Ajker Patrika

ইশতেহার নয়, মুখ্য হয়ে ওঠে কোন দল বড়: সামান্তা শারমিন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেছেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক-সামাজিক বাস্তবতায় ইশতেহার মুখ্য হয়ে ওঠে না। মুখ্য হয়ে ওঠে কত বড় দল এবং কাদেরকে ভোট দিলে ভোটটা পচে যাবে না। তবে এবার আমার ধারণা, এটা কিছুটা পরিবর্তন হবে।’

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে তরুণদের সুস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধি ও প্রত্যাশা বিষয়ক মতবিনিময়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘অধিকার এখানেই, এখনই’ প্রকল্পের আওতায় বেসরকারি সংগঠন নাগরিক উদ্যোগ এই সভার আয়োজন করে।

সামান্তা শারমিন বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে হবে। যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার নিশ্চিত করতে অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরি। সুস্থতা নিশ্চিতে দক্ষ চিকিৎসকদের সম্পৃক্ত করতে হবে। একই সঙ্গে সমাজকে সচেতন করে তোলার মাধ্যমে সমতার ভিত্তিতে সবাইকে এই আলোচনায় যুক্ত করতে হবে।

নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প সমন্বয়কারী জয়িতা হোসেন। তিনি জানান, অধিকার এখনই, এখানেই (রাইট হিয়ার, রাইট নাউ) একটি বৈশ্বিক আন্দোলন, যা তরুণদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে। এটি তরুণদের নেতৃত্বে পরিচালিত একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম যেখানে যৌন ও প্রজনন অধিকার বিষয়ে তরুণদের অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব বিকাশ, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অধিকার সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

মতবিনিময় সভার মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ২০২২ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত সর্বশেষ আদমশুমারি অনুসারে, দেশের মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ ১৫–২৯ বছর বয়সী। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ দশমিক ৯ কোটি এবং এর মধ্যে তরুণ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ৪ দশমিক ৮ কোটি। এই বৃহৎ জনগোষ্ঠী সমাজের অন্যতম শক্তিশালী অংশ হলেও তাঁদের মধ্যে যৌন ও প্রজনন অধিকার-সংক্রান্ত সচেতনতা নন এবং সংরক্ষণে তাঁদের অংশগ্রহণও পর্যাপ্ত নয়। অজ্ঞতা ও ভুল ধারণা থেকে তরুণেরা প্রজনন স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত বিষয়ে অবহেলা করে, যা পরিণতিতে যৌনবাহিত রোগের প্রকোপ, অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ, বাল্যবিবাহ এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার কারণ হয়।

সভায় আলোচনায় অংশ নিয়ে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারপারসন মজিবুর রহমান ভূঁইয়া (মঞ্জু) প্রশ্ন তোলেন, ‘আমার প্রশ্ন, রাজনৈতিক দলের ইশতেহার মানুষ বিশ্বাস করে কি না। নারীদের কাজের জন্য রাজনৈতিক দলে পর্যাপ্ত সুযোগ তৈরি করতে হবে। যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে। পরিবারে বাবা-মা ও সন্তানদের বন্ধুত্বসুলভ আলাপ-আলোচনা করতে হবে। পাশাপাশি, রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় উভয়েরই ভূমিকা রয়েছে।’

আলোচনায় আরও অংশ নেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন নেত্রী জাকিয়া শিশির, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী ড. সাইমুম পারভেজ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ট্রান্সজেন্ডার অধিকারকর্মী জয়া শিকদারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রতিনিধিরা।

সভায় আসন্ন সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে তরুণদের সুস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধি ও প্রত্যাশা বিষয়ক বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্তির দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে, সিডওর (নারীর প্রতি বৈষম্য বিলোপের সনদ) দুটি ধারায় সংরক্ষণ-অপসারণের মাধ্যমে সব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সম-অধিকার নিশ্চিত করা, জাতীয় বাজেটে তরুণদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার খাতে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি ও প্রতি জেলায় সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সংস্থাতে প্রশিক্ষিত কৈশোরবান্ধব সেবাকারী নিয়োগের মাধ্যমে গুণগতমান উন্নয়ন, লিঙ্গভিত্তিক ও পারিবারিক সহিংসতা, বাল্যবিবাহ এবং সাইবার অপরাধসহ সকল রকম হয়রানি; যা কিশোর-কিশোরী ও তরুণ সমাজের বিকাশে বাধা প্রদান করে, সেসব কর্মকাণ্ড বন্ধে আরও কার্যকারী ভূমিকা রাখা, আইনিভাবে হিজড়াসহ সব লিঙ্গ বৈচিত্র্যের ব্যক্তির মৌলিক অধিকার রক্ষা ও সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা ইত্যাদি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শুরু থেকে শেষ: হংকংয়ের মাটিতে বাংলাদেশের ড্র

ভারতে দলিত পুলিশ কর্মকর্তার আত্মহত্যায় তোলপাড়, সুইসাইড নোটে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ

বাংলাদেশ-হংকং ফুটবল ম্যাচ টিভিতে দেখাবে না, তাহলে দেখার উপায়

সখীপুরে শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ

ভারতে আত্মহত্যা করা পুলিশকে ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে তদন্ত কর্মকর্তারও আত্মহত্যা, রেখে গেলেন তিন পাতার ‘সুইসাইড নোট’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