Ajker Patrika

আদালতের সঠিক সিদ্ধান্ত

সম্পাদকীয়
আদালতের সঠিক সিদ্ধান্ত

সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ফলে নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী ২৮ জুলাই উপনির্বাচনটি হয়নি। আদালত এ বিষয়ে বলেছেন, যেহেতু সরকারি সার্কুলারে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিধিনিষেধ আছে, সেহেতু আপাতত ৫ আগস্ট পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। আদালত খোলার পর সময় ঠিক করে নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

করোনায় যখন প্রতিদিন সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, তখন একটি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠান প্রত্যাশিত ছিল না। সিলেট অঞ্চলেও করোনা বাড়ছে। এমনকি রিটার্নিং কর্মকর্তাও করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৫ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন। এই অবস্থায় ভোটারদের জীবনের ঝুঁকি না বাড়িয়ে উপনির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্ট জনস্বার্থ ও জনস্বাস্থ্যের দিক বিবেচনায় নিয়ে একটি সঠিক সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনও হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ না হয়ে সুবুদ্ধির পরিচয় দিয়েছে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার দোয়াই না দিয়ে মানুষের জীবনের মূল্য যে সবচেয়ে বেশি–সেটা বুঝে ভেবেচিন্তে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করলে ভালো হতো। ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে, সংবিধান, আইন এসব তো মানুষের জন্যই। মানুষের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না।

১১ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুর কারণে নির্বাচন কমিশন আসনটি শূন্য ঘোষণা করে। ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতার কারণে ৮ জুন ইসি দিন নির্ধারণ করে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সমর্থ হয়নি। এরপর ‘দৈবদুর্বিপাকের কারণে’ নির্বাচন কমিশন আরও ৯০ দিন সময় পায়। সে হিসাবে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হাতে সময় থাকা সত্ত্বেও করোনার প্রকট বৃদ্ধির কথা জেনেও নির্বাচন কমিশন কেন তাড়াহুড়ো করে ২৮ জুলাই নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেছে–সে প্রশ্নের কোনো সদুত্তর আছে কি?

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য যখন সরকার মানুষের স্বাভাবিক চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করছে, তখন দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ৩ লাখ ৫২ হাজার ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত করার সিদ্ধান্তটি সুবিবেচনাপ্রসূত ছিল না। এতে সংক্রমণ বিস্তারের পথ সুগমই হতো শুধু।

বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিজেদের কাজকর্মের জন্য এর মধ্যেই মানুষের আস্থা হারিয়েছে। দেশের নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা ব্যাপক। নিয়মরক্ষার নামে আসলে এত অনিয়ম করা হয়েছে এবং এমন একটি অন্ধকার সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছে, যেখান থেকে বেরিয়ে আসা কীভাবে সম্ভব হবে–সেটাই একটি বড় প্রশ্ন। নতুন কোনো বিতর্ক তৈরি না করে, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার দিকে মনোযোগ দিলে ভালো হবে। মানুষ যাতে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারে, সে রকম পরিবেশ নিশ্চিত না করে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বুলি কপচে মানুষের মন জয় করা যাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

আদালতের বিচারকাজে বাধা দেওয়ায় আইনজীবীর দণ্ড, ক্ষমা চেয়ে পার

‘ফের ধর্ষণচেষ্টার ক্ষোভে’ বাবাকে খুন, ৯৯৯-এ কল দিয়ে আটকের অনুরোধ মেয়ের

আ. লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপির সদস্য হতে বাধা নেই: রিজভী

১৫ স্থাপনায় পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আকাশেই ধ্বংসের দাবি ভারতের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত