Ajker Patrika

নির্বাচনের জন্য দ্রুতই আলোচনা করবেন প্রধান উপদেষ্টা, আশা ফখরুলের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নির্বাচনের জন্য দ্রুতই আলোচনা করবেন প্রধান উপদেষ্টা, আশা ফখরুলের

নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা কাজী জাফর আহমদের নবম মৃত্যুবার্ষিকীতে এই আলোচনা সভা হয়।

‘কবে নির্বাচন হবে এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত’-প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই বক্তব্য উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উনি সঠিক বলেছেন। অবশ্যই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হবে। এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য রাজনৈতিক নেতা, রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। আমি আশা করব, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা সেই প্রক্রিয়াটির দিকে যাবেন, খুব দ্রুত যাবেন এবং তিনি রাজনৈতিকগুলোর সঙ্গে কথা বলবেন।’

তিনি বলেন, ‘একটা জিনিস এখনো ধোঁয়াশা যে অবস্থাটা সেটা পরিষ্কার হয়নি। আমরা আশা করেছিলাম যে, প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় তিনি একটা রোডম্যাপ দেবেন। সেই রোডম্যাপ আমরা কিন্তু ওনার বক্তব্যের মধ্যে পাইনি। সংস্কারের কথা বলেছেন, সেই সংস্কারগুলো কোন কোন বিষয়ে, সেটারও কিছু কিছু তিনি আভাস দিয়েছেন। আমি জানি, সেগুলো এই অল্প সময়ের মধ্যে সম্ভব না। তবে সেটা সম্পর্কে একটা ধারণা থাকলে আরও বেশি করে ধারণা করতে পারতাম ঘটনা আসলে ভালোর দিকে যাচ্ছে। যাই হোক আমাদের প্রত্যাশা যেন ভালোর দিকে যায়, এটা জনগণের প্রত্যাশা।’

যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই নির্বাচন দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের এখন অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পা বাড়াতে হবে। এই সরকার এসেছে, এই সরকার অবশ্যই কাজ করার জন্য এসেছে। সেই কাজ করার সুযোগ তাঁদের দিতে হবে। এই কথা আমরা বারবার বলছি, যৌক্তিক সময় অবশ্যই তাঁদের দিতে চাই। নির্বাচন ছাড়াতো সম্ভব নয়, নির্বাচন হতেই হবে। নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু অবাধ হয়, সবাই যেন ভোট দিতে পারে এবং এই নির্বাচনের ফলে এমন একটা অবস্থা তৈরি না হয় যে আবার সেই আগের অবস্থা ফিরে আসে তাহলে সেটা কখনই জনগণ মেনে নেবে না। সে জন্য আমরা অপেক্ষা করছি, জনগণ অপেক্ষা করছে। কিন্তু সেটা অবশ্যই একটা যৌক্তিক সময় পর্যন্ত হতে হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, পুলিশ স্টেট যাতে কেউ না বানাতে পারে সেই অবস্থা তৈরি করবেন। অত্যন্ত ভালো কথা। আমরা এটাই চাচ্ছি সব সময়, আমরা পুলিশ স্টেটে পরিণত হতে চাই না। পুলিশ আমাদের নিয়ন্ত্রণ করবে, পুলিশ প্রতি মুহূর্তে আমাদের বলে দেবে যে এটা করা যাবে, এটা করা যাবে না অথবা আমাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে আমাদের থেকে টাকা নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে করে আমাদের সর্বনাশ করবে, আমাদের ছেলেদের গুলি করবে, এটা আমরা আর দেখতে চাই না। এটা যদি তাঁরা করে আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা তাঁদের প্রতি থাকবে। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন, জাস্টিস টু বি এনসিউর অল এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিংস এনফোর্স ডিসঅ্যাপিয়ারেন্সেস। আমরা এটাই চাচ্ছি, বারবার করে বলছি এই বিচার করতেই হবে। একই সঙ্গে বলছি, আজকে এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে আমাদের প্রায় ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে, গায়েবি মামলা হয়েছে সেগুলোকে অবিলম্বে তুলে ফেলতে হবে।’

সচিবালয় ঘেরাওয়ের ঘটনা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘রোববার যে ঘটনা ঘটেছে, সচিবালয় ঘেরাও করে আনসার এবং কিছু লোকজন, পোশাকধারী লোক। তাঁরা গোলযোগ সৃষ্টি করে সেখানে সমস্যা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। ছাত্ররা সেটাকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। এটা কিন্তু অশনিসংকেত, এটা ভালো লক্ষণ নয়। অর্থাৎ যারা পরাজিত তাঁরা এখন আবার বিভিন্নভাবে সেই চক্রান্ত করছে এ বিজয়কে নস্যাৎ করে দেওয়ার জন্য। তাই জনগণকে আহ্বান জানাব যে, আপনারা সবাই সতর্ক থাকবেন, এই বিষয়গুলোকে কখনো কোনো প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমি দেশের বিভিন্ন সংগঠন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যারা সমস্যায় আছেন সব জায়গাতে তাঁদের কাছে অনুরোধ করব, যখন ফ্যাসিবাদ ছিল, তখন দাঁড়াবার কথা তো চিন্তাই করতে পারতেন না, কথা বলার সুযোগ পেতেন না। এখন সুযোগ এসেছে সময় দিন নতুন সরকারকে। তাঁরা এই বিষয়গুলো দেখবে। কিন্তু এভাবে ঘেরাও করে, সচিবালয় ঘেরাও করে, বাধ্য করে কোনো কিছু আদায় করা এই মুহূর্তে করবেন না। জনগণ সেটাকে ভালো চোখে দেখবে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি ছাত্র ভাইদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলতে চাই। সব সময় ছাত্ররাই সব পরিবর্তনগুলো নিয়ে এসেছে। ৫২ সাল থেকে শুরু করে ২৪ সাল পর্যন্ত এবং সেই পরিবর্তনের মূল ধারাটা সেটা তাঁরা সেট করে দিয়েছে। সে জন্য বাংলাদেশের মানুষ সব সময় ছাত্রদের আলাদা চোখে দেখে, সম্মান করে, ভালোবাসে, তাদের প্রতি আস্থা যেন সব সময় থাকে। একই সঙ্গে আমি একজন শিক্ষক হিসেবে আমাদের স্কুল কলেজ-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানাতে চাই, অযথা বল প্রয়োগ করে এমন অবস্থা তৈরি করবেন না যাতে প্রশাসন নষ্ট হয়ে যায়। আমরা দেখলাম যে, কিছু স্কুল-কলেজ বাধ্য করছে শিক্ষকদের রিজাইন করে চলে ‍যাওয়ার জন্য। এটারতো ব্যবস্থা আছেই। অভিযোগ করেন, অভিযোগ প্রমাণ হলে চলে যাবে। কিন্তু তাঁকে কাজ করতে দিতে হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এখনো প্রশাসনে সেই সমস্ত ব্যক্তিদের দেখতে পাচ্ছি যারা এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে মদদ দিয়েছে, তাদের সাহায্য করেছে এবং বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তারা জড়িত। তাঁদের চেহারা আমরা দেখতে চাই না। আবারও বলছি, দয়া করে অতি দ্রুত এদের অপসারিত করে যারা দেশপ্রেমিক, যারা কাজ করতে চায়, যাদের বঞ্চিত করা হয়েছে তাদের নিয়ে এসে সেই প্রশাসন চালানোর ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় এটার জন্য জাতি আপনাদের ক্ষমা করবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপিকে খাটো করে দেখবেন না, মাঠে নামলে রাজনৈতিক বিষয়গুলো ভিন্নভাবে আসবে: ফখরুল

­যশোর প্রতিনিধি
যশোরে সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোরে সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপিকে অবজ্ঞা করলে ফল ভালো হবে না বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপি ভেসে আসা দল নয়। বিএনপিকে খাটো করে দেখবেন না। আমরা যদি মাঠে নামি, তাহলে রাজনৈতিক বিষয়গুলো ভিন্নভাবে আসবে।’

যশোরে সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য, সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপির আয়োজনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যশোর টাউন হল ময়দানে এই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।

‘উপদেষ্টা পরিষদ পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছেন’ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাঁরা ঐকমত্যের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সাত দিন সময় দিয়েছেন। কিন্তু রাজনৈতিক দল তো হাতের খেলনার মতো নয়। সংস্কার কমিশনের সব সভায় আমরা গিয়েছি। মতামত দিয়েছি। যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। সেগুলো হয়নি, সেগুলো পরবর্তী পার্লামেন্টে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু তা না করে তারা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছেন। দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’

উপদেষ্টাদের ইঙ্গিত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন হয়েছি। চব্বিশের আন্দোলনের পর সুযোগ হয়েছে গণতন্ত্রের পথে ফেরার। দয়া করে পানি ঘোলা করবেন না। দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করবেন না।’

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট হবে, এর আগে নয়। সংস্কার কমিশনে আমরা যেসব বিষয়ে একমত হয়েছি, তার ভিত্তিতে কাজ শুরু করুন। যেগুলো হয়নি, সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত পার্লামেন্টে হবে। দ্রুত তফসিল ঘোষণা করুন। নির্বাচন দিয়ে দিন। অন্যথায় আপনারা ব্যর্থ হবেন। সে ক্ষেত্রে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’

প্রয়াত তরিকুল ইসলামকে স্মরণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিস্টের বিয়োগাত্মক বিদায় তিনি দেখে যেতে পারলেন না। তাঁর বিদায়ে জাতি একজন দেশপ্রেমিক নেতাকে হারিয়েছে। তিনি একটি ইনস্টিটিউট ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকে তিনি সংগ্রাম করেছেন, জেল খেটেছেন, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। কিন্তু জনগণকে ছেড়ে যাননি। তাঁর মতো নেতার এখন খুব প্রয়োজন।

যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক সহসম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, বিএনপির সাবেক তথ্যবিষয়ক সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার টি এস আইয়ুব, ঝিকরগাছা থানা বিএনপির সভাপতি সাবিরা নাজমুল মুন্নী, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আবুল হোসেন আজাদ, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, যশোর বারের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ইসহক, যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খান, যশোর নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, কোতোয়ালি বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন, ইমাম পরিষদের সহসভাপতি আব্দুল মান্নান প্রমুখ।

স্মরণসভায় দোয়া পরিচালনা করেন মুফতি মাওলানা আমানুল্লাহ কাসেমী। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম, ছেলে কেন্দ্রীয় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অনশনরত আমজনতার তারেকের প্রতি সংহতি জানাল বিএনপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিএনপির পক্ষ থেকে অনশনরত আমজনতার দলের তারেক রহমানের প্রতি সংহতি জানিয়েছে রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির পক্ষ থেকে অনশনরত আমজনতার দলের তারেক রহমানের প্রতি সংহতি জানিয়েছে রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির পক্ষ থেকে অনশনরত আমজনতার দলের সদস্যসচিব তারেক রহমানের প্রতি সংহতি জানিয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, তারেক রহমান যে রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন, সেই রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন অবশ্যই তিনি প্রাপ্য।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সামনে অনশনরত তারেক রহমানের প্রতি সংহতি জানাতে এসে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘তারেকের রাজনৈতিক দল “আমজনতার দল” নিবন্ধনের জন্য কমিশনে ইতিমধ্যে আবেদন করেছিল। সেই আবেদনটা গ্রাহ্য করা হয়নি। আমি দেখেছি যে আরও গুরুত্বহীন কিছু সংগঠন আমার কাছে মনে হয়েছে তারাও নিবন্ধিত হয়েছে। কিন্তু তারেকেরটা দেওয়া হলো না কেন, আমি এটা বুঝতে পারলাম না। তারেক এই দেশের স্বার্থে কথা বলেছে। আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কথা বলেছে।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘সে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছে এবং তার বৈধতার জন্য নির্বাচন কমিশনে সে আবেদন করেছে। সে তো কোনো গোপন রাজনৈতিক দল করতে চায়নি। সে আইনসম্মত রাজনৈতিক দল করতে চেয়েছে। যদি তার উদ্দেশ্য খারাপ থাকত, তাহলে গোপন রাজনৈতিক দল করে রাষ্ট্রবিরোধী অনেক কার্যকলাপ করত। কিন্তু রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ তো করেইনি বরং রাষ্ট্রের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, স্বাধীনতার স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে সে কথা বলেছে। কিন্তু তার নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে না...তাহলে আপনারা (ইসি) কাদের নিবন্ধন দেন, আমি জানি না।’

বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘কাউকে আমি ছোট করতে চাই না। কিন্তু তার যে চিন্তা এবং তার রাজনৈতিক যে সংগ্রাম এবং কর্মসূচি, সেই অনুযায়ী সে যে রাজনৈতিক দল গঠন করেছে, সেই রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন অবশ্যই সে প্রাপ্য। এই ন্যায়সংগত কারণে যে অনশন করছে...তার এই ৫০ ঘণ্টা যে অনশন করছে, এই অনশন কর্মসূচির প্রতি আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পক্ষ থেকে পূর্ণ সংহতি জ্ঞাপন করছি।’

গত মঙ্গলবার জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) তিনটি নতুন রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। তার পর থেকে নির্বাচন ভবনের মূল ফটকের সামনে আমরণ অনশনে বসেন আমজনতার দলের সদস্যসচিব তারেক। ইতিমধ্যে তারেকের অনশনে সংহতি জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি)।

তারেক অনশনে বসার পর নিবন্ধন না পাওয়া বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, মৌলিক বাংলাসহ কয়েকটি দলের পক্ষ থেকে কয়েকজন ইসির ফটকের সামনে অবস্থান নিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এনসিপির মনোনয়ন ফরমের দাম ১০ হাজার টাকা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫৪
রাজধানীর বাংলামোটরে বৃহস্পতিবার এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর বাংলামোটরে বৃহস্পতিবার এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে সারা দেশের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের জন্য আবেদন ফরম উন্মুক্ত করা হয়েছে; যা ১০ হাজার টাকায় কেনা যাবে।

রাজধানীর বাংলামোটরে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা।

তিনি বলেন, এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়, অনলাইন (nomination.ncpbd.org) ও সারা দেশে দলের বিভাগীয় সম্পাদকদের কাছ থেকে আবেদন ফরম সংগ্রহ করা যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আবেদন ফরমের সর্বনিম্ন মূল্য ১০ হাজার টাকা। কেউ চাইলে এর চেয়ে বেশি টাকা দিয়েও ফরম কিনতে পারবেন। তবে জুলাই আন্দোলনে আহত এবং দিনমজুররা ২ হাজার টাকা দিয়ে ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন। মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম এবং ১০ জন বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের মাধ্যমেও ফরম সংগ্রহ করা যাবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো দলের প্রতিনিধিকে মনোনয়ন দিতে চাই না। জনগণের প্রতিনিধিকে মনোনয়ন দিতে চাই। আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত আবেদন ফরম সংগ্রহ প্রক্রিয়া চলবে। ১৫ নভেম্বরের পর প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় নির্বাচন বাতিলের ষড়যন্ত্র চলছে: খন্দকার মোশাররফ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনকে বিলম্বিত বা বাতিল করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, দেশে কিছু ব্যক্তি নন-ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে নির্বাচন নিয়ে সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ সংকট মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে লেখা একটি বইয়ের বিশ্লেষণমূলক ‘‘রি-ইমাজিনিং বাংলাদেশ’স পলিটিক্যাল ফিউচার’’ শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করে ‘ঢাকা ফোরাম ইনিশিয়েটিভ’ নামের সংগঠন।

সভায় খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, নির্বাচনকে বিলম্বিত বা বাতিল করার ষড়যন্ত্র চলছে। দেশে কিছু ব্যক্তি নন-ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে নির্বাচন নিয়ে সংকট সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন। এ সংকট মোকাবিলায় নির্বাচন সফল করতে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, নির্বাচনের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন অনুষ্ঠানের সবচেয়ে নিরাপদ সময় হলো আগামী ফেব্রুয়ারি। এরপর রোজা চলে আসবে।

মোশাররফ হোসেন বলেন, দল ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে, তবে কেউ কেউ ষড়যন্ত্র করছে। পিআর (সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি) লাগবে, তবে এর ব্যাখ্যা যথাযথভাবে দেওয়া হচ্ছে না। পিআর হলে এমন সময়ও আসতে পারে, যখন দেশে কোনো সরকার গঠন সম্ভব হবে না।

সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যারা বর্তমানে সংস্কারের জন্য উৎসাহী হয়ে উঠেছেন, তাঁদের জানা উচিত বেগম খালেদা জিয়ার ভিশন ২০৩০-এর মাধ্যমে ২০১৬ সালে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী এতে সভাপতিত্ব করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।

এ ছাড়া ভিডিওবার্তায় বক্তব্য দেন সমাজকর্মী ও নেলসন ম্যান্ডেলার নাতনি এনডিলেকা ম্যান্ডেলা। অনুষ্ঠানে লন্ডনের নর্থামব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লিডারশিপ অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি বিভাগের অধ্যাপক আলিয়ার হোসেনের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত