আজকের পত্রিকা ডেস্ক
প্রায় ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে পৃথিবীর বুকে ডাইনোসরদের রাজত্বের অবসান হয় এক ভয়ংকর গ্রহাণু আছড়ে পড়ার মাধ্যমে। প্রায় ১২ কিলোমিটার প্রস্থের একটি গ্রহাণু ঘণ্টায় প্রায় ৪৩ হাজার কিলোমিটার গতিতে পৃথিবীতে আঘাত হানে। এই সংঘর্ষের ফলে একের পর এক প্রাণঘাতী ঘটনা শুরু হয়। এটি শেষ পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রায় ৭৫ শতাংশ প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটায়। তবে হিমালয়ের সমান বিশাল এই গ্রহাণুর পরিণতি কী হয়েছিল, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের বেশ আগ্রহ রয়েছে।
টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর প্ল্যানেটারি সিস্টেমস হ্যাবিট্যাবিলিটির গবেষক ও সহপরিচালক শন গুলিক বলেন, যখন এটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে, তখন এর শক্তি ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত পারমাণবিক বোমার প্রায় ৮০০ কোটি গুণ। এই আঘাতে গ্রহাণুটি মূলত বাষ্পীভূত হয়ে যায়। এরপর সেই সূক্ষ্ম ধূলিকণা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে ছড়িয়ে পড়ে এবং বৃষ্টির মতো পৃথিবীর সর্বত্র ঝরে পড়ে।
এই গ্রহাণুর ধূলিকণা কয়েক দশক ধরে বৃষ্টির মতো পৃথিবীর ওপর ঝরে পড়ে একটি পাতলা স্তর তৈরি করে। এই স্তরকেই বলা হয় ‘ইরিডিয়াম অ্যানোমালি’।
গবেষক শন গুলিক জানান, এই শিলাস্তরে পৃথিবীর অন্য যেকোনো স্থানের তুলনায় ৮০ গুণ বেশি ইরিডিয়াম রয়েছে। ইরিডিয়াম সাধারণত গ্রহাণুতে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। তবে পৃথিবীর বাইরের স্তরে এটি প্রায় নেই বললেই চলে। তাই ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর পুরোনো এই ইরিডিয়াম-সমৃদ্ধ স্তর স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে, ডাইনোসরদের বিলুপ্তির পেছনে সেই গ্রহাণুই দায়ী।
১৯৯৮ সালে এই গ্রহাণুর সম্ভবত একমাত্র দৃশ্যমান অংশ খুঁজে পান ইউসিএলএর ভূ-রসায়নবিদ ফ্রাংক কাইট। তিনি হাওয়াই উপকূলে একটি নমুনা বিশ্লেষণ করে একটি ছোট পাথরের টুকরো আবিষ্কার করেন। এটি ছিল তিলের বীজের মতো ছোট। পরবর্তী সময়ে ২০২২ সালে আরও কিছু ক্ষুদ্র টুকরো আবিষ্কৃত হয়েছে বলে দাবি করা হলেও সেগুলোর পক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
গুলিক বলেন, ‘বড় অংশ খুঁজে পাওয়া হলে সেটা হবে এক দুর্দান্ত সৌভাগ্য। তাঁর মতে, এ ধরনের নমুনা থাকলে বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুর সংঘর্ষের সময় চাপ ও তাপমাত্রা সম্পর্কে আরও নির্ভুল তথ্য পাবেন।
এই গ্রহাণুর আরেকটি আরেকটি স্থায়ী চিহ্ন হলো—মেক্সিকোর ইউকাতান উপদ্বীপে অবস্থিত এক বিশাল গর্ত চিকশুলুব (Chicxulub) ক্রেটার। এই গর্ত প্রায় ১৮০ কিলোমিটার প্রশস্ত এবং ২০ কিলোমিটার গভীর। সময়ের ব্যবধানে সৃষ্ট শিলাস্তর এবং গাল্ফ অব মেক্সিকোর পানির নিচে চাপা পড়ে গেলেও ক্রেটারের একাংশ এখনো দৃশ্যমান, যেখানে দুর্বল চুনাপাথরে তৈরি ধনুকের মতো সিংকহোলের সারি দেখা যায়।
গ্রহাণু আঘাত হানার ফলে প্রায় এক মাইল উচ্চতার সুনামি সৃষ্টি হয়, যা পুরো মহাসাগর পাড়ি দিয়ে ঘণ্টায় ১৪৩ কিলোমিটার গতিতে পানির ঢেউ বইয়ে দেয়। এই সুনামি যুক্তরাষ্ট্রের লুসিয়া অঞ্চলের সমুদ্রপৃষ্ঠে ‘মেগারিপলস’ তৈরি করে। যেগুলোর উচ্চতা ছিল পাঁচতলা ভবনের সমান এবং যা এখনো মাটির নিচে সংরক্ষিত আছে। ভূকম্পন বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, এই ঢেউয়ের উৎস ছিল ঠিক চিকশুলুব ক্রেটার থেকে।
উল্লেখ্য, মেগারিপলস হলো বিশাল ঢেউয়ের মতো ভূ-আকৃতি, যা তৈরি হয় দুর্দান্ত শক্তিশালী পানির স্রোত বা সুনামির ফলে সমুদ্রের নিচে।
সংঘর্ষের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর বহু প্রাণী তাৎক্ষণিকভাবে মারা গেলেও মূল ক্ষতি শুরু হয় এর পরবর্তী প্রভাব থেকে। ভয়ানক অ্যাসিড বৃষ্টি, বিশাল অগ্নিকাণ্ড এবং সর্বোপরি সূর্যালোক রোধকারী ধূলিকণা আবরণের ফলে বিভিন্ন প্রজাতি বিলুপ্ত হতে শুরু করে।
এতে বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা হ্রাস পায়, ফটোসিন্থেসিস বা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া কমে যায় এবং খাদ্য শৃঙ্খল ভেঙে পড়ে। বিজ্ঞানীরা এটিকে এক প্রকারের ‘নিউক্লিয়ার উইন্টার’ বলে উল্লেখ করেন। তবে এই ঠান্ডা আবহাওয়ার স্থায়িত্ব নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
প্রায় ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে পৃথিবীর বুকে ডাইনোসরদের রাজত্বের অবসান হয় এক ভয়ংকর গ্রহাণু আছড়ে পড়ার মাধ্যমে। প্রায় ১২ কিলোমিটার প্রস্থের একটি গ্রহাণু ঘণ্টায় প্রায় ৪৩ হাজার কিলোমিটার গতিতে পৃথিবীতে আঘাত হানে। এই সংঘর্ষের ফলে একের পর এক প্রাণঘাতী ঘটনা শুরু হয়। এটি শেষ পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রায় ৭৫ শতাংশ প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটায়। তবে হিমালয়ের সমান বিশাল এই গ্রহাণুর পরিণতি কী হয়েছিল, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের বেশ আগ্রহ রয়েছে।
টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর প্ল্যানেটারি সিস্টেমস হ্যাবিট্যাবিলিটির গবেষক ও সহপরিচালক শন গুলিক বলেন, যখন এটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে, তখন এর শক্তি ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত পারমাণবিক বোমার প্রায় ৮০০ কোটি গুণ। এই আঘাতে গ্রহাণুটি মূলত বাষ্পীভূত হয়ে যায়। এরপর সেই সূক্ষ্ম ধূলিকণা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে ছড়িয়ে পড়ে এবং বৃষ্টির মতো পৃথিবীর সর্বত্র ঝরে পড়ে।
এই গ্রহাণুর ধূলিকণা কয়েক দশক ধরে বৃষ্টির মতো পৃথিবীর ওপর ঝরে পড়ে একটি পাতলা স্তর তৈরি করে। এই স্তরকেই বলা হয় ‘ইরিডিয়াম অ্যানোমালি’।
গবেষক শন গুলিক জানান, এই শিলাস্তরে পৃথিবীর অন্য যেকোনো স্থানের তুলনায় ৮০ গুণ বেশি ইরিডিয়াম রয়েছে। ইরিডিয়াম সাধারণত গ্রহাণুতে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। তবে পৃথিবীর বাইরের স্তরে এটি প্রায় নেই বললেই চলে। তাই ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর পুরোনো এই ইরিডিয়াম-সমৃদ্ধ স্তর স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে, ডাইনোসরদের বিলুপ্তির পেছনে সেই গ্রহাণুই দায়ী।
১৯৯৮ সালে এই গ্রহাণুর সম্ভবত একমাত্র দৃশ্যমান অংশ খুঁজে পান ইউসিএলএর ভূ-রসায়নবিদ ফ্রাংক কাইট। তিনি হাওয়াই উপকূলে একটি নমুনা বিশ্লেষণ করে একটি ছোট পাথরের টুকরো আবিষ্কার করেন। এটি ছিল তিলের বীজের মতো ছোট। পরবর্তী সময়ে ২০২২ সালে আরও কিছু ক্ষুদ্র টুকরো আবিষ্কৃত হয়েছে বলে দাবি করা হলেও সেগুলোর পক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
গুলিক বলেন, ‘বড় অংশ খুঁজে পাওয়া হলে সেটা হবে এক দুর্দান্ত সৌভাগ্য। তাঁর মতে, এ ধরনের নমুনা থাকলে বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুর সংঘর্ষের সময় চাপ ও তাপমাত্রা সম্পর্কে আরও নির্ভুল তথ্য পাবেন।
এই গ্রহাণুর আরেকটি আরেকটি স্থায়ী চিহ্ন হলো—মেক্সিকোর ইউকাতান উপদ্বীপে অবস্থিত এক বিশাল গর্ত চিকশুলুব (Chicxulub) ক্রেটার। এই গর্ত প্রায় ১৮০ কিলোমিটার প্রশস্ত এবং ২০ কিলোমিটার গভীর। সময়ের ব্যবধানে সৃষ্ট শিলাস্তর এবং গাল্ফ অব মেক্সিকোর পানির নিচে চাপা পড়ে গেলেও ক্রেটারের একাংশ এখনো দৃশ্যমান, যেখানে দুর্বল চুনাপাথরে তৈরি ধনুকের মতো সিংকহোলের সারি দেখা যায়।
গ্রহাণু আঘাত হানার ফলে প্রায় এক মাইল উচ্চতার সুনামি সৃষ্টি হয়, যা পুরো মহাসাগর পাড়ি দিয়ে ঘণ্টায় ১৪৩ কিলোমিটার গতিতে পানির ঢেউ বইয়ে দেয়। এই সুনামি যুক্তরাষ্ট্রের লুসিয়া অঞ্চলের সমুদ্রপৃষ্ঠে ‘মেগারিপলস’ তৈরি করে। যেগুলোর উচ্চতা ছিল পাঁচতলা ভবনের সমান এবং যা এখনো মাটির নিচে সংরক্ষিত আছে। ভূকম্পন বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, এই ঢেউয়ের উৎস ছিল ঠিক চিকশুলুব ক্রেটার থেকে।
উল্লেখ্য, মেগারিপলস হলো বিশাল ঢেউয়ের মতো ভূ-আকৃতি, যা তৈরি হয় দুর্দান্ত শক্তিশালী পানির স্রোত বা সুনামির ফলে সমুদ্রের নিচে।
সংঘর্ষের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর বহু প্রাণী তাৎক্ষণিকভাবে মারা গেলেও মূল ক্ষতি শুরু হয় এর পরবর্তী প্রভাব থেকে। ভয়ানক অ্যাসিড বৃষ্টি, বিশাল অগ্নিকাণ্ড এবং সর্বোপরি সূর্যালোক রোধকারী ধূলিকণা আবরণের ফলে বিভিন্ন প্রজাতি বিলুপ্ত হতে শুরু করে।
এতে বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা হ্রাস পায়, ফটোসিন্থেসিস বা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া কমে যায় এবং খাদ্য শৃঙ্খল ভেঙে পড়ে। বিজ্ঞানীরা এটিকে এক প্রকারের ‘নিউক্লিয়ার উইন্টার’ বলে উল্লেখ করেন। তবে এই ঠান্ডা আবহাওয়ার স্থায়িত্ব নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
প্রাচীন মিসরীয়রা তাদের পিরামিডগুলোকে সুরক্ষিত করতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছিল। তবে অনেকেই মনে করেন বহিরাগতদের ঠেকাতে তারা পিরামিডের ভেতর ফাঁদ তৈরি করে রাখতেন। এই তথ্য কতটুকু সত্য তা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট লাইভ সায়েন্স।
১ দিন আগেমহাবিশ্বের একেবারে প্রারম্ভিক যুগে একটি বিশাল আকারের ব্ল্যাকহলো বা কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান পেয়েছে বিজ্ঞানীরা। তবে এটি তাত্ত্বিক সীমার চেয়েও ২ দশমিক ৪ গুণ বেশি হারে বড় হচ্ছে। এই আবিষ্কারটি মহাবিশ্বের শুরুর দিকে জন্ম নেওয়া কৃষ্ণগহ্বরগুলো কীভাবে এত দ্রুত এত বিশাল হয়ে উঠেছে, সেই রহস্যকে আরও ঘনীভূত করেছে।
২ দিন আগেফুটবল ম্যাচে দর্শকেরা প্রায়ই দেখতে পান, খেলোয়াড়েরা পানীয়ের বোতল থেকে এক চুমুক নিয়ে তা কিছুক্ষণ পরই মুখ থেকে ফেলে দিচ্ছেন। ব্যাপারটি দেখে অবাক লাগলেও এর পেছনে রয়েছে পুরোদস্তুর কৌশল এবং বৈজ্ঞানিক কারণ।
২ দিন আগেপৃথিবী হয়তো সৌরজগতের একমাত্র বাসযোগ্য গ্রহ। তবে এর মানে এই নয় যে, আমরা একা। প্রায়ই ছোট-বড় গ্রহাণু আমাদের পাশ কাটিয়ে চলে যায়। সাম্প্রতিক এমনই এক নতুন অতিথি ধরা দিয়েছে—গ্রহাণু ২০২৫ পিএন ৭ পিএন৭।
৩ দিন আগে