Ajker Patrika

৫০ শতাংশকে বাইরে রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, হাসিনার সময়েও তা-ই হয়েছে: জি এম কাদের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ২০
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের নামে প্রহসন হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার সময় ছিল দলের সঙ্গে দলের লোকের প্রতিযোগিতা। এখন সরকারি এবং আধা সরকারি দলের মধ্যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে।’ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) সরকারি দল এবং বিএনপিকে আধা সরকারি দল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন জাপা চেয়ারম্যান।

আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে জাতীয় মহিলা পার্টির মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন জি এম কাদের।

এনসিপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘একটি দলের দুজন সদস্য সরকারে রয়েছে, তারা প্রটোকল পাচ্ছে। জামায়াতসহ তারা মোটামুটি সরকারের সব সুবিধা ভোগ করছে। তারা যা করতে চাইছে, সব করতে পারছে।’

বিএনপিকে আধা সরকারি দল আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আর বিএনপি আধা সরকারি দল। সরকারি দলে বেশি দিন ক্ষমতায় থাকতে ইচ্ছুক, আধা সরকারি দল চাচ্ছে দ্রুত নির্বাচন। সেখান থেকেই ৫, ১০, ৫০ বছর ক্ষমতায় থাকার বিষয়টি এসেছে।’

জি এম কাদের বলেন, ‘এখনো ৫০ শতাংশের বেশি লোককে বাইরে রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। শেখ হাসিনার সময়েও তা-ই হয়েছে, এখনো তা-ই চলছে। শেখ হাসিনা ৫০ শতাংশকে বাইরে রাখার পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিলেন, এখন প্রশাসনিক আদেশে করা হচ্ছে।’

জি এম কাদের আরও বলেন, ‘দেশের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে চাচ্ছেন, তাঁরা পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ সব জায়গা দখল করতে চাইছে। সংবিধান ও শাসন পদ্ধতি তাঁদের নিজেদের মতো করে গড়তে চাচ্ছেন। নিজস্ব ধ্যানধারণা প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে, জনগণ তাঁদের সেই ম্যান্ডেট দেয়নি। চাপানো সংস্কার কেউ মানবে না। ক্ষমতার লোভ ভালো না, অতীতে আমরা দেখেছি ক্ষমতার লোভের পরিণতি। আমরা একই ভুল, একই গর্তের পড়তে চাচ্ছি।’

অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ নয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেখানে সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হওয়া উচিত, জনগণ ঠিক করবে কোন দলকে গ্রহণ করবে, সরকারি ও আধা সরকারি দলের মধ্যে নির্বাচন হলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। বিনিয়োগ আসবে না, দেশ একটা বিপর্যয়ের দিকে যেতে পারে। তেমন একতরফা নির্বাচনে যাব কি যাব না, সেটা ভেবে দেখতে হবে। আগামী নির্বাচনে যথেষ্ট অর্থ ও শক্তি ব্যবহার করা হবে, শেখ হাসিনা যেভাবে করেছিলেন।’

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকার মনে করছে, জি এম কাদেরবিহীন জাতীয় পার্টি হলে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, তেমন নেতাদের দিয়ে পার্টি করতে চাইছে। জাতীয় পার্টির কোনো দিন দোসরগিরি করেনি, যারা দালালি করেছে তারা চলে গেছে। চাপিয়ে দেওয়া রাজনীতি জাতীয় পার্টি গ্রহণ করবে না। সব ধরনের মামলা দেওয়া হয়েছে। মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখা যাবে না।’

জাতীয় মহিলা পার্টির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘একটি দলের নেতা বলছে, তারা নির্বাচিত হলে মেয়েরা মেয়েদের সামনে নাচবে, এটা কি দেশের লোক গ্রহণ করবে, হয়তো শাস্তির দিকে গেলে মানতে বাধ্য হবে। মহিলাদের চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাবে। যে কারণে এখন থেকেই সচেতন হতে হবে।’

জি এম কাদের বলেন, ‘প্রজন্ম একাত্তর একটি সভা আয়োজন করেছিল। সেখানে যারা হইহই করেছে, তাদের কিছু বলা হলো না। এর মাধ্যমে মেসেজ দেওয়া হলো, একাত্তর নিয়ে কথা বলবেন না, যাদেরকে হত্যা করেছে, সম্ভ্রম লুট করা হয়েছে—তারা কি মেনে নেবে। যারা স্বাধীনতাযুদ্ধের বিপক্ষে কাজ করেছে, তাদের কাছে ছবক নিতে হবে!’

জাতীয় মহিলা পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক হেনা খান পন্নীর সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী, কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজি সাইফুদ্দীন আহমেদ মিলন, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর শিকদার লোটন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত