অর্ণব সান্যাল
কথা হচ্ছিল আমজনতাকে নিয়ে। জনতার আগে আম যেহেতু আছে, সেহেতু ফল হিসেবে একে কামড়েও খাওয়া যায়, চুষে আঁটিটা ছিবড়ে করে দেওয়াও সম্ভব। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতের একটু আগে এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে হুট করেই বাড়িয়ে দেওয়া হলো জ্বালানি তেলের দাম। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমতে শুরু করেছে, কিন্তু ডলারের সংকট ও বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণ দেখিয়েই দেশে জ্বালানি তেলের দাম প্রতি লিটারে ৩৪ থেকে ৪৬ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। শুক্রবার রাত ১২টা থেকেই নতুন এই দাম কার্যকর হয়েছে। এখন ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনের খুচরা মূল্য হবে প্রতি লিটার ১১৪ টাকা, পেট্রল ১৩০ ও অকটেন ১৩৫ টাকা। শতাংশের হিসাবে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৮০ টাকা থেকে ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। একইভাবে পেট্রলের দাম ৮৬ টাকা থেকে ৫১ দশমিক ১৬ এবং অকটেনের দাম ৮৯ টাকা থেকে ৫১ দশমিক ৬৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
এতেই ক্ষান্ত নয় কর্তৃপক্ষ। সরকারি সূত্র আভাস দিয়েছে, জ্বালানি তেলের পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। তবে সরকার এই মূল্যবৃদ্ধিকে সমন্বয় হিসেবে দেখাতে চাইছে। কিন্তু সাধারণদের আয় ও ব্যয়ের সমন্বয় কীভাবে হবে?
অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছে, আমজনতা এতসব সিদ্ধান্ত শুনতে শুনতে হাসবে নাকি কাঁদবে, সেটি নির্ধারণ করতেই বিপদগ্রস্ত হতে পারে। অধিক শোকে পাথর হয়ে কোনো মানুষ হাসতেও পারে! কারণ আপনি যদি এমন মাত্রায় অসহায় হয়ে পড়েন, যেখানে আপনার গর্ত থেকে উত্তরণের কোনো উপায়ই আর মাথায় আসছে না, তখন বিকারগ্রস্তের মতো অট্টহাসি দেওয়া ছাড়া আর কীইবা করার থাকে?
কারণ ব্যয় যেভাবে বাড়ছে, আপনার আয় সেভাবে বাড়ছে না। সামগ্রিক অর্থে শ্রমিকের বেতন বাড়ানোর বা স্বার্থ সংরক্ষণের কোনো কার্যকর উদ্যোগ এ দেশে নেই। নেই তাঁদের আয়-ব্যয় সমন্বয়ের কোনো উদ্যোগও। সরকারি শ্রমিকেরা তা-ও সামাজিকভাবে নিরাপত্তা জালের ভেতরে থাকেন। তাঁরা সরকারি বাসা পান, কেউ কেউ রেশনও পান। অর্থাৎ, নানাভাবে তাঁদের টিকে থাকার রসদ জোগায় খোদ সরকারই, জনগণের টাকায়। কিন্তু বেসরকারি চাকরিতে যাঁরা থাকেন, তাঁদের পুরোপুরি বাজারব্যবস্থা ও মালিকশ্রেণির খেয়ালখুশির ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ দেশে অদ্ভুতভাবে শ্রেণিবিশেষে একাধিক নীতি অনুসরণের দৃষ্টান্ত আমরা দেখতে পাচ্ছি দীর্ঘকাল ধরে। সুবিধা বুঝে কোথাও মুক্তবাজার অর্থনীতি অনুসৃত হয়, আবার কোথাও সংরক্ষণনীতি অনুসরণ করা হয় এবং তা করা হয় জেনে-বুঝে ঠান্ডা মাথায়! আর এভাবেই এ দেশে সৃষ্টি হয়েছে বৈষম্য এবং চুষে খাওয়ার যোগ্য মানুষের দল। স্বাভাবিকভাবেই দ্বিতীয়টির পাল্লা বেজায় ভারী এবং আপাতদৃষ্টিতে ধারণা করা বাঞ্ছনীয় যে সেটিও ভেবেচিন্তেই তৈরি!
এই দেশটা অনেক দিন ধরেই কোনো কোম্পানিতে প্রচলিত নির্বাহী আদেশের মতো করে চলছে। জিনিসপত্রের দাম এই অঞ্চলে যখন খুশি বাড়ে, জিম্মিকাণ্ডও চলে। এই যেমন শুক্রবার রাত ও শনিবার সকালের কথা ভাবুন। আপনার মোটরবাইক আছে, তেলের দামের অভাবিত মূল্যবৃদ্ধির কথা শুনে আপনি আগের দামে কিছু তেল কিনতে চলে গেলেন পাম্পে। সীমিত আয়ের মানুষ তেমনটাই তো ভাববে! কিন্তু গিয়ে দেখলেন পাম্পই বন্ধ। কারণ দাম বাড়ার কথা শুনে পাম্পের মালিকেরাও বলতে শুরু করেছেন তেল নেই। ঝোপ বুঝে কোপ মারার দেশে এমন ঐতিহ্য বেশ পুরোনো। ওদিকে শনিবার ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই গণপরিবহনের মালিক-শ্রমিকেরা বলে দিলেন—‘আমরা চলব না’। তাতেও হেঁটে হেঁটে ঘর্মাক্ত হওয়ার দায় শুধুই সাধারণ নাগরিকদের। কর্তৃপক্ষের তাতে ভ্রুক্ষেপ থাকে না। ব্যবস্থাটাই এমন করা হয়েছে যে, তাতে সব অসাধারণদের পকেট ভরবে আর পকেটে টান পড়বে শুধুই আমজনতার। সব ভোগান্তিও তাদেরই। এভাবে গলায় ছুরি ঠেকানো আটকানোর কোনো প্রতিকারের ব্যবস্থাও কর্তৃপক্ষের থাকে না। এই একই কাজ আমরা সয়াবিন তেলের দাম ডাবল সেঞ্চুরি করার সময়ও দেখেছি। চাইলে উদাহরণ আরও দেওয়া যাবে।
শুধু সরবে নয়, এখন সাধারণের পকেটে জোর করে হাত গলানোর লাঞ্ছনা নীরবেও হয়। গত কয়েক মাসে ইউক্রেন-সংকট, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধিকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে যে অসংখ্য পণ্যের দাম বাড়িয়ে নেওয়া হলো চুপেচাপে, সেটি হয়তো শুধু বাজার করা নাগরিকই বুঝতে পারেন। এসব নানামাত্রিক ‘অজুহাত’ দেখিয়ে দেশে যেমন বাটারবনের দাম বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে দইয়ের দামও! এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে, দই তৈরির কাঁচামালও কি বিশ্ববাজার থেকে আসে? নাকি দই জমাট বাঁধানোর ব্যাকটেরিয়া আসে ইউক্রেন থেকে?
ওদিকে আবার চালের দামেও দাবানলের কথা শোনা যাচ্ছে জোরেশোরে। আমাদের ক্রিকেটাররা যেখানে ব্যর্থ, সেখানে কাঁচা মরিচ থেকে চাল—সবাই এ দেশে সেঞ্চুরি-ডাবল সেঞ্চুরিই করতে চায়! করবে না-ই বা কেন? এমন ফ্ল্যাট পিচ আর পাড়ার বোলার কোথায় মেলে? অন্যদিকে আম্পায়াররা তো হাত তুলে বসেই আছেন ছক্কা জানান দিতে!
এত কিছুর চাপে পিষ্ট হতে হতেই আমাদের মোবাইল ফোনে এসএমএস রূপে আসে আয়করের রিটার্ন ব্যাংকে জমা দেওয়ার বাধ্যতামূলক নির্দেশনা। একেবারে সেই বিখ্যাত চলচ্চিত্রের কল্পিত রাজ্যের মতো ‘ভরপেট না-ও খাই, রাজকর দেওয়া চাই’!
অন্যদিকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হবে কি হবে না, সেই বিতর্ক এখনো চলমান। কেউ বলছেন, হতে পারে। কেউ উড়িয়ে দিয়ে বলছেন, ‘দূর, কখনো সম্ভব না’। এক পক্ষ হয়তো রাজনৈতিক কারণে দাবি করছেন, অন্য পক্ষ হয়তো ভালোবাসা থেকেই সাবধান করছেন। কিন্তু আরেক পক্ষ একে নিয়েছেন কাদা হিসেবে, তারা তাই বাকি সবাইকে উড়িয়ে দিতেই মরিয়া। কারণ তাতে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার বিষয়টি ইচ্ছে করেই আনা হচ্ছে। সবকিছুই দুর্নাম ও সুনামে ভাগাভাগি হচ্ছে। ফলে আসল সমাধানে কেউ আর যাচ্ছেন না। শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া কেউ কেউ দাবি করছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই জ্বালানি তেলের দাম কমবে, কমবে ডলারের দাম। কিন্তু মাঝখানে বাড়িয়ে নেওয়া পণ্যগুলোর দাম কমবে তো? বাস-ট্রাকের বাড়িয়ে নেওয়া ভাড়া কমবে তো? আপনার-আমার নিত্যদিনের খাবি খাওয়া কমবে তো?
এসব প্রশ্নের উত্তর আমরা সত্যিই জানি না। এখনো পর্যন্ত এ দেশের বাজারব্যবস্থায় কোনো পণ্যের দাম একবার বাড়লে তা কমে স্বাভাবিক হওয়ার নজির তো নেই। আমরা কখনো দেখিনি তা বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষের কড়া ও উৎসাহী হস্তক্ষেপ। ফলে সাধারণের আশান্বিত হওয়ার সুযোগ খুবই কম। আর সেই আক্ষেপেই মনে জাগে একটি অসহায় প্রশ্ন—আমাদের চুষে খাবেন, নাকি চিবিয়ে?
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
কথা হচ্ছিল আমজনতাকে নিয়ে। জনতার আগে আম যেহেতু আছে, সেহেতু ফল হিসেবে একে কামড়েও খাওয়া যায়, চুষে আঁটিটা ছিবড়ে করে দেওয়াও সম্ভব। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতের একটু আগে এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে হুট করেই বাড়িয়ে দেওয়া হলো জ্বালানি তেলের দাম। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমতে শুরু করেছে, কিন্তু ডলারের সংকট ও বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণ দেখিয়েই দেশে জ্বালানি তেলের দাম প্রতি লিটারে ৩৪ থেকে ৪৬ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। শুক্রবার রাত ১২টা থেকেই নতুন এই দাম কার্যকর হয়েছে। এখন ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনের খুচরা মূল্য হবে প্রতি লিটার ১১৪ টাকা, পেট্রল ১৩০ ও অকটেন ১৩৫ টাকা। শতাংশের হিসাবে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৮০ টাকা থেকে ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। একইভাবে পেট্রলের দাম ৮৬ টাকা থেকে ৫১ দশমিক ১৬ এবং অকটেনের দাম ৮৯ টাকা থেকে ৫১ দশমিক ৬৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
এতেই ক্ষান্ত নয় কর্তৃপক্ষ। সরকারি সূত্র আভাস দিয়েছে, জ্বালানি তেলের পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। তবে সরকার এই মূল্যবৃদ্ধিকে সমন্বয় হিসেবে দেখাতে চাইছে। কিন্তু সাধারণদের আয় ও ব্যয়ের সমন্বয় কীভাবে হবে?
অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছে, আমজনতা এতসব সিদ্ধান্ত শুনতে শুনতে হাসবে নাকি কাঁদবে, সেটি নির্ধারণ করতেই বিপদগ্রস্ত হতে পারে। অধিক শোকে পাথর হয়ে কোনো মানুষ হাসতেও পারে! কারণ আপনি যদি এমন মাত্রায় অসহায় হয়ে পড়েন, যেখানে আপনার গর্ত থেকে উত্তরণের কোনো উপায়ই আর মাথায় আসছে না, তখন বিকারগ্রস্তের মতো অট্টহাসি দেওয়া ছাড়া আর কীইবা করার থাকে?
কারণ ব্যয় যেভাবে বাড়ছে, আপনার আয় সেভাবে বাড়ছে না। সামগ্রিক অর্থে শ্রমিকের বেতন বাড়ানোর বা স্বার্থ সংরক্ষণের কোনো কার্যকর উদ্যোগ এ দেশে নেই। নেই তাঁদের আয়-ব্যয় সমন্বয়ের কোনো উদ্যোগও। সরকারি শ্রমিকেরা তা-ও সামাজিকভাবে নিরাপত্তা জালের ভেতরে থাকেন। তাঁরা সরকারি বাসা পান, কেউ কেউ রেশনও পান। অর্থাৎ, নানাভাবে তাঁদের টিকে থাকার রসদ জোগায় খোদ সরকারই, জনগণের টাকায়। কিন্তু বেসরকারি চাকরিতে যাঁরা থাকেন, তাঁদের পুরোপুরি বাজারব্যবস্থা ও মালিকশ্রেণির খেয়ালখুশির ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ দেশে অদ্ভুতভাবে শ্রেণিবিশেষে একাধিক নীতি অনুসরণের দৃষ্টান্ত আমরা দেখতে পাচ্ছি দীর্ঘকাল ধরে। সুবিধা বুঝে কোথাও মুক্তবাজার অর্থনীতি অনুসৃত হয়, আবার কোথাও সংরক্ষণনীতি অনুসরণ করা হয় এবং তা করা হয় জেনে-বুঝে ঠান্ডা মাথায়! আর এভাবেই এ দেশে সৃষ্টি হয়েছে বৈষম্য এবং চুষে খাওয়ার যোগ্য মানুষের দল। স্বাভাবিকভাবেই দ্বিতীয়টির পাল্লা বেজায় ভারী এবং আপাতদৃষ্টিতে ধারণা করা বাঞ্ছনীয় যে সেটিও ভেবেচিন্তেই তৈরি!
এই দেশটা অনেক দিন ধরেই কোনো কোম্পানিতে প্রচলিত নির্বাহী আদেশের মতো করে চলছে। জিনিসপত্রের দাম এই অঞ্চলে যখন খুশি বাড়ে, জিম্মিকাণ্ডও চলে। এই যেমন শুক্রবার রাত ও শনিবার সকালের কথা ভাবুন। আপনার মোটরবাইক আছে, তেলের দামের অভাবিত মূল্যবৃদ্ধির কথা শুনে আপনি আগের দামে কিছু তেল কিনতে চলে গেলেন পাম্পে। সীমিত আয়ের মানুষ তেমনটাই তো ভাববে! কিন্তু গিয়ে দেখলেন পাম্পই বন্ধ। কারণ দাম বাড়ার কথা শুনে পাম্পের মালিকেরাও বলতে শুরু করেছেন তেল নেই। ঝোপ বুঝে কোপ মারার দেশে এমন ঐতিহ্য বেশ পুরোনো। ওদিকে শনিবার ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই গণপরিবহনের মালিক-শ্রমিকেরা বলে দিলেন—‘আমরা চলব না’। তাতেও হেঁটে হেঁটে ঘর্মাক্ত হওয়ার দায় শুধুই সাধারণ নাগরিকদের। কর্তৃপক্ষের তাতে ভ্রুক্ষেপ থাকে না। ব্যবস্থাটাই এমন করা হয়েছে যে, তাতে সব অসাধারণদের পকেট ভরবে আর পকেটে টান পড়বে শুধুই আমজনতার। সব ভোগান্তিও তাদেরই। এভাবে গলায় ছুরি ঠেকানো আটকানোর কোনো প্রতিকারের ব্যবস্থাও কর্তৃপক্ষের থাকে না। এই একই কাজ আমরা সয়াবিন তেলের দাম ডাবল সেঞ্চুরি করার সময়ও দেখেছি। চাইলে উদাহরণ আরও দেওয়া যাবে।
শুধু সরবে নয়, এখন সাধারণের পকেটে জোর করে হাত গলানোর লাঞ্ছনা নীরবেও হয়। গত কয়েক মাসে ইউক্রেন-সংকট, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধিকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে যে অসংখ্য পণ্যের দাম বাড়িয়ে নেওয়া হলো চুপেচাপে, সেটি হয়তো শুধু বাজার করা নাগরিকই বুঝতে পারেন। এসব নানামাত্রিক ‘অজুহাত’ দেখিয়ে দেশে যেমন বাটারবনের দাম বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে দইয়ের দামও! এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে, দই তৈরির কাঁচামালও কি বিশ্ববাজার থেকে আসে? নাকি দই জমাট বাঁধানোর ব্যাকটেরিয়া আসে ইউক্রেন থেকে?
ওদিকে আবার চালের দামেও দাবানলের কথা শোনা যাচ্ছে জোরেশোরে। আমাদের ক্রিকেটাররা যেখানে ব্যর্থ, সেখানে কাঁচা মরিচ থেকে চাল—সবাই এ দেশে সেঞ্চুরি-ডাবল সেঞ্চুরিই করতে চায়! করবে না-ই বা কেন? এমন ফ্ল্যাট পিচ আর পাড়ার বোলার কোথায় মেলে? অন্যদিকে আম্পায়াররা তো হাত তুলে বসেই আছেন ছক্কা জানান দিতে!
