Ajker Patrika

সাকিবকে ধাওয়া করছেন হাসান

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৪: ৪৯
২০১০ ও ২০১৪ সালে টেস্টে ২৭টি করে উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। ছবি: এএফপি
২০১০ ও ২০১৪ সালে টেস্টে ২৭টি করে উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। ছবি: এএফপি

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হাসান মাহমুদের পথচলা শুরু ২০২০ সালের মার্চে। তবে টেস্টে তাঁর অভিষেক ২০২৪ সালেই। ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে মাত্র ৮ মাসেই গড়েছেন একের পর এক রেকর্ড। নিয়মিত উইকেট নেওয়া হাসান এবার তাড়া করছেন সাকিব আল হাসানকে।

বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে এক বছরে টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড হাসান করেছেন গতকাল অ্যান্টিগা টেস্টের দ্বিতীয় দিনে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের তিন ব্যাটারকে ড্রেসিংরুমের পথ দেখিয়েছেন হাসান। ২৫ বছর বয়সী পেসারের ৮ টেস্টের ক্যারিয়ারে উইকেট এখন ২৬। এর আগে ২০০৮ সালে বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছিলেন শাহাদাত হোসেন রাজীব। এছাড়া সাকিব ২০১০ ও ২০১৪ সালে টেস্টে নিয়েছিলেন ২৭টি করে উইকেট।

টেস্টে যে হাসান রাজত্ব করতে এসেছেন, সেটার প্রমাণ মিলেছে চট্টগ্রামে তাঁর অভিষেক টেস্টেই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। যার মধ্যে ৪টিই দ্বিতীয় ইনিংসে। তবে ঘরের চেয়ে ঘরের বাইরেই তিনি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের মাঠে টেস্টে তাঁর উইকেট ৭। ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে বিদেশে ২৪ বছর বয়সী বাংলাদেশি পেসার নিয়েছেন ১৭ উইকেট।

৮ টেস্টের ক্যারিয়ারে এক ইনিংসে দুইবার ৫ উইকেট নিয়েছেন এবং দুটিই দেশের বাইরে। পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে নাম লেখান রাওয়ালপিন্ডির অনার্স বোর্ডে। এরপর চেন্নাইয়ে ভারতের বিপক্ষে নিয়েছেন ৫ উইকেট। শুবমান গিল, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, ঋষভ পন্ত-ভারতের প্রথম সারির চার ব্যাটারের পর জসপ্রীত বুমরার উইকেট নিয়ে ভারতের ইনিংসের ইতি টেনেছিলন।

টেস্টে উইকেটের জন্য যখন হাপিত্যেশ করতে থাকে বাংলাদেশ, তখনই মঞ্চে আবির্ভূত হন হাসান। এ বছরের অক্টোবরে মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার সপ্তম উইকেটে কাইল ভেরেইন ও উইয়ান মুলডারের জুটি যখন ভাঙতে ব্যর্থ সবাই, তখন অধিনায়কের মুখে হাসি ফোটান হাসান। অ্যান্টিগায় চলমান বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম টেস্টের কথাই ধরে নেওয়া যাক। গতকাল দ্বিতীয় দিনে নিজের প্রথম দুই ওভারের মধ্যেই হাসান নিয়েছেন ২ উইকেট। এরপর অষ্টম উইকেটে কেমার রোচ ও জাস্টিন গ্রিভসের জমে যাওয়া ১৪০ রানের জুটিটাও ভেঙেছেন হাসান।

টেস্টে এ বছরেই অভিষেক হাসান মাহমুদের। ৮ টেস্টের ক্যারিয়ারে নিয়েছেন ২৬ উইকেট। ছবি: ক্রিকইনফো
টেস্টে এ বছরেই অভিষেক হাসান মাহমুদের। ৮ টেস্টের ক্যারিয়ারে নিয়েছেন ২৬ উইকেট। ছবি: ক্রিকইনফো

২০১০ ও ২০১৪ সালে সাকিব যে মুড়ি মুড়কির মতো উইকেট নিয়েছিলেন, সেখানে প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েও ছিল। তবে হাসান এখনো টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলেননি। ২৫ বছর বয়সী বাংলাদেশের পেসার ৮ উইকেট নিয়েছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে। ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিয়েছেন ৬টি করে উইকেট। যেভাবে দুরন্ত গতিতে ছুটে চলেছেন, তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান টেস্ট সিরিজেই হাসান ভেঙে দেবেন সাকিবের পুরোনো রেকর্ড। যদি অ্যান্টিগায় না হয়, জ্যামাইকা তো রয়েছেই। বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট ৩০ নভেম্বর শুরু হবে জ্যামাইকায়। ২ উইকেট নিয়ে হাসান কবে, কোথায় সাকিবের রেকর্ড ভেঙে দেন, সেটার উত্তর সময়ই বলে দেবে।

টেস্ট থেকে সাকিব অবসর নেওয়াতে কিছুটা ‘উপকার’ই হয়েছে হাসানের। বোলিংয়ে ধার তেমন না থাকলেও প্রয়োজনের সময় ঠিকই জ্বলে উঠতে জানেন বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার। সেক্ষেত্রে হয়তো হাসানের উইকেট সংখ্যা আরও একটু কমে যেত। এ বছর ৫ টেস্টে সাকিব নিয়েছেন ১৩ উইকেট। যার মধ্যে কানপুরে দ্বিতীয় টেস্টে ভারতের প্রথম ইনিংসে পেয়েছেন ৪ উইকেট। তার আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ে বোলিংয়ে ভেলকি দেখান তিনি। ২ ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে এসেছিল ৫ উইকেট।

এক বছরে টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড কিন্তু সাকিবের নয়। ২০১৮ সালে ৭ টেস্টে ৪৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের মধ্যে এক বছরে ক্রিকেটর রাজকীয় সংস্করণে সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার কীর্তি তাইজুল ইসলামের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১০০০ ছোঁয়ার ম্যাচ গার্দিওলার

ক্রীড়া ডেস্ক    
আজ লিভারপুলের আতিথেয়তা নেবে ম্যানচেস্টার সিটি। ছবি: এক্স
আজ লিভারপুলের আতিথেয়তা নেবে ম্যানচেস্টার সিটি। ছবি: এক্স

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ইতিহাদে আজ লিভারপুলকে আতিথেয়তা দেবে ম্যানচেস্টার সিটি। এই ম্যাচটি যদি জিততে পারে আর্নে স্লটের দল, তাহলে তারা একটা রেকর্ডই গড়বে। পেপ গার্দিওলার অধীনে ম্যানসিটিকে সবচেয়ে বেশি বার হারানোর রেকর্ড। ১০ বার করে সিটিকে হারানোর রেকর্ড এখন লিভারপুলের সঙ্গে যৌথভাবে টটেনহাম হটস্পারেরও। আজ জিতলে রেকর্ডটি নিজেদের করে নিতে পারবে অ্যানফিল্ডের দলটি।

লিভারপুল পারবে কি না, তা সময়ই বলবে। তবে ম্যাচ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে দারুণ এক মাইলফলকে পা রাখবেন ম্যানসিটির কোচ পেপ গার্দিওলা। কোচ হিসেবে এটি হবে তাঁর ১০০০ তম ম্যাচ।

১৮ বছর আগে বার্সেলোনা ‘বি’ দলের কোচ হিসেবে যখন ক্যারিয়ার শুরু করেন, তখন তাঁর ভাবনায়ও ছিল না একদিন হাজার ম্যাচের মাইলফলকে পা রাখতে পারবেন। মাইলফলক ছোঁয়া ম্যাচের আগে সিটির স্প্যানিশ কোচের অকপট স্বীকারোক্তি, ‘কোচ হিসেবে এক হাজার ম্যাচ—আমার জন্য সত্যিই বিশেষ কিছু। বার্সেলোনা ‘বি’ দল দিয়ে যখন শুরু করেছিলাম, তখন কখনো ভাবিনি এমন মাইলফলকে পৌঁছাতে পারব। তখন শুধুই চাওয়া ছিল ভালো ফুটবল খেলানো আর ঠিক পথে এগোনো।’

কোচিং ক্যারিয়ারের ৯৯৯ ম্যাচের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৪৯টি ম্যাচে তিনি থেকেছেন সিটির ডাগআউটে। সব মিলিয়ে কোচ হিসেবে তিনি জিতেছেন ৭১৫টি জয়। সাফল্য ৭১.৫৭ শতাংশ। ১৮ বছরের ক্যারিয়ারে ৪০টি বড় ট্রফি জিতেছেন। প্রতি ২৫ ম্যাচে একটি করে শিরোপা!

............. .

১০০০ ছোঁয়ার ম্যাচ গার্দিওলার

কোচ গার্দিওলা

ম্যাচ: ৯৯৯

জয়: ৭১৫

ড্র: ১৫৬

হার: ১২৮

............

কোন দলের হয়ে কত ম্যাচ

ম্যানসিটি: ৫৪৯

বার্সেলোনা: ২৪৭

বায়ার্ন: ১৬১

বার্সা ‘বি’: ৪২

.............................

গার্দিওলার অধীনে সবচেয়ে বেশি গোল পাওয়া ফুটবলার

লিওনেল মেসি: ২১১

আর্লিং হালান্ড: ১৪২

সার্জিও আগুয়েরো: ১২৪

রহিম স্টার্লিং: ১২০

ফিল ফোডেন: ১০৪

...............................

২০

গার্দিওলার অধীনে ম্যানসিটি সবচেয়ে বেশি ২০ বার হারিয়েছে আর্সেনালকে। এ সময়ে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে ৩৩ বার।

১০

সবচেয়ে বেশি ১০ বার করে টটেনহাম ও লিভারপুলের কাছে হেরেছে গার্দিওলার ম্যানসিটি। তাঁর অধীনে এই দুই দলের হয়ে ২০টি করে ম্যাচ খেলেছে সিটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সোহানের ৮ ছক্কার ঝড়, প্রোটিয়াদের হারিয়ে প্লেট ফাইনালে বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ২৯
৫৪ রানের ইনিংস খেলেন সোহান। ছবি: সংগৃহীত
৫৪ রানের ইনিংস খেলেন সোহান। ছবি: সংগৃহীত

ব্যাট হাতে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের ওপর রীতিমতো ধ্বংসযজ্ঞ চালালেন হাবিবুর রহমান সোহান। একের পর ছক্কায় ফিফটি তুলে নেন বাংলাদেশের এই তরুণ ব্যাটার। তাঁর ব্যাটিং ঝড়ে দল পেল বড় পুঁজি। সেই সঙ্গে প্লেট সেমিফাইনালে ২৫ রানের জয়ে হংকং সিক্সেসের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে আকবর আলীর দল।

মংকংয়ের মিশন রোড মাঠে আগে ব্যাট করে সোহানের ঝোড়ো ফিফটিতে নির্ধারিত ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১২৮ রান তোলে বাংলাদেশ। ৫৪ রান করে বাধ্যতামূলক অবসরে যান সোহান। তাঁর ১৩ বলের ইনিংসটি এক চার ও ৮ ছক্কায় সাজানো। প্রথম ওভারেই চারটি ছয় মারেন এই ওপেনার।

সোহানের ফিফটির দিনে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও জিসান আলমরাও কম যাননি। ৭ বলে ৪ ছক্কায় ২৪ রানে আউট হন জিসান। ২৭ রান আসে মোসাদ্দেকের ব্যাট থেকে। ৮ বলে ৩ চারের পাশাপাশি দুটি ছয় মারেন এই অলরাউন্ডার। বাংলাদেশের পতন হওয়া ৩ উইকেটের মধ্যে দুটিই নেন জর্ডান মরিস।

রান তাড়ায় উড়ন্ত সূচনা পায় দক্ষিণ আফ্রকা। আব্দুল্লাহ বায়ুমির মারকুটে ব্যাটিংয়ে ১৫ বলেই ৫৯ রান তোলে প্রোটিয়ারা। বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফেরে ওই ওপেনারের বিদায়ের পর। ১০ বলে ৩৮ রান করে আউট হন বায়ুমি।

শেষ ২০ বলে ৪৪ রানের সমীকরণ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে। কিন্তু আবু হায়দার রনি ও জিসানের বোলিংয়ে আটকে যায় তারা। নির্ধারিত ৬ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রানে থামে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। বাংলাদেশের হয়ে রনি ও জিসান দুটি করে উইকেট নেন। এ ছাড়া রাকিবুল হাসান ও আকবর নেন একটি করে উইকেট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রেকর্ড জুটি গড়েও হারল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ৫০
৯ রানে হেরেছে ক্যারিবীয়রা। ছবি: এক্স
৯ রানে হেরেছে ক্যারিবীয়রা। ছবি: এক্স

টপঅর্ডার ও মিডলঅর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতার পরও রোমারিও শেফার্ড ও শামার স্প্রিঙ্গারের ঝড়ে জয়ের দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রেকর্ড গড়া ব্যাটিংয়ে জয়কে প্রায় হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছিলেন তাঁরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া হয়নি ক্যারিবীয়দের। উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচে তাদের ৯ রানে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড।

নেলসনের সাক্সটন ওভাল ক্রিকেট গ্রাউন্ডে নিউজিল্যান্ডের করা ১৭৭ রানের জবাবে ৮৮ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে বসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তখন মনে হচ্ছিল বড় ব্যবধানেই হেরে যাবে সফরকারী দল। তবে ব্যাটিং ধস সামলে নবম উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন শেফার্ড ও স্প্রিঙ্গার। তাঁদের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ভীতি জেগেছিল কিউই শিবিরে। এই জুটি ভেঙে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড।

ইশ শোধির করা ১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে অষ্টম ব্যাটার হিসেবে সাজঘরে ফেরেন ম্যাথু ফোর্ড। এরপর নিউজিল্যান্ডের বোলারদের ওপর চড়াও হন শেফার্ড ও স্প্রিঙ্গার। একের পর এক চার এবং ছয়ের মারে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল স্বাগতিকেরা। অবশেষে নিউজিল্যান্ড শিবিরে স্বস্তি ফেরান জ্যাকব ডাফি। ১৮তম ওভারের শেষ বলে স্প্রিঙ্গারকে আউট করেন এই পেসার। তার আগে শেফার্ডকে সঙ্গে নিয়ে ৭৮ রান যোগ করেন স্প্রিঙ্গার। টেস্ট খেলুড়ে দেশের মধ্যে টি–টোয়েন্টিতে নবম উইকেটে এটা সর্বোচ্চ রানের জুটি। রেকর্ড জুটি গড়ার পথে ২০ বলে তিনটি করে চার ও ছয়ে ৩৯ রান করেন স্প্রিঙ্গার। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে শেফার্ড বিদায় নিলে ১৬৮ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩৪ বলে ৪৯ রান করেন এই বোলিং অলরাউন্ডার। ৩৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন শোধি।

এর আগে যৌথ প্রচেষ্টায় এই পুঁজি পায় নিউজিল্যান্ড। ৩৪ বলে সর্বোচ্চ ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন ডেভন কনওয়ে। ৪১ রান আসে ড্যারেল মিচেলের ব্যাট থেকে। এ ছাড়া রাচিন রবীন্দ্র ২৬ ও টিম রবিনসন করেন ২৩ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে জেসন হোল্ডার ও ফোর্ড দুটি করে উইকেট নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাক্ষাৎকার

আমার কি স্ত্রী-মেয়ে-বোন নেই, জাহানারার অভিযোগ নিয়ে মঞ্জু

জাহানারার অভিযোগ নিয়ে কথা বলেছেন মঞ্জু। ফাইল ছবি

একটি ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন বাংলাদেশ নারী দলের সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলম। তাঁর সবচেয়ে বড় অভিযোগ জাতীয় নারী দলের সাবেক নির্বাচক ও ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর বিরুদ্ধে। ১৭ টেস্ট ও ৩৪ ওয়ানডে খেলেছেন সাবেক এই পেসার। এখন কাজ করছেন চীনে নারী ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হিসেবে। জাহানারার অভিযোগ নিয়ে মঞ্জু আজকের পত্রিকাকে যা বলেছেন, তা তুলে ধরা হলো এখানে। মঞ্জুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন রানা আব্বাস

রানা আব্বাস, ঢাকা
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৩০

প্রশ্ন: যেসব অভিযোগ এসেছে আপনার বিরুদ্ধে, কী বলবেন?

মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু: জীবনে যত দিন ক্রিকেট খেলেছি, আমার একটাই ভুল—নিয়মের মধ্যে থেকেছি। কখনোই নিয়মের বাইরে যাইনি। এটাই মনে হয় আমার জীবনে সবচেয়ে বড় ভুল।

প্রশ্ন: শুধু জাহানারা আলমই নন, রুমানা আহমেদও অভিযোগ তুলেছেন আপনার বিরুদ্ধে।

মঞ্জু: ধরুন, আপনার সঙ্গে আমি একবার বাজে ব্যবহার করেছি। কিন্তু যদি দ্বিতীয়বারও করি, আপনি কি প্রমাণ রাখবেন না? ওরা এত বড় অভিযোগ করেছে, কিন্তু প্রমাণ বা ডকুমেন্টস দেখাচ্ছে না কেন? এই যে মেয়েদের পিরিয়ডের প্রসঙ্গটা এসেছে, পুরো বিষয়টা তো সমন্বিত, আমার একার বিষয় নয়। এ প্রসঙ্গে প্রথমে আসবে দলের ফিজিও, ট্রেনার, হেড কোচ; এরপর আমি। প্রতি বিশ্বকাপের আগে নারী ক্রিকেটে এসব বিষয়ে ক্লাস হয়। সেখানে ম্যানেজমেন্ট ও খেলোয়াড়েরা অংশ নেয়। আমি ছিলাম টিম ম্যানেজার। আপনি ম্যাচ খেলছেন না, কী কারণে খেলছেন না—আমাকে তো এটা অবগত করতে সরাসরি হেডকোয়ার্টার্সের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয়। আপনি খেলছেন না, কেন খেলছেন না—এটা আমাকে কে জানাবে? কোচ জানাবে। কোনো খেলোয়াড় যদি চোটে পড়ে, এটা আমাকে কে জানাবে? ফিজিও জানাবে। কোনো খেলোয়াড় যদি মেয়েলি সমস্যায় ভোগে, কে জানাবে—ফিজিও জানাবে কোচের মাধ্যমে। এখানে আমার কী করার আছে?

প্রশ্ন: জাহানারা যেসব অভিযোগ তুলেছেন, এসব ভয়ানক...

মঞ্জু: প্রমাণটা কোথায়? যদি তাকে বলে থাকি, তখন কি সে দলের কারও সঙ্গে শেয়ার করেনি?

প্রশ্ন: জাহানারা জানিয়েছেন, তখন বিসিবিকে তিনি পর্যবেক্ষণ জানিয়েছিলেন।

মঞ্জু: তখনকার চেয়ারম্যান (শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল) নিজের বক্তব্য দিয়েছেন, দেখেছেন ওটা (জাহানারা তখন যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনেননি বলে দাবি) ? এখানে আমি আর কী বলব? সে বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক ছিল, লম্বা সময় সার্ভিস দিয়েছে। তাকে আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখি। ও তো বলেছে, নাদেল ভাইকেও জানিয়েছিল। নাদেল ভাই বলেছেন, মঞ্জু নিয়মের ব্যাপারে কড়া ছিল। যদি নিয়মের মধ্যে থাকা অন্যায় হয়ে থাকে, যে পানিশমেন্ট দেয়, মাথা পেতে নেব।

প্রশ্ন: কাউকে অভ্যন্তরীণভাবে যদি মৌখিকভাবে উত্ত্যক্ত বা নিপীড়ন করা হয়, সেটার প্রমাণ রাখার উপায় কী?

মঞ্জু: আমার কি স্ত্রী-মেয়ে-বোন নেই? আমাকে এত বছর আপনারা দেখছেন—কখনো কি আমার ব্যাপারে এমন কিছু শুনেছেন? আর তাদের অভিযোগই যখন আছে, তখন কেন প্রকাশ্যে আসেনি?

প্রশ্ন: জাহানারা দাবি করেছেন, তখনই তিনি পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন বিসিবিকে।

মঞ্জু: কাকে তারা জানিয়েছে? তাহলে আমাকে কেন বরখাস্ত করেনি বিসিবি? কেন আমার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হয়নি? আচ্ছা, আন্তর্জাতিক ম্যাচে, বিশ্বকাপের সময় ম্যাচে টিভি ক্যামেরা থাকে না? আমি যখন তাঁকে এসব বলেছি, আছে কোনো ক্যামেরায়?

প্রশ্ন: একাধিক নারী ক্রিকেটারের দাবি, আপনি নাকি তাঁদের সঙ্গে টাচ করে কথা বলতে পছন্দ করতেন।

মঞ্জু: এত সাংবাদিক মাঠে ক্রিকেট কাভার করছেন, কখনো কি আপনারা এসব দেখেননি?

প্রশ্ন: ড্রেসিংরুম বা অভ্যন্তরীণ অনেক বিষয় তো বাইরে থেকে দেখা-বোঝা কঠিন।

মঞ্জু: আমি দেখেছি, মেয়েদের ড্রেসিংরুমে কোনো পুরুষ কোচিং স্টাফ যেত না। টিম মিটিংয়ের সময় সবাই একসঙ্গে যেত। আলাদাভাবে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। আপনি সব কোচিং স্টাফের কাছে শুনে দেখতে পারেন। ইমন তো হেড কোচ ছিল, ওকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। আমি বলেছি, যেকোনো তদন্ত কমিটিকে ফেস করতে তৈরি। আমি দেশে আসব। কেন দেশে আসব না? আমাকে দেশে আসতেই হবে।

প্রশ্ন: এই অভিযোগের পর পারিবারিক, সামাজিকভাবে আপনাকে কতটা কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে?

মঞ্জু: আমার স্ত্রী আমার শক্তি। এই সময়ে তার পাশে থাকতে পারছি না, এটাই আফসোস। আমি এখন চীনে। চীন নারী দলের কোচ হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো চুক্তি করেছে ওরা। দিজ ইজ নট ম্যাটার অব জোক! আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ থাকলে তারা কি আমাকে নিত? আমি মাত্র নামাজ শেষ করেছি (কাল রাতে)। সত্যি বলছি, ওই ভিডিও (ইউটিউবারকে দেওয়া জাহানারার সাক্ষাৎকার) সাড়ে তিন মিনিটের পর আর দেখতেই পারিনি। যদি সদয় হন, আপনারা কি বুঝতে পারছেন না? জানি না আল্লাহ আমার কোন পরীক্ষা নিচ্ছেন। হয়তো ভালো কিছুর জন্য কাউকে কোনো দিন কষ্ট দিয়েছিলাম। যদি এসব অভিযোগ প্রমাণিত না হয়, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করব না।

প্রশ্ন: কেন অভিযোগ করতে চান না?

মঞ্জু: চাই না, কারও কারণে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট ক্ষতিগ্রস্ত হোক।

প্রশ্ন: যেভাবে খলনায়ক হিসেবে চিত্রিত হচ্ছেন তাতে... (প্রশ্ন শেষ না হতেই)।

মঞ্জু: আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি। পরিবারকে শক্ত থাকতে বলেছি। কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে, তাহলে আমি খারাপ! তবে প্রমাণ করতে হবে।

প্রশ্ন: বিসিবি কি এর মধ্যে আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে?

মঞ্জু: অফিশিয়ালি হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত