অনলাইন ডেস্ক
নিয়মিত আকাশপথে ভ্রমণ করা যাত্রীদের জন্য টার্বুলেন্স বা ঝাঁকুনি কোনো নতুন অভিজ্ঞতা নয়। শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে চলমান বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের ইতিহাসে এই টার্বুলেন্স মোকাবিলায় ব্যাপক উন্নতি হয়েছে।
টার্বুলেন্স হলো বায়ুর একধরনের অনিয়মিত প্রবাহ। এটি দুই বিপরীতমুখী বাতাসের সংঘর্ষের কারণে তৈরি হতে পারে। বিপরীতমুখী বায়ুপ্রবাহের এই ধাক্কাধাক্কির মধ্যে উড়োজাহাজ এসে পড়লেই মারাত্মক ঝাঁকুনি লাগতে পারে। ফলে উড়োজাহাজের গতি ও উচ্চতায় আকস্মিক পরিবর্তন ঘটতে পারে।
এ ছাড়া বাতাসের চাপ খুব বেশি থাকলেও উড়োজাহাজ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।
আধুনিক আবহাওয়াবিদ্যা ও প্রযুক্তির কল্যাণে আজকের দিনেও উড়োজাহাজচালকেরা পূর্বাভাস পেয়ে প্রস্তুতি নিতে পারেন কোথায় এবং কখন টার্বুলেন্সের মুখে পড়তে পারেন। বিশেষ করে পর্বতমালার আশপাশে বা জেট স্ট্রিমের নিকটবর্তী এলাকায় টার্বুলেন্স বেশি হয়, যা এখন বৈজ্ঞানিকভাবে জানা ও চিহ্নিত। ফলে, সংশ্লিষ্ট এলাকা দিয়ে যাত্রা করলে আগে থেকেই সতর্ক থাকেন পাইলট ও ক্রুরা।
উল্লেখ্য, জেট স্ট্রিম হলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে (মূলত ট্রপোস্ফিয়ারে) থাকা খুবই শক্তিশালী, সরু ও দ্রুত গতির বায়ুর ধারা, যা পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে বয়।
টার্বুলেন্স ও আবহাওয়ার যোগসূত্র
বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনার আগে কেবল স্থানীয় আবহাওয়া নয়, পুরো পথের আবহাওয়ার খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করা হয়। আবহাওয়া যেমন বদলায়, তেমনি এর সঙ্গে যুক্ত হয় ঝড়বৃষ্টি বা বজ্রপাতের মতো ঘটনা—যা টার্বুলেন্সের অন্যতম কারণ।
এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) পাইলটদের নিয়মিতভাবে পরিস্থিতি জানিয়ে থাকে। ফ্লাইট চলাকালীন অন্য পাইলটদের কাছ থেকে পাওয়া রিপোর্ট, যাকে বলা হয় পাইআরইপিএস (পাইলট রির্পোটস), সেটাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) নির্দেশনা অনুযায়ী, যদি কোথাও অল্প দূরত্ব বা সময়ের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ বা দিকের হঠাৎ পরিবর্তন হয় (উইন্ড শেয়ার), বজ্রপাত অথবা মাঝারি বা তীব্র টার্বুলেন্সের পূর্বাভাস থাকে বা তা চলমান থাকে, তবে পাইলটদের অবশ্যই সেই প্রতিবেদন দিতে হবে। এর ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ অ্যাভিয়েশন ওয়েদার সিস্টেমে সেই তথ্য যুক্ত হয়, যা পরবর্তীকালে অন্য পাইলটদের সাহায্য করে।
তবে সব ধরনের টার্বুলেন্স সহজে ধরা পড়ে না। উদাহরণস্বরূপ, ‘ক্লিয়ার এয়ার টার্বুলেন্স’—যেটা সাধারণত উইন্ড শেয়ারের কারণে হয়—তা অনেক সময় আবহাওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত না থাকায় রাডারে ধরা পড়ে না।
তবে এই সমস্যাও এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। নতুন ধরনের রাডার প্রযুক্তি, ডেটালিংক আবহাওয়া সিস্টেম এবং রিয়েল টাইম রিপোর্টের মাধ্যমে এখন এসব টার্বুলেন্স অনেকটাই শনাক্ত করতে পারে।
প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণে টার্বুলেন্স মোকাবিলা
আজকাল কেবল আবহাওয়া পূর্বাভাস নয়, উড়োজাহাজের ককপিটে এমন প্রযুক্তি থাকে যার মাধ্যমে আকাশে উড়ার সময় তাৎক্ষণিক আবহাওয়ার অবস্থা দেখা যায়। এ তথ্যগুলো সাধারণত বিভিন্ন রঙের মাধ্যমে দেখানো হয়, যাতে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা সহজে চেনা যায় যেমন—সবুজ মানে নিরাপদ, আর লাল মানে এড়িয়ে চলার মতো ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা।
তাই কোনো ফ্লাইটে সময়ের ভিন্নতা থাকা অস্বাভাবিক নয়। কারণ, পাইলট সর্বদা চেষ্টা করেন ঝুঁকিপূর্ণ পথ এড়িয়ে নিরাপদ পথ বেছে নিতে—সরাসরি বা দ্রুত পথ নয়, নিরাপদ পথই মূল বিষয়।
ফ্লাইট শেষে ব্রিফিংয়ের সময়ও পাইলট ও ক্রুরা ফ্লাইট চলাকালীন টার্বুলেন্সের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। কীভাবে মোকাবিলা করা হলো, কোথায় উন্নতির সুযোগ আছে—এসব নিয়েই হয় বিশ্লেষণ। এর ফলেই ভবিষ্যতের ফ্লাইটগুলো হয় আরও নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল।
গবেষণায় আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব রিডিংয়ের বায়ুমণ্ডলবিষয়ক বিজ্ঞানী অধ্যাপক পল উইলিয়ামস সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘বর্তমানে প্রায় ৭৫ শতাংশ ক্লিয়ার এয়ার টার্বুলেন্স আমরা শনাক্ত করতে পারি, যেখানে ২০ বছর আগে এটি ছিল মাত্র ৬০ শতাংশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘উন্নত গবেষণার ফলে এই হার ক্রমাগত বাড়ছে।’
এভাবেই পাইলট, প্রযুক্তিবিদ ও গবেষকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাণিজ্যিক বিমান চলাচল দিন দিন আরও নিরাপদ হয়ে উঠছে। শুধু বড় উড়োজাহাজ নয়, ব্যক্তিগত জেটগুলোও একই ধরনের টার্বুলেন্সের সম্মুখীন হয় এবং তাদের ক্ষেত্রেও একই প্রযুক্তি ও সতর্কতা প্রয়োগ হয়।
তথ্যসূত্র: স্ল্যাশগিয়ার
নিয়মিত আকাশপথে ভ্রমণ করা যাত্রীদের জন্য টার্বুলেন্স বা ঝাঁকুনি কোনো নতুন অভিজ্ঞতা নয়। শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে চলমান বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের ইতিহাসে এই টার্বুলেন্স মোকাবিলায় ব্যাপক উন্নতি হয়েছে।
টার্বুলেন্স হলো বায়ুর একধরনের অনিয়মিত প্রবাহ। এটি দুই বিপরীতমুখী বাতাসের সংঘর্ষের কারণে তৈরি হতে পারে। বিপরীতমুখী বায়ুপ্রবাহের এই ধাক্কাধাক্কির মধ্যে উড়োজাহাজ এসে পড়লেই মারাত্মক ঝাঁকুনি লাগতে পারে। ফলে উড়োজাহাজের গতি ও উচ্চতায় আকস্মিক পরিবর্তন ঘটতে পারে।
এ ছাড়া বাতাসের চাপ খুব বেশি থাকলেও উড়োজাহাজ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।
আধুনিক আবহাওয়াবিদ্যা ও প্রযুক্তির কল্যাণে আজকের দিনেও উড়োজাহাজচালকেরা পূর্বাভাস পেয়ে প্রস্তুতি নিতে পারেন কোথায় এবং কখন টার্বুলেন্সের মুখে পড়তে পারেন। বিশেষ করে পর্বতমালার আশপাশে বা জেট স্ট্রিমের নিকটবর্তী এলাকায় টার্বুলেন্স বেশি হয়, যা এখন বৈজ্ঞানিকভাবে জানা ও চিহ্নিত। ফলে, সংশ্লিষ্ট এলাকা দিয়ে যাত্রা করলে আগে থেকেই সতর্ক থাকেন পাইলট ও ক্রুরা।
উল্লেখ্য, জেট স্ট্রিম হলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে (মূলত ট্রপোস্ফিয়ারে) থাকা খুবই শক্তিশালী, সরু ও দ্রুত গতির বায়ুর ধারা, যা পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে বয়।
টার্বুলেন্স ও আবহাওয়ার যোগসূত্র
বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনার আগে কেবল স্থানীয় আবহাওয়া নয়, পুরো পথের আবহাওয়ার খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করা হয়। আবহাওয়া যেমন বদলায়, তেমনি এর সঙ্গে যুক্ত হয় ঝড়বৃষ্টি বা বজ্রপাতের মতো ঘটনা—যা টার্বুলেন্সের অন্যতম কারণ।
এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) পাইলটদের নিয়মিতভাবে পরিস্থিতি জানিয়ে থাকে। ফ্লাইট চলাকালীন অন্য পাইলটদের কাছ থেকে পাওয়া রিপোর্ট, যাকে বলা হয় পাইআরইপিএস (পাইলট রির্পোটস), সেটাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) নির্দেশনা অনুযায়ী, যদি কোথাও অল্প দূরত্ব বা সময়ের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ বা দিকের হঠাৎ পরিবর্তন হয় (উইন্ড শেয়ার), বজ্রপাত অথবা মাঝারি বা তীব্র টার্বুলেন্সের পূর্বাভাস থাকে বা তা চলমান থাকে, তবে পাইলটদের অবশ্যই সেই প্রতিবেদন দিতে হবে। এর ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ অ্যাভিয়েশন ওয়েদার সিস্টেমে সেই তথ্য যুক্ত হয়, যা পরবর্তীকালে অন্য পাইলটদের সাহায্য করে।
তবে সব ধরনের টার্বুলেন্স সহজে ধরা পড়ে না। উদাহরণস্বরূপ, ‘ক্লিয়ার এয়ার টার্বুলেন্স’—যেটা সাধারণত উইন্ড শেয়ারের কারণে হয়—তা অনেক সময় আবহাওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত না থাকায় রাডারে ধরা পড়ে না।
তবে এই সমস্যাও এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। নতুন ধরনের রাডার প্রযুক্তি, ডেটালিংক আবহাওয়া সিস্টেম এবং রিয়েল টাইম রিপোর্টের মাধ্যমে এখন এসব টার্বুলেন্স অনেকটাই শনাক্ত করতে পারে।
প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণে টার্বুলেন্স মোকাবিলা
আজকাল কেবল আবহাওয়া পূর্বাভাস নয়, উড়োজাহাজের ককপিটে এমন প্রযুক্তি থাকে যার মাধ্যমে আকাশে উড়ার সময় তাৎক্ষণিক আবহাওয়ার অবস্থা দেখা যায়। এ তথ্যগুলো সাধারণত বিভিন্ন রঙের মাধ্যমে দেখানো হয়, যাতে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা সহজে চেনা যায় যেমন—সবুজ মানে নিরাপদ, আর লাল মানে এড়িয়ে চলার মতো ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা।
তাই কোনো ফ্লাইটে সময়ের ভিন্নতা থাকা অস্বাভাবিক নয়। কারণ, পাইলট সর্বদা চেষ্টা করেন ঝুঁকিপূর্ণ পথ এড়িয়ে নিরাপদ পথ বেছে নিতে—সরাসরি বা দ্রুত পথ নয়, নিরাপদ পথই মূল বিষয়।
ফ্লাইট শেষে ব্রিফিংয়ের সময়ও পাইলট ও ক্রুরা ফ্লাইট চলাকালীন টার্বুলেন্সের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। কীভাবে মোকাবিলা করা হলো, কোথায় উন্নতির সুযোগ আছে—এসব নিয়েই হয় বিশ্লেষণ। এর ফলেই ভবিষ্যতের ফ্লাইটগুলো হয় আরও নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল।
গবেষণায় আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব রিডিংয়ের বায়ুমণ্ডলবিষয়ক বিজ্ঞানী অধ্যাপক পল উইলিয়ামস সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘বর্তমানে প্রায় ৭৫ শতাংশ ক্লিয়ার এয়ার টার্বুলেন্স আমরা শনাক্ত করতে পারি, যেখানে ২০ বছর আগে এটি ছিল মাত্র ৬০ শতাংশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘উন্নত গবেষণার ফলে এই হার ক্রমাগত বাড়ছে।’
এভাবেই পাইলট, প্রযুক্তিবিদ ও গবেষকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাণিজ্যিক বিমান চলাচল দিন দিন আরও নিরাপদ হয়ে উঠছে। শুধু বড় উড়োজাহাজ নয়, ব্যক্তিগত জেটগুলোও একই ধরনের টার্বুলেন্সের সম্মুখীন হয় এবং তাদের ক্ষেত্রেও একই প্রযুক্তি ও সতর্কতা প্রয়োগ হয়।
তথ্যসূত্র: স্ল্যাশগিয়ার
বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাক্ষেত্রে অগ্রণী কিছু ভবিষ্যৎদ্রষ্টা মনে করছেন, মানুষ এখন আর আগের মতো কেবল শতবর্ষ আয়ুর স্বপ্ন দেখছে না। বরং এমন এক সময় আসছে, যখন আমরা স্বাভাবিক আয়ুর চেয়ে ১০ গুণ বেশি সময়, অর্থাৎ হাজার বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারি।
১ দিন আগেআমাদের সূর্যের চেয়ে ৩৬০০ গুণ বেশি ভরের বিশালাকৃতির ব্ল্যাকহোল খুঁজে পেলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এটি এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া সবচেয়ে বড় ব্ল্যাকহোলগুলোর একটি এবং সম্ভবত সর্ববৃহৎ। ব্ল্যাকহোলটি অবস্থান করছে ‘কসমিক হর্সশু’ নামের একটি গ্যালাক্সির কেন্দ্রে, যা পৃথিবী থেকে প্রায় ৫০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে।
১ দিন আগেপৃথিবীর বাইরের কোনো গ্রহে যদি একদিন মানুষের বসতি গড়তে হয়, তাহলে কেমন হবে সেই পরিবেশ? সেটা বোঝার চেষ্টা থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় তৈরি হয়েছিল ‘বায়োস্ফিয়ার ২’। তিন একরের বেশি জায়গাজুড়ে নির্মিত বিশাল কাচঘেরা ভবনটি যেন এক কৃত্রিম পৃথিবী।
২ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওর এক দম্পতি সম্প্রতি এক চমৎকার ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাঁরা সন্তান জন্ম দিয়ে নতুন এক বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন। কারণ, যে ভ্রূণ থেকে তাদের সন্তানের জন্ম হয়েছে তা ওই দম্পতির শুক্রাণু ও ডিম্বাণু থেকে তৈরি হয়নি। মূলত, তাঁরা ৩১ বছর ধরে সংরক্ষণ করে রাখা এক ভ্রূণ থেকে তাদের সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
২ দিন আগে