Ajker Patrika

গণটিকায় অব্যবস্থাপনা কাম্য নয়

সম্পাদকীয়
গণটিকায় অব্যবস্থাপনা কাম্য নয়

সময় যায়, আমরাও দাবি করি নানান খাতে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু কাজের সময় দেখা যায়, আমরা আসলে এখনো বেশ পিছিয়ে আছি। অনেক দূর যেতে হবে আমাদের। আমরা মনে করি যে অনেক পরিণত আমরা। বাস্তবে আমাদের কাজে তা প্রমাণ করে না।

এই যেমন গণটিকা দেওয়ার কার্যক্রম। কী অব্যবস্থাপনাই না হলো। খবরে জানা যায়, গণটিকার শুরুতেই গণভোগান্তি, তালিকা না থাকায় দলে দলে লোক এসেছেন, টিকা না পেয়ে ফেরত গেছেন অধিকাংশ লোক। টিকাকেন্দ্রে হাতাহাতি, পরিকল্পনার অভাব প্রকট—এ রকম অসংখ্য অভিযোগ।

এক ব্যক্তির শরীরে টিকা পুশ করেন রাজশাহী-৪ আসনের সাংসদ এনামুল হক। খবরে আরও জানা যায়, গণটিকার প্রথম দিনে বরাদ্দ টিকা নিতে পেরেছেন যত মানুষ, ফিরে গেছেন তার চেয়ে কয়েক গুণ। টিকা প্রয়োগে বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রাধান্য দেওয়ার কথা থাকলেও অনেক কেন্দ্রেই তা দেখা যায়নি। পাশাপাশি কেন্দ্রগুলোয় ছিল টিকা নিতে আসা মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এ ছাড়া টিকাদানে স্বজনপ্রীতি, প্রশাসনের তৎপরতার অভাব দেখা গেছে কেন্দ্রগুলোয়। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকেও এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি আগে টিকা পেতে, কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন নিয়ে মারামারি-হাতাহাতি ও জনপ্রতিনিধিকে লাঞ্ছিত করার ঘটনাও ঘটেছে।

কেন এমনটি হবে? হয়েছে। কারণ, যথাযথ পরিকল্পনার অভাব ছিল। আগে থেকে প্রতিটি কাজের বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা ছিল না। গতানুগতিক নির্দেশনা আর গা ছাড়া ভাবের কারণেই এমনটি হয়েছে বলে ধারণা করা যায়। বাংলাদেশে টিকা দেওয়ার সংস্কৃতি নতুন নয়। এখানে পাড়া, মহল্লায় কিংবা বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকা দেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে তৃণমূল পর্যন্ত। এ রকম একটি কাঠামো থাকার পরও করোনার টিকা দেওয়ায় ভোগান্তি ও অব্যবস্থাপনা মানা যায় না।

এখন তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। আগে থেকে যাঁদের টিকা দেওয়া হবে, তাঁদের সহজে নিবন্ধন করে নেওয়া যেত। সরকার না পারলে কোনো তৃতীয় পক্ষের সহায়তা নেওয়া যেত। যাঁরা অনলাইনে পারবেন না, তাঁদের জন্য টিকা সেন্টারেই পৃথক বুথে এক-দুদিন আগে থেকে নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা যেত অথবা স্থানীয় স্কুল বা কলেজকেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণনিবন্ধন করা যেত। এ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেওয়া যেত। তাঁরা শৃঙ্খলার কাজটি করতেন। তারপর টিকার পরিমাণমতো নিবন্ধিত মানুষকে টিকা দেওয়ার আহ্বান জানানো যেত। বুথ বাড়ানো যেত। প্রতিটি স্থানীয় স্কুলকে কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা যেত। যেটা হয়েছে, বুথ ছিল কম। ঘোষণায় কোনো নির্দেশনা ছিল না যে কতসংখ্যক লোককে একটি কেন্দ্রে সুযোগ দেওয়া যাবে। কোন এলাকার কত সংখ্যক লোক একটি বুথে যেতে পারবেন, তারও কোনো নির্দেশনা ছিল না। ফলে সবাই একসঙ্গে ভিড় করেছেন। বেশির ভাগই টিকা না পেয়ে ফিরে গেছেন।

সামনে আরও গণটিকা দেওয়া হতে পারে। এ জন্য একটি পরিকল্পিত কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। আগে থেকেই নিবন্ধনটা করে রাখতে হবে; যাতে যাঁরা নিবন্ধিত, তাঁরাই কেন্দ্রে যাবেন। সবাইকে না দিতে পারলে ডেকে নিয়ে কী লাভ? মানুষ যেন নিয়মমতো কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিয়ে ফিরতে পারেন, এ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

‘ফের ধর্ষণচেষ্টার ক্ষোভে’ বাবাকে খুন, ৯৯৯-এ কল দিয়ে আটকের অনুরোধ মেয়ের

আদালতের বিচারকাজে বাধা দেওয়ায় আইনজীবীর দণ্ড, ক্ষমা চেয়ে পার

আ. লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপির সদস্য হতে বাধা নেই: রিজভী

১৫ স্থাপনায় পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আকাশেই ধ্বংসের দাবি ভারতের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত