Ajker Patrika

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলেন নুর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত
নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত

সিঙ্গাপুরে ১২ দিন শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দেশে ফিরেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। এ সময় তাঁকে সংবর্ধনা দিয়ে বরণ করে নেন গণঅধিকার পরিষদ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

গত ২৯ আগস্ট রাতে রাজধানীর বিজয়নগরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলায় নুর ও গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন বলে দাবি করেন দলটির নেতা-কর্মীরা।

গুরুতর আহত অবস্থায় নুরকে প্রথমে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে রাত ১১টার দিকে তাঁকে স্থানান্তর করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে ১৮ দিন চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরেন নুর। এরপর গত ২২ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আজ বিমানবন্দরে নুর সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাকে, আমাদের টার্গেট করে অন্যদের মেসেজ দেওয়ার জন্য এই হামলা পরিচালিত হয়েছে। তাই আমি অন্যান্য রাজনৈতিক দল, গণ-অভ্যুত্থানের আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দকে বলব, আপনারা যদি পরবর্তী সিরিয়ালে পড়তে না চান, এই ঘটনায় যে-ই জড়িত থাকুক, যত বড় ক্ষমতাধর ব্যক্তি জড়িত থাকুক, তাকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। চাকরিচ্যুত করতে হবে। দুঃখজনক আমরা দেখতে পাচ্ছি, ওই গতানুগতিক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে, মিটিং চলছে, প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখছে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে এই ঘটনার তদন্ত এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। অন্যথায় আগামীতে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, সেটা আমরা বলতে পারি না।

‘সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হবে? একটা দলের প্রধানকে যদি এইভাবে আক্রমণ করে তার নেতা-কর্মীসহ? আমাদের যে শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি, তাকেও আক্রমণ করেছে গাজীপুরে। তাহলে কি এই সমঝোতার নির্বাচনে যাদের সিগন্যাল দেবে, তারা নির্বিঘ্নে আওয়ামী লীগের নির্বাচনের মতো প্রচার-প্রচারণা চালাবে, মিছিল-মিটিং করবে। যাদের সিগন্যাল দেবে না, তাদের এইভাবে হামলা করে আক্রান্ত করে মাঠ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে?’

তিনি বলেন, ‘প্রায় ৩৫ দিন হয়ে গেছে একটা বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন করেছে। তাদের কর্মকাণ্ডে আমরা গাফিলতি দেখতে পাচ্ছি। আমরা বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুরু করে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, একটি বিতর্কিত নির্বাচন করায় সাবেক নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদার গলায় কিন্তু জুতার মালা পরানো হয়েছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি, বায়তুল মোকাররমের ইমাম পালিয়ে গেছে দেশ থেকে। সুতরাং, এই ২৯ আগস্টের ঘটনার বিচার না হলে অনেকেই, আমরা যদি বেঁচে থাকি, রাস্তায় অপমানিত হবেন, অপদস্থ হবেন এবং ভবিষ্যতে তাদের গলায়ও গামছা আমরা পরাব।’

গণঅধিকার পরিষদ সরকারকে সহযোগিতা করছে উল্লেখ করে দলের সভাপতি বলেন, ‘আমরা এই সরকার দ্বারা কোনো বেনিফিটেড হই নাই। আমরা সরকারের ভাগ-বাঁটোয়ারার অংশীদার হই নাই। সরকার ভাগ-বাঁটোয়ারা সমঝোতা করে এই পর্যন্ত একটা পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করেছে, সেটা কিন্তু দেখা গেছে। এখন কিন্তু দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা হচ্ছে নির্বাচন নিয়ে। কাজেই এখন যদি একটা সুষ্ঠু নির্বাচন, বহুল আকাঙ্ক্ষিত নির্বাচন যদি না হয়, তাহলে কিন্তু দেশ আবার একটা সংকটে পড়বে।’

নুরের ব্যক্তিগত চিকিৎসক সাজ্জাদ হোসেন রাসেল জানান, নুর এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন এবং সুস্থ হতে আরও ছয় মাস সময় লাগবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত