অনলাইন ডেস্ক
প্রস্তর যুগে চীনের পূর্বাঞ্চলে সমাজের নেতৃত্বে ছিলেন নারী। সম্প্রতি পাওয়া ডিএনএ বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এমনই অভূতপূর্ব তথ্য। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বছর আগের কঙ্কালের জিনগত উপাদান বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, সেই সময়কার সমাজ ছিল মাতৃতান্ত্রিক এবং সমাজের সদস্যরা অন্তত ১০ প্রজন্ম ধরে মায়ের বংশ অনুসারে সমাহিত হতেন।
চীনের পূর্বাঞ্চলের ফুজিয়া নামক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে আবিষ্কৃত হয়েছে দুটি সমাধিস্থল। প্রাচীন একটি আবাসিক এলাকার দুই প্রান্তে (উত্তর ও দক্ষিণ দিকে) প্রায় ১০০ মিটার দূরত্বে অবস্থিত ছিল এ দুই সমাধিস্থল।
ফুজিয়ায় পাঁচ শতাধিক সমাধিস্থল খনন করে রেডিওকার্বন বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা গেছে, সমাধিস্থলগুলো ২ হাজার ৭৫০ থেকে ২ হাজার ৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে কোনো এক সময়ে তৈরি।
গত ৪ জুন বিশ্বখ্যাত জার্নাল নেচারে প্রকাশিত এক গবেষণায় আন্তর্জাতিক একদল গবেষক ফুজিয়া থেকে পাওয়া ৬০টি কঙ্কালের ডিএনএ বিশ্লেষণের ফল প্রকাশ করেন। এর মধ্যে ১৪টি কঙ্কাল উত্তরের সমাধিস্থল থেকে এবং ৪৬টি দক্ষিণের সমাধিস্থল থেকে পাওয়া যায়।
গবেষকেরা দেখেছেন, উত্তর সমাধিস্থলের ১৪ জনে ব্যক্তির সবার মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ ছিল একই রকম। উল্লেখ্য, মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ শুধু মাতার মাধ্যমে সন্তানের শরীরে স্থানান্তরিত হয়। অন্যদিকে, দক্ষিণ সমাধিস্থলের ৪৬ জনের মধ্যে ৪৪ জনের মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ ছিল এক ধরনের, যা স্পষ্ট করে যে, উভয় সমাধিস্থলে সমাহিত ব্যক্তিদের মায়ের বংশ অনুসারে সমাহিত করা হয়েছে।
নারী ও পুরুষ উভয়কেই তাদের মায়ের বংশ অনুসারে সমাহিত করার এই প্রবণতা একটি পরিপূর্ণ মাতৃতান্ত্রিক সমাজের ইঙ্গিত বহন করে বলে গবেষকেরা জানান। বিশেষ করে, কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদেরও মায়ের বংশ অনুসারে সমাহিত করা হয়েছে, যা এই তত্ত্বকে আরও শক্তিশালী করে।
পুরুষ কঙ্কালগুলোর ওয়াই ক্রোমোজোম বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা দেখেছেন, তাঁদের পিতৃসম্পর্কীয় রক্তের মধ্যে ছিল ব্যাপক বৈচিত্র্য। অর্থাৎ পুরুষেরা বাইরের সম্প্রদায় থেকে আসতেন। তবে সন্তানদের লালন-পালন ও সমাহিত করার নিয়ম চলত মায়ের রক্ত অনুসারে।
মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ ও ওয়াই ক্রোমোজোম বিশ্লেষণে দেখা যায়, ফুজিয়ার বেশির ভাগ মানুষকে তাদের মায়ের বংশের ভিত্তিতে সমাধিস্থ দেওয়া হয়েছে, যা একটি প্রকৃত মাতৃতান্ত্রিক সমাজের রূপ নির্দেশ করে।
গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, অন্তত ১০ প্রজন্মজুড়ে ‘রক্ত সম্পর্কে’ বিয়ের প্রবণতা ছিল স্পষ্ট। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের সঙ্গে বিয়ের ইঙ্গিত মিলেছে।
গবেষকেরা বলেন, যদিও এটি আদর্শ বিবাহের ধরন নয়। তবে ছোট ও বিচ্ছিন্ন সমাজে এমনটি ঘটতেই পারে।
ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ পর্যন্ত বিশ্বের মাত্র তিনটি প্রাচীন সমাজে মাতৃতান্ত্রিক সমাজ পাওয়া গেছে—নিউ মেক্সিকোর চাকো ক্যানিয়ন, জার্মানির সেল্টিক অভিজাত শ্রেণি এবং ব্রিটেনের ডুরোট্রাইজ গোত্র। এ ছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু বর্তমান সমাজে মাতৃতান্ত্রিক রীতি দেখা যায়।
গবেষক দল জানিয়েছে, ফুজিয়ার সমাজব্যবস্থা একেবারে অনন্য এবং পূর্ব এশিয়ার প্রস্তর যুগে জনগোষ্ঠীর মধ্যে এমন মাতৃতান্ত্রিক সমাজ এই প্রথম পাওয়া গেল। এ আবিষ্কার ছোট সমাজ থেকে বড় এবং জটিল সমাজব্যবস্থায় রূপান্তরের সময়কার সামাজিক ও পরিবেশগত বাস্তবতা বুঝতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এ বিষয়ে চীনের শানডং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদ ইউ ডং বলেন, ‘নিওলিথিক যুগের (নব্যপ্রস্তর যুগ–১২ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার খ্রিষ্টপূর্ব) চীনে একটি মাতৃতান্ত্রিক সমাজ খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত রোমাঞ্চকর।’
গবেষকেরা আশা প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতের ডিএনএ ও প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা আমাদের আরও স্পষ্ট করে বুঝতে সাহায্য করবে, ঠিক কীভাবে প্রাচীন সমাজে নারীর নেতৃত্বে সমাজ গঠিত হয়েছিল।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
প্রস্তর যুগে চীনের পূর্বাঞ্চলে সমাজের নেতৃত্বে ছিলেন নারী। সম্প্রতি পাওয়া ডিএনএ বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এমনই অভূতপূর্ব তথ্য। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বছর আগের কঙ্কালের জিনগত উপাদান বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, সেই সময়কার সমাজ ছিল মাতৃতান্ত্রিক এবং সমাজের সদস্যরা অন্তত ১০ প্রজন্ম ধরে মায়ের বংশ অনুসারে সমাহিত হতেন।
চীনের পূর্বাঞ্চলের ফুজিয়া নামক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে আবিষ্কৃত হয়েছে দুটি সমাধিস্থল। প্রাচীন একটি আবাসিক এলাকার দুই প্রান্তে (উত্তর ও দক্ষিণ দিকে) প্রায় ১০০ মিটার দূরত্বে অবস্থিত ছিল এ দুই সমাধিস্থল।
ফুজিয়ায় পাঁচ শতাধিক সমাধিস্থল খনন করে রেডিওকার্বন বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা গেছে, সমাধিস্থলগুলো ২ হাজার ৭৫০ থেকে ২ হাজার ৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে কোনো এক সময়ে তৈরি।
গত ৪ জুন বিশ্বখ্যাত জার্নাল নেচারে প্রকাশিত এক গবেষণায় আন্তর্জাতিক একদল গবেষক ফুজিয়া থেকে পাওয়া ৬০টি কঙ্কালের ডিএনএ বিশ্লেষণের ফল প্রকাশ করেন। এর মধ্যে ১৪টি কঙ্কাল উত্তরের সমাধিস্থল থেকে এবং ৪৬টি দক্ষিণের সমাধিস্থল থেকে পাওয়া যায়।
গবেষকেরা দেখেছেন, উত্তর সমাধিস্থলের ১৪ জনে ব্যক্তির সবার মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ ছিল একই রকম। উল্লেখ্য, মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ শুধু মাতার মাধ্যমে সন্তানের শরীরে স্থানান্তরিত হয়। অন্যদিকে, দক্ষিণ সমাধিস্থলের ৪৬ জনের মধ্যে ৪৪ জনের মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ ছিল এক ধরনের, যা স্পষ্ট করে যে, উভয় সমাধিস্থলে সমাহিত ব্যক্তিদের মায়ের বংশ অনুসারে সমাহিত করা হয়েছে।
নারী ও পুরুষ উভয়কেই তাদের মায়ের বংশ অনুসারে সমাহিত করার এই প্রবণতা একটি পরিপূর্ণ মাতৃতান্ত্রিক সমাজের ইঙ্গিত বহন করে বলে গবেষকেরা জানান। বিশেষ করে, কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদেরও মায়ের বংশ অনুসারে সমাহিত করা হয়েছে, যা এই তত্ত্বকে আরও শক্তিশালী করে।
পুরুষ কঙ্কালগুলোর ওয়াই ক্রোমোজোম বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা দেখেছেন, তাঁদের পিতৃসম্পর্কীয় রক্তের মধ্যে ছিল ব্যাপক বৈচিত্র্য। অর্থাৎ পুরুষেরা বাইরের সম্প্রদায় থেকে আসতেন। তবে সন্তানদের লালন-পালন ও সমাহিত করার নিয়ম চলত মায়ের রক্ত অনুসারে।
মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ ও ওয়াই ক্রোমোজোম বিশ্লেষণে দেখা যায়, ফুজিয়ার বেশির ভাগ মানুষকে তাদের মায়ের বংশের ভিত্তিতে সমাধিস্থ দেওয়া হয়েছে, যা একটি প্রকৃত মাতৃতান্ত্রিক সমাজের রূপ নির্দেশ করে।
গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, অন্তত ১০ প্রজন্মজুড়ে ‘রক্ত সম্পর্কে’ বিয়ের প্রবণতা ছিল স্পষ্ট। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের সঙ্গে বিয়ের ইঙ্গিত মিলেছে।
গবেষকেরা বলেন, যদিও এটি আদর্শ বিবাহের ধরন নয়। তবে ছোট ও বিচ্ছিন্ন সমাজে এমনটি ঘটতেই পারে।
ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ পর্যন্ত বিশ্বের মাত্র তিনটি প্রাচীন সমাজে মাতৃতান্ত্রিক সমাজ পাওয়া গেছে—নিউ মেক্সিকোর চাকো ক্যানিয়ন, জার্মানির সেল্টিক অভিজাত শ্রেণি এবং ব্রিটেনের ডুরোট্রাইজ গোত্র। এ ছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু বর্তমান সমাজে মাতৃতান্ত্রিক রীতি দেখা যায়।
গবেষক দল জানিয়েছে, ফুজিয়ার সমাজব্যবস্থা একেবারে অনন্য এবং পূর্ব এশিয়ার প্রস্তর যুগে জনগোষ্ঠীর মধ্যে এমন মাতৃতান্ত্রিক সমাজ এই প্রথম পাওয়া গেল। এ আবিষ্কার ছোট সমাজ থেকে বড় এবং জটিল সমাজব্যবস্থায় রূপান্তরের সময়কার সামাজিক ও পরিবেশগত বাস্তবতা বুঝতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এ বিষয়ে চীনের শানডং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদ ইউ ডং বলেন, ‘নিওলিথিক যুগের (নব্যপ্রস্তর যুগ–১২ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার খ্রিষ্টপূর্ব) চীনে একটি মাতৃতান্ত্রিক সমাজ খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত রোমাঞ্চকর।’
গবেষকেরা আশা প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতের ডিএনএ ও প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা আমাদের আরও স্পষ্ট করে বুঝতে সাহায্য করবে, ঠিক কীভাবে প্রাচীন সমাজে নারীর নেতৃত্বে সমাজ গঠিত হয়েছিল।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
প্রতি বছর নদী, সমুদ্র ও অন্য বিভিন্ন জলাশয় থেকে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মাছ ধরা হয়। এদের বেশির ভাগই খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে এই বিপুল-সংখ্যক মাছ ধরার পরে তাদের যে পদ্ধতিতে মারা হয়, তা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাছকে পানি থেকে তোলার পর তারা গড়ে প্রায় ২২ মিনিট পর্যন্ত
২ দিন আগেপৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক মরুভূমিগুলোর কেন্দ্রে অবস্থিত আরব অঞ্চল একসময় সবুজে মোড়ানো স্বর্গোদ্যান ছিল। মরুপ্রধান অঞ্চল হলেও পৃথিবীর দীর্ঘ ইতিহাসে এই ভূমি নানা সময়ে আর্দ্র আবহাওয়ার দেখা পেয়েছে, আর তখনই সেখানে জন্ম নিয়েছে লেক-নদী, বনভূমি এবং জীববৈচিত্র্যের স্বর্গ। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে এমনটাই
৪ দিন আগেপ্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে প্রাচীন মিশরে তৈরি একটি বুনন করা লিনেন পোশাক এখন বিশ্বের সর্বপ্রাচীন বুনন করা পোশাক জামা হিসেবে স্বীকৃত। কার্বন ডেটিংয়ের মাধ্যমে জানা গেছে, ‘তারখান ড্রেস’ নামে পরিচিত এই পোশাকটি ৩৫০০ থেকে ৩১০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে তৈরি হয়েছে।
৪ দিন আগেপ্রতিবছর শীত এলেই বাংলাদেশের আকাশে দেখা মেলে হাজার হাজার অতিথি বা পরিযায়ী পাখির। সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া কিংবা হিমালয়ের পাদদেশ থেকে এসব পাখি উড়ে আসে দেশের হাওর-বাঁওড়, জলাশয় আর নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে। আবার গরম পড়লেই তারা পাড়ি জমায় হাজার হাজার কিলোমিটার দূরের নিজের ঠিকানায়।
৫ দিন আগে