সম্পাদকীয়
একটি তালগাছ ছিল ঝালকাঠির পূর্ব গুয়াটন গ্রামে। বহু বছর ধরে গাছটি শুধু একটি গাছ ছিল না—এটি ছিল শত শত বাবুই পাখির আশ্রয়, নিরাপদ ঠিকানা। গাছের প্রতিটি পাতায় পাতায়, ডালেডালে ছিল কিচিরমিচিরে এক জীবন। বাবুইরা নিজের হাতে গড়া কাঁচা ঘরে নিশ্চিন্তে বাস করত, প্রজননের মৌসুমে ডিম দিত, ছানারা ডানা মেলত। গ্রামের শিশুরা অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখত সেই বাসা, সেই পাখিরা কেমন নিখুঁতভাবে গৃহনির্মাণে ব্যস্ত। এই এক গাছেই ছিল প্রকৃতির প্রাণবন্ত ছায়া। কিন্তু এক বিকেলেই বদলে গেল সব।
গাছটি কেটে ফেলা হলো। ডালে ডালে থাকা বাসাগুলো মুহূর্তেই মাটিতে পড়ে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেল। ডিম ভেঙে গুঁড়িয়ে গেল, ছানারা আহত বা মৃত হয়ে ছড়িয়ে পড়ল মাটিতে। পাখিরা ত্রস্ত হয়ে আকাশে উড়তে লাগল, কোথায় যাবে তারা? তাদের কান্না কেউ শুনল না। এটি শুধু একটি গাছ কাটা নয়, এটি একটি নির্মমতা, একটি বর্বর উদাহরণ; যেখানে মানুষ তার নিজস্ব স্বার্থে চোখ বুজে হত্যা করল শত শত নিরীহ প্রাণ। এই সমাজের, এই রাষ্ট্রের কোনো দায় কি নেই?
এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিবাদ উঠে আসে। আজকের পত্রিকায়ও এ নিয়ে আবেগঘন খবর প্রকাশিত হয়েছে। মানুষ ভেঙে পড়েছিল, কিন্তু মানুষই আবার জেগে উঠেছিল। প্রতিবাদের ভাষা এবং সংবাদমাধ্যমের গুরুত্বের ফলেই সম্ভবত প্রশাসন দ্রুত নড়েচড়ে বসে। স্থানীয় ইউপি সদস্যের করা মামলায় মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যে প্রধান আসামি মোবারক ফকিরকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
এমন সংবেদনশীল, মানবিক বিষয়ে পুলিশের এই দ্রুত ও সাহসী পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। এলাকাবাসী যেমন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন, তেমনি আমরা চাইব—এ উদাহরণ যেন অন্যদের জন্য সতর্কসংকেত হয়। শুধু মোবারক ফকির নয়, যাঁরা এই অপরাধে জড়িত, যাঁরা গাছ কাটার আদেশ দিয়েছেন বা সহযোগিতা করেছেন, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হোক।
তবে এই গ্রেপ্তারেই যেন শেষ না হয় বিচারপ্রক্রিয়া। এটি যেন শুরু হয় এক নতুন সচেতনতার। আমরা যেন বুঝতে শিখি, একটি গাছ মানে শুধু কাঠ নয়—একটি গাছ মানে আশ্রয়, প্রাণ, শিক্ষা, সৌন্দর্য। ভবিষ্যতে কোনো গাছ কাটা অথবা প্রকৃতির সঙ্গে বৈরী যেকোনো আচরণের আগে মানবিকবোধটা একটু সক্রিয় থাকে।
এই তালগাছটি ছিল স্মৃতি, ছিল প্রাণের বাহক। আমরা হয়তো বাবুইদের আর ফেরাতে পারব না। তারা হারিয়েছে তাদের ঘর, তাদের ছানা, তাদের নিরাপদ ঠিকানা। কিন্তু অন্তত আমাদের বিবেক জাগ্রত হলে, ভবিষ্যতে এমন অন্যায় রুখে দেওয়া সম্ভব।
প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা আর জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা যদি না জাগে, তাহলে একদিন আমরাও হারিয়ে ফেলব বসবাসের এই পৃথিবী। সময় থাকতে আমাদের থামতে হবে। সচেতন হতে হবে। গাছ কাটা মানে যে জীবন কাটা—এই সত্য বুঝে তবেই আমরা প্রকৃত মানুষ হতে পারি।
একটি তালগাছ ছিল ঝালকাঠির পূর্ব গুয়াটন গ্রামে। বহু বছর ধরে গাছটি শুধু একটি গাছ ছিল না—এটি ছিল শত শত বাবুই পাখির আশ্রয়, নিরাপদ ঠিকানা। গাছের প্রতিটি পাতায় পাতায়, ডালেডালে ছিল কিচিরমিচিরে এক জীবন। বাবুইরা নিজের হাতে গড়া কাঁচা ঘরে নিশ্চিন্তে বাস করত, প্রজননের মৌসুমে ডিম দিত, ছানারা ডানা মেলত। গ্রামের শিশুরা অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখত সেই বাসা, সেই পাখিরা কেমন নিখুঁতভাবে গৃহনির্মাণে ব্যস্ত। এই এক গাছেই ছিল প্রকৃতির প্রাণবন্ত ছায়া। কিন্তু এক বিকেলেই বদলে গেল সব।
গাছটি কেটে ফেলা হলো। ডালে ডালে থাকা বাসাগুলো মুহূর্তেই মাটিতে পড়ে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেল। ডিম ভেঙে গুঁড়িয়ে গেল, ছানারা আহত বা মৃত হয়ে ছড়িয়ে পড়ল মাটিতে। পাখিরা ত্রস্ত হয়ে আকাশে উড়তে লাগল, কোথায় যাবে তারা? তাদের কান্না কেউ শুনল না। এটি শুধু একটি গাছ কাটা নয়, এটি একটি নির্মমতা, একটি বর্বর উদাহরণ; যেখানে মানুষ তার নিজস্ব স্বার্থে চোখ বুজে হত্যা করল শত শত নিরীহ প্রাণ। এই সমাজের, এই রাষ্ট্রের কোনো দায় কি নেই?
এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিবাদ উঠে আসে। আজকের পত্রিকায়ও এ নিয়ে আবেগঘন খবর প্রকাশিত হয়েছে। মানুষ ভেঙে পড়েছিল, কিন্তু মানুষই আবার জেগে উঠেছিল। প্রতিবাদের ভাষা এবং সংবাদমাধ্যমের গুরুত্বের ফলেই সম্ভবত প্রশাসন দ্রুত নড়েচড়ে বসে। স্থানীয় ইউপি সদস্যের করা মামলায় মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যে প্রধান আসামি মোবারক ফকিরকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
এমন সংবেদনশীল, মানবিক বিষয়ে পুলিশের এই দ্রুত ও সাহসী পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। এলাকাবাসী যেমন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন, তেমনি আমরা চাইব—এ উদাহরণ যেন অন্যদের জন্য সতর্কসংকেত হয়। শুধু মোবারক ফকির নয়, যাঁরা এই অপরাধে জড়িত, যাঁরা গাছ কাটার আদেশ দিয়েছেন বা সহযোগিতা করেছেন, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হোক।
তবে এই গ্রেপ্তারেই যেন শেষ না হয় বিচারপ্রক্রিয়া। এটি যেন শুরু হয় এক নতুন সচেতনতার। আমরা যেন বুঝতে শিখি, একটি গাছ মানে শুধু কাঠ নয়—একটি গাছ মানে আশ্রয়, প্রাণ, শিক্ষা, সৌন্দর্য। ভবিষ্যতে কোনো গাছ কাটা অথবা প্রকৃতির সঙ্গে বৈরী যেকোনো আচরণের আগে মানবিকবোধটা একটু সক্রিয় থাকে।
এই তালগাছটি ছিল স্মৃতি, ছিল প্রাণের বাহক। আমরা হয়তো বাবুইদের আর ফেরাতে পারব না। তারা হারিয়েছে তাদের ঘর, তাদের ছানা, তাদের নিরাপদ ঠিকানা। কিন্তু অন্তত আমাদের বিবেক জাগ্রত হলে, ভবিষ্যতে এমন অন্যায় রুখে দেওয়া সম্ভব।
প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা আর জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা যদি না জাগে, তাহলে একদিন আমরাও হারিয়ে ফেলব বসবাসের এই পৃথিবী। সময় থাকতে আমাদের থামতে হবে। সচেতন হতে হবে। গাছ কাটা মানে যে জীবন কাটা—এই সত্য বুঝে তবেই আমরা প্রকৃত মানুষ হতে পারি।
গত বছরের ৮ আগস্ট বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করেছিল। তাদের শাসন আমলে একটি নতুন অর্থবছরেরও সূচনা হয়েছে। আজ বছর পেরিয়ে অনেকেই পেছন ফিরে তাকাচ্ছেন—অর্জন কতটুকু, ব্যর্থতা কোথায় এবং অন্তরায় কী কী? এমন একটি হিসাব-নিকাশ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রায় দিকনির্দেশনা দি
২১ ঘণ্টা আগেআমরা যেন এক কদম সামনে বাড়লে পিছিয়ে পড়ি আরও দশ কদম। তখন সেই এক কদম এগিয়ে যাওয়াকে বড্ড ম্লান মনে হয়। গত প্রায় এক দশক ধরেই ঢাকার বায়ু ও পরিবেশ দূষণের শিকার। এখনো আমরা শীর্ষ বা এর আশপাশে অবস্থান করছি। এত সংস্কার কমিটি হলো, শুনেছি পরিবেশ উন্নয়নের জন্যও নাকি কমিটি গঠিত হয়েছে। কাজের ক্ষেত্রে কোনোটিরই কি কো
২১ ঘণ্টা আগেবাসটা ধাক্কা দিয়েছে এক শিক্ষার্থীকে, শিক্ষার্থী করেছে তার প্রতিবাদ। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে বাসের চালক, চালকের সহকারী ও অন্য কর্মীরা শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়েছে বাসে। ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে পিটিয়েছে। বাসের যাত্রীরা প্রশ্ন করেছে, কিন্তু ‘চোর’কে পেটানো হচ্ছে বলা হলে তারা নির্বিকার বসে থেকেছে আসনে। চোর হলেও যে তাকে পু
২১ ঘণ্টা আগেযে রকম পরিস্থিতিতে দেশ চলছে, তাতে দেশের জনগণের স্বস্তিতে থাকার কোনো কারণ নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ৫ আগস্ট নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ায় সেই অস্বস্তি থেকে বের হয়ে আসার আপাতত একটা পথের দিশা পাওয়া গেল। জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা এই ভাষণ দেওয়ার আগে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে...
২ দিন আগে