এত কিছুর চাপে পিষ্ট হতে হতেই আমাদের মোবাইল ফোনে এসএমএস রূপে আসে আয়করের রিটার্ন ব্যাংকে জমা দেওয়ার বাধ্যতামূলক নির্দেশনা। একেবারে সেই বিখ্যাত চলচ্চিত্রের কল্পিত রাজ্যের মতো ‘ভরপেট না-ও খাই, রাজকর দেওয়া চাই’!
অন্যদিকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হবে কি হবে না, সেই বিতর্ক এখনো চলমান। কেউ বলছেন, হতে পারে। কেউ উড়িয়ে দিয়ে বলছেন, ‘দূর, কখনো সম্ভব না’। এক পক্ষ হয়তো রাজনৈতিক কারণে দাবি করছেন, অন্য পক্ষ হয়তো ভালোবাসা থেকেই সাবধান করছেন। কিন্তু আরেক পক্ষ একে নিয়েছেন কাদা হিসেবে, তারা তাই বাকি সবাইকে উড়িয়ে দিতেই মরিয়া। কারণ তাতে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার বিষয়টি ইচ্ছে করেই আনা হচ্ছে। সবকিছুই দুর্নাম ও সুনামে ভাগাভাগি হচ্ছে। ফলে আসল সমাধানে কেউ আর যাচ্ছেন না। শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া কেউ কেউ দাবি করছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই জ্বালানি তেলের দাম কমবে, কমবে ডলারের দাম। কিন্তু মাঝখানে বাড়িয়ে নেওয়া পণ্যগুলোর দাম কমবে তো? বাস-ট্রাকের বাড়িয়ে নেওয়া ভাড়া কমবে তো? আপনার-আমার নিত্যদিনের খাবি খাওয়া কমবে তো?
এসব প্রশ্নের উত্তর আমরা সত্যিই জানি না। এখনো পর্যন্ত এ দেশের বাজারব্যবস্থায় কোনো পণ্যের দাম একবার বাড়লে তা কমে স্বাভাবিক হওয়ার নজির তো নেই। আমরা কখনো দেখিনি তা বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষের কড়া ও উৎসাহী হস্তক্ষেপ। ফলে সাধারণের আশান্বিত হওয়ার সুযোগ খুবই কম। আর সেই আক্ষেপেই মনে জাগে একটি অসহায় প্রশ্ন—আমাদের চুষে খাবেন, নাকি চিবিয়ে?
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
অনেকেরই সংশয় ছিল। কারও কিছুটা হালকা, কারও আবার গভীর। কেউ কেউ শঙ্কিতও ছিলেন। দেশের পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তা নিয়ে। এদের সবার সেই সব সংশয় ও শঙ্কা এখন ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। ফলে দেশের শাসনব্যবস্থার গণতান্ত্রিক রূপান্তরকামী সাধারণ মানুষের জন্য তা হয়ে উঠেছে অশনিসংকেত। হ্যাঁ, এই কথাগুলো হচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয়
১ ঘণ্টা আগেন্যায়বিচার, সংস্কার ও বৈষম্য বিলোপের দাবি থেকে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান সফল হয়েছিল। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে এই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের অনেকেই অপরাধ চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) নেতার উন্মুক্ত চাঁদাবাজির ঘটনা এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
১ ঘণ্টা আগেআমাদের সর্বসাধারণের মনে একটা প্রশ্ন সব সময়ই ঘুরপাক খায়—ভগবান যেহেতু অজ, তাহলে তাঁর আবার জন্ম কিসের? এই প্রশ্নের উত্তর ভগবান নিজেই গীতায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন। গীতায় ভগবান বলেছেন, তিনি এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা এবং তিনি অজ অর্থাৎ জন্মরহিত হওয়া সত্ত্বেও এই জড়জগতে জন্মগ্রহণ করেন। কেন তিনি জন্মগ্রহণ
২ ঘণ্টা আগেএকসময় ভরা মৌসুমে এ দেশের সাধারণ মানুষও ইলিশ কিনতে পারত। কিন্তু অনেক বছর থেকে ইলিশ শুধু উচ্চবিত্ত মানুষেরাই কিনতে পারছে। বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় এর আকাশছোঁয়া দামের কারণে এখন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের নাগালের মধ্যে নেই ইলিশ। এখন ভরা মৌসুমে ইলিশের দাম বাড়া নিয়ে ১৫ আগস্ট আজকের পত্রিকায় একটি সংবাদ
২ ঘণ্টা আগে