সম্পাদকীয়
খেতের ধান নষ্ট করেছে গরু, আর তাই পেটানো হলো গরুর মালিককে। নাটোরের সিংড়ায় এক ইউপি সদস্য এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। তাঁকে দায়ী করে এই সম্পাদকীয়তে কড়া কিছু কথা লেখা যেত কিংবা যে বৃদ্ধকে গাছে বেঁধে তিনি পিটিয়েছেন, তাঁকে নিয়ে আবেগে ভরপুর একটা বয়ানও তৈরি করা যেত। কিন্তু আদতে সেগুলো কোনো প্রয়োজনীয় কথা নয়। এটা একজন নির্দিষ্ট ইউপি সদস্যের রুচিবোধ কিংবা নির্দিষ্ট কোনো দরিদ্র বৃদ্ধকে অপমানের ঘটনা নয়।
একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, এখানে খেতের ধানগাছ নষ্ট করেছিল গরু, ধানখেতে ঢুকে কার ধানখেত নষ্ট করছে না বুঝেই সে তার মতো আচরণ করেছে। গরুই গরুর মতো আচরণ করে, মানুষ নয়। বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় গরুর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ প্রাকৃতিক কারণেই মানুষের মতো হয়নি। মানুষ কোনো কাজ করতে গেলে তার যৌক্তিক বিচার বোধ প্রয়োগ করে থাকে। কোনো কাজ করার আগে বিবেচনা করে দেখে, কাজটা ঠিক করছে কি না। সব সময় যে এই বিচার বোধ কাজ করে, এমনও নয়। কোনো স্বৈরাচারী শাসক যখন জনগণের ওপর তার পোষা বাহিনী দিয়ে আক্রমণ চালায়, তখন নিশ্চয়ই তার সুস্থ বিবেক বোধ কাজ করে না।
জনপ্রিয়তা নিয়ে ক্ষমতায় আসা হিটলার মানুষকে মানুষ গণ্য না করে কী ভীষণ তুলকালাম বাধিয়ে দিয়েছিল পৃথিবীতে, সেই ইতিহাস বোধ করি সবার জানা আছে। অর্থাৎ বোধ-বিবেচনাকে অনেক সময়ই মানুষ অগ্রাহ্য করে। সে সময় সেই মানুষকে রুচিশীল মানুষ বলা যায় না। ‘পশুর চেয়েও হিংস্র’ বলে একটা কথা প্রচলিত আছে। আসলে মানুষ যখন হিংস্র হয়, তখন কোনো পশুই তার সঙ্গে পেরে ওঠে না। আরও একটা কথা বলা উচিত, জীবনধারণের প্রয়োজনেই পশু হিংস্র হয়।
মানুষ যখন হিংস্র হয়, তখন সেটা তার জীবনধারণের উপায় খুঁজে বের করার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। এই সহজ কথাগুলো আমরা অনেক সময় ভুলে যাই। ইউনিয়ন পরিষদের একজন সদস্য যখন একজন বৃদ্ধকে পেটালেন, তখন এটা শুধু ক্ষমতার ব্যাপার হয়ে থাকে না, এর সঙ্গে সামাজিক রীতিনীতি, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ, ব্যক্তিগত রুচিসহ অনেক কিছুই যুক্ত থাকে।
ছোটবেলা থেকেই সহনশীল, পরোপকারী, মানবিক হওয়ার যে শিক্ষাগুলো সমাজের স্তরে স্তরে থাকা উচিত, সেগুলো কেন এভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে, সেটাই ভাবতে হবে। এটা শুধু একজন ইউপি সদস্যের বিষয় নয়, সামগ্রিকভাবে আমরা এ রকম বোধহীন আচরণের দিকে যাচ্ছি কি না, সে প্রশ্নটাও এড়ানো যাবে না।
ধনী-গরিবের বৈষম্যের কথা নাহয় বাদই দিলাম, একজন বর্ষীয়ান মানুষের শরীরে হাত দেওয়ার ভাবনা যে রুচিবোধ থেকে আসে, সেটা কখনোই সুস্থ, স্বাভাবিক, জীবনঘনিষ্ঠ বোধ নয়। এ কথা শুধু সেই ইউপি সদস্যকেই নয়, এ রকম আরও যাঁরা আছেন, তাঁদের তো সেটা বোঝাতে হবে। খবর রাষ্ট্র হওয়ার পর পুলিশ এই ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তাতে তাঁর বোধোদয় হবে—এমন কথা কেউ বলতে পারে না। আমরা গাছে বেঁধে রাখা সেই বৃদ্ধের কথা ভাবি, গরুটির কথা ভাবি, ইউপি সদস্যের কথা ভাবি। ভাবনায় এসে মানুষ, গরু, ধানখেত সব একাকার হয়ে যায়!
খেতের ধান নষ্ট করেছে গরু, আর তাই পেটানো হলো গরুর মালিককে। নাটোরের সিংড়ায় এক ইউপি সদস্য এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। তাঁকে দায়ী করে এই সম্পাদকীয়তে কড়া কিছু কথা লেখা যেত কিংবা যে বৃদ্ধকে গাছে বেঁধে তিনি পিটিয়েছেন, তাঁকে নিয়ে আবেগে ভরপুর একটা বয়ানও তৈরি করা যেত। কিন্তু আদতে সেগুলো কোনো প্রয়োজনীয় কথা নয়। এটা একজন নির্দিষ্ট ইউপি সদস্যের রুচিবোধ কিংবা নির্দিষ্ট কোনো দরিদ্র বৃদ্ধকে অপমানের ঘটনা নয়।
একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, এখানে খেতের ধানগাছ নষ্ট করেছিল গরু, ধানখেতে ঢুকে কার ধানখেত নষ্ট করছে না বুঝেই সে তার মতো আচরণ করেছে। গরুই গরুর মতো আচরণ করে, মানুষ নয়। বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় গরুর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ প্রাকৃতিক কারণেই মানুষের মতো হয়নি। মানুষ কোনো কাজ করতে গেলে তার যৌক্তিক বিচার বোধ প্রয়োগ করে থাকে। কোনো কাজ করার আগে বিবেচনা করে দেখে, কাজটা ঠিক করছে কি না। সব সময় যে এই বিচার বোধ কাজ করে, এমনও নয়। কোনো স্বৈরাচারী শাসক যখন জনগণের ওপর তার পোষা বাহিনী দিয়ে আক্রমণ চালায়, তখন নিশ্চয়ই তার সুস্থ বিবেক বোধ কাজ করে না।
জনপ্রিয়তা নিয়ে ক্ষমতায় আসা হিটলার মানুষকে মানুষ গণ্য না করে কী ভীষণ তুলকালাম বাধিয়ে দিয়েছিল পৃথিবীতে, সেই ইতিহাস বোধ করি সবার জানা আছে। অর্থাৎ বোধ-বিবেচনাকে অনেক সময়ই মানুষ অগ্রাহ্য করে। সে সময় সেই মানুষকে রুচিশীল মানুষ বলা যায় না। ‘পশুর চেয়েও হিংস্র’ বলে একটা কথা প্রচলিত আছে। আসলে মানুষ যখন হিংস্র হয়, তখন কোনো পশুই তার সঙ্গে পেরে ওঠে না। আরও একটা কথা বলা উচিত, জীবনধারণের প্রয়োজনেই পশু হিংস্র হয়।
মানুষ যখন হিংস্র হয়, তখন সেটা তার জীবনধারণের উপায় খুঁজে বের করার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। এই সহজ কথাগুলো আমরা অনেক সময় ভুলে যাই। ইউনিয়ন পরিষদের একজন সদস্য যখন একজন বৃদ্ধকে পেটালেন, তখন এটা শুধু ক্ষমতার ব্যাপার হয়ে থাকে না, এর সঙ্গে সামাজিক রীতিনীতি, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ, ব্যক্তিগত রুচিসহ অনেক কিছুই যুক্ত থাকে।
ছোটবেলা থেকেই সহনশীল, পরোপকারী, মানবিক হওয়ার যে শিক্ষাগুলো সমাজের স্তরে স্তরে থাকা উচিত, সেগুলো কেন এভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে, সেটাই ভাবতে হবে। এটা শুধু একজন ইউপি সদস্যের বিষয় নয়, সামগ্রিকভাবে আমরা এ রকম বোধহীন আচরণের দিকে যাচ্ছি কি না, সে প্রশ্নটাও এড়ানো যাবে না।
ধনী-গরিবের বৈষম্যের কথা নাহয় বাদই দিলাম, একজন বর্ষীয়ান মানুষের শরীরে হাত দেওয়ার ভাবনা যে রুচিবোধ থেকে আসে, সেটা কখনোই সুস্থ, স্বাভাবিক, জীবনঘনিষ্ঠ বোধ নয়। এ কথা শুধু সেই ইউপি সদস্যকেই নয়, এ রকম আরও যাঁরা আছেন, তাঁদের তো সেটা বোঝাতে হবে। খবর রাষ্ট্র হওয়ার পর পুলিশ এই ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তাতে তাঁর বোধোদয় হবে—এমন কথা কেউ বলতে পারে না। আমরা গাছে বেঁধে রাখা সেই বৃদ্ধের কথা ভাবি, গরুটির কথা ভাবি, ইউপি সদস্যের কথা ভাবি। ভাবনায় এসে মানুষ, গরু, ধানখেত সব একাকার হয়ে যায়!
আপনি, রবীন্দ্রনাথ, রাষ্ট্রে বিশ্বাস করতেন না; বিশ্বাস করতেন সমাজে। ভারতবর্ষে সমাজই বড়, রাষ্ট্র এখানে একটি উৎপাতবিশেষ—এ আপনার ধারণার অন্তর্গত ছিল। রাষ্ট্র ছিল বাইরের। সমাজ আমাদের নিজস্ব। সমাজকে আমরা নিজের মতো গড়ে তুলব—এই আস্থা আপনার ছিল।
৩ ঘণ্টা আগে১৯৪৭ সালের ভারত দেশ বিভাগের বিভীষিকা যাঁরা প্রত্যক্ষ করেছেন, সেই প্রজন্ম দ্রুত বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আজ ভারত ও পাকিস্তান দুপাশের সীমান্তে এমন মানুষের সংখ্যা হাতে গোনা। এর মূল কারণই হলো, যাঁরা এই উন্মাদনা প্রত্যক্ষ করেছিলেন কিংবা সরাসরি এতে জড়িত ছিলেন, তাঁরা পরে এ নিয়ে অনুশোচনা ও আফসোস করেছেন।
৩ ঘণ্টা আগেট্রাম্প নিজে ঘোষণা করেছিলেন, রিপাবলিকান পার্টি অর্থাৎ ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকলে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ হতো না। যুদ্ধের প্রায় তিন বছর পরে ক্ষমতায় রিপাবলিকান পার্টি, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের আগে থেকেই সারা বিশ্ব মনে করেছিল তিনি ক্ষমতা নেওয়ার পরপরই যুদ্ধের ইতি ঘটবে।
৩ ঘণ্টা আগেঅপরাধ করেছে সন্তান। আর নাকে ‘খত’ দিয়েছেন মা। এ রকম ‘অভিনব’ বিচার হয়েছে ফেনীতে। বিচার করেছেন বিএনপির এক নেতা। অনেকে বলেন, সন্তানের অপরাধের সাজা নাকি মা-বাবা ভোগ করেন। সেই সাজা মূলত মানসিক পীড়া। সন্তানের অপরাধের শাস্তি হলে মা-বাবার মনোবেদনা হওয়াটাই স্বাভাবিক। সেটা সাজার চেয়ে তো কম কিছু না।
৪ ঘণ্টা আগে