মানুষের পাঁচ ইন্দ্রিয়—স্বাদ, স্পর্শ, গন্ধ, শ্রবণ ও দৃষ্টি। এগুলো জটিল প্রক্রিয়ায় সমন্বিতভাবে কাজ করে। চোখ ঢেকে এবং প্লাগ লাগিয়ে নাক বন্ধ করে খেলে একজনের কাছে পেঁয়াজ, আলু আর আপেল আলাদা করা কঠিন হতে পারে!
প্রথম ধাক্কায় ব্যাপারটি অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। আসুন, ব্যাখ্যা করা যাক—
চোখ বন্ধ করে পরিচিত কোনো জিনিস শনাক্ত করতে হলে আমাদের সেটিকে স্পর্শ করতে হয়, গন্ধ ও স্বাদ নিতে হয়। এ কারণে চোখ বন্ধ রেখে একটি আপেল বা একটি পেঁয়াজ চিনতে পারা যায় সেটির স্বাদ, গন্ধ ও গঠনের কারণে।
একটি আপেল একটি আপেল এবং একটি পেঁয়াজ একটি পেঁয়াজ হয় এটির স্বাদ, গন্ধ এবং গঠনবিন্যাসের (টেক্সচার) কারণে। একসঙ্গে এই বৈশিষ্ট্যগুলো যা তৈরি করে, সেটিকেই বলা হয় স্বাদ। এই স্বাদই একটি খাবার থেকে অন্য খাবারকে আলাদা করে।
যখন আমরা খাই, তখন জিহ্বায় থাকা রিসেপ্টর (গ্রাহক) দুটি জিনিসের পাঠোদ্ধার করে: টেক্সচার এবং স্বাদ। স্বাদ শনাক্ত করার জন্য এই রিসেপ্টরগুলো গন্ধহীন পদার্থগুলো গ্রহণ করে, যা অনুদ্বায়ী রাসায়নিক যৌগ হিসেবে পরিচিত। এই আণবিক মিশ্রণগুলো আমাদের সাধারণত স্বাদের সঙ্গে যুক্ত পাঁচটি বৈশিষ্ট্য বলে দেয় (তিক্ত, নোনতা, মিষ্টি, টক ও উমামি বা সুস্বাদু)।
যুক্তরাষ্ট্রের আরবানা-ক্যাম্পেইনে ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্যবিজ্ঞানের অধ্যাপক সু-ইয়ুন লি পপসায়েন্সকে বলেন, সমস্যাটি হলো আপেল ও পেঁয়াজের মধ্যে সেই বৈশিষ্ট্যগুলো একই রকম। উভয়ের একটি কাটা টুকরো প্রায় একই মাত্রার মচমচে এবং একই রকম টক-মিষ্টি।
সুতরাং, আমাদের জিহ্বা একা একটি আপেল থেকে একটি পেঁয়াজকে আলাদা করতে পারে না। এর জন্য আমাদের অবশ্যই নাকের ওপর নির্ভর করতে হয়। আমরা যখন মচমচ করে কিছু চিবাই, তখন খাবারগুলো উদ্বায়ী রাসায়নিক যৌগও নির্গত করে। এই উদ্বায়ী যৌগগুলোই স্বাদ বয়ে নিয়ে মুখের মধ্যে থেকে গলার পেছন দিয়ে নাক ও গলাকে সংযুক্তকারী টিউব রেট্রোনাসাল প্যাসেজে উঠে যায়। সেখানে নাকের গন্ধ রিসেপ্টরগুলো উদ্বায়ী যৌগগুলোর স্বতন্ত্র ঘ্রাণকে শনাক্ত করে। তখনই বরং আমরা খাবারকে আলাদাভাবে বুঝতে পারি এবং স্বাদ উপভোগ করি। নাক বন্ধ রাখলে এই বায়ুপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে ঘ্রাণের অনুভূতি দুর্বল হয়, এমনকি কোনো ঘ্রাণই হয়তো পাওয়া যায় না।
আমরা বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই জানি, শারীরিক অবস্থা স্বাদকে প্রভাবিত করে। এর মধ্যে ঠান্ডা-সর্দি লাগা সবচেয়ে পরিচিত উদাহরণ। ঠান্ডা লেগে মাথা জ্যাম লেগে নাক বন্ধ হয়ে গেলে আমরা খাবারের স্বাদ পাই না। এর মানে কি গন্ধ বা ঘ্রাণও জিহ্বার স্বাদ গ্রাহকের (টেস্ট বাড) সমান বা তার চেয়েও বেশি ভূমিকা রাখে?
গবেষকেরা দেখেছেন, নাকে প্লাগ লাগিয়ে কিছু খেলে স্বাদের অনুভূতি সাধারণত সঠিক হয় না বা স্বাভাবিকের চেয়ে কম স্বাদ পান। অর্থাৎ স্বাদ শনাক্তের ক্ষেত্রে খাবারের ঘ্রাণ বড় পার্থক্য তৈরি করে। তবে নাকে প্লাগ লাগিয়ে নিলেই স্বাদ নেওয়ার সব ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ হয় না। কারণ, নাক ও গলা মূলত একই শ্বাসনালিতে উন্মুক্ত। তাই কিছু খাবার চিবানোর ফলে নাকের ছিদ্র বন্ধ থাকলেও মুখের পেছনের অংশ দিয়ে নাকে ঘ্রাণ যেতে পারে।
আমরা যে স্বাদ গ্রহণ করি, তার প্রায় ৮০ শতাংশের জন্য দায়ী আমাদের গন্ধের অনুভূতি। গন্ধের অনুভূতি ছাড়া আমাদের স্বাদের অনুভূতি মাত্র পাঁচটি স্বতন্ত্র সংবেদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ—মিষ্টি, নোনতা, টক, তিক্ত এবং নতুন আবিষ্কৃত ‘উমামি’ বা সুস্বাদু সংবেদন। অন্য সব স্বাদ যা আমরা অনুভব করি, সেগুলো আসে ঘ্রাণ থেকে। এ কারণেই সর্দির কারণে নাক বন্ধ হয়ে গেলে বেশির ভাগ খাবারই মৃদু স্বাদ বা স্বাদহীন বলে মনে হয়। এ ছাড়া ক্ষুধার্ত থাকলে আমাদের ঘ্রাণশক্তি প্রবল হয়।
মানুষের পাঁচ ইন্দ্রিয়—স্বাদ, স্পর্শ, গন্ধ, শ্রবণ ও দৃষ্টি। এগুলো জটিল প্রক্রিয়ায় সমন্বিতভাবে কাজ করে। চোখ ঢেকে এবং প্লাগ লাগিয়ে নাক বন্ধ করে খেলে একজনের কাছে পেঁয়াজ, আলু আর আপেল আলাদা করা কঠিন হতে পারে!
প্রথম ধাক্কায় ব্যাপারটি অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। আসুন, ব্যাখ্যা করা যাক—
চোখ বন্ধ করে পরিচিত কোনো জিনিস শনাক্ত করতে হলে আমাদের সেটিকে স্পর্শ করতে হয়, গন্ধ ও স্বাদ নিতে হয়। এ কারণে চোখ বন্ধ রেখে একটি আপেল বা একটি পেঁয়াজ চিনতে পারা যায় সেটির স্বাদ, গন্ধ ও গঠনের কারণে।
একটি আপেল একটি আপেল এবং একটি পেঁয়াজ একটি পেঁয়াজ হয় এটির স্বাদ, গন্ধ এবং গঠনবিন্যাসের (টেক্সচার) কারণে। একসঙ্গে এই বৈশিষ্ট্যগুলো যা তৈরি করে, সেটিকেই বলা হয় স্বাদ। এই স্বাদই একটি খাবার থেকে অন্য খাবারকে আলাদা করে।
যখন আমরা খাই, তখন জিহ্বায় থাকা রিসেপ্টর (গ্রাহক) দুটি জিনিসের পাঠোদ্ধার করে: টেক্সচার এবং স্বাদ। স্বাদ শনাক্ত করার জন্য এই রিসেপ্টরগুলো গন্ধহীন পদার্থগুলো গ্রহণ করে, যা অনুদ্বায়ী রাসায়নিক যৌগ হিসেবে পরিচিত। এই আণবিক মিশ্রণগুলো আমাদের সাধারণত স্বাদের সঙ্গে যুক্ত পাঁচটি বৈশিষ্ট্য বলে দেয় (তিক্ত, নোনতা, মিষ্টি, টক ও উমামি বা সুস্বাদু)।
যুক্তরাষ্ট্রের আরবানা-ক্যাম্পেইনে ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্যবিজ্ঞানের অধ্যাপক সু-ইয়ুন লি পপসায়েন্সকে বলেন, সমস্যাটি হলো আপেল ও পেঁয়াজের মধ্যে সেই বৈশিষ্ট্যগুলো একই রকম। উভয়ের একটি কাটা টুকরো প্রায় একই মাত্রার মচমচে এবং একই রকম টক-মিষ্টি।
সুতরাং, আমাদের জিহ্বা একা একটি আপেল থেকে একটি পেঁয়াজকে আলাদা করতে পারে না। এর জন্য আমাদের অবশ্যই নাকের ওপর নির্ভর করতে হয়। আমরা যখন মচমচ করে কিছু চিবাই, তখন খাবারগুলো উদ্বায়ী রাসায়নিক যৌগও নির্গত করে। এই উদ্বায়ী যৌগগুলোই স্বাদ বয়ে নিয়ে মুখের মধ্যে থেকে গলার পেছন দিয়ে নাক ও গলাকে সংযুক্তকারী টিউব রেট্রোনাসাল প্যাসেজে উঠে যায়। সেখানে নাকের গন্ধ রিসেপ্টরগুলো উদ্বায়ী যৌগগুলোর স্বতন্ত্র ঘ্রাণকে শনাক্ত করে। তখনই বরং আমরা খাবারকে আলাদাভাবে বুঝতে পারি এবং স্বাদ উপভোগ করি। নাক বন্ধ রাখলে এই বায়ুপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে ঘ্রাণের অনুভূতি দুর্বল হয়, এমনকি কোনো ঘ্রাণই হয়তো পাওয়া যায় না।
আমরা বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই জানি, শারীরিক অবস্থা স্বাদকে প্রভাবিত করে। এর মধ্যে ঠান্ডা-সর্দি লাগা সবচেয়ে পরিচিত উদাহরণ। ঠান্ডা লেগে মাথা জ্যাম লেগে নাক বন্ধ হয়ে গেলে আমরা খাবারের স্বাদ পাই না। এর মানে কি গন্ধ বা ঘ্রাণও জিহ্বার স্বাদ গ্রাহকের (টেস্ট বাড) সমান বা তার চেয়েও বেশি ভূমিকা রাখে?
