Ajker Patrika

পাকিস্তানি ক্রিকেটারের বন্দুকের মতো উদযাপন নিয়ে ভারতের তীব্র সমালোচনা

ক্রীড়া ডেস্ক    
ভারতের বিপক্ষে ফিফটির পর বন্দুকের মতো করে উদযাপন করলেন সাহিবজাদা ফারহান (ডানে)। সতীর্থ সাইম আইয়ুব সেটা দাঁড়িয়ে দেখছেন। ছবি: ক্রিকইনফো
ভারতের বিপক্ষে ফিফটির পর বন্দুকের মতো করে উদযাপন করলেন সাহিবজাদা ফারহান (ডানে)। সতীর্থ সাইম আইয়ুব সেটা দাঁড়িয়ে দেখছেন। ছবি: ক্রিকইনফো

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আগের জৌলুস এখন আর নেই। ভারতই এখন একতরফাভাবে জিতে যায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে। কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্স ছাপিয়ে অন্যান্য ঘটনায় ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে হয় আলোচনা-সমালোচনা। দুবাইয়ে গতকাল ফের যখন মুখোমুখি হলো দুই দল, তখন ফের সমালোচিত হয়েছে নানা কারণে।

দুবাইয়ে গতকাল টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া পাকিস্তান করেছে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭১ রান। ইনিংস সর্বোচ্চ ৫৮ রান করেন সাহিবজাদা ফারহান। পাকিস্তানি ওপেনার ৪৫ বলের ইনিংসে মেরেছেন ৫ চার ও ৩ ছক্কা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি তুলে নেওয়ার পর নিজের ব্যাটকে বন্দুক বানিয়ে উদযাপন করেছেন ফারহান। ভারতের বিপক্ষে তাঁর এই উদযাপন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। ভারতের রাজনৈতিক দল শিবসেনা ইউবিটির এক নেতা সঞ্জয় রাউত নিজের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘সাহিবজাদা ফারহান প্রমাণ করে দেখাল কীভাবে পেহেলগামে ২৬ নিরীহ মানুষকে নৃশংসভাবে পাকিস্তানি সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছিল। ফিফটি করার পর একে ৪৭-এর মতো ব্যাট উঁচিয়ে ধরেছে। বিসিসিআই ও মোদি সরকারের ওপর থুতু ছেটানো হলো তাতে। ভারতের এমন লজ্জাজনক অবস্থার জন্য জয় শাহর ভারত রত্ন উপাধি পাওয়া উচিত।’

এ বছরের এপ্রিলে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের গুলিতে পর্যটক নিহত হওয়ার পরপরই দুই দেশই সামরিক সংঘাতে জড়িয়েছিল। মে মাসে হওয়া ভারত সেই অভিযানের নাম দিয়েছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’। এশিয়া কাপে দুই দলকে এক গ্রুপে রাখা নিয়ে হয়েছিল তীব্র সমালোচনা। দুবাইয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর টসের সময় ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব করমর্দন করেননি পাকিস্তানি অধিনায়ক সালমান আলী আঘার সঙ্গে। এমনকি সেদিনের ম্যাচ শেষে পাকিস্তানিদের সঙ্গে করমর্দন না করার প্রসঙ্গ এলে সূর্যকুমার বলেছিলেন, ‘যেমনটা বলেছি, এই জয় অপারেশন সিঁদুরে অংশ নেওয়া সাহসী সৈনিকদের উৎসর্গ করছি। তাঁরা আমাদের অনুপ্রেরণা। ভারতীয় সরকার, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)—তাদের সঙ্গে মিলিয়েই এই সিদ্ধান্ত (পাকিস্তানিদের সঙ্গে হাত না মেলানো)।’

এক সপ্তাহ পর ফের দুবাইয়ে গতকাল ভারত-পাকিস্তানের সুপার ফোরের ম্যাচে ঘটেছে একই ঘটনা। সমাজবাদী পার্টি নামে আরেক রাজনৈতিক দলের নেতা শরদ স্মরণ সামাজিকমাধ্যমে লিখেছেন, ‘লোকেরা সাহিবজাদা ফারহানকে দুষছেন। সে পেহেলগাম আক্রমণের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। ভারতে যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেটা নিয়ে ভারতীয়দেরই উপহাস করেছে সে। যদি মোদি চাইতেন, ভারত কি খেলত পাকিস্তানের বিপক্ষে?’

দুবাইয়ে গত রাতে হারিস রউফের কাণ্ডও ভাইরাল হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, রউফ সীমানার ধারে ফিল্ডিং করছেন। ভারতীয় দর্শকেরা তাঁকে উদ্দেশ্য করে ‘কোহলি, কোহলি’ বলে খেপাচ্ছিলেন। ভারতীয় দর্শকদের উদ্দেশ্যে বিমান ধসের ইঙ্গিত দিয়েছেন এবং ৬ আঙুল বের করেছেন। মে মাসে হওয়া ভারত সেই অভিযানের নাম দিয়েছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’। দুই দেশের সামরিক সংঘাতে ভারতের ৬টি বিমান পাকিস্তানের আক্রমণে ভূপাতিত হয়েছিল বলে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল। সেই বিমানগুলো ফরাসি রাফায়েল জেট বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। দুবাইয়ে গতকাল রউফের কর্মকাণ্ড চার মাস আগের সেই ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করছে বলে ভারতীয়, পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে।

পাকিস্তানের দেওয়া ১৭২ রানের লক্ষ্য ৭ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে জিতেছে ভারত। যে রউফ বিমান ধসের ইঙ্গিত দিয়ে আলোচনায় এসেছেন, তিনিই নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন। ৪ ওভারে ২৬ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। সুপার ফোরে পাকিস্তানের পরবর্তী প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে আগামীকাল হবে শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান ম্যাচ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত