
সাধারণত পণ্য ও সেবার প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিজ্ঞাপনে চমকপ্রদ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তেমনি এলইডি বাল্ব কত টিকবে তা বিজ্ঞাপনে বলা হয়। একটি এলইডি বাল্বের আয়ু কীভাবে নির্ধারণ করা হয়, অর্থাৎ বাল্বটি থেকে কত দিন আলো পাওয়া যাবে—একজন ক্রেতা হিসেবে সেটি জানার আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক।
সাধারণ বিজলি বাতিতে টাংস্টেনের তৈরি সূক্ষ্ম ফিলামেন্ট থাকে। নিষ্ক্রিয় গ্যাস ভর্তি বাল্বের ভেতরে ফিলামেন্ট উত্তপ্ত হয়ে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটে। তবে এলইডি বাল্বের আলো তৈরির প্রক্রিয়াটি এমন নয়। সুইচ অফ করলে এগুলো হুট করে বন্ধ হয়ে যায় না।
এলইডি বাল্বের আলোর তীব্রতা ধীরে ধীরে আলো কমে যায়। এগুলো ৩০ থেকে ৫০ হাজার ঘণ্টা পর্যন্ত জ্বলতে পারে। যখন আলোর উজ্জ্বলতা মূল উজ্জ্বলতার ৭০ শতাংশে নেমে যায়, তখন এসব বাল্বের আয়ু শেষ হয়ে গেছে বলে ধরা হয়।
আলোর তীব্রতা পরিমাপের একক হলো লুমেন। কোনো দীপ্তিমান বস্তু থেকে এক সেকেন্ডে যে পরিমাণ আলোক শক্তি নির্গত হয় তাকে দীপ্তি বা আলোক প্রবাহ বা আলোক ফ্লাক্স বলে। আর আলোক ফ্লাক্স পরিমাপের একক লুমেন।
এলইডি বাল্বগুলো খুব টেকসই উপকরণ দিয়ে তৈরি। এগুলো জ্বালালে ঘর তাৎক্ষণিকভাবে আলোকিত হয়। এতে বিদ্যুৎ খরচও কম হয়।
এলইডি বাল্বের আয়ু কী
যতক্ষণ প্রয়োজনীয় আলো উৎপন্ন করতে পারে ততক্ষণই এলইডি বাল্বের আয়ু বলে ধরা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এলইডি বাল্বের লুমেন কমে যেতে থাকে, অর্থাৎ বাল্বের আলো ধীরে ধীরে ম্লান হতে থাকে। ঘরের বাল্বের ক্ষেত্রে উজ্জ্বলতা ৭০ শতাংশ বা ৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে বাল্বটির আয়ু শেষ হয়েছে বলে ধরা হয়। বাল্বের প্যাকেটের গায়ে এই হিসাব এল ৫০ ও এল ৭০ লেখা থাকে।
লুমেন ৭০ বা ৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে বাল্বগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী বলে মনে করা হয়। তবে এই বাল্বের আয়ু শুধু লুমেনের ওপর নির্ভর করে না। বাল্বের অন্যান্য উপাদান নষ্ট হয়ে গেলেও বাল্বটির আয়ু শেষ হয়ে যেতে পারে।
এলইডি বাল্বের আয়ু যেভাবে নির্ধারণ করা হয়
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, এলইডি বাল্বের উজ্জ্বলতা দিন দিন যদি কমতে থাকে, তাহলে কীভাবে একটি কোম্পানি দাবি করে যে, এই বাল্ব ১ হাজার ঘণ্টা পর্যন্ত আলো দিতে সক্ষম?
এটি নির্ধারণ করতে সমস্ত এলইডি লাইট বাল্ব বাজারজাত করার আগে কঠোর পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। আয়ু নির্ধারণের পরীক্ষার জন্য অনেকগুলো বাল্ব নমুনা হিসেবে নেওয়া হয়।
এই পরীক্ষার অংশ হিসেবে একটি বাল্ব বা বাতি আলোকিত করার সময় এলইডি চিপগুলো যুক্ত করা হয় ও সতর্ক পর্যবেক্ষণের অধীনে বাল্বের লুমেনগুলো ক্রমাগত পরিমাপ করা হয়। পরীক্ষার সময় উজ্জ্বলতার ডেটা সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে এই ডেটা একটি গাণিতিক সূত্রে ফেলা হয়। সূত্রের ফলাফলগুলো একটি গ্রাফ বা লেখচিত্রে বসিয়ে লুমেন মেইনটেন্যান্স কার্ভ বের করা হয়। যার মাধ্যমে বোঝা যায় কীভাবে এলইডি বাল্বের আলোর উজ্জ্বলতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হ্রাস পাবে। এই বক্ররেখা এলইডি চিপগুলোর গুণমান, বাল্বের নকশা ও পরিবেশগত অবস্থার মতো কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে।
লুমেন মেইনটেন্যান্স কার্ভের ওপর ভিত্তি করে এল ৭০ বা এল ৫০ বিন্দু গণনা করা হয়। এসব পয়েন্ট নির্ধারণের মাধ্যমে এলইডি বাল্বের আয়ু অনুমান করা যায়। অর্থাৎ কোনো বাল্বের লুমেন এল ৭০ রেটিং বের হলে বাল্বটি ২৫ হাজার ঘণ্টা চলার পর এর আলোর উজ্জ্বলতা ৭০ শতাংশের নিচে নামবে। একইভাবে এল ৫০ রেটিং পাওয়া গেলে বাল্বটি ৩০ হাজার ঘণ্টা চলার পর এর আলোর উজ্জ্বলতা ৫০ শতাংশের নিচে নামবে বলে বোঝা যায়।
অবশ্য একটি এলইডি বাল্ব ৭০ বা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত উজ্জ্বলতায় আলো কত দিন দিতে পারবে সেটি একেবারে নিখুঁতভাবে জানা যায় না। এটি মূলত একটি প্রাক্কলন। গুণমান পরীক্ষায় প্রক্রিয়াটি বাল্বের আয়ু সম্পর্কে একটি ধারণা দেয় মাত্র।
তথ্যসূত্র: সিম্পলি এলইডি

সাধারণত পণ্য ও সেবার প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিজ্ঞাপনে চমকপ্রদ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তেমনি এলইডি বাল্ব কত টিকবে তা বিজ্ঞাপনে বলা হয়। একটি এলইডি বাল্বের আয়ু কীভাবে নির্ধারণ করা হয়, অর্থাৎ বাল্বটি থেকে কত দিন আলো পাওয়া যাবে—একজন ক্রেতা হিসেবে সেটি জানার আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক।
সাধারণ বিজলি বাতিতে টাংস্টেনের তৈরি সূক্ষ্ম ফিলামেন্ট থাকে। নিষ্ক্রিয় গ্যাস ভর্তি বাল্বের ভেতরে ফিলামেন্ট উত্তপ্ত হয়ে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটে। তবে এলইডি বাল্বের আলো তৈরির প্রক্রিয়াটি এমন নয়। সুইচ অফ করলে এগুলো হুট করে বন্ধ হয়ে যায় না।
এলইডি বাল্বের আলোর তীব্রতা ধীরে ধীরে আলো কমে যায়। এগুলো ৩০ থেকে ৫০ হাজার ঘণ্টা পর্যন্ত জ্বলতে পারে। যখন আলোর উজ্জ্বলতা মূল উজ্জ্বলতার ৭০ শতাংশে নেমে যায়, তখন এসব বাল্বের আয়ু শেষ হয়ে গেছে বলে ধরা হয়।
আলোর তীব্রতা পরিমাপের একক হলো লুমেন। কোনো দীপ্তিমান বস্তু থেকে এক সেকেন্ডে যে পরিমাণ আলোক শক্তি নির্গত হয় তাকে দীপ্তি বা আলোক প্রবাহ বা আলোক ফ্লাক্স বলে। আর আলোক ফ্লাক্স পরিমাপের একক লুমেন।
এলইডি বাল্বগুলো খুব টেকসই উপকরণ দিয়ে তৈরি। এগুলো জ্বালালে ঘর তাৎক্ষণিকভাবে আলোকিত হয়। এতে বিদ্যুৎ খরচও কম হয়।
এলইডি বাল্বের আয়ু কী
যতক্ষণ প্রয়োজনীয় আলো উৎপন্ন করতে পারে ততক্ষণই এলইডি বাল্বের আয়ু বলে ধরা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এলইডি বাল্বের লুমেন কমে যেতে থাকে, অর্থাৎ বাল্বের আলো ধীরে ধীরে ম্লান হতে থাকে। ঘরের বাল্বের ক্ষেত্রে উজ্জ্বলতা ৭০ শতাংশ বা ৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে বাল্বটির আয়ু শেষ হয়েছে বলে ধরা হয়। বাল্বের প্যাকেটের গায়ে এই হিসাব এল ৫০ ও এল ৭০ লেখা থাকে।
লুমেন ৭০ বা ৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে বাল্বগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী বলে মনে করা হয়। তবে এই বাল্বের আয়ু শুধু লুমেনের ওপর নির্ভর করে না। বাল্বের অন্যান্য উপাদান নষ্ট হয়ে গেলেও বাল্বটির আয়ু শেষ হয়ে যেতে পারে।
এলইডি বাল্বের আয়ু যেভাবে নির্ধারণ করা হয়
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, এলইডি বাল্বের উজ্জ্বলতা দিন দিন যদি কমতে থাকে, তাহলে কীভাবে একটি কোম্পানি দাবি করে যে, এই বাল্ব ১ হাজার ঘণ্টা পর্যন্ত আলো দিতে সক্ষম?
এটি নির্ধারণ করতে সমস্ত এলইডি লাইট বাল্ব বাজারজাত করার আগে কঠোর পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। আয়ু নির্ধারণের পরীক্ষার জন্য অনেকগুলো বাল্ব নমুনা হিসেবে নেওয়া হয়।
এই পরীক্ষার অংশ হিসেবে একটি বাল্ব বা বাতি আলোকিত করার সময় এলইডি চিপগুলো যুক্ত করা হয় ও সতর্ক পর্যবেক্ষণের অধীনে বাল্বের লুমেনগুলো ক্রমাগত পরিমাপ করা হয়। পরীক্ষার সময় উজ্জ্বলতার ডেটা সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে এই ডেটা একটি গাণিতিক সূত্রে ফেলা হয়। সূত্রের ফলাফলগুলো একটি গ্রাফ বা লেখচিত্রে বসিয়ে লুমেন মেইনটেন্যান্স কার্ভ বের করা হয়। যার মাধ্যমে বোঝা যায় কীভাবে এলইডি বাল্বের আলোর উজ্জ্বলতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হ্রাস পাবে। এই বক্ররেখা এলইডি চিপগুলোর গুণমান, বাল্বের নকশা ও পরিবেশগত অবস্থার মতো কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে।
লুমেন মেইনটেন্যান্স কার্ভের ওপর ভিত্তি করে এল ৭০ বা এল ৫০ বিন্দু গণনা করা হয়। এসব পয়েন্ট নির্ধারণের মাধ্যমে এলইডি বাল্বের আয়ু অনুমান করা যায়। অর্থাৎ কোনো বাল্বের লুমেন এল ৭০ রেটিং বের হলে বাল্বটি ২৫ হাজার ঘণ্টা চলার পর এর আলোর উজ্জ্বলতা ৭০ শতাংশের নিচে নামবে। একইভাবে এল ৫০ রেটিং পাওয়া গেলে বাল্বটি ৩০ হাজার ঘণ্টা চলার পর এর আলোর উজ্জ্বলতা ৫০ শতাংশের নিচে নামবে বলে বোঝা যায়।
অবশ্য একটি এলইডি বাল্ব ৭০ বা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত উজ্জ্বলতায় আলো কত দিন দিতে পারবে সেটি একেবারে নিখুঁতভাবে জানা যায় না। এটি মূলত একটি প্রাক্কলন। গুণমান পরীক্ষায় প্রক্রিয়াটি বাল্বের আয়ু সম্পর্কে একটি ধারণা দেয় মাত্র।
তথ্যসূত্র: সিম্পলি এলইডি

সাধারণত পণ্য ও সেবার প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিজ্ঞাপনে চমকপ্রদ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তেমনি এলইডি বাল্ব কত টিকবে তা বিজ্ঞাপনে বলা হয়। একটি এলইডি বাল্বের আয়ু কীভাবে নির্ধারণ করা হয়, অর্থাৎ বাল্বটি থেকে কত দিন আলো পাওয়া যাবে—একজন ক্রেতা হিসেবে সেটি জানার আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক।
সাধারণ বিজলি বাতিতে টাংস্টেনের তৈরি সূক্ষ্ম ফিলামেন্ট থাকে। নিষ্ক্রিয় গ্যাস ভর্তি বাল্বের ভেতরে ফিলামেন্ট উত্তপ্ত হয়ে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটে। তবে এলইডি বাল্বের আলো তৈরির প্রক্রিয়াটি এমন নয়। সুইচ অফ করলে এগুলো হুট করে বন্ধ হয়ে যায় না।
এলইডি বাল্বের আলোর তীব্রতা ধীরে ধীরে আলো কমে যায়। এগুলো ৩০ থেকে ৫০ হাজার ঘণ্টা পর্যন্ত জ্বলতে পারে। যখন আলোর উজ্জ্বলতা মূল উজ্জ্বলতার ৭০ শতাংশে নেমে যায়, তখন এসব বাল্বের আয়ু শেষ হয়ে গেছে বলে ধরা হয়।
আলোর তীব্রতা পরিমাপের একক হলো লুমেন। কোনো দীপ্তিমান বস্তু থেকে এক সেকেন্ডে যে পরিমাণ আলোক শক্তি নির্গত হয় তাকে দীপ্তি বা আলোক প্রবাহ বা আলোক ফ্লাক্স বলে। আর আলোক ফ্লাক্স পরিমাপের একক লুমেন।
এলইডি বাল্বগুলো খুব টেকসই উপকরণ দিয়ে তৈরি। এগুলো জ্বালালে ঘর তাৎক্ষণিকভাবে আলোকিত হয়। এতে বিদ্যুৎ খরচও কম হয়।
এলইডি বাল্বের আয়ু কী
যতক্ষণ প্রয়োজনীয় আলো উৎপন্ন করতে পারে ততক্ষণই এলইডি বাল্বের আয়ু বলে ধরা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এলইডি বাল্বের লুমেন কমে যেতে থাকে, অর্থাৎ বাল্বের আলো ধীরে ধীরে ম্লান হতে থাকে। ঘরের বাল্বের ক্ষেত্রে উজ্জ্বলতা ৭০ শতাংশ বা ৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে বাল্বটির আয়ু শেষ হয়েছে বলে ধরা হয়। বাল্বের প্যাকেটের গায়ে এই হিসাব এল ৫০ ও এল ৭০ লেখা থাকে।
লুমেন ৭০ বা ৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে বাল্বগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী বলে মনে করা হয়। তবে এই বাল্বের আয়ু শুধু লুমেনের ওপর নির্ভর করে না। বাল্বের অন্যান্য উপাদান নষ্ট হয়ে গেলেও বাল্বটির আয়ু শেষ হয়ে যেতে পারে।
এলইডি বাল্বের আয়ু যেভাবে নির্ধারণ করা হয়
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, এলইডি বাল্বের উজ্জ্বলতা দিন দিন যদি কমতে থাকে, তাহলে কীভাবে একটি কোম্পানি দাবি করে যে, এই বাল্ব ১ হাজার ঘণ্টা পর্যন্ত আলো দিতে সক্ষম?
এটি নির্ধারণ করতে সমস্ত এলইডি লাইট বাল্ব বাজারজাত করার আগে কঠোর পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। আয়ু নির্ধারণের পরীক্ষার জন্য অনেকগুলো বাল্ব নমুনা হিসেবে নেওয়া হয়।
এই পরীক্ষার অংশ হিসেবে একটি বাল্ব বা বাতি আলোকিত করার সময় এলইডি চিপগুলো যুক্ত করা হয় ও সতর্ক পর্যবেক্ষণের অধীনে বাল্বের লুমেনগুলো ক্রমাগত পরিমাপ করা হয়। পরীক্ষার সময় উজ্জ্বলতার ডেটা সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে এই ডেটা একটি গাণিতিক সূত্রে ফেলা হয়। সূত্রের ফলাফলগুলো একটি গ্রাফ বা লেখচিত্রে বসিয়ে লুমেন মেইনটেন্যান্স কার্ভ বের করা হয়। যার মাধ্যমে বোঝা যায় কীভাবে এলইডি বাল্বের আলোর উজ্জ্বলতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হ্রাস পাবে। এই বক্ররেখা এলইডি চিপগুলোর গুণমান, বাল্বের নকশা ও পরিবেশগত অবস্থার মতো কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে।
লুমেন মেইনটেন্যান্স কার্ভের ওপর ভিত্তি করে এল ৭০ বা এল ৫০ বিন্দু গণনা করা হয়। এসব পয়েন্ট নির্ধারণের মাধ্যমে এলইডি বাল্বের আয়ু অনুমান করা যায়। অর্থাৎ কোনো বাল্বের লুমেন এল ৭০ রেটিং বের হলে বাল্বটি ২৫ হাজার ঘণ্টা চলার পর এর আলোর উজ্জ্বলতা ৭০ শতাংশের নিচে নামবে। একইভাবে এল ৫০ রেটিং পাওয়া গেলে বাল্বটি ৩০ হাজার ঘণ্টা চলার পর এর আলোর উজ্জ্বলতা ৫০ শতাংশের নিচে নামবে বলে বোঝা যায়।
অবশ্য একটি এলইডি বাল্ব ৭০ বা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত উজ্জ্বলতায় আলো কত দিন দিতে পারবে সেটি একেবারে নিখুঁতভাবে জানা যায় না। এটি মূলত একটি প্রাক্কলন। গুণমান পরীক্ষায় প্রক্রিয়াটি বাল্বের আয়ু সম্পর্কে একটি ধারণা দেয় মাত্র।
তথ্যসূত্র: সিম্পলি এলইডি

সাধারণত পণ্য ও সেবার প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিজ্ঞাপনে চমকপ্রদ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তেমনি এলইডি বাল্ব কত টিকবে তা বিজ্ঞাপনে বলা হয়। একটি এলইডি বাল্বের আয়ু কীভাবে নির্ধারণ করা হয়, অর্থাৎ বাল্বটি থেকে কত দিন আলো পাওয়া যাবে—একজন ক্রেতা হিসেবে সেটি জানার আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক।
সাধারণ বিজলি বাতিতে টাংস্টেনের তৈরি সূক্ষ্ম ফিলামেন্ট থাকে। নিষ্ক্রিয় গ্যাস ভর্তি বাল্বের ভেতরে ফিলামেন্ট উত্তপ্ত হয়ে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটে। তবে এলইডি বাল্বের আলো তৈরির প্রক্রিয়াটি এমন নয়। সুইচ অফ করলে এগুলো হুট করে বন্ধ হয়ে যায় না।
এলইডি বাল্বের আলোর তীব্রতা ধীরে ধীরে আলো কমে যায়। এগুলো ৩০ থেকে ৫০ হাজার ঘণ্টা পর্যন্ত জ্বলতে পারে। যখন আলোর উজ্জ্বলতা মূল উজ্জ্বলতার ৭০ শতাংশে নেমে যায়, তখন এসব বাল্বের আয়ু শেষ হয়ে গেছে বলে ধরা হয়।
আলোর তীব্রতা পরিমাপের একক হলো লুমেন। কোনো দীপ্তিমান বস্তু থেকে এক সেকেন্ডে যে পরিমাণ আলোক শক্তি নির্গত হয় তাকে দীপ্তি বা আলোক প্রবাহ বা আলোক ফ্লাক্স বলে। আর আলোক ফ্লাক্স পরিমাপের একক লুমেন।
এলইডি বাল্বগুলো খুব টেকসই উপকরণ দিয়ে তৈরি। এগুলো জ্বালালে ঘর তাৎক্ষণিকভাবে আলোকিত হয়। এতে বিদ্যুৎ খরচও কম হয়।
এলইডি বাল্বের আয়ু কী
যতক্ষণ প্রয়োজনীয় আলো উৎপন্ন করতে পারে ততক্ষণই এলইডি বাল্বের আয়ু বলে ধরা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এলইডি বাল্বের লুমেন কমে যেতে থাকে, অর্থাৎ বাল্বের আলো ধীরে ধীরে ম্লান হতে থাকে। ঘরের বাল্বের ক্ষেত্রে উজ্জ্বলতা ৭০ শতাংশ বা ৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে বাল্বটির আয়ু শেষ হয়েছে বলে ধরা হয়। বাল্বের প্যাকেটের গায়ে এই হিসাব এল ৫০ ও এল ৭০ লেখা থাকে।
লুমেন ৭০ বা ৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে বাল্বগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী বলে মনে করা হয়। তবে এই বাল্বের আয়ু শুধু লুমেনের ওপর নির্ভর করে না। বাল্বের অন্যান্য উপাদান নষ্ট হয়ে গেলেও বাল্বটির আয়ু শেষ হয়ে যেতে পারে।
এলইডি বাল্বের আয়ু যেভাবে নির্ধারণ করা হয়
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, এলইডি বাল্বের উজ্জ্বলতা দিন দিন যদি কমতে থাকে, তাহলে কীভাবে একটি কোম্পানি দাবি করে যে, এই বাল্ব ১ হাজার ঘণ্টা পর্যন্ত আলো দিতে সক্ষম?
এটি নির্ধারণ করতে সমস্ত এলইডি লাইট বাল্ব বাজারজাত করার আগে কঠোর পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। আয়ু নির্ধারণের পরীক্ষার জন্য অনেকগুলো বাল্ব নমুনা হিসেবে নেওয়া হয়।
এই পরীক্ষার অংশ হিসেবে একটি বাল্ব বা বাতি আলোকিত করার সময় এলইডি চিপগুলো যুক্ত করা হয় ও সতর্ক পর্যবেক্ষণের অধীনে বাল্বের লুমেনগুলো ক্রমাগত পরিমাপ করা হয়। পরীক্ষার সময় উজ্জ্বলতার ডেটা সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে এই ডেটা একটি গাণিতিক সূত্রে ফেলা হয়। সূত্রের ফলাফলগুলো একটি গ্রাফ বা লেখচিত্রে বসিয়ে লুমেন মেইনটেন্যান্স কার্ভ বের করা হয়। যার মাধ্যমে বোঝা যায় কীভাবে এলইডি বাল্বের আলোর উজ্জ্বলতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হ্রাস পাবে। এই বক্ররেখা এলইডি চিপগুলোর গুণমান, বাল্বের নকশা ও পরিবেশগত অবস্থার মতো কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে।
লুমেন মেইনটেন্যান্স কার্ভের ওপর ভিত্তি করে এল ৭০ বা এল ৫০ বিন্দু গণনা করা হয়। এসব পয়েন্ট নির্ধারণের মাধ্যমে এলইডি বাল্বের আয়ু অনুমান করা যায়। অর্থাৎ কোনো বাল্বের লুমেন এল ৭০ রেটিং বের হলে বাল্বটি ২৫ হাজার ঘণ্টা চলার পর এর আলোর উজ্জ্বলতা ৭০ শতাংশের নিচে নামবে। একইভাবে এল ৫০ রেটিং পাওয়া গেলে বাল্বটি ৩০ হাজার ঘণ্টা চলার পর এর আলোর উজ্জ্বলতা ৫০ শতাংশের নিচে নামবে বলে বোঝা যায়।
অবশ্য একটি এলইডি বাল্ব ৭০ বা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত উজ্জ্বলতায় আলো কত দিন দিতে পারবে সেটি একেবারে নিখুঁতভাবে জানা যায় না। এটি মূলত একটি প্রাক্কলন। গুণমান পরীক্ষায় প্রক্রিয়াটি বাল্বের আয়ু সম্পর্কে একটি ধারণা দেয় মাত্র।
তথ্যসূত্র: সিম্পলি এলইডি

মানুষের মস্তিষ্কের নেটওয়ার্ক অনুকরণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দক্ষতা বাড়ানোর একটি নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সারের গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর (স্নায়ুকোষের) সংযোগ যেভাবে তৈরি হয়, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে এআই মডেলগুলো আরও ভালো কাজ করতে পারে।
২ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন এক ধরনের বিশেষ রং উদ্ভাবন করেছেন, যা ছাদের তাপমাত্রা আশপাশের বাতাসের চেয়েও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কম রাখতে পারে। শুধু তাই নয়, এই রং বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করতেও সক্ষম—যা ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা হ্রাসের পাশাপাশি জলের ঘাটতি মোকাবিলায়ও ভূমিকা রাখতে পারে।
৫ দিন আগে
দাঁতের ডাক্তারকে ভয় পান না, এমন মানুষ খুব কমই আছেন। কারণ একটি দাঁত প্রতিস্থাপন করতে হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে, যেখানে চোয়ালে টাইটানিয়ামের স্ক্রু বসানো হয় এবং মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় কৃত্রিম মূল বা ‘রুট’ শক্ত হওয়ার জন্য।
৯ দিন আগে
এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা
১০ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মানুষের মস্তিষ্কের নেটওয়ার্ক অনুকরণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দক্ষতা বাড়ানোর একটি নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সারের গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর (স্নায়ুকোষের) সংযোগ যেভাবে তৈরি হয়, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে এআই মডেলগুলো আরও ভালো কাজ করতে পারে।
নিউরোকম্পিউটিং জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাটি।
গবেষণায় বলা হয়েছে, মানবমস্তিষ্কের ‘নিউরাল ওয়্যারিং’ পদ্ধতি অনুকরণ করে জেনারেটিভ এআই এবং চ্যাটজিপিটির মতো অন্যান্য আধুনিক এআই মডেলে ব্যবহৃত কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কগুলোর কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো যেতে পারে।
তাঁরা এই পদ্ধতির নাম দিয়েছেন টপোগ্রাফিক্যাল স্পার্স ম্যাপিং (টিএসএম)। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি নিউরন কেবল কাছের বা সম্পর্কিত নিউরনের সঙ্গে যুক্ত হয় যেভাবে মানুষের মস্তিষ্ক দক্ষতার সঙ্গে তথ্য সংগঠিত করে গুছিয়ে সংরক্ষণ করে।
গবেষণার নেতৃত্বে থাকা সিনিয়র লেকচারার ড. রোমান বাউয়ার বলেন, ‘খুব বেশি শক্তি না খরচ করেও বুদ্ধিমান সিস্টেম তৈরি করা সম্ভব। এতে পারফরম্যান্সও কমে না। আমাদের গবেষণা তা ই বলছে।’
গবেষকেরা জানান, অপ্রয়োজনীয় বিপুলসংখ্যক সংযোগ বাদ দেয় এই মডেলটি। যার ফলে নির্ভুলতা বজায় রেখে এআই আরও দ্রুত ও টেকসইভাবে কাজ করতে পারে।
ড. বাউয়ার বলেন, ‘বর্তমানে বড় বড় এআই মডেলগুলো প্রশিক্ষণ দিতে ১০ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টারও বেশি বিদ্যুৎ লাগে। যে গতিতে এআই মডেল বাড়ছে, তাতে এই পদ্ধতি ভবিষ্যতের জন্য একেবারেই টেকসই ও নির্ভরযোগ্য নয়।’
এই পদ্ধতির একটি উন্নত সংস্করণও তৈরি করেছেন গবেষকেরা। এর নাম দিয়েছেন এনহ্যান্সড টপোগ্রাফিক্যাল স্পার্স ম্যাপিং (ইটিএসএম)। এটি ‘প্রুনিং’-এর মতো করে অপ্রয়োজনীয় সংযোগগুলো ছাঁটাই করে ফেলে। যার ফলে এআই আরও দক্ষ ও কার্যকর হয়ে ওঠে।
এটি মানুষের মস্তিষ্ক যেভাবে শেখার সময় ধীরে ধীরে নিজের স্নায়ু সংযোগগুলো পরিশুদ্ধ বা সাজিয়ে নেয়, তার মতোই।
গবেষকেরা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে দেখছেন যে এই পদ্ধতিতে ‘নিওরোমরফিক কম্পিউটার’ তৈরি করা যায় কি না, যেগুলো একদম মানুষের মস্তিষ্কের মতোভাবে চিন্তা ও কাজ করতে পারবে।

মানুষের মস্তিষ্কের নেটওয়ার্ক অনুকরণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দক্ষতা বাড়ানোর একটি নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সারের গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর (স্নায়ুকোষের) সংযোগ যেভাবে তৈরি হয়, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে এআই মডেলগুলো আরও ভালো কাজ করতে পারে।
নিউরোকম্পিউটিং জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাটি।
গবেষণায় বলা হয়েছে, মানবমস্তিষ্কের ‘নিউরাল ওয়্যারিং’ পদ্ধতি অনুকরণ করে জেনারেটিভ এআই এবং চ্যাটজিপিটির মতো অন্যান্য আধুনিক এআই মডেলে ব্যবহৃত কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কগুলোর কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো যেতে পারে।
তাঁরা এই পদ্ধতির নাম দিয়েছেন টপোগ্রাফিক্যাল স্পার্স ম্যাপিং (টিএসএম)। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি নিউরন কেবল কাছের বা সম্পর্কিত নিউরনের সঙ্গে যুক্ত হয় যেভাবে মানুষের মস্তিষ্ক দক্ষতার সঙ্গে তথ্য সংগঠিত করে গুছিয়ে সংরক্ষণ করে।
গবেষণার নেতৃত্বে থাকা সিনিয়র লেকচারার ড. রোমান বাউয়ার বলেন, ‘খুব বেশি শক্তি না খরচ করেও বুদ্ধিমান সিস্টেম তৈরি করা সম্ভব। এতে পারফরম্যান্সও কমে না। আমাদের গবেষণা তা ই বলছে।’
গবেষকেরা জানান, অপ্রয়োজনীয় বিপুলসংখ্যক সংযোগ বাদ দেয় এই মডেলটি। যার ফলে নির্ভুলতা বজায় রেখে এআই আরও দ্রুত ও টেকসইভাবে কাজ করতে পারে।
ড. বাউয়ার বলেন, ‘বর্তমানে বড় বড় এআই মডেলগুলো প্রশিক্ষণ দিতে ১০ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টারও বেশি বিদ্যুৎ লাগে। যে গতিতে এআই মডেল বাড়ছে, তাতে এই পদ্ধতি ভবিষ্যতের জন্য একেবারেই টেকসই ও নির্ভরযোগ্য নয়।’
এই পদ্ধতির একটি উন্নত সংস্করণও তৈরি করেছেন গবেষকেরা। এর নাম দিয়েছেন এনহ্যান্সড টপোগ্রাফিক্যাল স্পার্স ম্যাপিং (ইটিএসএম)। এটি ‘প্রুনিং’-এর মতো করে অপ্রয়োজনীয় সংযোগগুলো ছাঁটাই করে ফেলে। যার ফলে এআই আরও দক্ষ ও কার্যকর হয়ে ওঠে।
এটি মানুষের মস্তিষ্ক যেভাবে শেখার সময় ধীরে ধীরে নিজের স্নায়ু সংযোগগুলো পরিশুদ্ধ বা সাজিয়ে নেয়, তার মতোই।
গবেষকেরা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে দেখছেন যে এই পদ্ধতিতে ‘নিওরোমরফিক কম্পিউটার’ তৈরি করা যায় কি না, যেগুলো একদম মানুষের মস্তিষ্কের মতোভাবে চিন্তা ও কাজ করতে পারবে।

সাধারণত পণ্য ও সেবার প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিজ্ঞাপনে চমকপ্রদ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তেমনি এলইডি বাল্ব কত টিকবে তা বিজ্ঞাপনে বলা হয়। একটি এলইডি বাল্বের আয়ু কীভাবে নির্ধারণ করা হয়, অর্থাৎ বাল্বটি থেকে কত দিন আলো পাওয়া যাবে—একজন ক্রেতা হিসেবে সেটি জানার আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক।
০৬ এপ্রিল ২০২৪
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন এক ধরনের বিশেষ রং উদ্ভাবন করেছেন, যা ছাদের তাপমাত্রা আশপাশের বাতাসের চেয়েও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কম রাখতে পারে। শুধু তাই নয়, এই রং বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করতেও সক্ষম—যা ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা হ্রাসের পাশাপাশি জলের ঘাটতি মোকাবিলায়ও ভূমিকা রাখতে পারে।
৫ দিন আগে
দাঁতের ডাক্তারকে ভয় পান না, এমন মানুষ খুব কমই আছেন। কারণ একটি দাঁত প্রতিস্থাপন করতে হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে, যেখানে চোয়ালে টাইটানিয়ামের স্ক্রু বসানো হয় এবং মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় কৃত্রিম মূল বা ‘রুট’ শক্ত হওয়ার জন্য।
৯ দিন আগে
এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা
১০ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন এক ধরনের বিশেষ রং উদ্ভাবন করেছেন, যা ছাদের তাপমাত্রা আশপাশের বাতাসের চেয়েও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কম রাখতে পারে। শুধু তাই নয়, এই রং বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করতেও সক্ষম—যা ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা হ্রাসের পাশাপাশি জলের ঘাটতি মোকাবিলায়ও ভূমিকা রাখতে পারে।
বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপপ্রবাহ এখন আরও ঘন ঘন ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে। এই অবস্থায় ‘প্যাসিভ রেডিয়েটিভ কুলিং’ প্রযুক্তির এই নতুন রং গরমের সময় ঘরকে শীতল রাখার পথ করে দিয়েছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, এই গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিয়ারা নেতো। তিনি জানান, নতুন আবিষ্কৃত রঙের প্রলেপটি সূর্যের প্রায় ৯৬ শতাংশ বিকিরণ প্রতিফলিত করে। এর ফলে ছাদ সূর্যালোক শোষণ না করে ঠান্ডা থাকে। আর রংটির তাপ নির্গমন ক্ষমতাও খুব বেশি, তাই পরিষ্কার আকাশে এটি সহজেই বাতাসে তাপ ছড়িয়ে দিতে পারে।
নেতো বলেন, ‘রোদের মধ্যেও এই রং করা ছাদ আশপাশের বাতাসের চেয়ে শীতল থাকে।’
এই শীতল পৃষ্ঠে বাতাসের জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে শিশির তৈরি হয়। সাধারণত রাতে চার থেকে ছয় ঘণ্টা শিশির জমে, কিন্তু এই আবরণ ব্যবহার করলে তা আট থেকে দশ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
ছয় মাসের পরীক্ষায় গবেষকেরা এই প্রলেপটি সিডনি ন্যানোসায়েন্স হাবের ছাদে ব্যবহার করেন। তবে প্রলেপটির ওপর একটি অতিবেগুনি রশ্মি-প্রতিরোধী স্তর যোগ করা হয়, যা শিশিরবিন্দু সংগ্রহে সহায়তা করে। তাঁরা দেখেছেন, এই রঙের সাহায্যে বছরে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সময় প্রতিদিন প্রতি বর্গমিটারে সর্বোচ্চ ৩৯০ মিলিলিটার পানি সংগ্রহ করা সম্ভব। অর্থাৎ ২০০ বর্গমিটার আকারের একটি ছাদে অনুকূল দিনে গড়ে প্রায় ৭০ লিটার পানি পাওয়া যেতে পারে।
অধ্যাপক নেতো বলেন, ‘এই প্রযুক্তি শহরাঞ্চলে গরমের প্রভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। যেখানে ইনসুলেশন দুর্বল, সেখানে ছাদের তাপমাত্রা কমে গেলে ঘরের ভেতরের তাপও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।’
বর্তমানে গবেষকেরা রংটির বাণিজ্যিক সংস্করণ তৈরির কাজ শুরু করেছেন। এটি ভালো মানের সাধারণ রঙের মতোই দামে পাওয়া যাবে।
ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সেবাস্টিয়ান ফাউচ বলেছেন, ‘এই ধরনের কুল কোটিং প্রযুক্তি এক দশক ধরে উন্নয়নাধীন, কিন্তু এখনো ব্যাপকভাবে বাজারে আসেনি। সম্ভবত ২০৩০ সালের আগেই তা ঘটবে।’

অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন এক ধরনের বিশেষ রং উদ্ভাবন করেছেন, যা ছাদের তাপমাত্রা আশপাশের বাতাসের চেয়েও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কম রাখতে পারে। শুধু তাই নয়, এই রং বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করতেও সক্ষম—যা ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা হ্রাসের পাশাপাশি জলের ঘাটতি মোকাবিলায়ও ভূমিকা রাখতে পারে।
বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপপ্রবাহ এখন আরও ঘন ঘন ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে। এই অবস্থায় ‘প্যাসিভ রেডিয়েটিভ কুলিং’ প্রযুক্তির এই নতুন রং গরমের সময় ঘরকে শীতল রাখার পথ করে দিয়েছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, এই গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিয়ারা নেতো। তিনি জানান, নতুন আবিষ্কৃত রঙের প্রলেপটি সূর্যের প্রায় ৯৬ শতাংশ বিকিরণ প্রতিফলিত করে। এর ফলে ছাদ সূর্যালোক শোষণ না করে ঠান্ডা থাকে। আর রংটির তাপ নির্গমন ক্ষমতাও খুব বেশি, তাই পরিষ্কার আকাশে এটি সহজেই বাতাসে তাপ ছড়িয়ে দিতে পারে।
নেতো বলেন, ‘রোদের মধ্যেও এই রং করা ছাদ আশপাশের বাতাসের চেয়ে শীতল থাকে।’
এই শীতল পৃষ্ঠে বাতাসের জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে শিশির তৈরি হয়। সাধারণত রাতে চার থেকে ছয় ঘণ্টা শিশির জমে, কিন্তু এই আবরণ ব্যবহার করলে তা আট থেকে দশ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
ছয় মাসের পরীক্ষায় গবেষকেরা এই প্রলেপটি সিডনি ন্যানোসায়েন্স হাবের ছাদে ব্যবহার করেন। তবে প্রলেপটির ওপর একটি অতিবেগুনি রশ্মি-প্রতিরোধী স্তর যোগ করা হয়, যা শিশিরবিন্দু সংগ্রহে সহায়তা করে। তাঁরা দেখেছেন, এই রঙের সাহায্যে বছরে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সময় প্রতিদিন প্রতি বর্গমিটারে সর্বোচ্চ ৩৯০ মিলিলিটার পানি সংগ্রহ করা সম্ভব। অর্থাৎ ২০০ বর্গমিটার আকারের একটি ছাদে অনুকূল দিনে গড়ে প্রায় ৭০ লিটার পানি পাওয়া যেতে পারে।
অধ্যাপক নেতো বলেন, ‘এই প্রযুক্তি শহরাঞ্চলে গরমের প্রভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। যেখানে ইনসুলেশন দুর্বল, সেখানে ছাদের তাপমাত্রা কমে গেলে ঘরের ভেতরের তাপও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।’
বর্তমানে গবেষকেরা রংটির বাণিজ্যিক সংস্করণ তৈরির কাজ শুরু করেছেন। এটি ভালো মানের সাধারণ রঙের মতোই দামে পাওয়া যাবে।
ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সেবাস্টিয়ান ফাউচ বলেছেন, ‘এই ধরনের কুল কোটিং প্রযুক্তি এক দশক ধরে উন্নয়নাধীন, কিন্তু এখনো ব্যাপকভাবে বাজারে আসেনি। সম্ভবত ২০৩০ সালের আগেই তা ঘটবে।’

সাধারণত পণ্য ও সেবার প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিজ্ঞাপনে চমকপ্রদ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তেমনি এলইডি বাল্ব কত টিকবে তা বিজ্ঞাপনে বলা হয়। একটি এলইডি বাল্বের আয়ু কীভাবে নির্ধারণ করা হয়, অর্থাৎ বাল্বটি থেকে কত দিন আলো পাওয়া যাবে—একজন ক্রেতা হিসেবে সেটি জানার আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক।
০৬ এপ্রিল ২০২৪
মানুষের মস্তিষ্কের নেটওয়ার্ক অনুকরণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দক্ষতা বাড়ানোর একটি নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সারের গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর (স্নায়ুকোষের) সংযোগ যেভাবে তৈরি হয়, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে এআই মডেলগুলো আরও ভালো কাজ করতে পারে।
২ দিন আগে
দাঁতের ডাক্তারকে ভয় পান না, এমন মানুষ খুব কমই আছেন। কারণ একটি দাঁত প্রতিস্থাপন করতে হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে, যেখানে চোয়ালে টাইটানিয়ামের স্ক্রু বসানো হয় এবং মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় কৃত্রিম মূল বা ‘রুট’ শক্ত হওয়ার জন্য।
৯ দিন আগে
এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা
১০ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দাঁতের ডাক্তারকে ভয় পান না, এমন মানুষ খুব কমই আছেন। কারণ একটি দাঁত প্রতিস্থাপন করতে হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে, যেখানে চোয়ালে টাইটানিয়ামের স্ক্রু বসানো হয় এবং মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় কৃত্রিম মূল বা ‘রুট’ শক্ত হওয়ার জন্য। কিন্তু এখন বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন এমন এক উপায় বের করতে, যাতে নকল দাঁতের বদলে মানুষের নিজস্ব জৈব দাঁতই চোয়ালে জন্ম নিতে পারে।
সিএনএন জানিয়েছে, লন্ডনের কিংস কলেজের রিজেনারেটিভ ডেন্টিস্ট্রির পরিচালক অধ্যাপক আনা অ্যাঞ্জেলোভা ভলপোনি প্রায় দুই দশক ধরে ল্যাবে দাঁত গজানোর গবেষণা চালিয়ে আসছেন। ২০১৩ সালে তিনি এমন এক দলের সদস্য ছিলেন যারা মানব ও ইঁদুরের কোষ ব্যবহার করে একটি দাঁত তৈরি করেছিল। এই বছর তাঁর নেতৃত্বে নতুন এক গবেষণায় দাঁত তৈরির জন্য ব্যবহৃত ‘স্ক্যাফোল্ড’ বা পরিবেশকে আরও বাস্তবসম্মতভাবে তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। মানব কোষ ব্যবহার করে সত্যিকারের দাঁত তৈরির পথে এটিকে একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভলপোনি জানান, ১৯৮০-এর দশক থেকেই ল্যাবে দাঁত তৈরির ধারণা নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। তাঁর দল প্রথমবার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মাড়ির কোষ (যা মুখের ভেতরের অংশ থেকে সহজে সংগ্রহ করা যায়) ব্যবহার করে ইঁদুরের ভ্রূণ দাঁতের ‘প্রোজেনিটর’ কোষের সঙ্গে মিশিয়ে দাঁতের মূল কাঠামো তৈরি করেছিল। তিনি বলেন, ‘দুই ধরনের কোষ পরস্পরের সঙ্গে এক হয়ে দাঁত তৈরি করে। আর তৃতীয় উপাদান হলো সেই পরিবেশ, যেখানে এটি ঘটে।’
জানা গেছে, যথার্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ২০১৩ সালে কোলাজেন প্রোটিন দিয়ে স্ক্যাফোল্ড তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছে ‘হাইড্রোজেল’ নামে এক ধরনের পানি শোষণকারী পলিমার।
কিংস কলেজের গবেষক শুয়েচেন ঝ্যাং জানান, ইঁদুরের ভ্রূণ থেকে কোষ সংগ্রহ করে হাইড্রোজেলে স্থাপন করার আট দিন পর দাঁতের মতো গঠন তৈরি হয়। এটি ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের সহযোগিতায় তৈরি। আগের গবেষণায় এই দাঁতের বীজ ইঁদুরের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়ে তা শিকড় ও এনামেলসহ দাঁতে রূপ নিয়েছিল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখনো মানুষের জন্য ব্যবহার উপযোগী দাঁত তৈরি অনেক দূরের বিষয়। কিন্তু নতুন এই উপাদান কোষগুলোর মধ্যে সমন্বয়কে আরও কার্যকর করছে। বিজ্ঞানীরা এখনো জানেন না কীভাবে ইঁদুরের ভ্রূণ কোষের বদলে সম্পূর্ণ মানব কোষ দিয়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে।
ভলপোনি ভবিষ্যতে দুইভাবে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা ভাবছেন। এক, ল্যাবে দাঁত আংশিকভাবে গজিয়ে সেটি রোগীর দাঁতের গর্তে প্রতিস্থাপন করা; দুই, পুরো দাঁত তৈরি করে তা সার্জারির মাধ্যমে স্থাপন করা।
যদি সফল হওয়া যায়, তবে এই প্রক্রিয়ায় রোগীর নিজস্ব কোষ থেকে জন্ম নেওয়া দাঁত শরীর সহজেই গ্রহণ করবে, প্রদাহ বা প্রত্যাখ্যানের ঝুঁকি থাকবে না, আর এটি স্বাভাবিক দাঁতের মতোই অনুভূত হবে—নকল দাঁতে যা সম্ভব নয়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগামী এক দশকের মধ্যেই ল্যাবে জন্ম নেওয়া জৈব দাঁত মানুষের মুখে প্রতিস্থাপনের যুগ শুরু হতে পারে।

দাঁতের ডাক্তারকে ভয় পান না, এমন মানুষ খুব কমই আছেন। কারণ একটি দাঁত প্রতিস্থাপন করতে হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে, যেখানে চোয়ালে টাইটানিয়ামের স্ক্রু বসানো হয় এবং মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় কৃত্রিম মূল বা ‘রুট’ শক্ত হওয়ার জন্য। কিন্তু এখন বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন এমন এক উপায় বের করতে, যাতে নকল দাঁতের বদলে মানুষের নিজস্ব জৈব দাঁতই চোয়ালে জন্ম নিতে পারে।
সিএনএন জানিয়েছে, লন্ডনের কিংস কলেজের রিজেনারেটিভ ডেন্টিস্ট্রির পরিচালক অধ্যাপক আনা অ্যাঞ্জেলোভা ভলপোনি প্রায় দুই দশক ধরে ল্যাবে দাঁত গজানোর গবেষণা চালিয়ে আসছেন। ২০১৩ সালে তিনি এমন এক দলের সদস্য ছিলেন যারা মানব ও ইঁদুরের কোষ ব্যবহার করে একটি দাঁত তৈরি করেছিল। এই বছর তাঁর নেতৃত্বে নতুন এক গবেষণায় দাঁত তৈরির জন্য ব্যবহৃত ‘স্ক্যাফোল্ড’ বা পরিবেশকে আরও বাস্তবসম্মতভাবে তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। মানব কোষ ব্যবহার করে সত্যিকারের দাঁত তৈরির পথে এটিকে একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভলপোনি জানান, ১৯৮০-এর দশক থেকেই ল্যাবে দাঁত তৈরির ধারণা নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। তাঁর দল প্রথমবার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মাড়ির কোষ (যা মুখের ভেতরের অংশ থেকে সহজে সংগ্রহ করা যায়) ব্যবহার করে ইঁদুরের ভ্রূণ দাঁতের ‘প্রোজেনিটর’ কোষের সঙ্গে মিশিয়ে দাঁতের মূল কাঠামো তৈরি করেছিল। তিনি বলেন, ‘দুই ধরনের কোষ পরস্পরের সঙ্গে এক হয়ে দাঁত তৈরি করে। আর তৃতীয় উপাদান হলো সেই পরিবেশ, যেখানে এটি ঘটে।’
জানা গেছে, যথার্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ২০১৩ সালে কোলাজেন প্রোটিন দিয়ে স্ক্যাফোল্ড তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় ব্যবহার করা হয়েছে ‘হাইড্রোজেল’ নামে এক ধরনের পানি শোষণকারী পলিমার।
কিংস কলেজের গবেষক শুয়েচেন ঝ্যাং জানান, ইঁদুরের ভ্রূণ থেকে কোষ সংগ্রহ করে হাইড্রোজেলে স্থাপন করার আট দিন পর দাঁতের মতো গঠন তৈরি হয়। এটি ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের সহযোগিতায় তৈরি। আগের গবেষণায় এই দাঁতের বীজ ইঁদুরের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়ে তা শিকড় ও এনামেলসহ দাঁতে রূপ নিয়েছিল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখনো মানুষের জন্য ব্যবহার উপযোগী দাঁত তৈরি অনেক দূরের বিষয়। কিন্তু নতুন এই উপাদান কোষগুলোর মধ্যে সমন্বয়কে আরও কার্যকর করছে। বিজ্ঞানীরা এখনো জানেন না কীভাবে ইঁদুরের ভ্রূণ কোষের বদলে সম্পূর্ণ মানব কোষ দিয়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে।
ভলপোনি ভবিষ্যতে দুইভাবে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা ভাবছেন। এক, ল্যাবে দাঁত আংশিকভাবে গজিয়ে সেটি রোগীর দাঁতের গর্তে প্রতিস্থাপন করা; দুই, পুরো দাঁত তৈরি করে তা সার্জারির মাধ্যমে স্থাপন করা।
যদি সফল হওয়া যায়, তবে এই প্রক্রিয়ায় রোগীর নিজস্ব কোষ থেকে জন্ম নেওয়া দাঁত শরীর সহজেই গ্রহণ করবে, প্রদাহ বা প্রত্যাখ্যানের ঝুঁকি থাকবে না, আর এটি স্বাভাবিক দাঁতের মতোই অনুভূত হবে—নকল দাঁতে যা সম্ভব নয়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগামী এক দশকের মধ্যেই ল্যাবে জন্ম নেওয়া জৈব দাঁত মানুষের মুখে প্রতিস্থাপনের যুগ শুরু হতে পারে।

সাধারণত পণ্য ও সেবার প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিজ্ঞাপনে চমকপ্রদ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তেমনি এলইডি বাল্ব কত টিকবে তা বিজ্ঞাপনে বলা হয়। একটি এলইডি বাল্বের আয়ু কীভাবে নির্ধারণ করা হয়, অর্থাৎ বাল্বটি থেকে কত দিন আলো পাওয়া যাবে—একজন ক্রেতা হিসেবে সেটি জানার আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক।
০৬ এপ্রিল ২০২৪
মানুষের মস্তিষ্কের নেটওয়ার্ক অনুকরণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দক্ষতা বাড়ানোর একটি নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সারের গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর (স্নায়ুকোষের) সংযোগ যেভাবে তৈরি হয়, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে এআই মডেলগুলো আরও ভালো কাজ করতে পারে।
২ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন এক ধরনের বিশেষ রং উদ্ভাবন করেছেন, যা ছাদের তাপমাত্রা আশপাশের বাতাসের চেয়েও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কম রাখতে পারে। শুধু তাই নয়, এই রং বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করতেও সক্ষম—যা ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা হ্রাসের পাশাপাশি জলের ঘাটতি মোকাবিলায়ও ভূমিকা রাখতে পারে।
৫ দিন আগে
এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা
১০ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা টিকে থাকবে।
আলপিনের মাথার আকারের, এক মিলিমিটারের বেশি লম্বা নয় এমন এই প্রাণী মহাকাশের চরম প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকার রেকর্ড রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এখন এর এই ‘সুপারপাওয়ার’ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। এই গবেষণা ক্যানসার রোগীদের রেডিয়েশন থেরাপি থেকে সুরক্ষা দেওয়া থেকে শুরু করে গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানে খাদ্য ও ওষুধ সংরক্ষণে কাজে আসতে পারে।
অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে টারডিগ্রেড, অনেকে বলেন মস আকৃতির শূকরছানা, এদের দেখতে দানবের মতো লাগে—তাদের স্ফীত মুখ, চোখা নখর এবং ছুরির মতো দাঁত। এদের সহনশীলতার সীমা পরীক্ষা করার জন্য বিজ্ঞানীরা একাধিক পরীক্ষা করেছেন, যার ফলাফল চমকপ্রদ:
বিকিরণ: মানুষের জন্য মারাত্মক মাত্রার চেয়ে ১ হাজার গুণ বেশি বিকিরণ এরা সহ্য করতে পারে।
তাপমাত্রা: এদের ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করা হয়েছে এবং আবার পরম শূন্যের ঠিক ওপরে ০.০১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় হিমায়িত করা হয়েছে।
গতি: ২০২১ সালের এক গবেষণায়, বিজ্ঞানীরা টারডিগ্রেডকে ৯০০ মিটার/সেকেন্ড (প্রায় ৩০০০ কিমি/ঘণ্টা) গতিতে ছুড়ে দিয়ে দেখেছেন, এরা অক্ষত থাকে। এই গতি একটি সাধারণ হ্যান্ডগান থেকে ছোড়া বুলেটের গতির চেয়েও বেশি।
মহাকাশে টিকে থাকা: ২০০৭ সালে, টারডিগ্রেডই প্রথম প্রাণী যা মহাকাশে বেঁচে থাকার রেকর্ড করে। এমনকি কিছু স্ত্রী টারডিগ্রেড মহাকাশেই ডিম পেড়েছিল এবং বাচ্চাগুলোও সুস্থ ছিল। ২০১৯ সালে ইসরায়েলের যে চন্দ্রযানটি চাঁদের বুকে বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেটিতে ছিল অসংখ্য টারডিগ্রেড। সেগুলো টিকে আছে কিনা নিশ্চিত নয়।
টারডিগ্রেডকে হিমালয়ের পর্বতমালা, গভীর সমুদ্রতল, অ্যান্টার্কটিকা এমনকি উচ্চ অম্লীয় জাপানি উষ্ণ প্রস্রবণগুলোতেও পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৫০০ প্রজাতির টারডিগ্রেড শনাক্ত করা হয়েছে।
বেঁচে থাকার গোপন কৌশল
শরীর থেকে আর্দ্রতা চলে যাওয়া বা পানিশূন্যতা হলো যে কোনো জীবের জন্য একটি পরিবেশগত চরম অবস্থা। বেশির ভাগ প্রাণীর জন্য পানি ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব। পানি শুকিয়ে গেলে কোষের ভেতরের প্রোটিনগুলো একসঙ্গে জমাট বেঁধে অকার্যকর হয়ে যায়।
টারডিগ্রেড এই বিপর্যয় এড়াতে পারে দুটি প্রধান কৌশলে:
১. স্থবির হয়ে যাওয়া
জার্মান বিজ্ঞানীরা ১৯২২ সালে আবিষ্কার করেন, যখন একটি টারডিগ্রেড শুকিয়ে যায়, তখন মাথা এবং আটটি পা গুটিয়ে নেয়। একটি গভীর সুপ্তাবস্থায় চলে যায়, এটি প্রায় মৃত্যুর মতো মনে হয়।
এই অবস্থায়, টারডিগ্রেডের বিপাক স্বাভাবিক হারের মাত্র ০.০১ শতাংশে নেমে আসে।
এটি কয়েক দশক ধরে এই অবস্থায় অবস্থায় থাকতে পারে। পরে পানির সংস্পর্শে এলেই আবার সচল হয়।
১৯৪৮ সালে, ১২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জাদুঘরে ধুলো জমা একটি টারডিগ্রেডকে পানি দেওয়ার পর সেটি আংশিকভাবে আবার সচল হয়েছিল।
২. টিডিপি প্রোটিনের সুরক্ষা জাল
২০১৭ সালে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, টারডিগ্রেড শুকিয়ে যাওয়ার সময় রহস্যময় কিছু প্রোটিন তৈরির জিন সক্রিয় হয়, যার নাম দেওয়া হয় টারডিগ্রেড-নির্দিষ্ট বিশৃঙ্খল প্রোটিন (টিডিপি)।
২০২২ সালে, জাপানের বিজ্ঞানীরা দেখান, সাইটোপ্লাজমিক অ্যাবানডেন্ট হিট সলিউবল (সিএএইচএস) নামক এক শ্রেণির টিডিপি প্রোটিন এর জন্য দায়ী।
এই প্রোটিনগুলো শুকিয়ে যাওয়ার সময় আধা-কঠিন জেলের মতো রূপ নেয়।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াইমিং-এর সহযোগী অধ্যাপক টমাস বুথবি বলেন, এই প্রোটিনগুলো কোষের ভেতরে মাকড়সার জালের মতো নেটওয়ার্ক তৈরি করে। এই ফাইবারগুলো (তন্তু) সংবেদনশীল প্রোটিনগুলোকে জড়িয়ে ধরে সেগুলোকে ভাঁজ হতে বা নষ্ট হতে বাধা দেয়।
ডিএনএ সুরক্ষা এবং মানব কল্যাণে প্রয়োগ
টারডিগ্রেড কীভাবে বিকিরণ সহ্য করে, তা বেশ ভালোভাবেই জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। ২০১৬ সালে, কুনিয়েদা এবং তাঁর দল ডেম্যাজ সাপ্রেসর প্রোটিন (ডিসাপ) নামে একটি প্রোটিন আবিষ্কার করেন, যা ডিএনএকে একটি কম্বলের মতো মুড়ে ফেলে এবং আয়োনাইজিং রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। বিজ্ঞানীরা মানব কোষে ডিসাপ প্রোটিন তৈরি করার জিন যুক্ত করে দেখেছেন, এটি মানব ডিএনএকেও রক্ষা করতে পারে। ফলে মানুষের অমরত্বের আকাঙ্ক্ষা পূরণেও সমাধান সূত্রের উৎস হতে পারে এই আণুবীক্ষণিক প্রাণী।
সুপারপাওয়ার
টারডিগ্রেডের এই অসাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো মানবকল্যাণে ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো:
রেডিয়েশন থেরাপিতে সুরক্ষা: ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত উচ্চ-শক্তির বিকিরণ সুস্থ টিস্যুকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। ডিসাপ প্রোটিন ব্যবহার করে ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এতে দেখা গেছে, এটি ক্যানসার কোষ ধ্বংসের সময় পার্শ্ববর্তী সুস্থ টিস্যুকে রক্ষা করতে পারে।
সংরক্ষণ প্রযুক্তি: টিডিপি প্রোটিন ব্যবহার করে ভ্যাকসিন বা হিমোফিলিয়ার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাক্টর ভি৩-এর মতো সংবেদনশীল জৈবিক উপকরণ সংরক্ষণ করা যেতে পারে। বুথবি আবিষ্কার করেছেন, ফ্যাক্টর ভি৩-কে টিডিপি-এর সঙ্গে মিশ্রিত করলে, এটি রেফ্রিজারেটর ছাড়াই কক্ষ তাপমাত্রায় স্থিতিশীল থাকে। ফলে এটি দরিদ্র দেশ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় অত্যন্ত মূল্যবান হতে পারে, যেখানে ভ্যাকসিন বা অন্যান্য উপকরণের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়।
মহাকাশ যাত্রা: নাসা টারডিগ্রেডের এই বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য খাদ্য ও ওষুধকে শুষ্কতা বা বিকিরণ থেকে রক্ষা করার পরিকল্পনা করছেন।
টারডিগ্রেডকে কেন পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি চরম অবস্থার সঙ্গে মোকাবিলা করার সক্ষমতা অর্জন করতে হলো, সেটি এখনো রহস্য। এই প্রাণীর বিস্ময়কর ক্ষমতাগুলোর রহস্য উন্মোচন করা গেলে তা কেবল মানবজাতির উপকারে আসবে না, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকেও রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে টারডিগ্রেডরা।

এদের তীব্র তাপে রাখুন, বরফের মধ্যে রাখুন, বন্দুকের নল থেকে ছুড়ে দিন বা মহাকাশে ছেড়ে দিন: টারডিগ্রেড বা জল ভালুক প্রায় সবকিছুই সহ্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আ পেয়ে ক্ষুদ্র প্রাণীটি পৃথিবীতে মানুষসহ অন্য সব প্রজাতির চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে—সম্ভবত সূর্য মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে এরা টিকে থাকবে।
আলপিনের মাথার আকারের, এক মিলিমিটারের বেশি লম্বা নয় এমন এই প্রাণী মহাকাশের চরম প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকার রেকর্ড রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এখন এর এই ‘সুপারপাওয়ার’ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। এই গবেষণা ক্যানসার রোগীদের রেডিয়েশন থেরাপি থেকে সুরক্ষা দেওয়া থেকে শুরু করে গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানে খাদ্য ও ওষুধ সংরক্ষণে কাজে আসতে পারে।
অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে টারডিগ্রেড, অনেকে বলেন মস আকৃতির শূকরছানা, এদের দেখতে দানবের মতো লাগে—তাদের স্ফীত মুখ, চোখা নখর এবং ছুরির মতো দাঁত। এদের সহনশীলতার সীমা পরীক্ষা করার জন্য বিজ্ঞানীরা একাধিক পরীক্ষা করেছেন, যার ফলাফল চমকপ্রদ:
বিকিরণ: মানুষের জন্য মারাত্মক মাত্রার চেয়ে ১ হাজার গুণ বেশি বিকিরণ এরা সহ্য করতে পারে।
তাপমাত্রা: এদের ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করা হয়েছে এবং আবার পরম শূন্যের ঠিক ওপরে ০.০১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় হিমায়িত করা হয়েছে।
গতি: ২০২১ সালের এক গবেষণায়, বিজ্ঞানীরা টারডিগ্রেডকে ৯০০ মিটার/সেকেন্ড (প্রায় ৩০০০ কিমি/ঘণ্টা) গতিতে ছুড়ে দিয়ে দেখেছেন, এরা অক্ষত থাকে। এই গতি একটি সাধারণ হ্যান্ডগান থেকে ছোড়া বুলেটের গতির চেয়েও বেশি।
মহাকাশে টিকে থাকা: ২০০৭ সালে, টারডিগ্রেডই প্রথম প্রাণী যা মহাকাশে বেঁচে থাকার রেকর্ড করে। এমনকি কিছু স্ত্রী টারডিগ্রেড মহাকাশেই ডিম পেড়েছিল এবং বাচ্চাগুলোও সুস্থ ছিল। ২০১৯ সালে ইসরায়েলের যে চন্দ্রযানটি চাঁদের বুকে বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেটিতে ছিল অসংখ্য টারডিগ্রেড। সেগুলো টিকে আছে কিনা নিশ্চিত নয়।
টারডিগ্রেডকে হিমালয়ের পর্বতমালা, গভীর সমুদ্রতল, অ্যান্টার্কটিকা এমনকি উচ্চ অম্লীয় জাপানি উষ্ণ প্রস্রবণগুলোতেও পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৫০০ প্রজাতির টারডিগ্রেড শনাক্ত করা হয়েছে।
বেঁচে থাকার গোপন কৌশল
শরীর থেকে আর্দ্রতা চলে যাওয়া বা পানিশূন্যতা হলো যে কোনো জীবের জন্য একটি পরিবেশগত চরম অবস্থা। বেশির ভাগ প্রাণীর জন্য পানি ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব। পানি শুকিয়ে গেলে কোষের ভেতরের প্রোটিনগুলো একসঙ্গে জমাট বেঁধে অকার্যকর হয়ে যায়।
টারডিগ্রেড এই বিপর্যয় এড়াতে পারে দুটি প্রধান কৌশলে:
১. স্থবির হয়ে যাওয়া
জার্মান বিজ্ঞানীরা ১৯২২ সালে আবিষ্কার করেন, যখন একটি টারডিগ্রেড শুকিয়ে যায়, তখন মাথা এবং আটটি পা গুটিয়ে নেয়। একটি গভীর সুপ্তাবস্থায় চলে যায়, এটি প্রায় মৃত্যুর মতো মনে হয়।
এই অবস্থায়, টারডিগ্রেডের বিপাক স্বাভাবিক হারের মাত্র ০.০১ শতাংশে নেমে আসে।
এটি কয়েক দশক ধরে এই অবস্থায় অবস্থায় থাকতে পারে। পরে পানির সংস্পর্শে এলেই আবার সচল হয়।
১৯৪৮ সালে, ১২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জাদুঘরে ধুলো জমা একটি টারডিগ্রেডকে পানি দেওয়ার পর সেটি আংশিকভাবে আবার সচল হয়েছিল।
২. টিডিপি প্রোটিনের সুরক্ষা জাল
২০১৭ সালে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, টারডিগ্রেড শুকিয়ে যাওয়ার সময় রহস্যময় কিছু প্রোটিন তৈরির জিন সক্রিয় হয়, যার নাম দেওয়া হয় টারডিগ্রেড-নির্দিষ্ট বিশৃঙ্খল প্রোটিন (টিডিপি)।
২০২২ সালে, জাপানের বিজ্ঞানীরা দেখান, সাইটোপ্লাজমিক অ্যাবানডেন্ট হিট সলিউবল (সিএএইচএস) নামক এক শ্রেণির টিডিপি প্রোটিন এর জন্য দায়ী।
এই প্রোটিনগুলো শুকিয়ে যাওয়ার সময় আধা-কঠিন জেলের মতো রূপ নেয়।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াইমিং-এর সহযোগী অধ্যাপক টমাস বুথবি বলেন, এই প্রোটিনগুলো কোষের ভেতরে মাকড়সার জালের মতো নেটওয়ার্ক তৈরি করে। এই ফাইবারগুলো (তন্তু) সংবেদনশীল প্রোটিনগুলোকে জড়িয়ে ধরে সেগুলোকে ভাঁজ হতে বা নষ্ট হতে বাধা দেয়।
ডিএনএ সুরক্ষা এবং মানব কল্যাণে প্রয়োগ
টারডিগ্রেড কীভাবে বিকিরণ সহ্য করে, তা বেশ ভালোভাবেই জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। ২০১৬ সালে, কুনিয়েদা এবং তাঁর দল ডেম্যাজ সাপ্রেসর প্রোটিন (ডিসাপ) নামে একটি প্রোটিন আবিষ্কার করেন, যা ডিএনএকে একটি কম্বলের মতো মুড়ে ফেলে এবং আয়োনাইজিং রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। বিজ্ঞানীরা মানব কোষে ডিসাপ প্রোটিন তৈরি করার জিন যুক্ত করে দেখেছেন, এটি মানব ডিএনএকেও রক্ষা করতে পারে। ফলে মানুষের অমরত্বের আকাঙ্ক্ষা পূরণেও সমাধান সূত্রের উৎস হতে পারে এই আণুবীক্ষণিক প্রাণী।
সুপারপাওয়ার
টারডিগ্রেডের এই অসাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো মানবকল্যাণে ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো:
রেডিয়েশন থেরাপিতে সুরক্ষা: ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত উচ্চ-শক্তির বিকিরণ সুস্থ টিস্যুকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। ডিসাপ প্রোটিন ব্যবহার করে ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এতে দেখা গেছে, এটি ক্যানসার কোষ ধ্বংসের সময় পার্শ্ববর্তী সুস্থ টিস্যুকে রক্ষা করতে পারে।
সংরক্ষণ প্রযুক্তি: টিডিপি প্রোটিন ব্যবহার করে ভ্যাকসিন বা হিমোফিলিয়ার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাক্টর ভি৩-এর মতো সংবেদনশীল জৈবিক উপকরণ সংরক্ষণ করা যেতে পারে। বুথবি আবিষ্কার করেছেন, ফ্যাক্টর ভি৩-কে টিডিপি-এর সঙ্গে মিশ্রিত করলে, এটি রেফ্রিজারেটর ছাড়াই কক্ষ তাপমাত্রায় স্থিতিশীল থাকে। ফলে এটি দরিদ্র দেশ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় অত্যন্ত মূল্যবান হতে পারে, যেখানে ভ্যাকসিন বা অন্যান্য উপকরণের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়।
মহাকাশ যাত্রা: নাসা টারডিগ্রেডের এই বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য খাদ্য ও ওষুধকে শুষ্কতা বা বিকিরণ থেকে রক্ষা করার পরিকল্পনা করছেন।
টারডিগ্রেডকে কেন পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি চরম অবস্থার সঙ্গে মোকাবিলা করার সক্ষমতা অর্জন করতে হলো, সেটি এখনো রহস্য। এই প্রাণীর বিস্ময়কর ক্ষমতাগুলোর রহস্য উন্মোচন করা গেলে তা কেবল মানবজাতির উপকারে আসবে না, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকেও রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে টারডিগ্রেডরা।

সাধারণত পণ্য ও সেবার প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিজ্ঞাপনে চমকপ্রদ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তেমনি এলইডি বাল্ব কত টিকবে তা বিজ্ঞাপনে বলা হয়। একটি এলইডি বাল্বের আয়ু কীভাবে নির্ধারণ করা হয়, অর্থাৎ বাল্বটি থেকে কত দিন আলো পাওয়া যাবে—একজন ক্রেতা হিসেবে সেটি জানার আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক।
০৬ এপ্রিল ২০২৪
মানুষের মস্তিষ্কের নেটওয়ার্ক অনুকরণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দক্ষতা বাড়ানোর একটি নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সারের গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর (স্নায়ুকোষের) সংযোগ যেভাবে তৈরি হয়, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে এআই মডেলগুলো আরও ভালো কাজ করতে পারে।
২ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন এক ধরনের বিশেষ রং উদ্ভাবন করেছেন, যা ছাদের তাপমাত্রা আশপাশের বাতাসের চেয়েও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কম রাখতে পারে। শুধু তাই নয়, এই রং বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করতেও সক্ষম—যা ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা হ্রাসের পাশাপাশি জলের ঘাটতি মোকাবিলায়ও ভূমিকা রাখতে পারে।
৫ দিন আগে
দাঁতের ডাক্তারকে ভয় পান না, এমন মানুষ খুব কমই আছেন। কারণ একটি দাঁত প্রতিস্থাপন করতে হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে, যেখানে চোয়ালে টাইটানিয়ামের স্ক্রু বসানো হয় এবং মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয় কৃত্রিম মূল বা ‘রুট’ শক্ত হওয়ার জন্য।
৯ দিন আগে