সম্পাদকীয়
ট্রেনের নাম ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন। ট্রেনের নাম ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন। বেশ! বেশ! আমাদের ট্রেনগুলো বেশ জাতে উঠছে। নামগুলো ইংরেজি হওয়ায় তাদের আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত হওয়ার সুযোগ ঘটছে বোধ হয়! দেশীয় নামের ঘেরাটোপে তা আর বাঁধা পড়তে চাইছে না।
কোনো সন্দেহ নেই, আমের মৌসুমে কিংবা ঈদুল আজহায় কোরবানির পশু আনার সময়টুকুই এই বিশেষ ট্রেনের স্থায়িত্ব। কিন্তু এই স্বল্পকালীন অস্তিত্বে কেন তাদের গায়ে লাগছে ইংরেজির ছোঁয়া, সেটা কি বোঝা যাচ্ছে? এ রকম বিশেষ ট্রেনের নাম দেওয়ার কাজটি যাঁরা করেন, তাঁরা কি বাংলার চেয়ে ইংরেজিতেই স্বচ্ছন্দ!
অথচ একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, আমাদের দেশে বিভিন্ন পথে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর কী অসাধারণ সব বাংলা নাম। সুবর্ণ, পাহাড়িকা, মহানগর গোধূলি, উদয়ন, তূর্ণা, ধূমকেতু, পদ্মা, বনলতা, উপকূল–নামগুলো দেখেছেন? যাঁরা এ ধরনের নাম দিয়েছিলেন, তাঁরা কি ইংরেজি জানতেন না বলেই বাংলার ওপর নির্ভর করেছিলেন, নাকি নিজ ভাষার প্রতি মমত্ব ছিল বলেই এ রকম নাম দিয়েছিলেন?
আমরা সবাই জানি, সরকারি কাজকর্ম বাংলায় করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। তিনি সরকারি ফাইলপত্র বাংলায় না পেলে সই করবেন না বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমিতে বক্তৃতা দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন: ‘মুক্ত পরিবেশেই ভাষার বিকাশ হয়। ঘরে বসে ভাষার পরিবর্তন-পরিবর্ধন করা যায় না। এর পরিবর্তন-পরিবর্ধন হয় ব্যবহারের ভেতর দিয়ে।’ প্রশ্ন হলো, আমরা কি বাংলা ভাষা ব্যবহারের ভেতর দিয়ে এই ভাষার পরিবর্তন-পরিবর্ধন করছি? নাকি তা পরিশ্রমসাপেক্ষ বলে সহজেই ইংরেজির দ্বারস্থ হচ্ছি? নাকি ম্যাঙ্গো বললে আম আর ক্যাটল বললে গরু-ছাগল-ভেড়ার মর্যাদা খানিক বেড়ে যায়?
হতে পারে, খুব ভেবেচিন্তে ট্রেনের নাম ম্যাঙ্গো-ক্যাটল রাখা হয়তো হয়নি। হতে পারে, খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে ভাবারই সময় পাওয়া যায়নি। কিন্তু এটা তো ঠিক, নামগুলো যে বাংলা নাম নয়, সেটা তাঁরা তখন থেকেই জানতেন। আর তখনই কেন ম্যাঙ্গো-ক্যাটলের জায়গায় রুচিশীল কোনো বাংলা নামের কথা তাঁরা ভাবলেন না?
ব্যাপারটা হয়তো তুচ্ছ। কী হয় আমকে ম্যাঙ্গো ডাকলে? কিংবা গরু-ছাগল-ভেড়াকে ক্যাটল ডাকলে? কিছুই হয়তো হয় না। কিন্তু এই ফাঁকেই জানিয়ে রাখি, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে যখন দেশ গড়ার কাজে লেগেছিল এই ভূখণ্ডের মানুষ, তখন রেডিও পাকিস্তান পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ বেতার’ করা হয়েছিল। তারপর তা ‘রেডিও বাংলাদেশ’-এ কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছিল–সে ইতিহাসও সবার জানা।
নিজ ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি একনিষ্ঠ থেকেই অন্য সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে নিতে হয়। পাকা ভিতের ওপরই গড়ে ওঠে ইমারত। ভিত যদি পোক্ত না হয়, তাহলে যেকোনো সময়ই আম আর গরু, ম্যাঙ্গো আর ক্যাটলে পরিণত হতে পারে।
ট্রেনের নাম ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন। ট্রেনের নাম ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন। বেশ! বেশ! আমাদের ট্রেনগুলো বেশ জাতে উঠছে। নামগুলো ইংরেজি হওয়ায় তাদের আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত হওয়ার সুযোগ ঘটছে বোধ হয়! দেশীয় নামের ঘেরাটোপে তা আর বাঁধা পড়তে চাইছে না।
কোনো সন্দেহ নেই, আমের মৌসুমে কিংবা ঈদুল আজহায় কোরবানির পশু আনার সময়টুকুই এই বিশেষ ট্রেনের স্থায়িত্ব। কিন্তু এই স্বল্পকালীন অস্তিত্বে কেন তাদের গায়ে লাগছে ইংরেজির ছোঁয়া, সেটা কি বোঝা যাচ্ছে? এ রকম বিশেষ ট্রেনের নাম দেওয়ার কাজটি যাঁরা করেন, তাঁরা কি বাংলার চেয়ে ইংরেজিতেই স্বচ্ছন্দ!
অথচ একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, আমাদের দেশে বিভিন্ন পথে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর কী অসাধারণ সব বাংলা নাম। সুবর্ণ, পাহাড়িকা, মহানগর গোধূলি, উদয়ন, তূর্ণা, ধূমকেতু, পদ্মা, বনলতা, উপকূল–নামগুলো দেখেছেন? যাঁরা এ ধরনের নাম দিয়েছিলেন, তাঁরা কি ইংরেজি জানতেন না বলেই বাংলার ওপর নির্ভর করেছিলেন, নাকি নিজ ভাষার প্রতি মমত্ব ছিল বলেই এ রকম নাম দিয়েছিলেন?
আমরা সবাই জানি, সরকারি কাজকর্ম বাংলায় করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। তিনি সরকারি ফাইলপত্র বাংলায় না পেলে সই করবেন না বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমিতে বক্তৃতা দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন: ‘মুক্ত পরিবেশেই ভাষার বিকাশ হয়। ঘরে বসে ভাষার পরিবর্তন-পরিবর্ধন করা যায় না। এর পরিবর্তন-পরিবর্ধন হয় ব্যবহারের ভেতর দিয়ে।’ প্রশ্ন হলো, আমরা কি বাংলা ভাষা ব্যবহারের ভেতর দিয়ে এই ভাষার পরিবর্তন-পরিবর্ধন করছি? নাকি তা পরিশ্রমসাপেক্ষ বলে সহজেই ইংরেজির দ্বারস্থ হচ্ছি? নাকি ম্যাঙ্গো বললে আম আর ক্যাটল বললে গরু-ছাগল-ভেড়ার মর্যাদা খানিক বেড়ে যায়?
হতে পারে, খুব ভেবেচিন্তে ট্রেনের নাম ম্যাঙ্গো-ক্যাটল রাখা হয়তো হয়নি। হতে পারে, খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে ভাবারই সময় পাওয়া যায়নি। কিন্তু এটা তো ঠিক, নামগুলো যে বাংলা নাম নয়, সেটা তাঁরা তখন থেকেই জানতেন। আর তখনই কেন ম্যাঙ্গো-ক্যাটলের জায়গায় রুচিশীল কোনো বাংলা নামের কথা তাঁরা ভাবলেন না?
ব্যাপারটা হয়তো তুচ্ছ। কী হয় আমকে ম্যাঙ্গো ডাকলে? কিংবা গরু-ছাগল-ভেড়াকে ক্যাটল ডাকলে? কিছুই হয়তো হয় না। কিন্তু এই ফাঁকেই জানিয়ে রাখি, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে যখন দেশ গড়ার কাজে লেগেছিল এই ভূখণ্ডের মানুষ, তখন রেডিও পাকিস্তান পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ বেতার’ করা হয়েছিল। তারপর তা ‘রেডিও বাংলাদেশ’-এ কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছিল–সে ইতিহাসও সবার জানা।
নিজ ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি একনিষ্ঠ থেকেই অন্য সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে নিতে হয়। পাকা ভিতের ওপরই গড়ে ওঠে ইমারত। ভিত যদি পোক্ত না হয়, তাহলে যেকোনো সময়ই আম আর গরু, ম্যাঙ্গো আর ক্যাটলে পরিণত হতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে পড়াশোনা করা মোজাম্মেল হোসেন, ঘনিষ্ঠ মহলে যিনি মঞ্জু নামেই বেশি পরিচিত, ছাত্রাবস্থায় ১৯৬৯ সালে সাপ্তাহিক ‘যুগবাণী’ ও ১৯৭০ সালে সাপ্তাহিক ‘একতা’য় প্রতিবেদক হিসেবে পেশাজীবন শুরু করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘মুক্তিযুদ্ধ’ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক ছিলেন।
৭ ঘণ্টা আগেসোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ। নতুন প্রজন্ম বেড়ে উঠছে ইউটিউব, ফেসবুক, টুইটার (বর্তমানে এক্স), ইনস্টাগ্রাম, মোবাইল অ্যাপ, ডিজিটাল কনটেন্টের প্রভাবিত জগতে। শুধু নতুন প্রজন্মই নয়, এটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সব বয়সীর মধ্যে।
৭ ঘণ্টা আগেঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ৩৭ নম্বর মধ্য গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে আজকের পত্রিকায় ছাপা হওয়া এক প্রতিবেদনে। একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজনমাত্র শিক্ষক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে বসেছেন পড়াতে।
৭ ঘণ্টা আগেআশা-নিরাশা নিয়ে যুগে যুগে জ্ঞানী-গুণী, মহাজনদের মুখনিঃসৃত বাণী আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে বিষম-বিভ্রমের মধ্যে ফেলে রেখেছে। কারণ, তাঁদের কেউ বলেছেন ‘ধন্য আশা কুহকিনি/তোমার মায়ায়, অসার সংসারচক্র ঘোরে নিরবধি, দাঁড়াইত স্থিরভাবে, চলিত না হায়; মন্ত্রবলে তুমি চক্র না ঘুরাতে যদি...’।
১ দিন আগে