Ajker Patrika

মাছের ত্বকে রংয়ের বাহার ও নকশার রহস্য সমাধানে আংশিক সফলতা

ডয়চে ভেলে
মাছের ত্বকে রংয়ের বাহার ও নকশার রহস্য সমাধানে আংশিক সফলতা

অ্যাকোরিয়ামে রংবেরঙের মাছ দেখতে কার না ভালো লাগে! কিন্তু মাছের ত্বকে এত রং ও নকশার বাহার এল কোথা থেকে? প্রায় এক শতাব্দী ধরে বিজ্ঞানীরা সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন। এবার সেই রহস্যের পুরোপুরি না হলেও আংশিক সমাধান করা সম্ভব হয়েছে।

কিছু মাছের ত্বক ডোরাকাটা আর অন্য মাছের ত্বকে বিন্দু থাকে কেন? কয়েকশ কোটি বছর ধরে পৃথিবীর বুকে মাছ বিচরণ করছে ৷ পানির এই বাসিন্দার রং ও নকশার বৈচিত্র্যের শেষ নেই ৷ এবার মলিকিউলার বায়োলজির কৌশল প্রয়োগ করে সেই বৈচিত্র্যের রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হচ্ছে৷ 

সিক্লিড মাছ গবেষকদের কাছে সব সময়ই আকর্ষণীয় এক গবেষণার বস্তু ৷ কারণ এই মাছটির বিভিন্ন প্রজাতি বিবর্তনের ফলে নানা ধরনের আকার ও নকশার তৈরি হয়েছে। 

আফ্রিকার ভিক্টোরিয়া হ্রদে বিবর্তন অনেকটাই দ্রুত গতিতে ঘটেছে ৷ মাত্র কয়েক হাজার বছরের মধ্যে সেখানে প্রায় ৫০০ প্রজাতির সিক্লিড মাছের আবির্ভাব ঘটেছে ৷ আশপাশের হ্রদ থেকে আসা হাতে গোনা কয়েকটি পূর্বপুরুষের দৌলতে এমন বৈচিত্র্য সম্ভব হয়েছে।

ভিক্টোরিয়া হ্রদে বিভিন্ন ধরনের হ্যাবিটেট বা বাসস্থান রয়েছে ৷ এই প্রজাতির মাছ এগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে ৷ যে সব মাছ জলজ উদ্ভিদের মধ্যে বাস করে, সেগুলির গা ডোরাকাটা হলে শিকারিদের চোখ এড়ানো সহজ হয় ৷ অন্যদিকে খোলা পানির মধ্যে চরে বেড়ানো মাছের সেই ছদ্মবেশের প্রয়োজন হয় না। বরং ‘হরাইজন্টাল স্ট্রাইপ' বা অনুভূমিক রেখা তাদের জন্য ভালো ৷ কারণ সে ক্ষেত্রে শিকারিদের পক্ষে কোনো একটি মাছের প্রতি মনোযোগ দেওয়া সহজ হয় না। 

এই প্রজাতির মাছের ত্বকে ভিন্ন ধরনের দাগ কীভাবে আসে, বিবর্তন সংক্রান্ত জীববিজ্ঞানীরা সেই রহস্য উন্মোচন করেছেন ৷ একাধিক পরীক্ষায় তাঁরা ডোরাকাটা ত্বকের পুরুষ মাছের সঙ্গে অনুভূমিক রেখার পাঁচটি করে মাদি মাছ একসঙ্গে রেখেছিলেন। দেখা গেল, সেই মাছের বাচ্চাগুলোর একটিরও শরীরে অনুভূমিক রেখা সৃষ্টি হয়নি। ওই একই দল থেকে নতুন গ্রুপ সৃষ্টি করা হলো, যার মধ্যে একটি পুরুষ ও অনেকগুলি মাদি মাছ রাখা হলো। সেই মাছের এক চতুর্থাংশ বাচ্চার বেলায় অনুভূমিক রেখা দেখা গেল ৷ বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্তে পৌঁছালেন, অনুভূমিক রেখা তখনই দেখা যায়, যখন বাবা এবং মা, দুজনের কাছ থেকেই সন্তান সেই জিন পায়। 

মিডাস প্রজাতির সিক্লিড মাছের ক্ষেত্রে রংয়ের বৈচিত্র্যের পেছনে সম্ভবত তথাকথিত ‘জাম্পিং জিন'-এর ভূমিকা আছে ৷ মিডাস প্রজাতির সব সিক্লিড মাছের প্রথমে একটা ঘন রং থাকে ৷ তারপর শরীরের বিকাশের সময় ‘জাম্পিং জিন'-এর কল্যাণে কমলা, হলুদ বা এমনকি সাদা রংও দেখা যায়।

ঘন রং থেকে সোনালিতে পরিবর্তনের জন্য মেলানিন নামের ঘন পিগমেন্ট-ভরা কোষ দায়ী, যেগুলি মাছের ত্বকে মরে যায় ৷ সেটা আসলে মাছের রং হারানোর প্রক্রিয়া ৷ তা ছাড়া ‘জাম্পিং জিন' মাছের আঁশের মধ্যে প্রোটিন তৈরির প্রক্রিয়া পরিবর্তন করে।

উল্লেখ্য, গবেষকেরা এক শ বছরেরও বেশি সময় ধরে মাছের ত্বকের রং ও নকশার বিকাশ নিয়ে কাজ করছেন ৷ এখনো অনেক রহস্যের উন্মোচন বাকি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত