Ajker Patrika

গোষ্ঠীস্বার্থে বহু মানুষের স্বপ্ন নষ্ট করেছে এই প্ল্যাটফর্ম: দায়িত্ব ছেড়ে উমামা ফাতেমার পোস্ট

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৮ জুন ২০২৫, ১১: ৪৮
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর আনুষ্ঠানিক যাত্রার সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন সংগঠনটির সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। গত বুধবার অনুষ্ঠিত সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। একটি ফেসবুক পোস্টে উমামা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেতরের পরিস্থিতি, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, সুবিধাবাদ ও অনিয়মের নানা দিক তুলে ধরেছেন।

উল্লেখ্য, ঢাকার বাংলামোটরে রূপায়ণ টাওয়ারে গত বুধবার ভোটগ্রহণ শেষে এক বছরের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনটির সভাপতি হয়েছেন রশিদুল ইসলাম (রিফাত রশিদ); সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন মো. ইনামুল হাসান (হাসান ইমাম)।

জুলাই বিপ্লবের পর একটি রাজনৈতিক দল গঠনের পরও বৈষম্যবিরোধী ব্যানারে কাজ করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে উমামা বলেন, ‘দলীয় লেজুড় ও প্রেসক্রিপশনের বাইরে এই ব্যানারটি স্বাধীনভাবে কাজ করলে অনেকের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়ত। তাই আমার ওপর অনলাইন, অফলাইনে ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি করা হয় যাতে আমি এই ব্যানার নিয়ে কাজ না করি।’

তিনি অভিযোগ করেন, একসময়ের সহযোদ্ধারা পরিকল্পিতভাবে জুনিয়রদের ব্যবহার করে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার (Smear campaign) চালিয়েছে। তিনি লেখেন, ‘যে মানুষগুলোর সঙ্গে আমি পাশে দাঁড়ায়ে মিটিং করেছি, মিছিল করেছি তারাই পরিকল্পিতভাবে জুনিয়রদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে Smear campaign চালায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই তথাকথিত সহযোদ্ধারা মানুষকে টিস্যু পেপারের মতো ব্যবহার করে এবং প্রয়োজন ফুরালে ছুড়ে ফেলতে এক মুহূর্তও লাগে না।’

মার্চ-এপ্রিল মাসে প্ল্যাটফর্মের ভেতরের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি এটিকে ‘বদ্ধ জলাশয়’ এবং ‘পোকার মতো সুবিধাবাদীদের খেয়ে ফেলার’ মতো শব্দ ব্যবহার করেন। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন শাখা কমিটিতে অনেক ‘গুডউইল’-এর মানুষ থাকলেও তাঁরা এই সুবিধাবাদীদের কাছে জায়গা করতে পারেনি।

মুখপাত্র হিসেবে তাঁর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মুখপাত্র হিসেবে বৈষম্যবিরোধীর পেজের এক্সেস থাকার কথা আমার কাছে, আমার দায়িত্ব হওয়ার কথা মিডিয়া হ্যান্ডলিং। পেজের এক্সেস দেওয়া তো দূরের কথা এই পেজ থেকে মার্চ মাসে আমার বিরুদ্ধে পর্যন্ত পোস্ট হয়েছে।’ তিনি আরও জানান, জেলা-উপজেলা কমিটিগুলোর অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ উঠলে তিনি সাবেক আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের কাছে আপত্তি জানালেও কোনো উত্তর পাননি।

কাউন্সিল ভোট নিয়েও তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কারণ যারা কাজ করতে চায় তাদের অনেকেই প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাননি এবং ভোটারদের বেশির ভাগই একটি রাজনৈতিক দলের লোক ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে ভোট দিলেও ফলাফলের পর তিনি ‘লজ্জিত’ হন। কারণ নির্বাচনে অংশ না নেওয়া একজন এসে কাউন্সিলের সদস্য হয়ে গেছেন। তিনি এটিকে ‘স্বেচ্ছাচারিতা, স্ট্যান্ডবাজী, ভাই-ব্রাদার কোরামের খেলা’ বলে অভিহিত করেন।

নিজের পোস্টে জুলাই অভ্যুত্থানের স্বপ্ন নিয়ে প্ল্যাটফর্মে যোগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে উমামা ফাতেমা বলেন, ‘প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার আগে আমাকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল আমি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারব। কিন্তু প্ল্যাটফর্মের মুখপাত্র হিসেবে যাওয়ার পরেই টের পাই সংস্কার, জুলাই, শহীদ, আহত এসব মুখের বুলিমাত্র।’

সবশেষে তিনি বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্ম থেকে সব ধরনের সমর্থন ও কাউন্সিলে প্রদত্ত ভোট প্রত্যাহার করে নেন। যারা তাঁর সঙ্গে ‘নোংরামি’ করেছে এবং ‘অভ্যুত্থানকে বাজারদরে কেনাবেচা করেছে’, তাদের তিনি কখনো ক্ষমা করবেন না বলে জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, যারা পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন, তাঁরা পড়ালেখায় মনোযোগ দেবেন এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাবেন।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

যুদ্ধের পর এ যেন এক নতুন ইরান, জনগণের মতো বদলে গেছে সরকারও

কর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার নিষিদ্ধ করল বিমান বাংলাদেশ

বংশরক্ষায় মৃত ছেলের শুক্রাণু চান মা, সংরক্ষণের নির্দেশ মুম্বাই হাইকোর্টের

আমাকে ধর্ষণের সময় পাশে দাঁড়িয়ে দেখছিল দুই যুবক: ধর্ষণের শিকার তরুণী

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত