সম্পাদকীয়
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণের সিদ্ধান্তে অনেকের মধ্যে যেমন স্বস্তি দেখা যাচ্ছে, তেমনি কারও কারও মধ্যে অস্বস্তি নেই, তা-ও নয়। দেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে একটি পক্ষ এটিকে অর্জন বলে বিবেচনা করলেও আরেক পক্ষ এটিকে গোপন চুক্তির ইঙ্গিত বলে সন্দেহ করছে। এই দ্বৈত প্রতিক্রিয়ার ভেতরেই হয়তো বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির বর্তমান গতিপথের বাস্তব চেহারাটি প্রতিফলিত হয়েছে—যেখানে অর্জনের গৌরবের পাশাপাশি আতঙ্কের গুঞ্জনও বিদ্যমান।
মার্কিন বাজারে রপ্তানি পণ্যের শুল্কছাড় পাওয়াটা বাংলাদেশি অর্থনীতির জন্য, বিশেষ করে পোশাকশিল্পের জন্য এই মুহূর্তে একটি বড় ঘটনাই। এ ছাড়া চামড়া, হিমায়িত খাদ্য, ওষুধসহ নানা খাতে নতুন করে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সুযোগ তৈরি হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বিবৃতি দিয়েছে, আবার সিপিবিসহ কয়েকটি দল সতর্কবাণীও উচ্চারণ করেছে। অভ্যন্তরীণ রাজনীতির এটা প্রথাগত চিত্র।
অস্বস্তিকর যে প্রশ্নটি সামনে আসছে তা হলো, এই শুল্কছাড়ের বিনিময়ে আমরা কী দিলাম? কোনো গোপন চুক্তি কি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার ফলে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ হয়তো আপসের মুখোমুখি হয়েছে? প্রশ্নটা প্রথম তুলেছেন সিপিবির নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনিই বলেছেন, ‘যদি কোনো অসম বা দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তির মাধ্যমে শুল্ক কমানো হয়, তাহলে সেটা জনগণের প্রকৃত কল্যাণ বয়ে আনবে না।’ জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারীও স্পষ্ট করে বলেছেন, রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে ‘নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট’ (গোপন চুক্তি) করার সুযোগ নেই।
এই প্রশ্নগুলো কোনো বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা নয়। বরং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে, যেখানে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা মৌলিক শর্ত, সেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে হওয়া চুক্তি ও বোঝাপড়ার বিস্তারিত জনগণের জানার অধিকার থাকা উচিত। যদি সত্যিই কোনো ধরনের পর্দার আড়ালের চুক্তি থেকে থাকে—যেমন বোয়িংয়ের কাছ থেকে উড়োজাহাজ কেনা বা বিশেষ কিছু মার্কিন পণ্যের আমদানির অঙ্গীকার—তা হলে এই প্রশ্নগুলো আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। কারণ, এমন চুক্তি দেশের অর্থনীতিকে তাৎক্ষণিকভাবে সুবিধা দিলেও দীর্ঘ মেয়াদে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে।
জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌম অর্থনৈতিক পরিকল্পনার প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হলে তা ভবিষ্যতে আত্মঘাতী হয়ে উঠতে পারে। এই কারণেই শুল্কছাড়কে শুধু উৎসব নয়, বিশ্লেষণ এবং নজরদারির বিষয় হিসেবেও দেখা উচিত। আলাপ-আলোচনায় প্রাপ্ত সুবিধা যদি কোনো চাপ বা প্রতিদানে অর্জিত হয়, তাহলে তা আসলে কতটা লাভজনক, সে প্রশ্ন এখন থেকেই করা জরুরি।
একটি রাষ্ট্র যখন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সুবিধা পায়, তখন তা শুধু কূটনৈতিক দক্ষতা নয়, কৌশলগত অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ সমীকরণের প্রতিফলনও হয়ে ওঠে। আমরা স্বস্তির খবরকে স্বাগত জানাই। তবে একই সঙ্গে আমরা দাবি করি, চুক্তির বিস্তারিত তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক। কারণ, গোপনীয়তা যেখানে শুরু হয়, জনগণের আস্থা সেখানে শেষ হয়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণের সিদ্ধান্তে অনেকের মধ্যে যেমন স্বস্তি দেখা যাচ্ছে, তেমনি কারও কারও মধ্যে অস্বস্তি নেই, তা-ও নয়। দেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে একটি পক্ষ এটিকে অর্জন বলে বিবেচনা করলেও আরেক পক্ষ এটিকে গোপন চুক্তির ইঙ্গিত বলে সন্দেহ করছে। এই দ্বৈত প্রতিক্রিয়ার ভেতরেই হয়তো বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির বর্তমান গতিপথের বাস্তব চেহারাটি প্রতিফলিত হয়েছে—যেখানে অর্জনের গৌরবের পাশাপাশি আতঙ্কের গুঞ্জনও বিদ্যমান।
মার্কিন বাজারে রপ্তানি পণ্যের শুল্কছাড় পাওয়াটা বাংলাদেশি অর্থনীতির জন্য, বিশেষ করে পোশাকশিল্পের জন্য এই মুহূর্তে একটি বড় ঘটনাই। এ ছাড়া চামড়া, হিমায়িত খাদ্য, ওষুধসহ নানা খাতে নতুন করে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সুযোগ তৈরি হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বিবৃতি দিয়েছে, আবার সিপিবিসহ কয়েকটি দল সতর্কবাণীও উচ্চারণ করেছে। অভ্যন্তরীণ রাজনীতির এটা প্রথাগত চিত্র।
অস্বস্তিকর যে প্রশ্নটি সামনে আসছে তা হলো, এই শুল্কছাড়ের বিনিময়ে আমরা কী দিলাম? কোনো গোপন চুক্তি কি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার ফলে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ হয়তো আপসের মুখোমুখি হয়েছে? প্রশ্নটা প্রথম তুলেছেন সিপিবির নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনিই বলেছেন, ‘যদি কোনো অসম বা দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তির মাধ্যমে শুল্ক কমানো হয়, তাহলে সেটা জনগণের প্রকৃত কল্যাণ বয়ে আনবে না।’ জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারীও স্পষ্ট করে বলেছেন, রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে ‘নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট’ (গোপন চুক্তি) করার সুযোগ নেই।
এই প্রশ্নগুলো কোনো বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা নয়। বরং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে, যেখানে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা মৌলিক শর্ত, সেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে হওয়া চুক্তি ও বোঝাপড়ার বিস্তারিত জনগণের জানার অধিকার থাকা উচিত। যদি সত্যিই কোনো ধরনের পর্দার আড়ালের চুক্তি থেকে থাকে—যেমন বোয়িংয়ের কাছ থেকে উড়োজাহাজ কেনা বা বিশেষ কিছু মার্কিন পণ্যের আমদানির অঙ্গীকার—তা হলে এই প্রশ্নগুলো আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। কারণ, এমন চুক্তি দেশের অর্থনীতিকে তাৎক্ষণিকভাবে সুবিধা দিলেও দীর্ঘ মেয়াদে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে।
জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌম অর্থনৈতিক পরিকল্পনার প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হলে তা ভবিষ্যতে আত্মঘাতী হয়ে উঠতে পারে। এই কারণেই শুল্কছাড়কে শুধু উৎসব নয়, বিশ্লেষণ এবং নজরদারির বিষয় হিসেবেও দেখা উচিত। আলাপ-আলোচনায় প্রাপ্ত সুবিধা যদি কোনো চাপ বা প্রতিদানে অর্জিত হয়, তাহলে তা আসলে কতটা লাভজনক, সে প্রশ্ন এখন থেকেই করা জরুরি।
একটি রাষ্ট্র যখন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সুবিধা পায়, তখন তা শুধু কূটনৈতিক দক্ষতা নয়, কৌশলগত অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ সমীকরণের প্রতিফলনও হয়ে ওঠে। আমরা স্বস্তির খবরকে স্বাগত জানাই। তবে একই সঙ্গে আমরা দাবি করি, চুক্তির বিস্তারিত তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক। কারণ, গোপনীয়তা যেখানে শুরু হয়, জনগণের আস্থা সেখানে শেষ হয়ে যায়।
জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর হয়ে গেল। ওই অভ্যুত্থানের সময় দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি ছিল। মূলত তারা ফ্যাসিবাদী সরকারব্যবস্থার পতন ঘটিয়ে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিল। মূলত বাংলাদেশের মূল সমস্যা সেটাই যে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে একটি
১৩ ঘণ্টা আগেঢুলিভিটা থেকে ধামরাই উপজেলার একটি গ্রামের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। যাব সীতি গ্রামের আলাদিন পার্কে। হঠাৎ নাকে একটা উৎকট গন্ধ এসে লাগল। যতই এগোচ্ছি গন্ধটা তত বেশি উগ্র হয়ে উঠছে। নাক দিয়ে ঢুকছে দুর্গন্ধযুক্ত বাতাস, পেটের ভেতরটা যেন ঘুলঘুল করে উঠছে। কারণটা কী? একটু এগিয়ে যেতেই ব্যাপারটা খোলাসা হয়ে গেল। রাস্তার
১৩ ঘণ্টা আগেএকটি সফল গণ-অভ্যুত্থানের মাত্র এক বছরের মধ্যে প্রশ্নটি সর্বব্যাপী হয়ে উঠেছে। কারণ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে বৈষম্যহীন অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক দেশ এবং ‘দায় ও দরদের সমাজ’ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছিল, গত এক বছরের চলার পথ তার ধারেকাছেও নেই। বরং এক বছর ধরে দেশবাসী দেখে...
২ দিন আগেঢাকায় প্রতিদিন আমরা যে শ্বাস গ্রহণ করি, তার প্রতিটি কণায় লুকিয়ে আছে অদৃশ্য বিষ, যা নিঃশব্দে আমাদের দেহকে দুর্বল করে দিচ্ছে, কেড়ে নিচ্ছে সুস্থতার অধিকার। একসময় যাকে বলা হতো প্রাণের শহর, আজ তা যেন বিষে ভরা এক মৃত্যুপুরী। ঢাকার বাতাস আর নিছক বাতাস নয়—এ যেন নিশ্বাসের আড়ালে লুকিয়ে থাকা এক অদৃশ্য...
২ দিন আগে