Ajker Patrika

দুর্ঘটনাবশত আবিষ্কৃত হয় সুপার গ্লু, কীভাবে কাজ করে

আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯: ০৩
দুর্ঘটনাবশত আবিষ্কৃত হয় সুপার গ্লু, কীভাবে কাজ করে

ভেঙে যাওয়া জিনিস দ্রুত ও টেকসইভাবে জোড়া লাগাতে সুপার গ্লু বেশ জনপ্রিয়। তবে এই শক্তিশালী আঠা উদ্ভাবিত হয়েছিল দুর্ঘটনাবশত! এই উদ্ভাবনের কাহিনি জানতে হলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফিরে যেতে হবে।

১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিভিন্ন কোম্পানি মিত্রবাহিনীকে সাহায্য করার চেষ্টা করছিল। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যামেরা প্রস্তুতকারী কোম্পানি ইস্টম্যান কোডাকে কাজ করতেন ড. হ্যারি কুভার। তিনি এই কোম্পানির একজন বিনিয়োগকারীও ছিলেন। কুভার একটি প্লাস্টিক গান সাইট (বন্দুকের যেখানে চোখ রেখে লক্ষ্য ঠিক করা হয়) বানাতে চাচ্ছিলেন, যা মিত্রবাহিনীর সৈন্যরা ব্যবহার করতে পারবেন। 

গান সাইট তৈরির জন্য তিনি সায়ানোঅ্যাক্রিলেট নামের উপাদান নিয়ে কাজ করছিলেন। তবে উপাদানটি খুবই আঠালো হওয়ায় তিনি ও তাঁর দল এটি নিয়ে কাজ করা শেষ পর্যন্ত বাদ দেন। 

এক দশক পর জেট বিমানের ক্যানোপির (ককপিটের স্বচ্ছ ঢাকনা) জন্য তাপপ্রতিরোধী পলিমার নিয়ে গবেষণা করার সময় কুভার এই উপাদান নিয়ে আবার কাজ করেন। বিভিন্ন জিনিস জোড়া লাগানোর জন্য সায়ানোঅ্যাক্রিলেটকে উত্তপ্ত করতে হয় না এবং এর মাধ্যমে স্থায়ীভাবে বিভিন্ন জিনিস জোড়া লাগে। 

কুভার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে অবশেষে ১৯৫৬ সালে ‘অ্যালকোহল-ক্যাটালাইজড সায়ানোঅ্যাক্রিলেটেড অ্যাডহেসিভ’ নামে সুপার গ্লু পেটেন্ট করেন। 

পেটেন্ট করার পর কুভার ও ইস্টম্যানের দল এই উপাদানকে ‘ইস্টম্যান ৯১০’ নামে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন ও বাজারজাত শুরু করেন। যা পরে সুপার গ্লু নামে পরিচিত হয়। এই নাম এতটাই জনপ্রিয় হয় যে এটি বিভিন্ন কোম্পানির শক্তিশালী আঠার পরিচিতির জন্য ব্যবহার শুরু হয়। 
 
সুপার গ্লু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় উদ্ভাবিত হলেও ভিয়েতনাম যুদ্ধে সামরিক চিকিৎসকেরা গুরুতর আহত সৈনিকদের জীবন বাঁচাতে এটি ব্যবহার করতেন। ঘাঁটিতে অনেক সৈন্য আহত হলে তাৎক্ষণিকভাবে রক্ত বন্ধ করার জন্য এই আঠা সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করা হতো। 

সুপার গ্লু যেভাবে কাজ করে
সুপার গ্লুর প্রধান উপাদান সায়ানোঅ্যাক্রিলেট। এটি একটি অ্যাক্রিলিক রেজিন (প্লাস্টিক জাতীয় বস্তু, যা বারবার তাপে গলানো যায়), যা খুব দ্রুত বন্ধন তৈরি করে। এটি কাজ করার জন্য পানিতে থাকা হাইড্রক্সিল আয়নের (OH-) প্রয়োজন হয়। সব জিনিসের সঙ্গে কিছু না কিছু জলীয় অংশ থাকে। পানির সংস্পর্শে সায়ানোঅ্যাক্রিলেট আঠালো হয়ে যায়। এটি আর্দ্র স্থানেই সবচেয়ে ভালো কাজ করে। যদিও একদম ভেজা জায়গায় এটি ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

সায়ানোঅ্যাক্রিলেট শুধু ভাঙা বা ছেঁড়া জিনিস জোড়া লাগাতেই কাজ করে না; এটি বিভিন্ন দেশে অপরাধ তদন্তকারীরা এটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট (আঙুলের ছাপ) শনাক্তে ব্যবহার করে। সায়ানোঅ্যাক্রিলেটকে তাপ দিলে সৃষ্ট ধোঁয়া ঘনীভূত হয়ে মসৃণ পৃষ্ঠের ওপর একটি সাদা পলিমার স্তর তৈরি করে, ফলে আঙুলের ছাপ স্পষ্ট বোঝা যায়। এটি কার্বন পাউডার ছড়িয়ে আঙুলের ছাপ শনাক্ত করার চেয়ে কার্যকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত