সেলিম জাহান
আমাদের বরিশালের বাড়িতে বিশাল দুই কৃষ্ণচূড়ার গাছ ছিল বাড়ির প্রধান ফটকের দুপাশে। ষাটের দশকে কোনো এক ঘোর বর্ষায় আমিই লাগিয়েছিলাম মনে আছে।
কিছুদিনের মধ্যে চারাগাছ দুটি বিশাল মহীরুহে পরিণত হলো। বসন্তে লাল হয়ে যেত। বারান্দার লাল বেঞ্চিতে বসে দেখতাম আর আমার চোখে এক ঘোর নেমে আসত। বাড়ির সামনের সীমান্তের দুটি কোনায় বাবার বাগান সহকারী রহম আলী ভাই হলুদ রঙের রাধাচূড়া গাছ লাগিয়ে দিয়েছিলেন। আসলে আমাদের বাড়ির প্রধান ফটকের দুপাশে কয়েক বছর পরপরই গাছের বদলি হতো। একসময়ে সেখানে দুটি বিশালকায় পাম গাছ ছিল, একসময় দুটি আকাশছোঁয়া ইউক্যালিপটাস এল, শেষপর্যন্ত এল দুটি মেহগনি।
আর ফটকের একেবারে দুই স্তম্ভঘেঁষে একদিকে ছিল একটি ঝাঁকড়া বকুল গাছ আর অন্যদিকে একটি কামিনী গাছ। বলে নেই, এসবই আমার পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফসল। রবীন্দ্রনাথের যেমন বাড়ি বদলানোর বাতিক ছিল, আমার তেমনি ছিল গাছ বদলানোর বাতিক।
ঢাকায় যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এলাম, তখন অনেক কৃষ্ণচূড়া গাছ দেখেছি, কিন্তু আমার স্মৃতিতে গেঁড়ে বসে আছে শাহবাগের কাছ থেকে তেজগাঁওয়ে পুরোনো বিমানবন্দর পর্যন্ত পুরো সড়কের মাঝের পথদ্বীপে কৃষ্ণচূড়ার সারি। ফাগুনে আগুন লেগে যেত পুরো পথে। আর আমার মন কাড়ত উপাচার্যের বাড়ির উল্টো দিকে ফুলার রোডের সপুষ্প জারুল গাছগুলো। বহু স্মৃতি আমার সে গাছগুলের নিচ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার।
এর মধ্যে কোনো একসময়ে কলাভবন আর প্রশাসনিক ভবনের উম্মুক্ত জায়গায় লাগালে হলো কৃষ্ণচূডা, কনকচাঁপা আর কদমের গাছ। আশির দশকে উচ্চশিক্ষা সমাপান্তে দেশে ফিরে দেখি, তারা বড় হয়ে গেছে, ফুল বিলাচ্ছে। সে সময়ে শিক্ষকতার কালে বসন্তের সময়ে প্রশাসনিক ভবনের সমান্তরাল কলাভবনের তিন তলার শ্রেণিকক্ষগুলোতে ব্যষ্টিক বা সামষ্টিক অর্থনীতি পড়াতে পড়াতে আমার চোখ চলে যেত আগুনরঙা কৃষ্ণচূড়া গাছগুলোর দিকে। তাকিয়ে থাকতাম, আনমনা হয়ে যেতাম। আমার তখনকার শিক্ষার্থীরা আমার এ রোগের কথা জানে।
পরবর্তী সময়ে জাতিসংঘে কাজ করার সময়ে একবার মরিশাসে গিয়ে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। পুরো দেশটিতে যেন আগুন লেগেছে। এত কৃষ্ণচূড়া আমি আর কোথাও দেখিনি। আরও ফুল ছিল নিশ্চয়ই সেখানে। কিন্তু আমার চোখে কৃষ্ণচূড়া ভিন্ন আর কিছুই চোখে পড়েনি।
প্রায় ৩০ বছর আগে এক ফাগুনে টাঙ্গাইল যাচ্ছিলাম এক বসন্ত উৎসবে।এক জায়গায় দেখি একটি উত্তরযৌবনা ভাঙাচোরা পুরোনা কৃষ্ণচূড়া গাছ হাঁটুভাঙা ‘দ’ হয়ে পড়ে আছে পথের পাশে। ডালগুলো মরে গেছে, পাতার কোনো চিহ্ন নেই। শুধু ছোট্ট একটি ডালে ঘন হয়ে ছোট্ট এক থোকা কৃষ্ণচূড়া ফুটে আছে। ‘আরেক ফাল্গুনে’ তা থাকবে কি না, কে জানে।
আমাদের বরিশালের বাড়িতে বিশাল দুই কৃষ্ণচূড়ার গাছ ছিল বাড়ির প্রধান ফটকের দুপাশে। ষাটের দশকে কোনো এক ঘোর বর্ষায় আমিই লাগিয়েছিলাম মনে আছে।
কিছুদিনের মধ্যে চারাগাছ দুটি বিশাল মহীরুহে পরিণত হলো। বসন্তে লাল হয়ে যেত। বারান্দার লাল বেঞ্চিতে বসে দেখতাম আর আমার চোখে এক ঘোর নেমে আসত। বাড়ির সামনের সীমান্তের দুটি কোনায় বাবার বাগান সহকারী রহম আলী ভাই হলুদ রঙের রাধাচূড়া গাছ লাগিয়ে দিয়েছিলেন। আসলে আমাদের বাড়ির প্রধান ফটকের দুপাশে কয়েক বছর পরপরই গাছের বদলি হতো। একসময়ে সেখানে দুটি বিশালকায় পাম গাছ ছিল, একসময় দুটি আকাশছোঁয়া ইউক্যালিপটাস এল, শেষপর্যন্ত এল দুটি মেহগনি।
আর ফটকের একেবারে দুই স্তম্ভঘেঁষে একদিকে ছিল একটি ঝাঁকড়া বকুল গাছ আর অন্যদিকে একটি কামিনী গাছ। বলে নেই, এসবই আমার পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফসল। রবীন্দ্রনাথের যেমন বাড়ি বদলানোর বাতিক ছিল, আমার তেমনি ছিল গাছ বদলানোর বাতিক।
ঢাকায় যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এলাম, তখন অনেক কৃষ্ণচূড়া গাছ দেখেছি, কিন্তু আমার স্মৃতিতে গেঁড়ে বসে আছে শাহবাগের কাছ থেকে তেজগাঁওয়ে পুরোনো বিমানবন্দর পর্যন্ত পুরো সড়কের মাঝের পথদ্বীপে কৃষ্ণচূড়ার সারি। ফাগুনে আগুন লেগে যেত পুরো পথে। আর আমার মন কাড়ত উপাচার্যের বাড়ির উল্টো দিকে ফুলার রোডের সপুষ্প জারুল গাছগুলো। বহু স্মৃতি আমার সে গাছগুলের নিচ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার।
এর মধ্যে কোনো একসময়ে কলাভবন আর প্রশাসনিক ভবনের উম্মুক্ত জায়গায় লাগালে হলো কৃষ্ণচূডা, কনকচাঁপা আর কদমের গাছ। আশির দশকে উচ্চশিক্ষা সমাপান্তে দেশে ফিরে দেখি, তারা বড় হয়ে গেছে, ফুল বিলাচ্ছে। সে সময়ে শিক্ষকতার কালে বসন্তের সময়ে প্রশাসনিক ভবনের সমান্তরাল কলাভবনের তিন তলার শ্রেণিকক্ষগুলোতে ব্যষ্টিক বা সামষ্টিক অর্থনীতি পড়াতে পড়াতে আমার চোখ চলে যেত আগুনরঙা কৃষ্ণচূড়া গাছগুলোর দিকে। তাকিয়ে থাকতাম, আনমনা হয়ে যেতাম। আমার তখনকার শিক্ষার্থীরা আমার এ রোগের কথা জানে।
পরবর্তী সময়ে জাতিসংঘে কাজ করার সময়ে একবার মরিশাসে গিয়ে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। পুরো দেশটিতে যেন আগুন লেগেছে। এত কৃষ্ণচূড়া আমি আর কোথাও দেখিনি। আরও ফুল ছিল নিশ্চয়ই সেখানে। কিন্তু আমার চোখে কৃষ্ণচূড়া ভিন্ন আর কিছুই চোখে পড়েনি।
প্রায় ৩০ বছর আগে এক ফাগুনে টাঙ্গাইল যাচ্ছিলাম এক বসন্ত উৎসবে।এক জায়গায় দেখি একটি উত্তরযৌবনা ভাঙাচোরা পুরোনা কৃষ্ণচূড়া গাছ হাঁটুভাঙা ‘দ’ হয়ে পড়ে আছে পথের পাশে। ডালগুলো মরে গেছে, পাতার কোনো চিহ্ন নেই। শুধু ছোট্ট একটি ডালে ঘন হয়ে ছোট্ট এক থোকা কৃষ্ণচূড়া ফুটে আছে। ‘আরেক ফাল্গুনে’ তা থাকবে কি না, কে জানে।
রাজনীতির মাঠটাকে যাঁরা অশ্লীল বাক্যবাণের চারণক্ষেত্র বানিয়েছিলেন, তাঁদেরই একজন গ্রেপ্তার হয়েছে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে। উত্তরা থেকে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কাহিনি সেই আগের মতোই।
৩ মিনিট আগেড. সাজ্জাদ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এই বিভাগ থেকেই অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে নরওয়ের বারগেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল এবং অস্ট্রেলিয়ার নিউ ইংল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাইব্রিড...
১ দিন আগেবাংলাদেশে প্রায় ৬ হাজার প্রজাতির উদ্ভিদ আছে, যার মধ্যে কমপক্ষে ৩০০ প্রজাতির বিদেশি উদ্ভিদ রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেসব গাছপালা রয়েছে, তার ৪১ শতাংশই বিদেশি উদ্ভিদ। ঢাকার সড়ক বিভাজকে লাগানো ৫৬ শতাংশ গাছ বিদেশি।
১ দিন আগেসাতক্ষীরার কালীগঞ্জে পাঁচ বছর বয়সী যে শিশুটি গত বৃহস্পতিবার দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে, সে বেঁচে আছে বটে; কিন্তু শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শিশুটির অবস্থা স্থিতিশীল ছিল না। চিকিৎসকেরা শিশুটির শুশ্রূষা করছেন।
১ দিন আগে