Ajker Patrika

জাপার নতুন মহাসচিব কে

রেজা করিম, ঢাকা
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২১, ১১: ৩২
জাপার নতুন মহাসচিব কে

জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব প্রয়াত জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু গুরুতর অসুস্থ থাকার সময় থেকে গুঞ্জনটা শুরু হয়েছিল। তাঁর মৃত্যুর পরপরই তা আরও বেড়েছে। তবে দলীয়ভাবে এর উত্তর মেলেনি যে জাপার নতুন মহাসচিব কে হচ্ছেন? এই দৌড়ে অনেকের নাম শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত চেয়ারম্যানের পছন্দের লোকই মনোনয়ন পাবেন, তা নিশ্চিত। 
তবে এ নিয়ে জাপার চেয়ারম্যানের ওপর চাপ আছে। দলের অনেক নেতাই এ বিষয়ে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে বলছেন।

না হলে এ কারণে আবার দলে ভাঙনের সৃষ্টি হতে পারে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২ অক্টোবর রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জাপা মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। খালি পদটির দায়িত্ব নিতে এরই মধ্যে জাপার অনেক সিনিয়র নেতা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি এই পদের বিপরীতে তরুণ এক নেতারও নাম শোনা যাচ্ছে জোরেশোরে। তাঁদের মধ্যে আছেন দলের সাবেক দুই মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মসিউর রহমান রাঙ্গা। এরশাদের আমলে দুই নেতাই এ দায়িত্ব পালন করেছেন। মসিউর রহমান রাঙ্গা এরশাদ পরিবারের সদস্য।

বাবলু মহাসচিব হওয়ার আগে এই পদের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের চিফ হুইপের দায়িত্ব পালন করছেন রাঙ্গা। সিনিয়র নেতাদের মধ্যে দলের কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদসহ আরও অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে। অভিজ্ঞ এবং সিনিয়র নেতাদের পাশে জায়গা পেয়েছেন দলটির অতিরিক্ত মহাসচিব (রংপুর বিভাগ) ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। বয়সে তরুণ এই নেতা এরই মধ্যে দলের সব স্তরে আলাদা একটা জায়গা করে নিয়েছেন। জাতীয় সংসদেও বিরোধী দলের সংসদ সদস্য হিসেবেও ভালো ভূমিকা রাখছেন। জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের মহাসচিব নিয়োগের একক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে চেয়ারম্যানকে।

জাপার ভাইস চেয়ারম্যান শাফিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই বিষয়ে চেয়ারম্যান সিদ্ধান্ত নেবেন। তাঁর সিদ্ধান্তের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। পার্টিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে উজ্জীবিত করতে পারেন, এমন কেউ হলে পার্টির জন্য ভালো হবে।’ দলটির বেশ কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতা আজকের পত্রিকাকে জানান, মহাসচিব হওয়ার দৌড়ে থাকা নেতাদের মধ্যে অভিজ্ঞতার দিক থেকে এগিয়ে আছেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও মসিউর রহমান রাঙ্গা। তাঁরা দুজনই আগে এই দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে হাওলাদারের বিষয়ে চেয়ারম্যানের বিরূপ মনোভাব এখনো আছে। তাঁকে অন্তত তিনি এই পদে বসাবেন না, সেটা অনেকটাই পরিষ্কার।

অন্যদিকে কৌশলগত কারণে নিজের ভাগনে রাঙ্গাকে সরিয়ে বাবলুকে মহাসচিবের দায়িত্বে বসিয়েছিলেন কাদের। তাঁকেও এই পদে ফেরানোর সম্ভাবনা আপাতত নেই। বাকি দুজনের মধ্যে একজন ফিরোজ রশীদ আরেকজন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। এই দুজনের মধ্যে অভিজ্ঞতা ও বয়সের দিক থেকে ফিরোজ রশীদ এগিয়ে থাকলেও পার্টিতে তরুণ এবং প্রতিশ্রুতিশীল নেতা হিসেবে আলাদা একটা জায়গা করে নিয়েছেন শামীম।

তবে জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলছেন, এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এটা নিয়ে তাড়াহুড়া করারও কিছু নেই। সময়মতো গুরুত্বপূর্ণ এই পদে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। এদিকে শামীম হায়দার পাটোয়ারীই মহাসচিব হচ্ছেন, বিষয়টি আঁচ করতে পেরে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত আসার আগেই বিরোধিতা করছে দলের একটি পক্ষ। গত সোমবার বিকেলে ধানমন্ডির কলাবাগানে ফিরোজ রশীদের বাসায় তাঁরা এই বিষয়ে আলোচনা করেন। সেখানে ফিরোজ রশীদ, মসিউর রহমান রাঙ্গা, রুহুল আমিন হাওলাদারসহ বেশ কয়েকজন নেতা বৈঠক করেন।

এ প্রসঙ্গে মসিউর রহমান রাঙ্গা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে মহাসচিব নিয়োগ দেওয়া যাবে না। এটা সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত নিলে দল ভাঙনের মুখে পড়বে।’ শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত মহাসচিব নিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। চেয়ারম্যান যা সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই হবে। আর পার্টি আমাকে দায়িত্ব দিলে তা আমি মেনে নেব, নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করব।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...