সম্পাদকীয়
১৭ জানুয়ারি বিকেলে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিবাদের জমানায় শিকারি সাংবাদিকতা’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বিষয় আজকের পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে।
সেমিনারে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান তাঁর বক্তব্যে ফ্যাসিবাদ, সাংবাদিকতা এবং রাষ্ট্রীয় ইতিহাস বিকৃতির মতো বিষয়গুলো আমাদের সমাজের মূল্যবোধের গভীরে কীভাবে প্রভাব ফেলছে, তা তুলে ধরেছেন। ফ্যাসিবাদের মূল কাঠামোকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি এটিকে অতীতের প্রতীক ও সাংকেতিক চিহ্নের আত্মসাৎকরণের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ‘একাত্তর’ বা ‘একুশে’র মতো জাতির গৌরবময় অধ্যায়গুলোও কখনো কখনো রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। তিনি উল্লেখ করেছেন, কেবল নামের ব্যবহার নয়, সেসব প্রতীকের নাম নিয়ে যা কিছু ঘটে—তা ভয়াবহ।
ফ্যাসিবাদের বিকাশ নিয়ে সলিমুল্লাহ খান আরও বলেন, হলোকাস্টের কথা আমরা জানি, কিন্তু দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য কিংবা লাতিন আমেরিকায় ঘটে যাওয়া গণহত্যা বা নিপীড়ন যথাযথ স্বীকৃতি পায়নি। ভারত বিভাগের সময় সরকারি হিসাবে ৫ লাখ আর বেসরকারি মতে ১২ লাখ প্রাণহানি ঘটে, তবু এটি ‘হলোকাস্ট’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়নি। ফিলিস্তিনের সমস্যা ও হত্যাযজ্ঞকেও ঠিক এই আলোচনার কেন্দ্রে আনা হয়নি। ইতিহাসের এই অসম চর্চা একটি শক্তিশালী নীতি ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কৌশলের দিকেই ইঙ্গিত করে।
সলিমুল্লাহ খানের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হলো, পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষার মধ্যে ইতিহাস বিকৃতির বিষয়। তিনি বলেছেন, আমাদের পাঠ্যপুস্তকগুলোতে ইতিহাস এমনভাবে তৈরি হয়েছে, যা ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর সুবিধার সঙ্গে মিলে যায়।
সেমিনারে স্বাভাবিকভাবেই শিকারি সাংবাদিকতার প্রসঙ্গে গণমাধ্যমের সামাজিক দায়িত্ববোধ ও নৈতিকতার বিষয়টিও এসেছে। আমাদের মিডিয়া কেবল তথ্য পরিবেশনকারী নয়, বরং জনমত গঠনে একটি শক্তিশালী অস্ত্র হয়ে উঠেছে। তবে তথ্য বিকৃতি, ব্যক্তির চরিত্র হনন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কোনো ইস্যুকে কেন্দ্র করে জনমত প্রভাবিত করা মিডিয়ার দায়িত্বশীল আচরণের সঙ্গে বেমানান।
শিকারি সাংবাদিকতা মূলত একটি গভীর রোগ, যার শিকড় আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা, রাজনীতি এবং মিডিয়ার একত্র প্রচেষ্টায় বিস্তৃত হয়েছে। এর ফলে যে ভয়াবহ সামাজিক সংকট তৈরি হচ্ছে, তা কোনোভাবেই উপেক্ষা করা যায় না। শিকারি সাংবাদিকতা শুধু সাংবাদিকতার দুর্বৃত্তায়ন নয়,
এটি রাজনীতিরও দুর্বৃত্তায়ন। যারা এই কার্যক্রমে জড়িত, তারা শুধু সমাজের ক্ষতি করছে না, বরং মানুষের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতার প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করছে।
আমাদের দেশে যে ধরনের ফ্যাসিবাদ বিদ্যমান, তা কেবল একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি গভীরভাবে রোপিত আমাদের সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক জীবনের প্রতিটি স্তরে—বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম, মিডিয়ার চরিত্র এবং এমনকি ব্যক্তিগত আচার-আচরণেও।
ফ্যাসিবাদের সমালোচনা যাঁরা এখন করছেন, তাঁদের আচরণও কতটা ফ্যাসিবাদমুক্ত, ভাববার বিষয় সেটাও। ফ্যাসিবাদ শুধু একটি রাজনৈতিক মতবাদ নয়, এটি একটি সামাজিক পদ্ধতির অংশ। এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে ঐতিহাসিক দায়, সাংবাদিকতার নীতি এবং জনসচেতনতাকে একত্রে কাজ করতে হবে।
১৭ জানুয়ারি বিকেলে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিবাদের জমানায় শিকারি সাংবাদিকতা’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বিষয় আজকের পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে।
সেমিনারে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান তাঁর বক্তব্যে ফ্যাসিবাদ, সাংবাদিকতা এবং রাষ্ট্রীয় ইতিহাস বিকৃতির মতো বিষয়গুলো আমাদের সমাজের মূল্যবোধের গভীরে কীভাবে প্রভাব ফেলছে, তা তুলে ধরেছেন। ফ্যাসিবাদের মূল কাঠামোকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি এটিকে অতীতের প্রতীক ও সাংকেতিক চিহ্নের আত্মসাৎকরণের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ‘একাত্তর’ বা ‘একুশে’র মতো জাতির গৌরবময় অধ্যায়গুলোও কখনো কখনো রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। তিনি উল্লেখ করেছেন, কেবল নামের ব্যবহার নয়, সেসব প্রতীকের নাম নিয়ে যা কিছু ঘটে—তা ভয়াবহ।
ফ্যাসিবাদের বিকাশ নিয়ে সলিমুল্লাহ খান আরও বলেন, হলোকাস্টের কথা আমরা জানি, কিন্তু দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য কিংবা লাতিন আমেরিকায় ঘটে যাওয়া গণহত্যা বা নিপীড়ন যথাযথ স্বীকৃতি পায়নি। ভারত বিভাগের সময় সরকারি হিসাবে ৫ লাখ আর বেসরকারি মতে ১২ লাখ প্রাণহানি ঘটে, তবু এটি ‘হলোকাস্ট’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়নি। ফিলিস্তিনের সমস্যা ও হত্যাযজ্ঞকেও ঠিক এই আলোচনার কেন্দ্রে আনা হয়নি। ইতিহাসের এই অসম চর্চা একটি শক্তিশালী নীতি ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কৌশলের দিকেই ইঙ্গিত করে।
সলিমুল্লাহ খানের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হলো, পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষার মধ্যে ইতিহাস বিকৃতির বিষয়। তিনি বলেছেন, আমাদের পাঠ্যপুস্তকগুলোতে ইতিহাস এমনভাবে তৈরি হয়েছে, যা ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর সুবিধার সঙ্গে মিলে যায়।
সেমিনারে স্বাভাবিকভাবেই শিকারি সাংবাদিকতার প্রসঙ্গে গণমাধ্যমের সামাজিক দায়িত্ববোধ ও নৈতিকতার বিষয়টিও এসেছে। আমাদের মিডিয়া কেবল তথ্য পরিবেশনকারী নয়, বরং জনমত গঠনে একটি শক্তিশালী অস্ত্র হয়ে উঠেছে। তবে তথ্য বিকৃতি, ব্যক্তির চরিত্র হনন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কোনো ইস্যুকে কেন্দ্র করে জনমত প্রভাবিত করা মিডিয়ার দায়িত্বশীল আচরণের সঙ্গে বেমানান।
শিকারি সাংবাদিকতা মূলত একটি গভীর রোগ, যার শিকড় আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা, রাজনীতি এবং মিডিয়ার একত্র প্রচেষ্টায় বিস্তৃত হয়েছে। এর ফলে যে ভয়াবহ সামাজিক সংকট তৈরি হচ্ছে, তা কোনোভাবেই উপেক্ষা করা যায় না। শিকারি সাংবাদিকতা শুধু সাংবাদিকতার দুর্বৃত্তায়ন নয়,
এটি রাজনীতিরও দুর্বৃত্তায়ন। যারা এই কার্যক্রমে জড়িত, তারা শুধু সমাজের ক্ষতি করছে না, বরং মানুষের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতার প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করছে।
আমাদের দেশে যে ধরনের ফ্যাসিবাদ বিদ্যমান, তা কেবল একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি গভীরভাবে রোপিত আমাদের সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক জীবনের প্রতিটি স্তরে—বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম, মিডিয়ার চরিত্র এবং এমনকি ব্যক্তিগত আচার-আচরণেও।
ফ্যাসিবাদের সমালোচনা যাঁরা এখন করছেন, তাঁদের আচরণও কতটা ফ্যাসিবাদমুক্ত, ভাববার বিষয় সেটাও। ফ্যাসিবাদ শুধু একটি রাজনৈতিক মতবাদ নয়, এটি একটি সামাজিক পদ্ধতির অংশ। এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে ঐতিহাসিক দায়, সাংবাদিকতার নীতি এবং জনসচেতনতাকে একত্রে কাজ করতে হবে।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৬ সালের ২৩ জুন। দীর্ঘ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। বর্তমানে ইমেরিটাস অধ্যাপক। মার্ক্সবাদী চিন্তাচেতনায় উদ্বুদ্ধ অধ্যাপক চৌধুরী নতুন দিগন্ত পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক।
৬ ঘণ্টা আগেরাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে শুরু হওয়া ‘জাতীয় ঐকমত্য’ প্রক্রিয়া তার শেষের দিকে এগিয়ে চলেছে, কিন্তু এখনো দেখা যাচ্ছে, প্রক্রিয়ার শুরুর জায়গাটিই ভালোভাবে গড়ে ওঠেনি। একদিকে রয়েছে ১৬৬টি প্রস্তাব, অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমতের পাহাড়।
৬ ঘণ্টা আগেলেখার শিরোনাম দেখেই যদি কেউ ভেবে থাকেন, এখানে অমূল্য রতন পেয়ে যাবেন, তাহলে ভুল করবেন। ফেব্রুয়ারি আর এপ্রিল নিয়ে এমন এক গাড্ডায় পড়েছে নির্বাচন যে, কোনো ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী করার শক্তি কারও নেই। বিএনপির হাতে মুলা ধরিয়ে দিয়ে এই সরকারই আরও অনেক দিন ক্ষমতায় থাকার বাসনা পোষণ করছে কি না...
১ দিন আগেবিশ্বে পরিবেশদূষণকারী হিসেবে ১৫টি প্রধান দূষক চিহ্নিত করা হয়েছে। পয়লা নম্বরে আছে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার। বিশ্বব্যাপী পরিবেশদূষণে ৫ নম্বর দূষণকারী এখন প্লাস্টিক। দূষণের মাত্রা অনুযায়ী এই অবস্থান নির্ধারিত হয়েছে।
১ দিন আগে