গবেষকেরা দেখেছেন, নাকে প্লাগ লাগিয়ে কিছু খেলে স্বাদের অনুভূতি সাধারণত সঠিক হয় না বা স্বাভাবিকের চেয়ে কম স্বাদ পান। অর্থাৎ স্বাদ শনাক্তের ক্ষেত্রে খাবারের ঘ্রাণ বড় পার্থক্য তৈরি করে। তবে নাকে প্লাগ লাগিয়ে নিলেই স্বাদ নেওয়ার সব ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ হয় না। কারণ, নাক ও গলা মূলত একই শ্বাসনালিতে উন্মুক্ত। তাই কিছু খাবার চিবানোর ফলে নাকের ছিদ্র বন্ধ থাকলেও মুখের পেছনের অংশ দিয়ে নাকে ঘ্রাণ যেতে পারে।
আমরা যে স্বাদ গ্রহণ করি, তার প্রায় ৮০ শতাংশের জন্য দায়ী আমাদের গন্ধের অনুভূতি। গন্ধের অনুভূতি ছাড়া আমাদের স্বাদের অনুভূতি মাত্র পাঁচটি স্বতন্ত্র সংবেদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ—মিষ্টি, নোনতা, টক, তিক্ত এবং নতুন আবিষ্কৃত ‘উমামি’ বা সুস্বাদু সংবেদন। অন্য সব স্বাদ যা আমরা অনুভব করি, সেগুলো আসে ঘ্রাণ থেকে। এ কারণেই সর্দির কারণে নাক বন্ধ হয়ে গেলে বেশির ভাগ খাবারই মৃদু স্বাদ বা স্বাদহীন বলে মনে হয়। এ ছাড়া ক্ষুধার্ত থাকলে আমাদের ঘ্রাণশক্তি প্রবল হয়।
গণিত, প্রকৌশল, জ্যোতির্বিদ্যা ও চিকিৎসাবিদ্যার মতো বিষয়ে উচ্চতর বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ছিল প্রাচীন মিসরীয়দের। তাঁরা তাত্ত্বিক জ্ঞানের চেয়ে ব্যবহারিক জ্ঞানকে বেশি প্রাধান্য দিতেন। অনেকের ধারণা, বিজ্ঞান আধুনিককালের আবিষ্কার, যার শিকড় প্রাচীন গ্রিক সভ্যতায়।
৭ ঘণ্টা আগেপ্রস্তর যুগে চীনের পূর্বাঞ্চলে সমাজের নেতৃত্বে ছিল নারী। সম্প্রতি প্রাপ্ত ডিএনএ বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এমনই অভূতপূর্ব তথ্য। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার আগের কঙ্কালের জিনগত উপাদান বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, সেই সময়কার সমাজ ছিল মাতৃতান্ত্রিক এবং সমাজের সদস্যরা অন্তত ১০ প্রজন্ম ধরে মায়ের বংশ অনুসারে...
১ দিন আগেপ্রতি বছর নদী, সমুদ্র ও অন্য বিভিন্ন জলাশয় থেকে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মাছ ধরা হয়। এদের বেশির ভাগই খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে এই বিপুল-সংখ্যক মাছ ধরার পরে তাদের যে পদ্ধতিতে মারা হয়, তা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাছকে পানি থেকে তোলার পর তারা গড়ে প্রায় ২২ মিনিট পর্যন্ত
৩ দিন আগেপৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক মরুভূমিগুলোর কেন্দ্রে অবস্থিত আরব অঞ্চল একসময় সবুজে মোড়ানো স্বর্গোদ্যান ছিল। মরুপ্রধান অঞ্চল হলেও পৃথিবীর দীর্ঘ ইতিহাসে এই ভূমি নানা সময়ে আর্দ্র আবহাওয়ার দেখা পেয়েছে, আর তখনই সেখানে জন্ম নিয়েছে লেক-নদী, বনভূমি এবং জীববৈচিত্র্যের স্বর্গ। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে এমনটাই
৫ দিন আগে