সিস্টেম ‘যেভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল, সেভাবেই কাজ করেছে।’
অ্যালেন মন্তব্য করেছে, ‘আমার মনে হয় না কোনো চিপসের প্যাকেটকে কখনো বন্দুক হিসেবে ভুল ধরা উচিত।’
এই ঘটনায় স্কুলগুলোতে এমন প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনার দাবি তুলেছে অনেকে। স্থানীয় রাজনীতিবিদেরা ঘটনাটি নিয়ে আরও তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। বাল্টিমোর কাউন্টির স্থানীয় কাউন্সিলর ইজি পাকোটা ফেসবুকে লেখেন, ‘আমি বাল্টিমোর কাউন্টি পাবলিক স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি তাদের এআই-চালিত অস্ত্র শনাক্তকরণ ব্যবস্থার প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনা করতে।’

কল্পনা করুন, গহিন এক জঙ্গলে আছেন। এ সময়ই একটি গাছের সামনে চলে এলেন, বিশাল পাতাগুলো কেমন যেন শুঁড়ের মতো। চারপাশ ভারী হয়ে আছে মিষ্টি এক গন্ধে। গাছটির নিচে কোনো একটি প্রাণীর কঙ্কাল পড়ে আছে। পাতাগুলো নড়ছে। এটা কি শুধুই বাতাসের কারণে? আরেকটি কাছে গেলেন, গাছের পাতাগুলো আপনার দিকে ঝুঁকে আসছে...। বিশাল মাংস
২২ এপ্রিল ২০২৩
শিশুদের কয়েন মুখে দেওয়া বা গিলে ফেলা নতুন কিছু নয়। চোখের পলকে এই অঘটন অনেক শিশুই ঘটিয়ে ফেলে। পরে অনেককে দৌড়াতে হয় হাসপাতালে, আবার অনেকের স্বাভাবিক নিয়মে তা মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে।
৪ দিন আগে
২০২০ সালের হ্যালোইন রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের গ্রিনভিলে এক অবিশ্বাস্য ঘটনার মুখোমুখি হন ক্রিস্টোফার লি টেইলর। সেই রাতে স্ত্রীর বোনের বাড়িতে হ্যালোইন পার্টিতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের।
৬ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে বলা হয় পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রবাল রিফ। প্রশান্ত মহাসাগরের কোরাল সাগরের এই প্রবাল রিফের কাছাকাছি এক দ্বীপে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ৮০ বছর বয়সী এক নারী পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।
৮ দিন আগে