Ajker Patrika

আনন্দ-বেদনার যুগলবন্দী

সম্পাদকীয়
আনন্দ-বেদনার যুগলবন্দী

পরবাসকে কী চোখে দেখতেন কবি শহীদ কাদরী? যাঁরা তাঁকে কাছে থেকে দেখেছেন জীবনের শেষদিকটায়, তাঁরা জানেন, তিনি মনে করতেন মাতৃভূমি ত্যাগ করা আত্মহত্যার শামিল। নিউইয়র্কে জীবনের শেষ দিনগুলো কেটেছিল তাঁর।

তবে তিনি মনে করতেন, দেশ তো সঙ্গেই থাকে। ‘মায়ের মুখের মতো, পেছনে ফেলে আসা ভেজা বাল্যকালের মতো’। কবি শহীদ কাদরীর বাবা মারা গিয়েছিলেন কলকাতায়, মা ঢাকায়। সে সময় ঢাকার কবিরা বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত কবিতা পত্রিকার দিকে মুখিয়ে থাকতেন। সেই পত্রিকায় কবিতা ছাপা হওয়া মানে কবি হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া—এমনটা মনে করতেন কবি যশপ্রার্থীদের অনেকে। শহীদ কাদরীও কবিতা পাঠিয়েছিলেন কলকাতায়, বুদ্ধদেব বসুর কাছে। এর আগে শামসুর রাহমান, আল মাহমুদের সঙ্গে দেখা হয়েছে। শামসুর রাহমান আর সৈয়দ শামসুল হকের কবিতা ছাপা হয়েছে কবিতা পত্রিকায়, সেটাও জানা হয়ে গেছে। রিভারভিউ ক্যাফে আর বিউটি বোর্ডিংয়ে চলছে আড্ডা। আল মাহমুদ কবিতা পত্রিকায় কবিতা পাঠাচ্ছেন শুনে শহীদ কাদরীও পাঠাতে আগ্রহী হলেন। হাতের লেখা ছিল খারাপ, শামসুর রাহমানই কপি করে দিয়েছিলেন।

যেদিন তাঁর মা মারা গেলেন, সেদিন শহীদ কাদরী কষ্টে নীল। সেটা ১৯৫৬ সাল। তাঁর বয়স তখন ১৪। শামসুর রাহমান এসেছিলেন শহীদদের বাড়িতে। মায়ের দাফন শেষ হলে বিউটি বোর্ডিংয়ে এসেছিলেন শহীদ কাদরী। তখনো কেউ আসেনি। বিষাদমাখা মন নিয়ে বসে ছিলেন তিনি। কাঁদছিলেন। এ সময় কাঁধে শামসুর রাহমানের স্পর্শ। ডাকে এসেছে কবিতা পত্রিকা, আর তাতে রয়েছে শহীদের কবিতা—এ কথা বলে পত্রিকাটি শহীদের হাতে তুলে দিলেন তিনি। কবিতাটির নাম ছিল ‘এই শীতে’।

ওই দিনটি ছিল একাধারে আনন্দ আর বেদনার। বেদনার—মা নেই বলে। আনন্দের—বুদ্ধদেব বসুর কবিতা পত্রিকায় তাঁর কবিতা ছাপা হয়েছে বলে। 

সূত্র: শঙ্খচিল, শিখা আহমেদের নেওয়া সাক্ষাৎকার, পৃষ্ঠা ১২৬

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাবুই পাখির কান্না কেউ শুনল না, কেটে ফেলা হলো তালগাছটি

অপারেশন সিঁদুরে নেতৃত্ব দেওয়া অফিসার হচ্ছেন ভারতের র-এর প্রধান

পিআর পদ্ধতিতে ভোটাররা জানবেন না কে তাঁর এমপি, এটি বাংলাদেশের জন্য অনুপযুক্ত: সালাহউদ্দিন

নীলফামারীতে 'আটক' কুমিল্লার দুই সাংবাদিক

ডেঙ্গুতে পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তার মৃত্যু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত