সম্পাদকীয়
দেশের কৃষি খাত আধুনিকায়ন ও লাভজনক করার উদ্দেশ্যে সরকার যে ‘সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প’ হাতে নিয়েছিল, তা দুর্নীতির কারণে ব্যর্থ হয়েছে, কৃষকদের করেছে নিরাশ। ৩ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের ব্যর্থতায় শুধু সংশ্লিষ্টদের অযোগ্যতা ও দুর্নীতির দৃষ্টান্তই প্রতিষ্ঠিত হয়নি, বরং দেশের কৃষি খাতে আধুনিকায়নের চেষ্টায়ও বিপর্যয় নেমে এসেছে। আজকের পত্রিকায় ২৪ জানুয়ারি ‘লুটপাটে গায়েব ভর্তুকির টাকা’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে।
কৃষকদের মধ্যে উন্নত কৃষিযন্ত্র ছড়িয়ে দেওয়া এবং ভর্তুকি প্রদানের মাধ্যমে তাঁদের আর্থিক ও উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা স্বভাবতই একটি ভালো পদক্ষেপ ছিল। কিন্তু বাস্তবায়নের পর্যায়ে দুর্নীতি ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার ফলে এই প্রকল্প দেশের হাজারো প্রকৃত কৃষকের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঠপর্যায়ের প্রকৃত কৃষকেরা ভর্তুকির সুবিধা পাননি। বরং অনেকে টাকা জমা দিয়ে যন্ত্রের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করে বিফল হয়েছেন। অথচ প্রকৃত কৃষকের বাইরে রাজনৈতিক দালাল ও অসাধু কর্মকর্তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় যন্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে অযথা বেশি দামে।
এই প্রকল্পে তিনটি প্রধান দুর্নীতির ধারা স্পষ্ট। প্রথমত, সরবরাহকারীদের যোগসাজশে ভুয়া বিল তৈরি করে প্রকল্পের টাকা লুটপাট করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, প্রকৃত কৃষকের বদলে রাজনৈতিক দালাল ও অকৃষিকাজে যুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যন্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। তৃতীয়ত, প্রকল্পের আর্থিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় মারাত্মক গাফিলতি ও অনিয়ম করা হয়েছে। এসব অনিয়মের প্রমাণ ইতিমধ্যে তদন্তে উঠে এসেছে।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কিছু কর্মকর্তার বরখাস্ত এবং ডজনখানেক তদন্ত কার্যক্রম দুর্নীতি দমনে যথেষ্ট নয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে যারা কোটি কোটি টাকার ক্ষতি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। দুর্নীতি দমন কমিশন ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উচিত প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, সরবরাহকারী কোম্পানি এবং তাদের সহযোগীদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির আওতায় আনা। রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাসীনদের দালালি ও সিস্টেমিক দুর্নীতি বন্ধে একটি টেকসই ও কার্যকর নীতিমালা গ্রহণও অত্যন্ত জরুরি।
দেশে কৃষি খাতের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে এমন ব্যর্থতা শুধু সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সুনাম ধ্বংস করে না, বরং সরকারের প্রতি জনগণের আস্থাকেও চূর্ণবিচূর্ণ করে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের মতো একটি সম্ভাবনাময় কর্মসূচির ব্যর্থতা প্রমাণ করে, যথাযথ মনিটরিং, জবাবদিহি এবং সুশাসনের অনুপস্থিতি কীভাবে জাতীয় সম্পদের অপচয় ঘটায়।
এই দুর্নীতির মাধ্যমে যে বার্তাটি দেওয়া হয়েছে, তা কেবল হতাশার জন্ম দেয়। ভবিষ্যতের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যাতে এমন পরিস্থিতির শিকার না হয়, সে জন্য এখনই প্রয়োজন সুস্পষ্ট পরিকল্পনা ও দায়িত্বশীলতামূলক কাঠামো গড়ে তোলা। সরকারের উচিত কৃষি খাতকে বাঁচাতে নতুন করে নীতিমালা প্রণয়ন করা, যাতে কৃষকদের পৃষ্ঠপোষকতা করার প্রতিশ্রুতি প্রকৃত অর্থে বাস্তবায়ন করা যায়। অন্যথায়, লুটপাটের সংস্কৃতি আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে ধ্বংস করবে এবং কৃষি খাতের ভবিষ্যৎ গভীর অনিশ্চয়তায় পড়ে যাবে।
দেশের কৃষি খাত আধুনিকায়ন ও লাভজনক করার উদ্দেশ্যে সরকার যে ‘সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প’ হাতে নিয়েছিল, তা দুর্নীতির কারণে ব্যর্থ হয়েছে, কৃষকদের করেছে নিরাশ। ৩ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের ব্যর্থতায় শুধু সংশ্লিষ্টদের অযোগ্যতা ও দুর্নীতির দৃষ্টান্তই প্রতিষ্ঠিত হয়নি, বরং দেশের কৃষি খাতে আধুনিকায়নের চেষ্টায়ও বিপর্যয় নেমে এসেছে। আজকের পত্রিকায় ২৪ জানুয়ারি ‘লুটপাটে গায়েব ভর্তুকির টাকা’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে।
কৃষকদের মধ্যে উন্নত কৃষিযন্ত্র ছড়িয়ে দেওয়া এবং ভর্তুকি প্রদানের মাধ্যমে তাঁদের আর্থিক ও উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা স্বভাবতই একটি ভালো পদক্ষেপ ছিল। কিন্তু বাস্তবায়নের পর্যায়ে দুর্নীতি ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার ফলে এই প্রকল্প দেশের হাজারো প্রকৃত কৃষকের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঠপর্যায়ের প্রকৃত কৃষকেরা ভর্তুকির সুবিধা পাননি। বরং অনেকে টাকা জমা দিয়ে যন্ত্রের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করে বিফল হয়েছেন। অথচ প্রকৃত কৃষকের বাইরে রাজনৈতিক দালাল ও অসাধু কর্মকর্তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় যন্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে অযথা বেশি দামে।
এই প্রকল্পে তিনটি প্রধান দুর্নীতির ধারা স্পষ্ট। প্রথমত, সরবরাহকারীদের যোগসাজশে ভুয়া বিল তৈরি করে প্রকল্পের টাকা লুটপাট করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, প্রকৃত কৃষকের বদলে রাজনৈতিক দালাল ও অকৃষিকাজে যুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যন্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। তৃতীয়ত, প্রকল্পের আর্থিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় মারাত্মক গাফিলতি ও অনিয়ম করা হয়েছে। এসব অনিয়মের প্রমাণ ইতিমধ্যে তদন্তে উঠে এসেছে।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কিছু কর্মকর্তার বরখাস্ত এবং ডজনখানেক তদন্ত কার্যক্রম দুর্নীতি দমনে যথেষ্ট নয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে যারা কোটি কোটি টাকার ক্ষতি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। দুর্নীতি দমন কমিশন ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উচিত প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, সরবরাহকারী কোম্পানি এবং তাদের সহযোগীদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির আওতায় আনা। রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাসীনদের দালালি ও সিস্টেমিক দুর্নীতি বন্ধে একটি টেকসই ও কার্যকর নীতিমালা গ্রহণও অত্যন্ত জরুরি।
দেশে কৃষি খাতের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে এমন ব্যর্থতা শুধু সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সুনাম ধ্বংস করে না, বরং সরকারের প্রতি জনগণের আস্থাকেও চূর্ণবিচূর্ণ করে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের মতো একটি সম্ভাবনাময় কর্মসূচির ব্যর্থতা প্রমাণ করে, যথাযথ মনিটরিং, জবাবদিহি এবং সুশাসনের অনুপস্থিতি কীভাবে জাতীয় সম্পদের অপচয় ঘটায়।
এই দুর্নীতির মাধ্যমে যে বার্তাটি দেওয়া হয়েছে, তা কেবল হতাশার জন্ম দেয়। ভবিষ্যতের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যাতে এমন পরিস্থিতির শিকার না হয়, সে জন্য এখনই প্রয়োজন সুস্পষ্ট পরিকল্পনা ও দায়িত্বশীলতামূলক কাঠামো গড়ে তোলা। সরকারের উচিত কৃষি খাতকে বাঁচাতে নতুন করে নীতিমালা প্রণয়ন করা, যাতে কৃষকদের পৃষ্ঠপোষকতা করার প্রতিশ্রুতি প্রকৃত অর্থে বাস্তবায়ন করা যায়। অন্যথায়, লুটপাটের সংস্কৃতি আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে ধ্বংস করবে এবং কৃষি খাতের ভবিষ্যৎ গভীর অনিশ্চয়তায় পড়ে যাবে।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৬ সালের ২৩ জুন। দীর্ঘ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। বর্তমানে ইমেরিটাস অধ্যাপক। মার্ক্সবাদী চিন্তাচেতনায় উদ্বুদ্ধ অধ্যাপক চৌধুরী নতুন দিগন্ত পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক।
৫ ঘণ্টা আগেরাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে শুরু হওয়া ‘জাতীয় ঐকমত্য’ প্রক্রিয়া তার শেষের দিকে এগিয়ে চলেছে, কিন্তু এখনো দেখা যাচ্ছে, প্রক্রিয়ার শুরুর জায়গাটিই ভালোভাবে গড়ে ওঠেনি। একদিকে রয়েছে ১৬৬টি প্রস্তাব, অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমতের পাহাড়।
৫ ঘণ্টা আগেলেখার শিরোনাম দেখেই যদি কেউ ভেবে থাকেন, এখানে অমূল্য রতন পেয়ে যাবেন, তাহলে ভুল করবেন। ফেব্রুয়ারি আর এপ্রিল নিয়ে এমন এক গাড্ডায় পড়েছে নির্বাচন যে, কোনো ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী করার শক্তি কারও নেই। বিএনপির হাতে মুলা ধরিয়ে দিয়ে এই সরকারই আরও অনেক দিন ক্ষমতায় থাকার বাসনা পোষণ করছে কি না...
১ দিন আগেবিশ্বে পরিবেশদূষণকারী হিসেবে ১৫টি প্রধান দূষক চিহ্নিত করা হয়েছে। পয়লা নম্বরে আছে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার। বিশ্বব্যাপী পরিবেশদূষণে ৫ নম্বর দূষণকারী এখন প্লাস্টিক। দূষণের মাত্রা অনুযায়ী এই অবস্থান নির্ধারিত হয়েছে।
১ দিন আগে