দুপুরের খাবার খাওয়ার পর ঘুম ঘুম ভাব লাগে অনেকেরই। বাসায় থাকলে এই সময় একটু ঘুমিয়ে নেন কেউ কেউ। এই ধরনের ঘুমকে ‘ভাতঘুম’ বলে। এই অনুভূতির পেছনে নানা জটিল শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া কাজ করে। খাবার খাওয়ার পর কাজ করার জন্য উদ্যমী হওয়ার কথা থাকলেও উল্টো ঘুম পায়।
শুধু দুপুর নয়, দিন রাতের যেকোনো সময় খাওয়ার পরপরই ঘুম ঘুম ভাব আসে। কয়েকটি কারণে এটি হয়। সংক্ষিপ্তভাবে বললে, পেট ভর্তি ভরে ভাত খাওয়ার পর রক্ত পেটের দিকে সঞ্চালিত হয়, যাতে পাচন বা পরিপাক অন্ত্রগুলোকে অক্সিজেন সরবরাহ এবং শোষিত পুষ্টি পরিবহন করে। এর ফলে মস্তিষ্কে রক্তের প্রবাহ কমে যায়। এতে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যাওয়ায় স্নায়ুতন্ত্র যথেষ্ট কার্যকর থাকতে পারে না, তখন ঘুম ঘুম অনুভূত হয়।
কিছু ধরনের খাবার এবং খাবার গ্রহণের সময় মানুষকে বিশেষভাবে ক্লান্ত অনুভব করাতে পারে। খাবার গ্রহণের পর শক্তির স্তরের হ্রাসকে বলে ‘পোস্টপ্রান্ডিয়াল সোনোলেন্স’।
খাবার পর ক্লান্তির কারণ সম্পর্কে গবেষকেরা বিভিন্ন তত্ত্ব হাজির করেছেন। তবে সাধারণভাবে তাঁরা একমত যে, এটি একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া, এতে চিন্তার কোনো কারণ নেই। প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার সাধারণত অন্য খাবারের তুলনায় মানুষকে বেশি ক্লান্ত অনুভব করাতে পারে।
কিছু গবেষক বিশ্বাস করেন, খাবার খাওয়ার পর ক্লান্তি অনুভূত হওয়ার কারণ হলো শরীরের মধ্যে বেশি সেরোটোনিন উৎপাদিত হওয়া। সেরোটোনিন একটি রাসায়নিক যা মেজাজ এবং ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ অনেক খাবারে ট্রিপটোফ্যান নামে অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে। এটি শরীরকে সেরোটোনিন উৎপাদনে সাহায্য করে। কার্বোহাইড্রেট শরীরকে ট্রিপটোফ্যান শোষণে সাহায্য করে।
এই কারণে প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেটে সমৃদ্ধ খাবার খেলে ক্লান্ত বোধ হতে পারে। ট্রিপটোফ্যান প্রধানত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারে পাওয়া যায়, যেমন: স্যামন, মুরগি, ডিম, পালং শাক, শিমজাতীয় ফসলের বীজ, দুধ, সয়া পণ্য, চিজ। আর কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ যেসব খাবারেও উচ্চমাত্রায় ট্রিপটোফ্যান পাওয়া যায় সেগুলো হলো—পাস্তা, ভাত, সাদা রুটি ও ক্র্যাকার, কেক, বিস্কুট, ভুট্টা, দুধ, চিনি, মিষ্টি।
পেট ভরে খাওয়ার পর ঘুম ঘুম অনুভব করার সম্ভাবনা বেশি। যারা দুপুরে বেশি খান, খাবার গ্রহণের পর তাঁদের ঘুম পাওয়া স্বাভাবিক। কারণ খাবার খাওয়ার পর রক্তে শর্করার মাত্রা হুট করে বেড়ে যায় এবং পরক্ষণেই শক্তির স্তর কমে যায়।
এ ছাড়া খাবারের পর ক্লান্তি বোধের অন্যান্য কিছু কারণও থাকতে পারে। যেমন: রাতে কম ঘুমানো, খাবারের সঙ্গে অ্যালকোহল পান করা।
