Ajker Patrika

কথায় কথায় রাস্তায় গেলে সংঘর্ষ হবে: আমীর খসরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

দেশের মানুষ সাংঘর্ষিক রাজনীতি দেখতে চায় না মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘প্রতিবাদের অধিকার সবার আছে, তবে অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে।’ আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘প্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা’ নিয়ে ট্রেস কনসালট্যান্সি নামের একটি প্রতিষ্ঠান আয়োজিত সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, ‘কথায় কথায় আপনি রাস্তায় যাবেন। এখন অন্য দল যদি তার প্রতিবাদে আবার রাস্তায় যায়, তাহলে কী হবে, সংঘর্ষ হবে না? বৃহত্তর দল বাংলাদেশে যদি রাস্তায় নামে এগুলোর প্রতিবাদে, সংঘর্ষ হবে। এ জন্য কি আমরা শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছি?’

আমীর খসরু আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে বিশ্বাস করতে হবে যে, যতটুকু ঐকমত্য হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে আবার নতুন ইস্যু সৃষ্টি করলে কিন্তু ঐকমত্যের শ্রদ্ধা দেখানো হচ্ছে না। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও ঐকমত্য হতে হবে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনার গত ১৭ বছরের শাসনে আমাদের মধ্যে একটা স্বৈরাচারী মনোভাব চলে আসছে। আমরা মনে করি যে আমার দফা, আমার দাবি, আমার চিন্তা না থাকলে এটাকে গ্রহণ করা যাবে না।’

গণভোট প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, ‘এই সরকার সংবিধানের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত হয়েছে। সেই সংবিধানে গণভোটের কিছু নেই। যদি গণভোট করতে হয়, তাহলে বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান অনুসারে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে এসে সংসদে পাস করার পরে সেই বিষয়গুলো গণভোটে যেতে পারে।’

সংলাপে বিএনপির সমালোচনা করে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিবকে আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু ওনারা বলেছেন, জামায়াতের আহ্বানে তাঁরা সাড়া দেবেন না। বিগত রেজিম কিন্তু এ ধরনের সুর সব সময় বাজাত যে ওমুকের সঙ্গে বসবে না। এই কালচার থেকে কি বের হতে পারি না? বিএনপি যদি আহ্বান করে, জামায়াত যাবে এবং অন্যদেরও আহ্বান জানাবে।’

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে হামিদুর রহমান বলেন, ‘অঙ্গীকার যুক্ত করে চার্টার হয়েছে। এর দুটি পার্ট। দ্বিতীয়টা হচ্ছে বাস্তবায়ন, যা স্বাক্ষরের সঙ্গে যুক্ত না। আমাদের সিদ্ধান্তে তা-ই ছিল। বাস্তবায়ন বিষয়টা আলাদা বিষয়। এর ওপর স্বাক্ষর হয়নি। এরপরই বিরোধ তৈরি হয়।’

গণভোট আগে চাওয়ার যুক্তি দেখিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য হামিদুর রহমান বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে মানুষের মনোযোগ থাকে দল ও প্রার্থীর ওপর। নির্বাচনের কেন্দ্র দখল, ভোটকেন্দ্র স্থগিত হওয়া, আবার দুই ভোট একসঙ্গে হলে অনেক সময় লাগবে। এতে সব ভোটার হয়তো ভোটও দিতে পারবে না।’

সংলাপে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জুলাই সনদ নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে উল্লেখ করে বলেন, ‘এ ধরনের বিতর্ক পৃথিবীর অনেক জায়গায় ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে চলে। দ্বিমত থাকবে, তারপর ঐকমত্য হবে। দলগুলো সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে সরকার তার ওপরে অর্পিত দায়িত্ব অনুসারে একটা সিদ্ধান্ত দেবে।’

তিনি বলেন, ‘আলোচনা এখন হয়েছে, আবার নির্বাচনের পরও হতে পারে। বাংলাদেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, সুশাসন চায় এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ চায়।’

নির্বাচন ঠিক সময়ে, একদম ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে হবে জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘পুরো দেশে নির্বাচনী জোয়ার এসেছে, জনগণ একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার পাবে।’

বাংলাদেশ সেন্টার ফর ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্সের নির্বাহী পরিচালক শাহাব এনাম খানের সঞ্চালনায় সংলাপে অন্যদের মধ্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েমসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন। সংলাপে সভাপতিত্ব করেন ট্রেস কনসালট্যান্সির প্রধান নির্বাহী ফুয়াদ এম খালিদ হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