সম্পাদকীয়
কুড়িগ্রামের উলিপুরের একটি গ্রামে সম্প্রতি যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা আমাদের রাষ্ট্রীয় প্রচলিত বিচারব্যবস্থা ও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোই বটে। একই সঙ্গে আমাদের গ্রামীণ সমাজকাঠামোতে যে এখনো গ্রাম্য মাতবরদের দৌরাত্ম্য আছে, সেটা স্পষ্ট হয়েছে। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তুলে সালিস ডেকে একজন নারীর চুল কেটে দেওয়া এবং আর্থিক জরিমানার ঘটনা স্তম্ভিত করার মতো। এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় নারীর প্রতি সমাজের মধ্যযুগীয় মানসিকতার নগ্ন প্রকাশ যে ঘটেছে, তা আজকের পত্রিকায় ১১ মে প্রকাশিত একটি সংবাদে স্পষ্ট।
জানা যায়, দেবরের সঙ্গে ভাবির বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তুলে স্থানীয় মাতবরেরা বিচারের নামে সালিস বসিয়ে কোনো প্রকার আইনি প্রক্রিয়া না মেনে পাঁচ সদস্যের জুরিবোর্ড গঠন করেন। এরপর মাতবরদের সিদ্ধান্তে ভুক্তভোগী নারীর চুল কেটে দেওয়া হয় এবং তাঁকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। দেবরকে করা হয় মাত্র ২০টি বেত্রাঘাত! ভুক্তভোগী নারী পরবর্তী সময়ে অভিযোগ করেছেন, দেবর তাঁকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে সেই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করেছিলেন। সেই ভিডিও দেখেই দেবরের স্ত্রী স্থানীয়দের জানান এবং এরপর এই প্রহসনের বিচার বসে।
এই ঘটনা একদিকে যেমন নারীর প্রতি চরম অবমাননার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে, অন্যদিকে তথাকথিত সালিসের নামে গ্রাম্য মাতবরদের স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারকে স্পষ্ট করে তোলে। প্রশ্ন জাগে, কোন অধিকারবলে একটি জুরিবোর্ড একজন নারীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এমন অমানবিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে? এই ঘটনা প্রমাণ করে যে গ্রামীণ সমাজে এখনো একশ্রেণির মানুষ নিজেদের আইনের ঊর্ধ্বে মনে করে এবং মধ্যযুগীয় কায়দায় বিচারকার্য পরিচালনা করার দুঃসাহস দেখায়।
ওই নারী যখন ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগ করছেন, তখন সেটাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে তাঁকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। যে পুরুষটি ধর্ষণ এবং ভিডিও ধারণের মতো জঘন্য অপরাধ করেছেন, তাঁকে লঘু শাস্তি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এটি স্পষ্টতই পক্ষপাতদুষ্ট এবং নারীবিদ্বেষী মানসিকতার পরিচায়ক। দেবরের স্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, স্বামীর মোবাইলে ভিডিও দেখার পরই তিনি স্থানীয়দের জানান এবং তাঁরাই বিচার-সালিস করেন। এতে কিন্তু ঘটনার জল ঘোলাই মনে হচ্ছে। পারিবারিক কলহের বশবর্তী হয়েই কি তাহলে ওই নারীকে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হতে হলো? সঠিক তদন্তের প্রয়োজন।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বক্তব্য হলো, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমন একটি গুরুতর ঘটনায় পুলিশের স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। কেননা, এই ধরনের ‘মধ্যযুগীয়’ বিচার-সালিস রাষ্ট্রীয় আইনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এর সমাধান না হলে পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজ নারীকে দাবিয়ে রাখার এমন উত্তম পন্থা হাতছাড়া করবে না!
ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। একই সঙ্গে সমাজের সব স্তরে নারীর অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করাও আবশ্যক। স্থানীয় প্রশাসন এই বিষয়ে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই আমাদের চাওয়া।
কুড়িগ্রামের উলিপুরের একটি গ্রামে সম্প্রতি যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা আমাদের রাষ্ট্রীয় প্রচলিত বিচারব্যবস্থা ও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোই বটে। একই সঙ্গে আমাদের গ্রামীণ সমাজকাঠামোতে যে এখনো গ্রাম্য মাতবরদের দৌরাত্ম্য আছে, সেটা স্পষ্ট হয়েছে। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তুলে সালিস ডেকে একজন নারীর চুল কেটে দেওয়া এবং আর্থিক জরিমানার ঘটনা স্তম্ভিত করার মতো। এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় নারীর প্রতি সমাজের মধ্যযুগীয় মানসিকতার নগ্ন প্রকাশ যে ঘটেছে, তা আজকের পত্রিকায় ১১ মে প্রকাশিত একটি সংবাদে স্পষ্ট।
জানা যায়, দেবরের সঙ্গে ভাবির বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তুলে স্থানীয় মাতবরেরা বিচারের নামে সালিস বসিয়ে কোনো প্রকার আইনি প্রক্রিয়া না মেনে পাঁচ সদস্যের জুরিবোর্ড গঠন করেন। এরপর মাতবরদের সিদ্ধান্তে ভুক্তভোগী নারীর চুল কেটে দেওয়া হয় এবং তাঁকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। দেবরকে করা হয় মাত্র ২০টি বেত্রাঘাত! ভুক্তভোগী নারী পরবর্তী সময়ে অভিযোগ করেছেন, দেবর তাঁকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে সেই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করেছিলেন। সেই ভিডিও দেখেই দেবরের স্ত্রী স্থানীয়দের জানান এবং এরপর এই প্রহসনের বিচার বসে।
এই ঘটনা একদিকে যেমন নারীর প্রতি চরম অবমাননার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে, অন্যদিকে তথাকথিত সালিসের নামে গ্রাম্য মাতবরদের স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারকে স্পষ্ট করে তোলে। প্রশ্ন জাগে, কোন অধিকারবলে একটি জুরিবোর্ড একজন নারীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এমন অমানবিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে? এই ঘটনা প্রমাণ করে যে গ্রামীণ সমাজে এখনো একশ্রেণির মানুষ নিজেদের আইনের ঊর্ধ্বে মনে করে এবং মধ্যযুগীয় কায়দায় বিচারকার্য পরিচালনা করার দুঃসাহস দেখায়।
ওই নারী যখন ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগ করছেন, তখন সেটাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে তাঁকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। যে পুরুষটি ধর্ষণ এবং ভিডিও ধারণের মতো জঘন্য অপরাধ করেছেন, তাঁকে লঘু শাস্তি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এটি স্পষ্টতই পক্ষপাতদুষ্ট এবং নারীবিদ্বেষী মানসিকতার পরিচায়ক। দেবরের স্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, স্বামীর মোবাইলে ভিডিও দেখার পরই তিনি স্থানীয়দের জানান এবং তাঁরাই বিচার-সালিস করেন। এতে কিন্তু ঘটনার জল ঘোলাই মনে হচ্ছে। পারিবারিক কলহের বশবর্তী হয়েই কি তাহলে ওই নারীকে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হতে হলো? সঠিক তদন্তের প্রয়োজন।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বক্তব্য হলো, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমন একটি গুরুতর ঘটনায় পুলিশের স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। কেননা, এই ধরনের ‘মধ্যযুগীয়’ বিচার-সালিস রাষ্ট্রীয় আইনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এর সমাধান না হলে পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজ নারীকে দাবিয়ে রাখার এমন উত্তম পন্থা হাতছাড়া করবে না!
ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। একই সঙ্গে সমাজের সব স্তরে নারীর অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করাও আবশ্যক। স্থানীয় প্রশাসন এই বিষয়ে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই আমাদের চাওয়া।
লুটপাটের জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন শেখ হাসিনা ও তাঁর দলবল। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে তিনি সাঙ্গপাঙ্গদের দিয়েছিলেন সম্পদ লুণ্ঠনের অধিকার। গত বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও দেশে রয়ে গেছে লুটেরা সিন্ডিকেট। গণমাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লুটপাট, চাঁদাবাজি ও দখল
৬ ঘণ্টা আগেশান্তিতে নোবেল পুরস্কার একসময় ছিল আন্তর্জাতিক নৈতিকতার শীর্ষ সম্মান—যেখানে পুরস্কার পেতেন তাঁরা, যাঁদের জীবন ও কর্ম বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আজ সেই পুরস্কার অনেকটা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক সৌজন্য উপহার। যা দেওয়া হয় যখন কারও হাত মলতে হয়, অহংকারে তেল দিতে হয় বা নিজের অ্যাজেন্ডা...
১৯ ঘণ্টা আগেগত বছর জুলাই মাস থেকে আমাদের আন্দোলনকারী তরুণ ছাত্রছাত্রীদের মুখে ও কিছু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মুখে, বেশি বেশি করে কয়েকটি বাক্য উচ্চারিত হয়ে আসছিল। বাকিগুলোর মধ্যে প্রথম যে বাক্যটি সবার কানে বেধেছে, সেটা হলো ‘বন্দোবস্ত’।
১৯ ঘণ্টা আগেপ্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সম্প্রতি রংপুরে অনুষ্ঠিত এক সভায় যে কথাগুলো বলেছেন, তা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
১৯ ঘণ্টা আগে