Ajker Patrika

যুদ্ধ কি আসছে এই এলাকায়

সম্পাদকীয়
যুদ্ধ কি আসছে এই এলাকায়

ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে কি বেজে উঠল যুদ্ধের দামামা? চরম উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠছে দু দেশের পরিবেশ। এই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাধলে বাংলাদেশও বিপদে পড়তে পারে। যুদ্ধ শুরু হলে কে জয়ী হলো, কে পরাজিত হলো, সে হিসাব-নিকাশের মূল্য অনেক, কিন্তু তারচেয়ে বেশি মূল্যবান হলো, যুদ্ধে মূলত যুদ্ধরত দুই দেশের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়, তা কাটিয়ে ওঠা সহজ নয়। জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি হবে, সেটা জানার পরও দুই দেশ একে অন্যের বিরুদ্ধে উত্তেজনা ছড়াতে থাকে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখনো চলছে। সাময়িক যুদ্ধবিরতির আহ্বান কোনো কার্যকর পার্থক্য তুলে ধরতে পারবে বলে মনে হয় না। কিন্তু দুই দেশেই সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা এই যুদ্ধের কারণে ব্যাহত হচ্ছে। সেই একই পথে কি ভারত ও পাকিস্তান হাঁটতে শুরু করল?

১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালে এই দুই দেশ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল। ১৯৬৫ সালের যুদ্ধ থামাতে সোভিয়েত ইউনিয়ন বড় ভূমিকা রেখেছিল। সে সময় পুরো পূর্ব পাকিস্তান অরক্ষিত ছিল। পাকিস্তান সরকার তার সেনাবাহিনীকে ঢাকা রক্ষার জন্য বলেনি। এই অবহেলা বাংলার মানুষ ভোলেনি। এই পথ বেয়েই ছয় দফা এবং স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে বাংলার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। ১৯৭১ সালে অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে পাকিস্তান যখন নিরস্ত্র বাংলার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তখন ভারতের মাটি ব্যবহার করে বাংলাদেশের মুক্তিসেনারা যুদ্ধ শুরু করেছিলেন এবং সে বছরের ডিসেম্বরে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সঙ্গে পেরে না ওঠায় পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।

কারগিল যুদ্ধকে মাথায় রেখেও বলা যায়, দুই যুদ্ধের পর বড় কোনো যুদ্ধ হয়নি এই দুই দেশের মধ্যে। ইতিমধ্যে পৃথিবীব্যাপী রাজনীতির মাঠে নানা ধরনের খেলোয়াড়ের আবির্ভাব হয়েছে। রাষ্ট্রপ্রধানদের আচরণে এসেছে পরিবর্তন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের আলোচনা প্রমাণ করে দেয়, কূটনীতির ধরনও বদলে গেছে। আন্তর্জাতিক মহলে ভারত ও পাকিস্তানের গ্রহণযোগ্যতা সমানে সমান নয়। ভারতের অর্থনীতির তুলনায় পাকিস্তানের অর্থনীতি দুর্বল। যুদ্ধের প্রস্তুতিকালে দেখা যাচ্ছে দুই দেশের আকাশপথে শত্রুদেশের বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, দুই দেশের যে বাণিজ্য হতো, সেটাও নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। ভারতের দিক থেকে হামলা হয়েছে পাকিস্তানে, পাকিস্তানও হয়তো এর যোগ্য জবাব দেওয়ার জন্য উদ্‌গ্রীব হয়ে উঠবে। তাতে যুদ্ধের মাঠ যথেষ্ট নাটকীয় হয়ে উঠবে বটে, কিন্তু দুই দেশের মানুষের জীবন হয়ে পড়বে দুর্বিষহ।

ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে দেখা যাবে, বহু বড় দেশই ছোট ছোট দেশকে তাদের ক্ষমতাবলয়ে আটকে রাখার চেষ্টা করছে। পৃথিবীব্যাপী শান্তির দূত খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। এ এক নতুন সময়ে এসে পৌঁছেছে পৃথিবী। শুধু যে বিষয়টি বদলায়নি, তা হলো, যুদ্ধে আসলে কেউ জয়ী হয় না। সবাই মিলে পরাজিত হয়। এ কথা কেউ মনে রাখে না বলেই যুদ্ধের ঘনঘটা থেকে রেহাই মেলে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

‘ফের ধর্ষণচেষ্টার ক্ষোভে’ বাবাকে খুন, ৯৯৯-এ কল দিয়ে আটকের অনুরোধ মেয়ের

আদালতের বিচারকাজে বাধা দেওয়ায় আইনজীবীর দণ্ড, ক্ষমা চেয়ে পার

আ. লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপির সদস্য হতে বাধা নেই: রিজভী

১৫ স্থাপনায় পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আকাশেই ধ্বংসের দাবি ভারতের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত