Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

‘মেসি-নেইমারকে নিয়েও ট্রল হয়, আমি তো ক্ষুদ্র এক ফুটবলার’

বাংলাদেশের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ। ছবি: সংগৃহীত

মার্চে সৌদি আরবের ক্যাম্প শেষে প্রবাসী ফুটবলার ফাহামিদুল ইসলাম জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ায় অভিযোগের তির সবচেয়ে বেশি ছিল মেহেদী হাসান শ্রাবণের দিকে। সেই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছেন তিনি। তবু প্রতিনিয়ত সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন এই গোলরক্ষক। ফেডারেশন কাপে বসুন্ধরা কিংসকে শিরোপা জেতানোর পর গতকাল আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাইবার বুলিংসহ আরও কিছু বিষয়ে কথা বলেন শ্রাবণ। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আনোয়ার সোহাগ

আপডেট : ০১ মে ২০২৫, ১৫: ৩৪

প্রশ্ন: ফেডারেশন কাপে বসুন্ধরা কিংস আবার চ্যাম্পিয়ন। ফাইনালের নায়ক আপনি। কেমন লাগছে?

মেহেদী হাসান শ্রাবণ: আলহামদুলিল্লাহ ভালো লাগছে, ফাইনালে দলকে শিরোপা জেতানোর পেছনে অবদান রাখতে পেরেছি।

প্রশ্ন: একজন খেলোয়াড় হারিয়েও ১৫ মিনিটে আবাহনীকে আটকানো কতটুকু চ্যালেঞ্জিং ছিল?

শ্রাবণ: ভেবেছিলাম ওই দিনই জিতে ফিরব। কিন্তু দুর্ভাগ্য, প্রাকৃতিক বা যেকোনো কারণেই হোক ম্যাচটা সম্পূর্ণ হয়নি। অবশিষ্ট ১৫ মিনিটের খেলায় আমাদের ১০ জনের বিপক্ষে আবাহনীর ১১ জন ছিল। আমরা প্রত্যেকে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম, ১৫ মিনিটে খেলা শেষে টাইব্রেকারে ম্যাচটা জিতে আসব। সবাই পরিশ্রম করেছে মাঠে, তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা টাইব্রেকারে যাই। আমরা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কারণ, ১৫ মিনিটের খেলায় গোল হতে পারে, না-ও হতে পারে।

প্রশ্ন: এমেকা ওগবুহর শটটি ঠেকানোর পর আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজের মতো নেচে উদ্‌যাপন করেছিলেন। মার্তিনেজই কি আপনার আদর্শ?

শ্রাবণ: সেভ করার পর হঠাৎ মনে পড়ে মার্তিনেজের উদ্‌যাপনের কথা। আসলে আমার আদর্শ ম্যানুয়েল নয়্যার। কিন্তু একজন আর্জেন্টাইন ভক্ত হিসেবে মার্তিনেজকেও অনুসরণ করি। তাঁর খেলা দেখি। উদ্‌যাপনটা তাঁর মতোই করেছি।

প্রশ্ন: মিরাজুল ইসলামের শটও ঠেকিয়ে দেন আপনি। কিন্তু রেফারি তা বাতিল করে দিলেন।

শ্রাবণ: ভিডিওতে যদি লক্ষ করে দেখেন, আমি সঠিকভাবেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমার পা লাইনে ছিল। রেফারি বললেন, আমার পা লাইনে ছিল না। কিন্তু পরে যখন ভিডিও দেখি, তখন দেখলাম আমি ঠিক জায়গাতে ছিলাম। তাঁরা শুধু শুধু পুনরায় শট নিতে বললেন।

প্রশ্ন: প্রথম কোয়ালিফায়ারে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারের আগে আপনাকে বদলি করা হয়েছিল। এবারও কি সেই শঙ্কা কাজ করছিল মনে?

শ্রাবণ: না, মনে হয়নি। আগে থেকে আমাকে নিয়েই পরিকল্পনা ছিল। আমিও পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলাম। আত্মবিশ্বাস ছিল টাইব্রেকারে গেলে ম্যাচটা জিতে ফিরব। কখন কাকে খেলাবে, এগুলো আসলে কোচের সিদ্ধান্ত। একজন পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে কোচের সিদ্ধান্ত মানা আমার দায়িত্ব।

প্রশ্ন: এমন কঠিন সময়ে শিরোপা জেতা বসুন্ধরার জন্য কতটা স্বস্তিদায়ক?

শ্রাবণ: আমাদের এবারের মৌসুমটা কঠিন যাচ্ছে। নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। লিগও প্রায় হাতছাড়া। সবকিছু মিলিয়ে খেলোয়াড়দের অনুপ্রেরণা ও উজ্জীবিত করতে ফেডারেশন কাপের শিরোপা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এখন আমাদের লক্ষ্য থাকবে লিগে রানার্সআপ হওয়া।

প্রশ্ন: জাতীয় দল প্রসঙ্গে আসি। ইতালি থেকে আসা ফাহামিদুল ইসলাম বাদ পড়ার ঘটনায় আপনাকে বেশ রোষানলে পড়তে হয়েছে। মানসিকভাবে কতটা কঠিন সময়ের মধ্যে আপনাকে যেতে হয়েছে?

শ্রাবণ: ভিত্তিহীন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা ঠিক না আসলে। একটি ঘটনা যাচাই-বাছাই না করে কোনো কিছু বলা ঠিক নয়। এটার প্রভাব আসলে মাঠেও পড়ে। আপনি তখন পুরোপুরি মনোযোগী থাকতে পারেন না। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, এগুলো আমি মেনে নিতে পারি। কিন্তু পরিবারের লোকজন যখন এগুলো দেখেন, তখন তাঁরা এসব মেনে নিতে পারেন না। এর প্রভাব অবশ্যই পড়ে। এগুলো কাটিয়ে ওঠার উপায় হলো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে দূরে থাকা।

প্রশ্ন: সাইবার বুলিংয়ের শিকার হলে ফুটবলারদের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে বাফুফে। এটি আপনি কীভাবে দেখছেন?

শ্রাবণ: আসলে মানুষ এ রকম বলবেই। পেশাদার ফুটবলার হিসেবে আমার এগুলো মেনে নিতে হবে। এটা হতেই পারে স্বাভাবিক। অনেক বড় বড় খেলোয়াড়কেও মানুষ ট্রল করে। আমি তো ক্ষুদ্র একটা ফুটবলার। এটা নিয়ে আসলে আর কোনো কথা বলা উচিত নয়। একজন পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে আমি মানুষের কাছে গিয়ে জবাব চাইতে পারি না। তাদের ইচ্ছা হয়েছে করুক, মানুষ অনেক কিছুই করে। মেসি-নেইমারকে নিয়েও ট্রল হয়। তাই এটা বড় কোনো ইস্যু নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত