Ajker Patrika

‘রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই’

বিরস
‘রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই’

সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানের কাছ থেকে সত্য গোপনের ঘটনা নতুন নয়। শাসকদের ঘিরে তোষামোদকারী, চাটুকারের একটি বৃত্ত সব সময়ই গড়ে ওঠে। এরা সরকারপ্রধানের মন রক্ষার জন্য সত্য গোপন করে আসলে সরকারকেই বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে। এ প্রসঙ্গে পুরোনো একটি গল্প মনে পড়ছে। গল্পটা রাজরাজড়াদের আমলের।

এক রাজার ঘোড়া দেখাশোনার জন্য বেশ কয়েকজন লোক ছিল। ঘোড়াশালে অনেকগুলো ঘোড়া থাকলেও রাজার পছন্দের এবং প্রিয় ঘোড়া ছিল একটিই। একদিন রাজা ওই প্রিয় ঘোড়ায় চড়ে শিকারে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে তাঁকে জানানো হলো, ঘোড়াকে শিকারে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত করতে দিন কয়েক সময় লাগবে। রাজা তাড়াতাড়ি সব ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিলেন।

কয়েক দিন চলে গেল। কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে রাজা আবার তাড়া দিলেন। রাজাকে জানানো হলো ঘোড়ার শরীরের লোম ছেঁটে তেল মেখে মসৃণ করার জন্য আরও কয়েক দিন সময় লাগবে। রাজা সময় দিলেন। কিন্তু আরও ১০ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর রাজা এবার অসহিষ্ণু হয়ে এত দেরি হওয়ার কারণ জানতে চাইলেন।

এবার এক রাজ কর্মচারী রাজাকে জানাল, মহারাজ, সামান্য একটু সমস্যা হয়েছে।
-কী সমস্যা? রাজা জানতে চাইলেন।
এক রাজ কর্মচারী কাঁচুমাচু করে বলল, রাজা বাহাদুর, আপনার প্রিয় ঘোড়াটি মারা গেছে।
এ কথা শুনে রাজার মাথায় রক্ত চড়ে গেল। তিনি ক্রুদ্ধ কণ্ঠে জানতে চান, ‘আমার প্রিয় ঘোড়াটি মারা গেল অথচ সেটা আমাকে জানানো হলো না। কেন?’
ক্ষুব্ধ রাজা জানতে চান, ঘোড়াটি কবে মারা গেল।
-আজ্ঞে, তা প্রায় মাস ছয়েক তো হবে। 
-ছয় মাস?
হতভম্ব রাজার প্রশ্ন, এত দিন আমাকে জানানো হয়নি কেন?
এবার রাজকর্মচারী আরও বিনয়ের সঙ্গে মাথা নত করে জবাব দেয়, ঘোড়া নেই জেনে আপনি যদি আমাদের তাৎক্ষণিকভাবে চাকরিচ্যুত করেন, তাহলে আমরা বেকার হয়ে যাব। বেকার হওয়ার ভয়ে ঘোড়া 
মারা যাওয়ার খবর আপনার কাছে গোপন করা হয়েছে।
রাজা এবার রাগতস্বরে বলেন, ‘আর এই সত্য গোপনের জন্য এখন যদি তোমাদের চাকরিচ্যুত করি?’
রাজকর্মচারীদের মধ্যে জ্যেষ্ঠজন এবার মুখ খুললেন, ‘মহারাজ, এখন বেকার হলেও আমাদের তেমন সমস্যা হবে না। ছয় 
মাসে আমরা নানা উপায়ে আমাদের আখের গুছিয়ে নিয়েছি।’
রাজা এবার লাজবাব!

খ. বিদেশি এক ছাত্র বাংলাদেশে পড়তে এসে জানতে পারে যে হা-ডু-ডু বা কাবাডি আমাদের দেশের জাতীয় খেলা। কৌতূহলবশত এক বাঙালি ছাত্রকে সেই বিদেশি ছাত্র জিজ্ঞেস করে, ভাই, পৃথিবীতে এত খেলা থাকতে হা-ডু-ডু কেন তোমাদের জাতীয় খেলা?

বাংলাদেশি ছাত্রের জবাব: হা-ডু-ডু খেলার নিয়ম হলো, একজনকে প্রতিপক্ষ দলের সবাই টেনে ধরে আটকাতে চায়, যাতে তার দম ফুরিয়ে হার মানতে বাধ্য হয়। আর আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষের স্বভাব হলো, কেউ ওপরে উঠতে চাইলে তাকে টেনেহিঁচড়ে নিচে নামিয়ে আনার চেষ্টা করে! এ জন্যই কাবাডি বা হা-ডু-ডু আমাদের জাতীয় খেলা।

গ. একসময় হরতাল ডাকা বিরোধী রাজনৈতিক দলের অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। হরতাল ডেকে নেতারা বাসায় আরাম করে দিবানিদ্রা দিতেন আর বোমা-পটকা দিয়ে রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হতো কিছু সন্ত্রাসীকে। তারা বাসে আগুন দিত, মানুষ পুড়িয়ে মারত। বিকেলে নেতারা হরতাল সফল করার জন্য জনগণকে অভিনন্দন জানাতেন। তো একদিন হরতাল ডেকে এক উঠতি নেতাকে ঘুমুতে দেখে তার বয়স্ক নানা বললেন, ‘একি হলো দেশের রাজনীতির চেহারা? হরতাল ডেকে রাস্তায় পিকেটিং না করে ঘুমানো? আমরা হরতাল ডেকে রাস্তায় থাকতাম। ঝুঁকি নিয়ে জেলেও গিয়েছি।’
 ‘জেলে গিয়ে কী করতেন?’ ঘুম জড়ানো কণ্ঠে উঠতি নেতার প্রশ্ন।
-‘কী আর করব? শুয়ে শুয়ে ঘুমাতাম।’

 ‘আমিও তো তা-ই করছি’, বলেই নাক ডাকতে লাগলেন নেতা কাম নাতি।
ঘ. রাজনীতির প্রথম পাঠ হলো ‘রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডাকসুতে শিবিরের জয়ে উদ্বেগ শশী থারুরের, জবাব দিলেন মেঘমল্লার

‘বেয়াদবি ছুটায় দেব’: সরি বলতে অসুবিধা নেই, বললেন সেই জামায়াত নেতা

শাহজালাল বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের সামনে কোমরপানি

ইসরায়েলের হামলার কী জবাব হবে—আরব-ইসলামিক সম্মেলন ডাকল কাতার

তিন ভোটে দায়িত্ব পালনকারীদের ‘যথাসম্ভব’ দূরে রাখতে হবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত