Ajker Patrika

রিয়াদ কি একা

সম্পাদকীয়
রিয়াদ কি একা

ধরা পড়েছেন বলেই রিয়াদকে নিয়ে তথ্য বের হচ্ছে। ধরা না পড়লে কেউ জানতেই পারত না এই সমন্বয়কের মহিমা। এ রকম কত সমন্বয়ক কত জায়গায় চাঁদাবাজি করে বেড়াচ্ছেন, সে হিসাব কি কারও কাছে আছে? বীর বিক্রমেই তো গুলশানে চাঁদা আদায় করতে গিয়েছিল রিয়াদ অ্যান্ড গং।

সিসিটিভিতে তাদের দেহভাষাও দেখা গেছে। কী নির্ভয়, বীরত্বপূর্ণ অবয়বে তাঁরা বসে রয়েছেন সোফায়। আওয়ামী লীগের এমপি ছিলেন জেনে রিয়াদ গং গুলশানের এই বাড়িটিকে করেছিল তাদের টার্গেট। অর্থাৎ, আওয়ামী লীগ করলেই হলো, তাঁকে চাঁদাবাজির শিকার হতে হবে। কোনো বিচার নয়, আদালত নয়, রায় নয়, মব ভায়োলেন্সের ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া! নতুন যে খবর বেরিয়েছে, তাতে এই গুণধরের আরেকটি বীরত্বগাথা ফাঁস হয়েছে। রাজধানীর গ্রিন রোড এলাকায় অবস্থিত রংপুর-৬ আসনের সাবেক এমপির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে রিয়াদ অ্যান্ড গং করায়ত্ত করেছিল ৫ কোটি টাকার চেক। যে ১১টি চেক নিয়েছিল রিয়াদ অ্যান্ড গং, তার চারটি চেক উদ্ধার করেছে পুলিশ। ব্যাংকে টাকা না থাকায় সেগুলো ভাঙাতে পারেননি এই বীরপুরুষ।। কিন্তু সুদিনের আশায় সেই চেকগুলো রেখে দিয়েছিলেন নিজের কাছে।

রিয়াদের গুলশান-কীর্তি ফাঁস হওয়ার পরপরই বহু মানুষ ছুটে গিয়েছেন রিয়াদের গ্রামের বাড়িতে। তাঁরা ভিডিও করেছেন। ইউটিউবে শোনা গেছে রিয়াদের বাবা, মা, এলাকাবাসীর বক্তব্য। আঙুল ফুলে কীভাবে কলাগাছ হওয়া যায়, তা তাঁদের বর্ণনা থেকেই প্রকাশিত হয়েছে। হঠাৎ করেই রিয়াদ টাকার সাগরে ভাসা শুরু করেছেন, তার প্রকাশও ঘটিয়েছেন বাড়ি বানানোর কাজে হাত দিয়ে। কখনো কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না। এবার তাঁরা কোরবানিও দিয়েছেন। আরও কী করেছেন, কে জানে! সমন্বয়ক হওয়ার অর্থ যদি হয় ফুলে-ফেঁপে জমিদার হয়ে যাওয়া, তাহলে তো কথাই নেই। এই সমন্বয়কেরা গণ-আন্দোলনের যে ‘সুফল’ পেলেন, তা কি ছাত্র-জনতার আর কেউ পেয়েছেন?

তাহলে কোন পরিবর্তন হলো? যেভাবে মবতন্ত্র আর চাঁদাবাজি চলছে সারা দেশে, তা থেকে রক্ষার উপায় কী? বিগত শতাব্দীর বড় একটা সময়জুড়ে তরুণেরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বামপন্থার দিকে ঝুঁকতেন। সাম্যবাদ তাঁদের আকর্ষণ করত। পৃথিবীর সব দেশেই বামপন্থীরা যৌক্তিকভাবে তাঁদের অবস্থান তুলে ধরতেন এবং ন্যায়ভিত্তিক বিশ্ব প্রতিষ্ঠার কথা বলতেন। তরুণ মানেই মানবতার পক্ষে দাঁড়ানো মানুষ—এই কথাটাই বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন? এই গণ-আন্দোলন আমাদের কোন বার্তা দিল? যে তরুণদের ওপর ছিল ভরসা, সেই তরুণদের একটি অংশ প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে মবতন্ত্র, চাঁদাবাজি, মামলাবাজির মাধ্যমে প্রমাণ করেছে, নৈতিক ভিত্তি না থাকলে তরুণেরাও বিপথে যেতে পারেন। সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হলো, এই মবতন্ত্র ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার জোরালোভাবে দাঁড়ায়নি। বরং এ ব্যাপারে তাদের মৌনতা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। মববাজদের প্রেশার গ্রুপ হিসেবে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা তারই একটি উদাহরণ। রিয়াদদের রুখতে হলে তাঁদের ব্যাপারে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ.লীগের এমপি শাম্মীর বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি ও ভাগ-বাঁটোয়ারার বিবরণ দিলেন রিয়াদ

কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা: কে এই ফ্লাইট এক্সপার্ট এমডি সালমান, বাবার হাত ধরে যাঁর উত্থান

গঙ্গাচড়ায় হিন্দুপল্লিতে হামলাকারীদের উসকানি, স্থানীয় সাংবাদিক গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জে হর্টিকালচারের উপপরিচালকের বিরুদ্ধে ‘সমকামিতার’ অভিযোগ, মামলা বাবুর্চির

অতিরিক্ত ফি দাবি করায় বিমানবন্দর স্টাফের চোয়াল ভেঙে দিলেন যাত্রী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত