অনলাইন ডেস্ক
পৃথিবীর টেকটোনিক প্লেটগুলোর চলাচলের ফলে আমাদের গ্রহের ভূপৃষ্ঠের স্তর বা ভূত্বক ক্রমাগতভাবে পুনর্গঠিত হচ্ছে। এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার কারণে পৃথিবীর আদিম যুগের (হাডিয়ান যুগের) শিলাস্তর ও খনিজ পদার্থ অত্যন্ত দুর্লভ হয়ে পড়েছে। এই প্রাচীন শিলাগুলোর অভাব ভূতত্ত্ববিদদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ সেগুলোর মাধ্যমে পৃথিবীর জন্মের পরবর্তী প্রাথমিক ভূ-গঠনের ধাপগুলো সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া সম্ভব হতো। তবে সেই ঘাটতি কিছুটা মেটাবে সম্প্রতি কানাডায় আবিষ্কৃত প্রাচীন শিলা।
সম্প্রতি ‘সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় নিশ্চিত করা হয়েছে, কানাডার নুভুভাগিতুক গ্রিনস্টোন বেল্টে (Nuvvuagittuq Greenstone Belt) পাওয়া শিলাগুলো পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রাচীন। গবেষকদের মতে, এই শিলার বয়স ৪ দশমিক ১৬ বিলিয়ন বা ৪১৬ কোটি বছর, যা পৃথিবীর প্রাচীনতম ভূতাত্ত্বিক সময়, হাডিয়ান ইঅনের (Hadean Eon) অন্তর্ভুক্ত।
অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জোনাথন ও’নিল বলেন, ‘এই নিশ্চিতকরণ আমাদের বলছে, নুভুভাগিতুক বেল্টই পৃথিবীর একমাত্র স্থান, যেখানে হাডিয়ান ইঅনের সময় গঠিত শিলা পাওয়া গেছে। অর্থাৎ, পৃথিবীর প্রথম ৫০ কোটি বছরের ইতিহাস এখানেই লুকিয়ে আছে।’
পৃথিবী এক অবিরাম পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায় গলন, পুনঃস্ফটিকীকরণ ইত্যাদি প্রক্রিয়ায়। এ কারণে প্রাচীন শিলা শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে ২০১৭ সালে কুইবেকের নুনাভিকে প্রাচীন এই শিলাগুলোর প্রথম সন্ধান পান গবেষকেরা। এরপর থেকেই শুরু হয় সেগুলোর নির্ভুল বয়স নির্ধারণের কাজ।
যেভাবে বয়স নির্ধারণ করলেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষক দল পেট্রোলজি ও জিওকেমিস্ট্রির সমন্বয়ে কাজটি সম্পন্ন করেন। পেট্রোলজি শিলার গঠন, উৎস ও গঠনগত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে। আর জিওকেমিস্ট্রি বিশ্লেষণ করে শিলায় থাকা রাসায়নিক উপাদানসমূহ।
এই প্রাচীন শিলাগুলোর বয়স নির্ধারণে গবেষকেরা মূলত দুটি নির্দিষ্ট মৌলের আইসোটোপ (সমআইসোটোপ) বিশ্লেষণ করেছেন—সামারিয়াম (Samarium) ও নিওডিমিয়াম (Neodymium)। আইসোটোপ হলো একই মৌলের এমন কিছু রূপ, যাদের প্রোটনের সংখ্যা একই হলেও নিউট্রনের সংখ্যা ভিন্ন হয়।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই আইসোটোপগুলো ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং এই ক্ষয়ের হার সাধারণত নির্দিষ্ট থাকে। তাই বিজ্ঞানীরা এই ক্ষয়ের পরিমাণ পরিমাপ করে কোনো শিলা বা খনিজের বয়স নির্ধারণ করতে পারেন। অর্থাৎ, আইসোটপগুলো ঘড়ির মতো কাজ করে।
গবেষক দল যখন কানাডার নুভুভাগিতুক বেল্ট (Nuvvuagittuq Belt) এলাকার শিলাগুলোর সামারিয়াম ও নিওডিমিয়াম আইসোটোপ বিশ্লেষণ করে রেডিওমেট্রিক তারিখ নির্ধারণ করেন, তখন উভয় ক্ষেত্রেই তাঁরা একই ফল পান। অর্থাৎ, এই শিলাগুলোর বয়স প্রায় ৪ দশমিক ১৬ বিলিয়ন বছর। এই ফলাফল প্রমাণ করে যে, এগুলো পৃথিবীর প্রাচীনতম শিলাগুলোর মধ্যে একটি এবং পৃথিবীর আদিম ইতিহাস সম্পর্কে মূল্যবান ধারণা দিতে সক্ষম।
নুভুভাগিতুক বেল্ট কী
নুভুভাগিতুক গ্রিনস্টোন বেল্টটি উত্তর-পূর্ব কানাডায় অবস্থিত। এখানে আগ্নেয় ও পাললিক শিলা উভয়ই রয়েছে। এসব আগ্নেয় শিলার বয়স ৪১৬ কোটি বছর নির্ধারিত হয়েছে।
গবেষকেরা বলছেন, সেগুলোর প্রকৃত গঠনকাল আরও পুরোনো হতে পারে।
শুধু বয়সই নয়, এই শিলার গঠন প্রক্রিয়াও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই এলাকায় শিলাগুলো টেকটোনিক প্লেটের চলাচলের আগে গঠিত হয়েছে। এ ধরনের শিলা গঠনের প্রক্রিয়াকে বলা হয় হাইড্রোথারমাল অল্টারেশন। এতে করে সমুদ্রের উষ্ণ পানি ভূত্বকে প্রবেশ করে, শিলার সঙ্গে রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া করে আবার সাগরে ফিরে যায়।
গবেষকেরা বলছেন, নুভুভাগিতুক বেল্ট পৃথিবীতে হাইড্রোথারমাল অল্টারেশনের সবচেয়ে পুরোনো প্রমাণ।
পৃথিবীর শুরুর দিকের শিলা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে প্রাচীন ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া যেমন হাইড্রোথারমাল অল্টারেশন বোঝা যায়। পাশাপাশি, জীবন সৃষ্টির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ যেমন—তাপমাত্রা, বায়ুমণ্ডল, পানি সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া সম্ভব।
অধ্যাপক ও’নিল বলেন ‘এই শিলা বিশ্লেষণ আমাদের পৃথিবীর উৎসে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এর মাধ্যমে আমরা প্রাথমিক মহাদেশ গঠনের প্রক্রিয়া ও জীবনের উৎস সম্পর্কে ধারণা পেতে পারি।
পৃথিবীর টেকটোনিক প্লেটগুলোর চলাচলের ফলে আমাদের গ্রহের ভূপৃষ্ঠের স্তর বা ভূত্বক ক্রমাগতভাবে পুনর্গঠিত হচ্ছে। এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার কারণে পৃথিবীর আদিম যুগের (হাডিয়ান যুগের) শিলাস্তর ও খনিজ পদার্থ অত্যন্ত দুর্লভ হয়ে পড়েছে। এই প্রাচীন শিলাগুলোর অভাব ভূতত্ত্ববিদদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ সেগুলোর মাধ্যমে পৃথিবীর জন্মের পরবর্তী প্রাথমিক ভূ-গঠনের ধাপগুলো সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া সম্ভব হতো। তবে সেই ঘাটতি কিছুটা মেটাবে সম্প্রতি কানাডায় আবিষ্কৃত প্রাচীন শিলা।
সম্প্রতি ‘সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় নিশ্চিত করা হয়েছে, কানাডার নুভুভাগিতুক গ্রিনস্টোন বেল্টে (Nuvvuagittuq Greenstone Belt) পাওয়া শিলাগুলো পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রাচীন। গবেষকদের মতে, এই শিলার বয়স ৪ দশমিক ১৬ বিলিয়ন বা ৪১৬ কোটি বছর, যা পৃথিবীর প্রাচীনতম ভূতাত্ত্বিক সময়, হাডিয়ান ইঅনের (Hadean Eon) অন্তর্ভুক্ত।
অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জোনাথন ও’নিল বলেন, ‘এই নিশ্চিতকরণ আমাদের বলছে, নুভুভাগিতুক বেল্টই পৃথিবীর একমাত্র স্থান, যেখানে হাডিয়ান ইঅনের সময় গঠিত শিলা পাওয়া গেছে। অর্থাৎ, পৃথিবীর প্রথম ৫০ কোটি বছরের ইতিহাস এখানেই লুকিয়ে আছে।’
পৃথিবী এক অবিরাম পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায় গলন, পুনঃস্ফটিকীকরণ ইত্যাদি প্রক্রিয়ায়। এ কারণে প্রাচীন শিলা শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে ২০১৭ সালে কুইবেকের নুনাভিকে প্রাচীন এই শিলাগুলোর প্রথম সন্ধান পান গবেষকেরা। এরপর থেকেই শুরু হয় সেগুলোর নির্ভুল বয়স নির্ধারণের কাজ।
যেভাবে বয়স নির্ধারণ করলেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষক দল পেট্রোলজি ও জিওকেমিস্ট্রির সমন্বয়ে কাজটি সম্পন্ন করেন। পেট্রোলজি শিলার গঠন, উৎস ও গঠনগত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে। আর জিওকেমিস্ট্রি বিশ্লেষণ করে শিলায় থাকা রাসায়নিক উপাদানসমূহ।
এই প্রাচীন শিলাগুলোর বয়স নির্ধারণে গবেষকেরা মূলত দুটি নির্দিষ্ট মৌলের আইসোটোপ (সমআইসোটোপ) বিশ্লেষণ করেছেন—সামারিয়াম (Samarium) ও নিওডিমিয়াম (Neodymium)। আইসোটোপ হলো একই মৌলের এমন কিছু রূপ, যাদের প্রোটনের সংখ্যা একই হলেও নিউট্রনের সংখ্যা ভিন্ন হয়।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই আইসোটোপগুলো ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং এই ক্ষয়ের হার সাধারণত নির্দিষ্ট থাকে। তাই বিজ্ঞানীরা এই ক্ষয়ের পরিমাণ পরিমাপ করে কোনো শিলা বা খনিজের বয়স নির্ধারণ করতে পারেন। অর্থাৎ, আইসোটপগুলো ঘড়ির মতো কাজ করে।
গবেষক দল যখন কানাডার নুভুভাগিতুক বেল্ট (Nuvvuagittuq Belt) এলাকার শিলাগুলোর সামারিয়াম ও নিওডিমিয়াম আইসোটোপ বিশ্লেষণ করে রেডিওমেট্রিক তারিখ নির্ধারণ করেন, তখন উভয় ক্ষেত্রেই তাঁরা একই ফল পান। অর্থাৎ, এই শিলাগুলোর বয়স প্রায় ৪ দশমিক ১৬ বিলিয়ন বছর। এই ফলাফল প্রমাণ করে যে, এগুলো পৃথিবীর প্রাচীনতম শিলাগুলোর মধ্যে একটি এবং পৃথিবীর আদিম ইতিহাস সম্পর্কে মূল্যবান ধারণা দিতে সক্ষম।
নুভুভাগিতুক বেল্ট কী
নুভুভাগিতুক গ্রিনস্টোন বেল্টটি উত্তর-পূর্ব কানাডায় অবস্থিত। এখানে আগ্নেয় ও পাললিক শিলা উভয়ই রয়েছে। এসব আগ্নেয় শিলার বয়স ৪১৬ কোটি বছর নির্ধারিত হয়েছে।
গবেষকেরা বলছেন, সেগুলোর প্রকৃত গঠনকাল আরও পুরোনো হতে পারে।
শুধু বয়সই নয়, এই শিলার গঠন প্রক্রিয়াও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই এলাকায় শিলাগুলো টেকটোনিক প্লেটের চলাচলের আগে গঠিত হয়েছে। এ ধরনের শিলা গঠনের প্রক্রিয়াকে বলা হয় হাইড্রোথারমাল অল্টারেশন। এতে করে সমুদ্রের উষ্ণ পানি ভূত্বকে প্রবেশ করে, শিলার সঙ্গে রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া করে আবার সাগরে ফিরে যায়।
গবেষকেরা বলছেন, নুভুভাগিতুক বেল্ট পৃথিবীতে হাইড্রোথারমাল অল্টারেশনের সবচেয়ে পুরোনো প্রমাণ।
পৃথিবীর শুরুর দিকের শিলা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে প্রাচীন ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া যেমন হাইড্রোথারমাল অল্টারেশন বোঝা যায়। পাশাপাশি, জীবন সৃষ্টির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ যেমন—তাপমাত্রা, বায়ুমণ্ডল, পানি সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া সম্ভব।
অধ্যাপক ও’নিল বলেন ‘এই শিলা বিশ্লেষণ আমাদের পৃথিবীর উৎসে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এর মাধ্যমে আমরা প্রাথমিক মহাদেশ গঠনের প্রক্রিয়া ও জীবনের উৎস সম্পর্কে ধারণা পেতে পারি।
পৃথিবীর বাইরের কোনো গ্রহে যদি একদিন মানুষের বসতি গড়তে হয়, তাহলে কেমন হবে সেই পরিবেশ? সেটা বোঝার চেষ্টা থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় তৈরি হয়েছিল ‘বায়োস্ফিয়ার ২’। তিন একরের বেশি জায়গাজুড়ে নির্মিত বিশাল কাচঘেরা ভবনটি যেন এক কৃত্রিম পৃথিবী।
৯ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওর এক দম্পতি সম্প্রতি এক চমৎকার ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাঁরা সন্তান জন্ম দিয়ে নতুন এক বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন। কারণ, যে ভ্রূণ থেকে তাদের সন্তানের জন্ম হয়েছে তা ওই দম্পতির শুক্রাণু ও ডিম্বাণু থেকে তৈরি হয়নি। মূলত, তাঁরা ৩১ বছর ধরে সংরক্ষণ করে রাখা এক ভ্রূণ থেকে তাদের সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
১৫ ঘণ্টা আগেপৃথিবীর জলবায়ুর নাটকীয় পরিবর্তনের পেছনে ১২ হাজার বছরেরও বেশি সময় আগের এক বিশাল ধ্বংসপ্রাপ্ত ধূমকেতুর ধূলিকণা দায়ী হতে পারে। নতুন এক গবেষণায় এই চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে।
১৮ ঘণ্টা আগেবিজ্ঞানীরা পৃথিবীর নিকটতম নক্ষত্রমণ্ডল আলফা সেন্টরিতে এক বিশাল গ্যাস গ্রহ থাকার শক্ত প্রমাণ পেয়েছেন। জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাবে সাড়ে চার আলোকবর্ষ দূরের এই প্রাণহীন গ্রহকে পৃথিবীর ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এর উপগ্রহে জীবনের উপযোগী পরিবেশ থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে!
১ দিন আগে