Ajker Patrika

তোফায়েল আহমেদের অবস্থা ‘ক্রিটিক্যাল’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ৫২
তোফায়েল আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
তোফায়েল আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

ষাটের দশকের ছাত্রনেতা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা এবং সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এখনো জীবিত আছেন। তবে তাঁর অবস্থা ‘ক্রিটিক্যাল’ অর্থাৎ সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন মেয়ের জামাই ডা. তৌহিদুজ্জামান।

আজ শনিবার (৪ অক্টোবর) রাত ১১টার পর আজকের পত্রিকাকে তৌহিদুজ্জামান বলেন, ‘রাত ৮টার দিকে ওনার অবস্থা খারাপের দিকে চলে গিয়েছিল; প্রেশার ও পালস কমে গিয়েছিল। সেটা আবার সেটেল করেছে। ওনার অবস্থা ক্রিটিক্যাল। আগের চেয়েও অবনতি হয়েছে। তবে এখনো তিনি জীবিত আছেন।’

এদিকে গেল কয়েক দিনের মতো আজও তোফায়েল আহমেদের মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। পরে হাসপাতালে অবস্থান করা তাঁর সাবেক ব্যক্তিগত সহকারীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, তোফায়েল আহমেদ এখনো লাইফ সাপোর্টে আছেন।

এর আগে আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকেও তাঁর মৃত্যুর একটি সংবাদ শেয়ার করা হয়েছিল। বিষয়টিকে ‘পীড়াদায়ক’ বলেছিলেন তাঁর স্বজনেরা।

সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী জানান, তোফায়েল আহমেদ এখনো লাইফ সাপোর্টে আছেন। কোনো কিছু ঘটলে পরিবার থেকে জানানো হবে।

বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক সমস্যা নিয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তোফায়েল আহমেদ। কয়েক বছর ধরে হুইলচেয়ারে চলাফেরা করছেন তিনি। স্ট্রোকের কারণে তাঁর শরীরের একাংশ প্যারালাইজড হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

১৯৪৩ সালের ২২ অক্টোবর ভোলা জেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামে তোফায়েল আহমেদের জন্ম। বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকাবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন।

১৯৬৮-৬৯ এর উত্তাল সময়ে তোফায়েল ছিলেন ডাকসুর ভিপি। সে হিসেবে তিনি সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে তিনি ছিলেন ছাত্রসমাজের নেতৃত্বের ভূমিকায়।

প্রবল গণআন্দোলনে পাকিস্তান সরকার ১৯৬৯ সালে শেখ মুজিবুর রহমানসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সকল আসামিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ওই বছর ২৩শে ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক জনসভার আয়োজন করে।

লাখো জনতার সেই সমাবেশে শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। আর সেই উপাধি ঘোষণা করেন তোফায়েল আহমেদ।

১৯৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন তোফায়েল। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন মুজিব বাহিনীর অঞ্চলভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত চার প্রধানের একজন।

স্বাধীন বাংলাদেশে ৯ বার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তোফায়েল আহমেদ। সর্বশেষ তিনি ভোলা-১ আসনের এমপি ছিলেন।

দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে পরে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন তোফায়েল আহমেদ। বর্তমানে তিনি দলের উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে তখনকার প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তোফায়েল আহমেদকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় নিজের রাজনৈতিক সচিবের দায়িত্ব দেন।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরলে বঙ্গবন্ধুর মেয়ে শেখ হাসিনা তোফায়েলকে সরকারের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। পরে ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আবারও বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত