আজকের পত্রিকা ডেস্ক
মানবদেহকে যদি একটি জটিল যন্ত্র বলা হয়, তাহলে তা হয়তো অতিরঞ্জন হবে না। কোষের সূক্ষ্ম গঠন থেকে শুরু করে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, চোখ, মস্তিষ্ক, যকৃৎ—৪০ কোটি বছরের বিবর্তনের ধারায় ধাপে ধাপে তৈরি হয়েছে। তবুও আজও বিজ্ঞানীরা বুঝে উঠতে পারেননি, কীভাবে ঠিক এমন আকৃতির মানুষ আমরা হয়ে উঠলাম।
জীবনের শুরু হয়েছিল এক কোষী জীব দিয়ে। ধীরে ধীরে সেগুলো একত্রে কাজ করতে শুরু করে গঠন করে বহুকোষী জীব। এরপর বিবর্তনের পথে মানুষ হয়ে ওঠে প্রথমে বহুকোষী প্রাণী, পরে কশেরুকাযুক্ত প্রাণী, তারপর স্তন্যপায়ী এবং অবশেষে প্রাইমেট বা বানরজাতীয় প্রাণী। প্রতিটি স্তরে শরীরের নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য যুক্ত হয়েছে—যেমন বহুকোষী প্রাণী পর্যায়ে দেহ ও অন্ত্র, মেরুদণ্ডীদের ক্ষেত্রে হাড় ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, স্তন্যপায়ীতে স্তন ও লোম, আর প্রাইমেটে নখ ও আরও জটিল আচরণ। তবে বিজ্ঞানীরা এখনো কিছু অঙ্গের বিবর্তন সম্পর্কে অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন।
এর মধ্যে সবচেয়ে বিতর্কিত কিছু বিষয় হলো মানুষের থুতনি এবং অণ্ডকোষের আকার। অন্য কোনো স্তন্যপায়ী প্রাণীরই চিবুক নেই, এমনকি আমাদের কাছের আত্মীয় নিঅ্যান্ডারথালদেরও নয়। আর দেহের ওজন অনুযায়ী তুলনা করলে মানুষের অণ্ডকোষ গরিলার চেয়ে তিন গুণ বড়, তবে শিম্পাঞ্জির তুলনায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ।
অণ্ডকোষের আকার ও যৌনজীবন
বিজ্ঞানীরা একটি বিষয় নিশ্চিতভাবে বুঝেছেন, অণ্ডকোষের আকার ও যৌন আচরণের মধ্যে রয়েছে সরাসরি সম্পর্ক। উদাহরণস্বরূপ, আবিসিনিয়ান ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট কোলোবাস এবং বনেট ম্যাকাক বানর—দুজনেরই দেহের আকার প্রায় এক হলেও তাদের অণ্ডকোষের আকার সম্পূর্ণ আলাদা। কোলোবাসের অণ্ডকোষ মাত্র তিন গ্রাম, আর ম্যাকাকের ৪৮ গ্রাম। কারণ—
পুরুষ কোলোবাস বানর স্ত্রী বানরের একটি হেরেমের একচ্ছত্র অধিকার পেতে মারাত্মক প্রতিযোগিতা করে, আর একবার জিতে গেলে শুধু সেই-ই হেরেমের স্ত্রীদের সঙ্গে যৌনমিলন হয়। অন্যদিকে ম্যাকাক বানর একত্রে প্রায় ৩০টি বানরের শান্তিপূর্ণ দলে বাস করে, যেখানে—সবাই সবার সঙ্গে মিলিত হয়। পুরুষ ম্যাকাক বানর একাধিক স্ত্রী বানরের সঙ্গে এবং স্ত্রী ম্যাকাক বানরেরাও একাধিক পুরুষের সঙ্গে মিলিত হয়।
এ অবস্থায় হেরেম নিয়ন্ত্রণকারী কোলোবাস বানরের জন্য সামান্য পরিমাণে শুক্রাণু উৎপাদনই যথেষ্ট। তবে ম্যাকাকের ক্ষেত্রে প্রজননের প্রতিযোগিতা ঘটে শরীরের বাইরে—পুরুষটির শুক্রাণুর সঙ্গে অন্য পুরুষদের শুক্রাণুর লড়াই হয়, যারা আগে বা পরে মিলিত হয়েছে। তাই যে পুরুষ ম্যাকাকের অণ্ডকোষ বড়, সে তুলনামূলকভাবে বেশি শুক্রাণু তৈরি করতে পারবে এবং তার জিন ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকবে।
এই ব্যাখ্যাটি একাধিক স্তন্যপায়ীর ক্ষেত্রে মিলেছে, যাকে বিজ্ঞানীরা বলেন সমবর্তনীয় বিবর্তন (convergent evolution)। অর্থাৎ বিভিন্ন প্রজাতিতে বারবার এই বৈশিষ্ট্য বিবর্তিত হওয়ায় আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে বড় অণ্ডকোষ মানেই সাধারণত বেশি সঙ্গমপ্রবণ প্রজাতি।
গরিলার মতো হেরেমপ্রধান প্রজাতির পুরুষদের অণ্ডকোষ ছোট, আর শিম্পাঞ্জি, বোনোবো বা ডলফিনদের অণ্ডকোষ অনেক বড়। ডলফিনদের ক্ষেত্রে তো অণ্ডকোষ শরীরের প্রায় ৪ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে, যা তুলনামূলকভাবে মানুষের হলে তা হতো প্রায় ৩ কেজি! মানুষের অণ্ডকোষের আকার শিম্পাঞ্জি বা গরিলার তুলনায় মাঝামাঝি। ফলে মানুষও যৌন আচরণে মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান করছে—না একেবারে একক সঙ্গী, না পুরোপুরি বহুগামী।
মানুষের চিবুক রয়েছে কেন
অণ্ডকোষের মতোই মানুষের চিবুক নিয়েও রয়েছে নানা তত্ত্ব। কেউ বলেন, এটি চোয়াল শক্ত করার জন্য। কেউ বলেন, পুরুষের দাড়ি বড় দেখাতে। আবার কেউ বলেন, রান্না ও নরম খাবারের ফলে চোয়াল ছোট হয়ে আসার কারণে ফাঁকা জায়গায় চিবুক থেকে গেছে।
তবে সমস্যা হলো, এটি কেবল মানুষের মধ্যেই দেখা যায়। আমাদের আত্মীয় নিঅ্যান্ডারথালদেরও ছিল না। ফলে, একান্তর বিবর্তনের উদাহরণ নেই বলে পরীক্ষামূলকভাবে কোনো তত্ত্ব প্রমাণ করা সম্ভব নয়।
তাই বিজ্ঞান অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলেও, হয়তো কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য হয়তো চিরকাল রহস্যই থেকে যাবে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
মানবদেহকে যদি একটি জটিল যন্ত্র বলা হয়, তাহলে তা হয়তো অতিরঞ্জন হবে না। কোষের সূক্ষ্ম গঠন থেকে শুরু করে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, চোখ, মস্তিষ্ক, যকৃৎ—৪০ কোটি বছরের বিবর্তনের ধারায় ধাপে ধাপে তৈরি হয়েছে। তবুও আজও বিজ্ঞানীরা বুঝে উঠতে পারেননি, কীভাবে ঠিক এমন আকৃতির মানুষ আমরা হয়ে উঠলাম।
জীবনের শুরু হয়েছিল এক কোষী জীব দিয়ে। ধীরে ধীরে সেগুলো একত্রে কাজ করতে শুরু করে গঠন করে বহুকোষী জীব। এরপর বিবর্তনের পথে মানুষ হয়ে ওঠে প্রথমে বহুকোষী প্রাণী, পরে কশেরুকাযুক্ত প্রাণী, তারপর স্তন্যপায়ী এবং অবশেষে প্রাইমেট বা বানরজাতীয় প্রাণী। প্রতিটি স্তরে শরীরের নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য যুক্ত হয়েছে—যেমন বহুকোষী প্রাণী পর্যায়ে দেহ ও অন্ত্র, মেরুদণ্ডীদের ক্ষেত্রে হাড় ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, স্তন্যপায়ীতে স্তন ও লোম, আর প্রাইমেটে নখ ও আরও জটিল আচরণ। তবে বিজ্ঞানীরা এখনো কিছু অঙ্গের বিবর্তন সম্পর্কে অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন।
এর মধ্যে সবচেয়ে বিতর্কিত কিছু বিষয় হলো মানুষের থুতনি এবং অণ্ডকোষের আকার। অন্য কোনো স্তন্যপায়ী প্রাণীরই চিবুক নেই, এমনকি আমাদের কাছের আত্মীয় নিঅ্যান্ডারথালদেরও নয়। আর দেহের ওজন অনুযায়ী তুলনা করলে মানুষের অণ্ডকোষ গরিলার চেয়ে তিন গুণ বড়, তবে শিম্পাঞ্জির তুলনায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ।
অণ্ডকোষের আকার ও যৌনজীবন
বিজ্ঞানীরা একটি বিষয় নিশ্চিতভাবে বুঝেছেন, অণ্ডকোষের আকার ও যৌন আচরণের মধ্যে রয়েছে সরাসরি সম্পর্ক। উদাহরণস্বরূপ, আবিসিনিয়ান ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট কোলোবাস এবং বনেট ম্যাকাক বানর—দুজনেরই দেহের আকার প্রায় এক হলেও তাদের অণ্ডকোষের আকার সম্পূর্ণ আলাদা। কোলোবাসের অণ্ডকোষ মাত্র তিন গ্রাম, আর ম্যাকাকের ৪৮ গ্রাম। কারণ—
পুরুষ কোলোবাস বানর স্ত্রী বানরের একটি হেরেমের একচ্ছত্র অধিকার পেতে মারাত্মক প্রতিযোগিতা করে, আর একবার জিতে গেলে শুধু সেই-ই হেরেমের স্ত্রীদের সঙ্গে যৌনমিলন হয়। অন্যদিকে ম্যাকাক বানর একত্রে প্রায় ৩০টি বানরের শান্তিপূর্ণ দলে বাস করে, যেখানে—সবাই সবার সঙ্গে মিলিত হয়। পুরুষ ম্যাকাক বানর একাধিক স্ত্রী বানরের সঙ্গে এবং স্ত্রী ম্যাকাক বানরেরাও একাধিক পুরুষের সঙ্গে মিলিত হয়।
এ অবস্থায় হেরেম নিয়ন্ত্রণকারী কোলোবাস বানরের জন্য সামান্য পরিমাণে শুক্রাণু উৎপাদনই যথেষ্ট। তবে ম্যাকাকের ক্ষেত্রে প্রজননের প্রতিযোগিতা ঘটে শরীরের বাইরে—পুরুষটির শুক্রাণুর সঙ্গে অন্য পুরুষদের শুক্রাণুর লড়াই হয়, যারা আগে বা পরে মিলিত হয়েছে। তাই যে পুরুষ ম্যাকাকের অণ্ডকোষ বড়, সে তুলনামূলকভাবে বেশি শুক্রাণু তৈরি করতে পারবে এবং তার জিন ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকবে।
এই ব্যাখ্যাটি একাধিক স্তন্যপায়ীর ক্ষেত্রে মিলেছে, যাকে বিজ্ঞানীরা বলেন সমবর্তনীয় বিবর্তন (convergent evolution)। অর্থাৎ বিভিন্ন প্রজাতিতে বারবার এই বৈশিষ্ট্য বিবর্তিত হওয়ায় আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে বড় অণ্ডকোষ মানেই সাধারণত বেশি সঙ্গমপ্রবণ প্রজাতি।
গরিলার মতো হেরেমপ্রধান প্রজাতির পুরুষদের অণ্ডকোষ ছোট, আর শিম্পাঞ্জি, বোনোবো বা ডলফিনদের অণ্ডকোষ অনেক বড়। ডলফিনদের ক্ষেত্রে তো অণ্ডকোষ শরীরের প্রায় ৪ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে, যা তুলনামূলকভাবে মানুষের হলে তা হতো প্রায় ৩ কেজি! মানুষের অণ্ডকোষের আকার শিম্পাঞ্জি বা গরিলার তুলনায় মাঝামাঝি। ফলে মানুষও যৌন আচরণে মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান করছে—না একেবারে একক সঙ্গী, না পুরোপুরি বহুগামী।
মানুষের চিবুক রয়েছে কেন
অণ্ডকোষের মতোই মানুষের চিবুক নিয়েও রয়েছে নানা তত্ত্ব। কেউ বলেন, এটি চোয়াল শক্ত করার জন্য। কেউ বলেন, পুরুষের দাড়ি বড় দেখাতে। আবার কেউ বলেন, রান্না ও নরম খাবারের ফলে চোয়াল ছোট হয়ে আসার কারণে ফাঁকা জায়গায় চিবুক থেকে গেছে।
তবে সমস্যা হলো, এটি কেবল মানুষের মধ্যেই দেখা যায়। আমাদের আত্মীয় নিঅ্যান্ডারথালদেরও ছিল না। ফলে, একান্তর বিবর্তনের উদাহরণ নেই বলে পরীক্ষামূলকভাবে কোনো তত্ত্ব প্রমাণ করা সম্ভব নয়।
তাই বিজ্ঞান অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলেও, হয়তো কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য হয়তো চিরকাল রহস্যই থেকে যাবে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
চাঁদে মরিচা ধরছে। আর এর জন্য দায়ী আমাদের পৃথিবী। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমনই এক চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ করেছেন। তাঁদের গবেষণায় দেখা , পৃথিবী থেকে চাঁদের দিকে ছুটে যাওয়া অক্সিজেন কণার প্রভাবে চাঁদের খনিজ পদার্থ হেমাটাইটে (haematite) রূপান্তরিত হচ্ছে।
৯ ঘণ্টা আগেঅর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় (৫৩ বছর) পর আবারও চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা করতে চলেছে মানবজাতি। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে আর্টেমিস ২ নামের এই মিশনে চারজন নভোচারী চাঁদকে ঘিরে ১০ দিনের মিশনে অংশ নেবেন। ১৯৭২ সালে অ্যাপোলো ১৭-এর পর এই প্রথম কোনো নভোচারী পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথের বাইরে পা রাখবেন।
১ দিন আগেপ্রায় ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে পৃথিবীর বুকে ডাইনোসরদের রাজত্বের অবসান হয় এক ভয়ংকর গ্রহাণু আছড়ে পড়ার মাধ্যমে। প্রায় ১২ কিলোমিটার প্রস্থের একটি গ্রহাণু ঘণ্টায় প্রায় ৪৩ হাজার কিলোমিটার গতিতে পৃথিবীতে আঘাত হানে। এই সংঘর্ষের ফলে একের পর এক প্রাণঘাতী ঘটনা শুরু হয়। এটি শেষ পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রায় ৭৫ শতাংশ প্রজ
২ দিন আগেপ্রাচীন মিসরীয়রা তাদের পিরামিডগুলোকে সুরক্ষিত করতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছিল। তবে অনেকেই মনে করেন বহিরাগতদের ঠেকাতে তারা পিরামিডের ভেতর ফাঁদ তৈরি করে রাখতেন। এই তথ্য কতটুকু সত্য তা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট লাইভ সায়েন্স।
৩ দিন আগে