খাওয়ার পর ঘুম ভাব দূর করার উপায়
খাওয়ার পর ক্লান্তি অনুভব করা অনেকের জন্য বিরক্তিকর হতে পারে, বিশেষ করে দুপুরের খাবারের পর। খাওয়ার পর ক্লান্তি কমাতে নিচের কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন।
অল্প করে খান: একবারে বেশি খাবার খাওয়ার পরিবর্তে কয়েক ঘণ্টা পরপর পরিমিত খাবার খান। যেমন: ফল বা একমুঠো ভাজা বাদাম আপনার শক্তি স্তর বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।
পর্যাপ্ত ঘুম: রাতে পর্যাপ্ত ঘুমালে দুপুরের খাবারের পর ক্লান্তি অনুভব করার সম্ভাবনা কমে যায়।
হালকা হাঁটাহাঁটি করা: খাওয়ার পর কিছু সময় হাঁটলে ঘুম ভাব কমতে পারে এবং আপনার শক্তি বাড়তে পারে।
সুযোগ পেলে কিছুক্ষণ ঘুমান: দিনের বেলায় ১০–২০ মিনিটের ঘুমও ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করতে পারে।
আলোতে থাকুন: ২০১৫ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দুপুরের খাবারের পর অন্ধকার ঘরে থাকার চেয়ে সূর্যের আলোতে বা উজ্জ্বল আলোতে থাকলে ক্লান্তি বোধ কম হয়।
এই কৌশলগুলো প্রয়োগ করলে খাওয়ার পর ক্লান্তি কমানো সম্ভব।
তবে যদি খাওয়ার গ্রহণের পর ক্লান্তিভাব কোনোভাবেই না কাটে এবং এই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নিচের কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা অতিরিক্ত ক্লান্তির কারণ হতে পারে। যেমন—
খাদ্য অসহিষ্ণুতা বা অ্যালার্জি: নির্দিষ্ট খাবারের প্রতি অ্যালার্জি থাকলে সেই খাবার গ্রহণের পর ক্লান্ত লাগতে পারে।
সেলিয়াক ডিজিজ: এই অটোইমিউন রোগের ফলে খাবার থেকে পুষ্টি শোষণে সমস্যা হতে পারে, যা ক্লান্তির কারণ হতে পারে।
রক্তশূন্যতা: দেহে রক্ত কমে গেলে সারাক্ষণ ক্লান্তি বোধ হতে পারে।
ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার পরিবর্তন ক্লান্তির কারণ হতে পারে।
যদি ক্লান্তির সঙ্গে অন্য উপসর্গ যেমন: পেটের সমস্যা, ওজন, উল্লেখযোগ্য ওজনের পরিবর্তন বা অস্বস্তির অনুভূতি থাকে, তাহলে চিকিৎসা পরামর্শ নেওয়া বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে, বিবিসি সায়েন্স ফোকাস
দুপুরের খাবার খাওয়ার পর ঘুম ঘুম ভাব লাগে অনেকেরই। বাসায় থাকলে এই সময় একটু ঘুমিয়ে নেন কেউ কেউ। এই ধরনের ঘুমকে ‘ভাতঘুম’ বলে। এই অনুভূতির পেছনে নানা জটিল শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া কাজ করে। খাবার খাওয়ার পর কাজ করার জন্য উদ্যমী হওয়ার কথা থাকলেও উল্টো ঘুম পায়।
শুধু দুপুর নয়, দিন রাতের যেকোনো সময় খাওয়ার পরপরই ঘুম ঘুম ভাব আসে। কয়েকটি কারণে এটি হয়। সংক্ষিপ্তভাবে বললে, পেট ভর্তি ভরে ভাত খাওয়ার পর রক্ত পেটের দিকে সঞ্চালিত হয়, যাতে পাচন বা পরিপাক অন্ত্রগুলোকে অক্সিজেন সরবরাহ এবং শোষিত পুষ্টি পরিবহন করে। এর ফলে মস্তিষ্কে রক্তের প্রবাহ কমে যায়। এতে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যাওয়ায় স্নায়ুতন্ত্র যথেষ্ট কার্যকর থাকতে পারে না, তখন ঘুম ঘুম অনুভূত হয়।
কিছু ধরনের খাবার এবং খাবার গ্রহণের সময় মানুষকে বিশেষভাবে ক্লান্ত অনুভব করাতে পারে। খাবার গ্রহণের পর শক্তির স্তরের হ্রাসকে বলে ‘পোস্টপ্রান্ডিয়াল সোনোলেন্স’।
খাবার পর ক্লান্তির কারণ সম্পর্কে গবেষকেরা বিভিন্ন তত্ত্ব হাজির করেছেন। তবে সাধারণভাবে তাঁরা একমত যে, এটি একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া, এতে চিন্তার কোনো কারণ নেই। প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার সাধারণত অন্য খাবারের তুলনায় মানুষকে বেশি ক্লান্ত অনুভব করাতে পারে।
কিছু গবেষক বিশ্বাস করেন, খাবার খাওয়ার পর ক্লান্তি অনুভূত হওয়ার কারণ হলো শরীরের মধ্যে বেশি সেরোটোনিন উৎপাদিত হওয়া। সেরোটোনিন একটি রাসায়নিক যা মেজাজ এবং ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ অনেক খাবারে ট্রিপটোফ্যান নামে অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে। এটি শরীরকে সেরোটোনিন উৎপাদনে সাহায্য করে। কার্বোহাইড্রেট শরীরকে ট্রিপটোফ্যান শোষণে সাহায্য করে।
এই কারণে প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেটে সমৃদ্ধ খাবার খেলে ক্লান্ত বোধ হতে পারে। ট্রিপটোফ্যান প্রধানত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারে পাওয়া যায়, যেমন: স্যামন, মুরগি, ডিম, পালং শাক, শিমজাতীয় ফসলের বীজ, দুধ, সয়া পণ্য, চিজ। আর কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ যেসব খাবারেও উচ্চমাত্রায় ট্রিপটোফ্যান পাওয়া যায় সেগুলো হলো—পাস্তা, ভাত, সাদা রুটি ও ক্র্যাকার, কেক, বিস্কুট, ভুট্টা, দুধ, চিনি, মিষ্টি।
পেট ভরে খাওয়ার পর ঘুম ঘুম অনুভব করার সম্ভাবনা বেশি। যারা দুপুরে বেশি খান, খাবার গ্রহণের পর তাঁদের ঘুম পাওয়া স্বাভাবিক। কারণ খাবার খাওয়ার পর রক্তে শর্করার মাত্রা হুট করে বেড়ে যায় এবং পরক্ষণেই শক্তির স্তর কমে যায়।
এ ছাড়া খাবারের পর ক্লান্তি বোধের অন্যান্য কিছু কারণও থাকতে পারে। যেমন: রাতে কম ঘুমানো, খাবারের সঙ্গে অ্যালকোহল পান করা।
খাওয়ার পর ঘুম ভাব দূর করার উপায়
খাওয়ার পর ক্লান্তি অনুভব করা অনেকের জন্য বিরক্তিকর হতে পারে, বিশেষ করে দুপুরের খাবারের পর। খাওয়ার পর ক্লান্তি কমাতে নিচের কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন।
অল্প করে খান: একবারে বেশি খাবার খাওয়ার পরিবর্তে কয়েক ঘণ্টা পরপর পরিমিত খাবার খান। যেমন: ফল বা একমুঠো ভাজা বাদাম আপনার শক্তি স্তর বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।
পর্যাপ্ত ঘুম: রাতে পর্যাপ্ত ঘুমালে দুপুরের খাবারের পর ক্লান্তি অনুভব করার সম্ভাবনা কমে যায়।
হালকা হাঁটাহাঁটি করা: খাওয়ার পর কিছু সময় হাঁটলে ঘুম ভাব কমতে পারে এবং আপনার শক্তি বাড়তে পারে।
সুযোগ পেলে কিছুক্ষণ ঘুমান: দিনের বেলায় ১০–২০ মিনিটের ঘুমও ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করতে পারে।
আলোতে থাকুন: ২০১৫ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দুপুরের খাবারের পর অন্ধকার ঘরে থাকার চেয়ে সূর্যের আলোতে বা উজ্জ্বল আলোতে থাকলে ক্লান্তি বোধ কম হয়।
এই কৌশলগুলো প্রয়োগ করলে খাওয়ার পর ক্লান্তি কমানো সম্ভব।
তবে যদি খাওয়ার গ্রহণের পর ক্লান্তিভাব কোনোভাবেই না কাটে এবং এই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নিচের কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা অতিরিক্ত ক্লান্তির কারণ হতে পারে। যেমন—
খাদ্য অসহিষ্ণুতা বা অ্যালার্জি: নির্দিষ্ট খাবারের প্রতি অ্যালার্জি থাকলে সেই খাবার গ্রহণের পর ক্লান্ত লাগতে পারে।
সেলিয়াক ডিজিজ: এই অটোইমিউন রোগের ফলে খাবার থেকে পুষ্টি শোষণে সমস্যা হতে পারে, যা ক্লান্তির কারণ হতে পারে।
রক্তশূন্যতা: দেহে রক্ত কমে গেলে সারাক্ষণ ক্লান্তি বোধ হতে পারে।
ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার পরিবর্তন ক্লান্তির কারণ হতে পারে।
যদি ক্লান্তির সঙ্গে অন্য উপসর্গ যেমন: পেটের সমস্যা, ওজন, উল্লেখযোগ্য ওজনের পরিবর্তন বা অস্বস্তির অনুভূতি থাকে, তাহলে চিকিৎসা পরামর্শ নেওয়া বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে, বিবিসি সায়েন্স ফোকাস
মানুষের মস্তিষ্কের ভেতর নীরব চিন্তাভাবনা বা ‘ইনার স্পিচ’ (মনের কথা) শনাক্ত করার কৌশল উদ্ভাবন করেছেন বিজ্ঞানীরা। মস্তিষ্কের কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই) প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এটিকে একটি বড় অগ্রগতি বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
১৩ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি বাড়ির ওপর আছড়ে পড়া এক উল্কাপিণ্ডকে পৃথিবীর থেকেও প্রাচীন বলে শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়ার এক গবেষণায় উঠে এসেছে, এই উল্কাপিণ্ডের বয়স ৪৫৬ কোটি বছর—যা পৃথিবীর বর্তমান আনুমানিক বয়স ৪৫৪ কোটি বছরের তুলনায় প্রায় ২ কোটি বছর বেশি।
২ দিন আগেআন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণায় আবারও চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিদ অধ্যাপক আভি লোয়েব। তিনি দাবি করেছেন, সৌরজগতের দিকে ধেয়ে আসা ‘৩১ /অ্যাটলাস’ (31 /ATLAS) নামের একটি মহাজাগতিক বস্তু সম্ভবত প্রাকৃতিক নয়, বরং এটি কোনো বুদ্ধিমান সভ্যতার তৈরি করা প্রযুক্তিগত বস্তু হতে পারে।
৩ দিন আগেমানববর্জ্যকে প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি করা বায়োচার বা একধরনের শুষ্ক চারকোল সার সংকট মোকাবিলা, পরিবেশদূষণ হ্রাস ও জ্বালানি সাশ্রয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। গবেষকেরা বলছেন, এটি কেবল কৃষি নয়, বরং বৈশ্বিক খাদ্যনিরাপত্তা, অর্থনীতি ও ভূরাজনীতির
৩ দিন আগে